চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তানকে উড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শুরু নিউজিল্যান্ডের

দুই সেঞ্চুরিতে তিনশ ছাড়ানো সংগ্রহ। ভীতটা ভালোই মজবুত ছিল নিউজিল্যান্ডের। জবাবে পাকিস্তানের ধীর গতির শুরু ও উইকেট হারানো, একটা সময়ে গিয়ে কিউইদের জয় হয়ে ওঠে সময়ের ব্যাপার। কিন্তু এর মাঝেও লড়লেন বিপিএল মাতিয়ে দলে সুযোগ পাওয়া খুশদিল শাহ, খেললেন ওয়ানডের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। যা পাকিস্তানের ইনিংসের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। এরপর শাহিন শাহ আফ্রিদি, হারিস রউফ, নাসিম শাহদের মারা ছক্কায় কিছু সময়ের জন্য মেতে থেকেছে করাচির ভরা গ্যালারি। কিন্তু হার এড়ানো যায়নি।
বুধবার করাচির জাতীয় স্টেডিয়ামে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের উদ্বোধনী ম্যাচে পাকিস্তানকে ৬০ রানে হারিয়েছে নিউজিল্যান্ড। আরও একটি প্রচেষ্টায় নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে নিজেদের রেকর্ড বদলাতে পারলো না আসরটির বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। কিউইদের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলা চার ম্যাচের সবগুলোতেই হারলো পাকিস্তান। এর আগে ২০০, ২০০৬ ও ২০০৯ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হারে এবারের আসরের আয়োজকরা।
টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামে নিউজিল্যান্ড। ওপেনার উইল ইয়াং ও ম্যাচসেরা টম লম ল্যাথামের সেঞ্চুরিতে ও গ্লেন ফিলিপসের ঝড়ো হাফ সেঞ্চুরিতে ৫ উইকেটে ৩২০ রান তোলে তারা। যা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে যেকোনো দলের সর্বোচ্চ সংগ্রহ। বড় লক্ষ্য তাড়ায় অন্যরা ব্যর্থ হলে বাবর আজম মন্থর গতিতে ব্যাটিং করেন। হাফ সেঞ্চুরি করলেও তা দলকে আরও পিছিয়ে দিয়েছে। আগা সালমানের লড়াইয়ের পর শেষ দিকে খুশদিল, হারিস, নাসিমদের ব্যাটে হারের ব্যবধান কমিয়েছে পাকিস্তান। ৪৭.২ ওভারে ২৬০ রানে অলআউট হয় ঘরের মাঠের দলটি।
বড় লক্ষ্য তাড়ায় ২২ রানের মধ্যেই ফিরে যান সৌদ শাকিল ও অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ান। প্রতিরোধের চেষ্টা করা ফকর জামানও সফল হননি, ২৪ রান করে থামেন তিনি। চতুর্থ উইকেটে ৫৯ বলে ৫৮ রানের জুটি গড়েন বাবর ও সালমান। ৩১তম ওভারে ভাঙে এই জুটি ২৮ বলে ৬টি চার ও একটি ছক্কায় ৪২ রান করে সাজঘরে ফেরেন সালমান। পরের ওভারেই ফিরে যান তায়াব তাহির। চাপ সামলাতে গিয়ে একেবারেই আস্তে ব্যাটিং করা বাবরও এরপর ফিরে যান।
দুই মেয়াদে জাতীয় দলের অধিনায়কত্ব পালন করা ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান ৯০ বলে ৬টি চার ও একটি ছক্কায় ৬৪ রান করেন। ওয়ানডেতে এটা তার ৩৪তম হাফ সেঞ্চুরি। এরপর খুশদিলই যা লড়েছেন। বিপর্যয়ের মাঝেও দাপুটে ব্যাটিংয়ে ৪৯ বলে ১০টি চার ও একটি ছক্কায় ৬৯ রান করেন বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার। ১০ বলে ৩টি ছক্কায় ১৯ রান করেন রউফ। শাহিন আফ্রিদি ১৪ ও নাসিম ১৩ রান করেন। নিউজিল্যান্ডের উইল ও'রোর্ক ও মিচেল স্যান্টনার ৩টি করে উইকেট নেন। ম্যাট হেনরি ২টি উইকেট পান। একটি করে উইকেট নেন মিচেল ব্রেসওয়েল ও নাথান স্মিথ।
এর আগে ৭৩ রানের মধ্যে ৩টি উইকেট হারালেও দলকে অন্ধকারে পড়তে দেননি ইয়াং। চতুর্থ উইকেটে ম্যাচসেরা ল্যাথামের সঙ্গে ১২৬ বলে ১১৮ রানের জুটি গড়েন তিনি। এর মাঝেই তুলে নেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি। ডানহাতি এই কিউই ব্যাটসম্যান ১১৩ বলে ১২টি চার ও একটি ছক্কায় ১০৭ রান করেন। এরপর জুটি গড়েন ল্যাথাম ও ফিলিপস। জুটি গড়ার পথে দুজনই দাপুটে ব্যাটিং করেন। পঞ্চম উইকেটে ৭৪ বলে ১২৫ রান যোগ করেন তারা।
দুই বল বাকি থাকতে আউট হওয়া ফিলিপস ৩৯ বলে ৩টি চার ও ৪টি ছক্কায় ঝড়ো ৬১ রান করেন, ওয়ানডেতে এটা তার চতুর্থ হাফ সেঞ্চুরি। নিউজিল্যান্ডের জয়ের নায়ক ল্যাথাম ১০৪ বলে ১০টি চার ও ৩টি ছক্কায় ১১৮ রানে অপরাজিত থাকেন, এটা তার সপ্তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। আজ রান না পাওয়া ডেভন কনওয়ে ১০, কেন উইলিয়ামসন ১ ও ড্যারিল মিচেল ১০ রান করেন। ২০১৯ সালের জানুয়ারির পর প্রথমবারের মতো এক অঙ্কের ঘরে আউট হলেন উইলিয়ামসন। পাকিস্তানের নাসিম শাহ ও হারিস রউফ ২টি করে উইকেট পান। একটি উইকেট নেন আবরার আহমেদ।