রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে এ সপ্তাহে ট্রাম্প ও পুতিনের আলাপ হবে: মার্কিন দূত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে এ সপ্তাহে আলাপ হওয়ার কথা রয়েছে, কারণ যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধবিরতির জন্য মধ্যস্থতা করার চেষ্টা করছে। ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এ তথ্য জানিয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণের পর দুই নেতার মধ্যে প্রকাশ্যে দ্বিতীয় ফোনালাপ হবে এটি। গত ফেব্রুয়ারিতে ট্রাম্প ও পুতিনের মধ্যে ফোনে কথা হয়। সেখানে তারা ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানে উচ্চপর্যায়ের আলোচনা শুরুর সিদ্ধান্ত নেন।
রোববার (১৬ মার্চ) সিএনএনের 'স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন' অনুষ্ঠানে উইটকফ বলেন, "আমি মনে করি এ সপ্তাহে দুই প্রেসিডেন্টের মধ্যে খুবই ইতিবাচক ও ফলপ্রসূ আলোচনা হবে।"
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন বন্ধের লক্ষ্যে উইটকফ এ সপ্তাহে রাশিয়ায় গিয়ে পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেন। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, শিগগিরই একটি সমঝোতায় পৌঁছানো যাবে।
উইটকফ বলেন, "প্রেসিডেন্ট (পুতিন) সময়সীমা হিসেবে 'কয়েক সপ্তাহ' বলেছেন, এবং আমি তার সঙ্গে একমত। আমি সত্যিই আশাবাদী, আমরা এখানে বাস্তব অগ্রগতি দেখতে পাব।"
রোববার সিবিএস-এর 'ফেস দ্য নেশন' অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে উইটকফ আবারও সম্ভাব্য ট্রাম্প-পুতিন ফোনালাপের বিষয়ে কথা বলেন। তবে আলোচনার ফলাফল নিয়ে কোনো নির্দিষ্ট তথ্য দেননি।
উইটকফ জানান, ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদেই তাদের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং তিনি আশা করছেন, এ সপ্তাহের ফোনালাপ "খুবই ইতিবাচক ও গঠনমূলক" হবে।
উইটকফের রাশিয়া সফরের পর ট্রাম্পের সঙ্গে পুতিনের প্রথম ফোনালাপ হয় এবং এর মাধ্যমে ভুলভাবে আটক থাকা মার্কিন শিক্ষক মার্ক ফোগেলকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।
বন্দি বিনিময়ের এক দিন পর ট্রাম্প জানান, তিনি পুতিনের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং তাদের ফোনালাপ ছিল "দীর্ঘ ও অত্যন্ত ফলপ্রসূ।"
যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি নিয়ে পুতিন ও ট্রাম্প ফোনালাপে সিদ্ধান্ত নেবেন কি-না, সে বিষয়ে উইটকফ সরাসরি কিছু বলেননি। ইউক্রেন ইতোমধ্যেই চুক্তিতে সম্মতি জানিয়েছে। পুতিন বলছেন, তিনি মূলত প্রস্তাবের পক্ষে। তবে কিছু বিষয় এখনও চূড়ান্ত করা বাকি।
উইটকফ বলেন, "প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হলেন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী– আমাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী। আর প্রেসিডেন্ট পুতিন হলেন রাশিয়ার জন্য তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী। আমি মনে করি, তাদের মধ্যে আলোচনা হবে। এটি খুবই ইতিবাচক ইঙ্গিত। এটি দেখায় যে, অগ্রগতির গতি ইতিবাচক।"
উইটকফ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর সাম্প্রতিক মূল্যায়নকেও গুরুত্বহীন বলেছেন। মাখোঁ এক বিবৃতিতে বলেন, রাশিয়া "সত্যিকারের শান্তি চাইছে বলে মনে হয় না" এবং আলোচনার আগে পুতিন যুদ্ধ আরও তীব্র করছেন।
উইটকফ জানান, তিনি মাখোঁর বক্তব্য সম্পর্কে জানেন না। তবে তিনি মন্তব্য করেন, "যখন কারও প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা নেই, তখন এ ধরনের মূল্যায়ন করা দুর্ভাগ্যজনক।"
পুতিনের সঙ্গে তার বৈঠকের প্রসঙ্গে উইটকফ বলেন, "আমি যা শুনেছি, যা দেখেছি— তার শরীরী ভাষা, সবকিছু বিবেচনায় আমি মনে করি, দীর্ঘ সময় ধরে ময়দানে কী ঘটছে, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট আলোচনা চালানোর জন্য একটি গঠনমূলক প্রচেষ্টা ছিল।"