জনগণের সমর্থন নেই এমন কাজ বিএনপি করে না: তারেক

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, জনগণের সমর্থন নেই এমন কোনো কাজ বিএনপি করে না। বিএনপি একমাত্র প্রমাণ করেছে যে তারা অন্যায়ের সঙ্গে আপস করে না। বিএনপি দেশ পরিচালনার সুযোগ পেলে সবার আগে দেশ পুনর্গঠন করবে।
আজ শনিবার যশোর জেলা বিএনপির সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
তারেক বলেন, 'এখন অনেকেই সংস্কারের কথা বলছেন। কিন্তু বিএনপি স্বৈরাচারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে আড়াই বছর আগে দেশ পুনর্গঠনের কথা বলেছে, ৩১ দফা ঘোষণা করেছে। বিএনপির রাজনীতির মূল লক্ষ্য জনগণ ও দেশ। তাই ভেঙে পড়া রাষ্ট্রকে পুনর্গঠন বিএনপির পক্ষে সম্ভব। দেশের মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী দেশ পুনর্গঠনে দ্রুততম সময়ে স্বচ্ছ নির্বাচন জরুরি।'
এদিন সকাল সাড়ে ১০টায় কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে জাতীয় সংগীত, জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও বেলুন-ফেস্টুন উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগমের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, সহসাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু, সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু।
দীর্ঘ ১৬ বছর পর আজ যশোর জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
সম্মেলনের শুরুতে বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন-সংগ্রামে নিহত দলের নেতা-কর্মীদের স্মরণে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ ছাত্র-জনতা, বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের প্রয়াত সদস্যদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া করা হয়। পরে সাংগঠনিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু।
এদিকে এ সম্মেলন ঘিরে স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীদের বেশ উচ্ছ্বসিত দেখা যায়। উপস্থিত নেতাকর্মীরা বলছেন, দলের দুর্দিনে যারা ত্যাগ স্বীকার করেছেন, নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়েছেন, তারা যেন সঠিক মূল্যায়ন পান।

দলীয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ যশোর জেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ২০০৯ সালে। সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের ১০ বছর পর ২০১৯ সালের ২০ এপ্রিল যশোর জেলা বিএনপির কমিটি ভেঙে আহ্বায়ক কমিটি করা হয়। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত তরিকুল ইসলামের স্ত্রী অধ্যাপক নার্গিস বেগম আহ্বায়ক এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু সদস্যসচিব হন। ওই কমিটিকে তিন মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে বলা হলেও তা আর হয়নি।
১৬ বছর পর এই সম্মেলনে সভাপতি ও সাংগঠনিক সম্পাদক এই দুটি পদে নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব নির্ধারিত হবে। সাধারণ সম্পাদক পদে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় দেলোয়ার হোসেন খোকনের জয় নিশ্চিত বলা যায়। অন্যদিকে সভাপতি ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন সাতজন।
সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছেন দলের সদস্যসচিব সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও যশোর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মিজানুর রহমান খান এবং যশোর পৌরসভার সাবেক মেয়র মারুফুল ইসলাম মারুফ।
সাংগঠনিক সম্পাদক পদের জন্য লড়ছেন নগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুনির আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চু, জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের সদ্য বিদায়ী কমিটির সভাপতি প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম, যশোর সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী আজম ও সাবেক ছাত্রনেতা শহিদুল বারী রবু।