বাংলাদেশ, তুরস্কের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে অগ্রাধিকার দিচ্ছে রোসাটম

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি কমিশন রোসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সেই লিখাচেভ সম্প্রতি জানিয়েছেন, বাংলাদেশ এবং তুরস্কে নির্মিত নতুন পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু ও বিদ্যুৎ উৎপাদন তাদের প্রধান অগ্রাধিকার।
ওয়ার্ল্ড নিউক্লিয়ার নিউজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাশিয়ার সারভে রোসাটমের একটি তথ্য দিবস অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় লিখাচেভ বলেন, ২০৪২ সাল পর্যন্ত পারমাণবিক শক্তি উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি করা তাদের লক্ষ্য।
ব্রিকসভুক্ত দেশগুলোর সাথে সহযোগিতার ইচ্ছা প্রকাশ করে রোসাটমের মহাপরিচালক বলেন, "এই বছরের প্রধান কাজগুলোর মধ্যে তুরস্ক এবং বাংলাদেশে চালু করা বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে প্রথম কিলোওয়াট ঘণ্টা উৎপাদন নিশ্চিত করা রয়েছে। আমাদের উজবেকিস্তানে পরিকল্পিত ছোট মডুলার রিয়েক্টর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য চুক্তি বাস্তবায়ন শুরু করতে হবে এবং উচ্চ ক্ষমতার ইউনিট নির্মাণের জন্য চুক্তি পেতে আমাদের সব প্রচেষ্টা চালাতে হবে।"
তিনি বলেন, "এ বছর আমাদের প্রিমোরস্কি ক্রাইতে (রাশিয়ার দূরপ্রাচ্যে) দুটি ইউনিটের একটি স্টেশন নির্মাণের সব দিকের কাজ শেষ করতে হবে। এটি প্রেসিডেন্টের সরাসরি নির্দেশ। প্রিমোরস্কি ক্রাইয়ের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (এনপিপি) ২০৩২ সালের মধ্যে গ্রিডের সাথে সমন্ব্য করতে হবে। আরেকটি কাজ হলো, লেনিনগ্রাদ এনপিপি-২-এর চতুর্থ ইউনিটে প্রথম কংক্রিট ঢালা এবং কুরস্ক এনপিপি-২-এর প্রথম ইউনিটকে বাণিজ্যিকভাবে চালু করা।"
লিখাচেভ বলেন, উৎপাদনশীলতা ১২ শতাংশ বাড়ানো রোসাটমের লক্ষ্য, যাতে মজুরি বৃদ্ধি ১০ শতাংশ করা যায়। লক্ষ্য ছিল, "বিনিয়োগ এবং প্রকল্প কার্যক্রমের গুণগতমান ও কার্যকারিতা বৃদ্ধি। লাভের হারের লক্ষ্যবস্তু কমপক্ষে ২৬ শতাংশ। প্রকল্পগুলোর ওপর বিনিয়োগের প্রতিদান মূলধন ব্যয়ের চেয়ে বেশি হতে হবে, শুধু ঋণ নয়, আমাদের নিজেদের মূলধনও। অর্থের উচ্চ মূল্য বিবেচনায়, আমরা লাভহীন প্রকল্প নিতে পারি না। অন্যথায়, সব আয় ব্যাংকগুলোর কাছে চলে যাবে।"
আগামী ছয় বছরে কী হবে তা নিয়ে রোসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সেই লিখাচেভ বলেন, "এখন থেকে আর সহজ হবে না" কারণ পারমাণবিক শক্তি এবং অন্যান্য ক্ষেত্রের প্রকল্পের সংখ্যা বেড়েছে।
লিখাচেভ চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরে বলেন, বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতা বাড়ছে এবং রোসাটমের ওপর "অর্থনৈতিক চাপ এবং নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও আমাদের নেতৃত্ব শক্তিশালী করার জন্য নিয়মিত কাজ করতে হবে।"
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক "রাজনৈতিক পরিস্থিতি কঠিন, পৃথিবী অত্যন্ত অস্থির হয়ে উঠেছে, শাসনব্যবস্থা পরিবর্তিত হচ্ছে, আঞ্চলিক সংকট বৃদ্ধি পাচ্ছে।" দেশীয় বাজারে "প্রযুক্তি এবং উচ্চ-প্রযুক্তির পণ্যের অভাব" রয়েছে, যার জন্য আরও আমদানি বিকল্প উন্নত করতে হবে। শ্রমবাজারে বিশেষজ্ঞদের জন্য প্রতিযোগিতা বাড়ছে, এবং "অর্থনৈতিক ও আর্থিক পরিস্থিতি খুবই কঠিন। এখন অর্থের মূল্য অত্যন্ত বেশি। এটি মূল চ্যালেঞ্জ। সীমিত সম্পদে কার্যকরভাবে কাজ করা শিখতে হবে।"