Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

ওগোপোগো অ্যানিমেশন স্টুডিও: কাগজ, মাটি কিংবা পাপেট দিয়ে চলছে স্টপ মোশন অ্যানিমেশনের গল্প

স্টপ মোশন অ্যানিমেশন শুনেই অনেকে থমকে যান। থ্রিডি-ফোরডির যুগে আবার স্টপ মোশন অ্যানিমেশন কী! সহজ ভাষায়, স্টপ মোশন অ্যানিমেশন হলো একটি বিশেষ ধরনের অ্যানিমেশন প্রযুক্তি, যেখানে স্থির বস্তু বা মডেল ধাপে ধাপে সরিয়ে ছবি তোলা হয়। ছবি তোলার সময় প্রত্যেক পর্যায়ের মডেলে আনা হয় পরিবর্তন। আর ছবি তোলা শেষে পরপর সাজিয়ে তৈরি করা হয় ভিডিও।
ওগোপোগো অ্যানিমেশন স্টুডিও: কাগজ, মাটি কিংবা পাপেট দিয়ে চলছে স্টপ মোশন অ্যানিমেশনের গল্প

ফিচার

সুস্মিতা চক্রবর্তী মিশু
29 January, 2025, 07:00 pm
Last modified: 29 January, 2025, 07:02 pm

Related News

  • বাটি ছাঁট থেকে রোনাল্ডো কাট: সেলুনগুলো যেভাবে বদলে যাচ্ছে জেন্টস পারলারে
  • ঈদের সাজগোজ থেকে খাবার; আগের রাতে মায়ের জাদুতেই ঈদ আনন্দ পায় পূর্ণতা
  • ঈদ কার্ড: হারিয়েও ফিরে আসে বারবার
  • বিশ্ব ভ্রমণের বিরল অর্জনের পথে নাজমুন নাহার  
  • দ্য থ্রেড স্টোরি: স্বল্প দামে যেখানে ভাড়া পাবেন লাখ টাকার পোশাক!

ওগোপোগো অ্যানিমেশন স্টুডিও: কাগজ, মাটি কিংবা পাপেট দিয়ে চলছে স্টপ মোশন অ্যানিমেশনের গল্প

স্টপ মোশন অ্যানিমেশন শুনেই অনেকে থমকে যান। থ্রিডি-ফোরডির যুগে আবার স্টপ মোশন অ্যানিমেশন কী! সহজ ভাষায়, স্টপ মোশন অ্যানিমেশন হলো একটি বিশেষ ধরনের অ্যানিমেশন প্রযুক্তি, যেখানে স্থির বস্তু বা মডেল ধাপে ধাপে সরিয়ে ছবি তোলা হয়। ছবি তোলার সময় প্রত্যেক পর্যায়ের মডেলে আনা হয় পরিবর্তন। আর ছবি তোলা শেষে পরপর সাজিয়ে তৈরি করা হয় ভিডিও।
সুস্মিতা চক্রবর্তী মিশু
29 January, 2025, 07:00 pm
Last modified: 29 January, 2025, 07:02 pm
ছবি: সুস্মিতা চক্রবর্তী মিশু

রাজধানীর বনানীর ১ নম্বর রোডের ৪৮ নম্বর বাড়ি। বড় কোনো হোডিং না থাকায় বাড়ির বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই যে এই বাড়িটির ভেতরেই চলছে বিশাল কর্মযজ্ঞ। দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকতেই চোখে পড়ে কেউ সুঁই-সুতার ফোঁড়ে কাপড়ে নকশা তুলছেন, কেউবা কাগজ দিয়ে তৈরি করছেন পাপেট, আবার কেউ মাটি দিয়ে তৈরি করছেন পুতুল। 

আরেকপাশে চলছে ক্যামেরার প্রস্তুতি। ফিল লাইট জ্বালিয়ে মাটি কিংবা কাগজের তৈরি বিভিন্ন পুতুল দিয়ে ছবির মতোন সাজানো হচ্ছে গল্প। খানিকবাদেই শুরু হবে ফ্রেমের পর ফ্রেম সাজিয়ে ছবি তোলার কাজ। তৈরি হবে স্টপ মোশন অ্যানিমেশন।

স্টপ মোশন অ্যানিমেশন শুনেই অনেকে থমকে যান। থ্রিডি-ফোরডির যুগে আবার স্টপ মোশন অ্যানিমেশন কী! সহজ ভাষায়, স্টপ মোশন অ্যানিমেশন হলো একটি বিশেষ ধরনের অ্যানিমেশন প্রযুক্তি, যেখানে স্থির বস্তু বা মডেল ধাপে ধাপে সরিয়ে ছবি তোলা হয়। ছবি তোলার সময় প্রত্যেক পর্যায়ের মডেলে আনা হয় পরিবর্তন। ছবি তোলা শেষে পরপর সাজিয়ে তৈরি করা হয় ভিডিও। এই অ্যানিমেশনের সকল চরিত্র এবং বস্তু বাস্তব, যাদের ধরা-ছোঁয়া যায়।

বিশ্বজুড়ে স্টপ মোশন অ্যানিমেশনের ইতিহাস প্রায় দেড়শ বছরের পুরোনো। ১৮৯৮ সালে প্রথম 'দ্য হাম্পটি ডাম্পটি সার্কাস' নামে একটি অ্যানিমেটেড চিত্র তৈরি করা হয়েছিলো। ছোট একটি খেলনা পুতুলকে ব্যবহার করে তৈরি করা অ্যানিমেটেড চিত্রটি যদিও প্রযুক্তির অভাবে সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়নি। তবে ১৯২৫ সালে স্যার আর্থার কোনান ডয়েলের অ্যাডভেঞ্চার গল্পের আদলে নির্মিত 'দ্য লস্ট ওয়ার্ল্ড' স্টপমোশন প্রযুক্তির প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা হিসেবে ইতিহাস গড়ে। 

স্টপ মোশন অ্যানিমেশনের প্রক্রিয়া অপেক্ষাকৃত সময়সাপেক্ষ এবং জটিল হলেও সৃজনশীলতা প্রকাশের জন্য এটি একটি অসাধারণ মাধ্যম। ডিজিটাল এই যুগে হাতে তৈরি এবং বাস্তবতার ছোঁয়া থাকায় এর খ্যাতি এখনো বিশ্বজোড়া। বাংলাদেশে এই ধরনের অ্যানিমেশন জনপ্রিয়তা পেয়েছে ওগোপোগো অ্যানিমেশন স্টুডিও-র হাত ধরে।  

২০১৯ সাল থেকে এই স্টপ মোশন অ্যানিমেশন তৈরির কাজ শুরু করে ওগোপোগো অ্যানিমেশন স্টুডিও। প্রথমদিকে খানিকটা খেলাচ্ছলে হলেও ধীরে ধীরে এ ধরনের অ্যানিমেশনের মায়ায় জড়িয়ে পড়েন স্টুডিওর প্রতিষ্ঠাতা অমিত আশরাফ এবং সাইকা চৌধুরী।

অ্যানিমেশন স্টুডিও শুরুর আগে অমিত আশরাফ যুক্ত ছিলেন সিনেমার সাথে। মাথায় সিনেমার নেশা থাকায় বেশ ভালো গল্প বলতে পারতেন তিনি। তাই শখের বশে ২০১৯ সালে স্টপ মোশন অ্যানিমেশন শুরু করলেও করোনা মহামারি আসার পর শখ গড়ায় নেশায়, এরপর পেশায়। মজাচ্ছলে স্টপ মোশন অ্যানিমেশন স্টুডিও শুরু তো করেই ফেললেন, এবার একটা নাম দেওয়া জরুরি। নাম রাখলেন ওগোপোগো অ্যানিমেশন স্টুডিও।

নাম কেন ওগোপোগো?

"স্টপ মোশন অ্যানিমেশন সবচেয়ে সহজ অ্যানিমেশন। বাচ্চারা যদি শিখতে চায়, তাহলে তারাও পারবে। রিয়েল লাইফ পাপেট বা কোনো অবজেক্টকে নড়াচড়া করানোই মূলত স্টপ মোশন অ্যানিমেশন," বললেন ওগোপোগো অ্যানিমেশন স্টুডিও-র স্বত্বাধিকার অমিত।

ওগোপোগোর নামটি ইংরেজিতে লিখলে দেখা যাবে নামকে উলটো করলেও একই অক্ষরের দেখা মিলবে। তাই অনেকটা আগ্রহের বশেই জানতে চাইলাম নামের পেছনের গল্প। অমিত বলেন, "ওগোপোগো মূলত কানাডিয়ান আদিবাসীদের লোককাহিনীর একটি চরিত্র। আমার বিভিন্ন দেশের মিথলোজি অনেক পছন্দের। তাই নাম রেখেছি ওগোপোগো অ্যানিমেশন স্টুডিও।"

বলে রাখা ভালো, ওগোপোগো কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া প্রদেশের ওকানাগান হ্রদে বসবাসকারী একটি স্থানীয় কিংবদন্তি জলজ প্রাণী। এটি লেক মনস্টার বা জলদানব হিসেবে পরিচিত এবং কানাডার অন্যতম বিখ্যাত লোককাহিনির অংশ। 

ওগোপোগোর কিংবদন্তি মূলত সিলক্স আদিবাসীদের বেশি জনপ্রিয়। সর্পিল আকারের এই প্রাণীটি তাদের কাছে ওকানগান হ্রদের রক্ষক এবং জলদেবতা হিসেবে পরিচিত। মজার বিষয় হচ্ছে, 'ওগোপোগো অ্যানিমেশন স্টুডিও'-র লোগোটিও অনেকটা কিংবদন্তি জলজ প্রাণী ওগোপোগোর আদলে তৈরি।

"ওগোপোগোর সবকিছুই হাতে তৈরি। এখন তো অনেকেই এআই ব্যবহার করেন। এটা ঠিক যে এআইকে বললে সে স্টপ মোশন অ্যানিমেশন বানিয়ে দেবে। কিন্তু এআই দিয়ে হাতের কাজের অনুভূতি পাওয়া যায় না। আমাদের ক্লায়েন্ট এবং দর্শকরা আসলেই হাতে তৈরি কাজ বেশি পছন্দ করেন। হতে পারে এটা করা কঠিন, খরচ বেশি; আবার একদম যে মসৃণ হয় তাও না। একটা স্টপ মোশন অনুভূতি পাওয়া যায় হাতে তৈরি করলে। দেখতে বাস্তব লাগে," যোগ করেন অমিত।

চলছে হাতের কাজ।

ধাপে ধাপে তৈরি হয় গল্প

স্টপ মোশন অ্যানিমেশনের প্রকারভেদ খুঁজতে গেলে প্রায় ১৪ থেকে ১৫ ধরনের পাওয়া যায়। এর মধ্যে ক্লে অ্যানিমেশন, পাপেট অ্যানিমেশন, কাটআউট অ্যানিমেশন, অবজেক্ট অ্যানিমেশন বেশি দেখা যায় ওগোপোগো অ্যানিমেশন স্টুডিওতে। 

ক্লে অ্যানিমেশনের ক্ষেত্রে সাধারণত কাদামাটি ব্যবহার করে তৈরি করা চরিত্র ও সেট দিয়ে অ্যানিমেশন তৈরি করা হয়। পুতুল এবং মডেল ব্যবহার করে তৈরি করা হয় পাপেট অ্যানিমেশন। অপরদিকে, কাট আউট অ্যানিমেশনের প্রধান উপকরণ হলো কাগজ বা ফ্ল্যাট কোনো বস্তু। যেকোনো বাস্তব বস্তু নিয়ে যখন স্টপ মোশন করা হয়, তা অবজেক্ট অ্যানিমেশন হিসেবে পরিচিত।

প্রাথমিকভাবে বলতে গেলে স্টপ মোশন অ্যানিমেশন তৈরির প্রথম ধাপ হলো একটি ভালো গল্প এবং চিত্রনাট্য তৈরি করা। গল্পের প্রতিটি দৃশ্যকে ফ্রেম বাই ফ্রেম পরিকল্পনা করতে পারলেই সম্পন্ন হয় প্রথম ধাপ। এরপর প্রয়োজন গল্পের চরিত্র এবং সেট ডিজাইন। সাধারণত চরিত্রগুলো তৈরি হয় পুতুল, কাদামাটি বা অন্যান্য বস্তু দিয়ে। এরপর সেট প্রস্তুত অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেট এমনভাবে তৈরির প্রয়োজন পড়ে, যাতে প্রতিটি দৃশ্য বাস্তবসম্মত মনে হয়। 

এরপর আসে অ্যানিমেশন এবং ফটোগ্রাফির ধাপ। চরিত্রগুলোকে প্রতিটি ফ্রেমে অল্প অল্প সরিয়ে একটি ক্যামেরার সাহায্যে ফটো তোলা হয়। সাধারণত এক সেকেন্ডের ভিডিওর জন্য ২৪টি ফ্রেম তোলা হয়। সবশেষে আসে পোস্ট-প্রোডাকশন ধাপ। এই ধাপে ফটোগ্রাফগুলোকে বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে একত্রিত করে ভিডিওতে রূপান্তর করা হয়। শব্দ, সঙ্গীত এবং ভিজ্যুয়াল এফেক্ট যুক্ত করে চূড়ান্ত রূপ দেওয়া হয়।

অমিত বলেন, "কনসেপ্ট এবং স্টোরিবোর্ডের পাশাপাশি স্টাইল থাকা জরুরি। ক্লায়েন্ট আমাদের রেফারেন্স দিয়ে দেয়। স্টাইল দেখে আসলেই খরচ এবং সময় বোঝা যায়। স্টাইল দেখে আর্ট টিম সেট আর চরিত্র বানায়। এটা আসলে একটা জটিল প্রসেস। টু ডাইমেনশনালে (টুডি) কাজ করতে সময় কম লাগে, কিন্তু থ্রি ডাইমেনশনালে (থ্রিডি) সময় বেশি লাগে। প্রতিটি প্রজেক্টে আমরা শিখছি এবং ভালো করার চেষ্টা করছি। স্টপ মোশনের একটা বড় গ্লোবাল কমিউনিটি আছে। সেখান থেকেও আমরা অনেক কিছু শিখতে পারি।"

রিক্সা আর্ট।

কী লাগে স্টপ মোশন অ্যানিমেশন করতে?

স্টপ মোশন অ্যানিমেশন করতে প্রয়োজন পড়ে ডিএসএলআর, মিররলেস ক্যামেরা, ওয়েব ক্যামেরাসহ নানান ধরনের ক্যামেরার। এছাড়াও লাগে ট্রাইপড, স্টুডিও লাইট-এলইডি লাইটসহ নানান রকমের আলোর ব্যবহার। পাশাপাশি প্রয়োজন পড়ে পেশাদার স্ট্যান্ডার্ড স্টপমোশন সফটওয়্যার– যা লাইটিং, ক্যামেরা কন্ট্রোল, এবং ফ্রেমিং ঠিক রাখতে সাহায্য করে। 

এছাড়াও, রিয়েল-টাইম ফ্রেমিং এবং ডিটেইল চেক করতে এক্সটারনাল মনিটর এবং সঠিক রঙ নিশ্চিত করার জন্য কালার ক্যালিব্রেশন মনিটর ব্যবহার করা হয়। ক্যামেরা বা প্রপস মুভ করার জন্য ব্যবহার করা হয় ওয়াইন্ডার। সবশেষে অ্যাডভান্সড এডিটিং এবং কালার গ্রেডিং এর জন্য ব্যবহার করা অ্যাডোবি প্রিমিয়ার প্রো কিংবা দ্য ভিঞ্চি রিসলভের মতো অ্যাপ্লিকেশন।

অমিত বলেন, "আমাদের এখানে একটা টুল আছে ওয়াইন্ডার। যেটা আমরা বিদেশ থেকে কিনেছি। আমরা এখন চেষ্টা করছি কিছু টুল নিজের মতো তৈরি করে নেওয়ার। আমাদের টার্গেট এখন বাইরের থেকে কেনার চেয়েও আমরা কীভাবে নিজেরা সেটা তৈরি করতে পারবো সেদিকে লক্ষ্য রাখা।" 

তিনি বলেন, "লাইটের ক্ষেত্রেও আমরা দেখি যে সস্তা এলইডি লাইট ব্যবহার করতে পারি কিনা। আমরা হয়তো বাইরে থেকে অনেক জিনিস এনেছি, কিন্তু কম খরচে সেটা নিজেরাই তৈরি করতে পারি কিনা সেদিকেও খেয়াল রাখছি। কোনো কারণে যন্ত্রটি ভেঙ্গে গেলে আমরা যাতে দেশের ভেতরে বসেই সারিয়ে ফেলতে পারি সেটা আমাদের টার্গেট।"

কাজ চলছে

ওগোপোগো অ্যানিমেশন স্টুডিওর অন্যতম বড় একটি প্রজেক্ট হচ্ছে নকশিকাঁথা অ্যানিমেশন প্রজেক্ট। নকশিকাঁথার ফোঁড়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল প্রতিটি গল্প। রংপুরের সূচিশিল্পীরা অংশ নিয়েছিলেন এই প্রকল্পে। 

"এই কাজটা আমাদের জন্য অনেক চ্যালেঞ্জিং ছিল। কারণ আমরা কখনো নকশিকাঁথা করিনি। কাজ করতে গিয়ে এমন অনেক ইস্যু সামনে এসেছে, যেটা আমি কখনো চিন্তাই করিনি। এখন আমরা নকশিকাঁথায় এক্সপার্ট হয়ে গেছি," হেসে বলেন অমিত।

কাজ শেষ হতে কখনো সময় লাগে ছয় মাস!

আর্ট মিটস বিজনেসকে প্রতিপাদ্য করে শুরু হয়েছিল ওগোপোগো অ্যানিমেশন স্টুডিওর যাত্রা। যেখানে শিল্প কেবল শিল্পই নয়, বরং ভালো লাগার কোনো বিষয়ও যে জীবিকার উৎস হতে পারে তা তুলে ধরাও ওগোপোগোর চলার পথের অন্যতম পাথেয়। 

ওগোপোগো অ্যানিমেশনের দলে ২০ জন কাজ করে। এরমধ্যে আর্ট টিম, স্টোরিটেলিং টিম, পোস্ট প্রোডাকশন টিম, ডিজিটাল টিম অন্তর্ভুক্ত।

স্টপ মোশন অ্যানিমেশন যেহেতু ধৈর্যের কাজ, এখানে সময় লাগে অনেক বেশি। গল্পে যদি অনেকগুলো চরিত্র থাকে, তবে তা নির্মাণের পর সম্পন্ন করতে কখনো কখনো সময় ছয় মাসের মতোও লেগে যায়। আবার কম দৈর্ঘ্যের এবং কম চরিত্রের কোনো কোনো কাজ একদিনেও সম্পন্ন করতে পারে ওগোপোগো টিম। এটি মূলত নির্ভর করে গল্পের এবং চরিত্রের পরিধির ওপর। 

সময়ের পাশাপাশি খরচও নির্ভর করে গল্পের গভীরতার ওপর। কোনো কোনো কাজ করতে ২ থেকে ৩ লাখ টাকা খরচ হয়, আবার কখনো কখনো তা ১০-২০ লাখ টাকাকেও ছাপিয়ে যায়।  

দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক উভয় পরিসরেই কাজের সৌভাগ্য হয়েছে ওগোপোগো অ্যানিমেশন স্টুডিও টিমের। ব্র্যাক, গ্রামীনফোন, ইউনিলিভার, যাত্রাসহ বিভিন্ন বড় বড় ব্র্যান্ডের সাথে কাজ করেছে তারা। বিজ্ঞাপন, মিউজিক ভিডিওসহ বিভিন্ন মাধ্যমে কাজ করা হয়েছে।

অনুপ্রেরণা হিসেবে কী কাজ করেছে– জানতে চাইলে অমিত বলেন, "আমার সবসময়ের জন্য একটা প্রিয় ফিল্ম 'দ্য নাইটমেয়ার বিফোর ক্রিস্টমাস'। এটা টিম বার্টনের লেখা এবং প্রোডিউস করা; হেনরি সেলিক পরিচালক। ওটা ছিল স্টপমোশন সিনেমা, একটু ক্রিপি ধরনের ছিল। ভুত ছিল ওখানে, যার কারণে এটা আমার পছন্দ ছিল অনেক। বলা যায়, এটা দেখেই অনেকটা অনুপ্রাণিত হয়েছি।" 

মডেল

"তাছাড়া আমি সবসময়ই হাতে তৈরি কাজ পছন্দ করতাম। কারণ টেক্সচারে রিয়েল কিছু বোঝা যায়। মেইনলি হ্যান্ডক্রাফট ফিল পাওয়া যায় এমন কাজ পছন্দের ছিল অনেক," যোগ করেন অমিত।

সময় বেশি, খরচ বেশি

'ক্লায়েন্ট কালচার'-কে বাংলাদেশের স্টপ মোশন অ্যানিমেশনের অগ্রগতির পথে অন্যতম চ্যালেঞ্জ হিসেবে মনে করেন ওগোপোগো অ্যানিমেশন স্টুডিওর স্বত্বাধিকার। তার মতে, অনেক ক্লায়েন্টই বুঝতে চান না যে, স্টপ মোশন অ্যানিমেশন করতে যেমন সময় লাগে বেশি, তেমনি খরচও হয় অনেক বেশি। তবে কিছু বৃহদাকার প্রতিষ্ঠান এখনো এই শিল্পটির প্রতি আকৃষ্ট বলে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছতে পেরে খুশি অমিত।

একটি বাস্তব বস্তু বা চরিত্রকে এক ফ্রেম থেকে অন্য ফ্রেমে সামান্য সরিয়ে ছবি তুলে, সেই ছবিগুলো দ্রুতগতিতে একসঙ্গে চালিয়ে জীবন্ত বা গতিশীল করার প্রক্রিয়াই আসলে স্টপ মোশন অ্যানিমেশন। বলা যায়, সময়ের সঙ্গে এই শিল্প ফটোগ্রাফি, চলচ্চিত্র, এবং ডিজিটাল প্রযুক্তির সঙ্গে মিলে নতুন আঙ্গিকে সেজেছে। আর তার সাথে সাথে বাংলাদেশে বড় হচ্ছে স্টপ মোশন অ্যানিমেশনের ইন্ডাস্ট্রি।

বর্তমানে স্টপ মোশন অ্যানিমেশন শুধু একটি বিনোদনের মাধ্যম নয়, বরং একটি সৃজনশীল অভিব্যক্তির প্ল্যাটফর্ম– যা প্রাচীন কারিগরি থেকে শুরু করে আধুনিক প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে চলেছে। যার ফলে বেড়েছে উপার্জনের ক্ষেত্র। 

অমিত বলেন, "পটচিত্র, নকশিকাঁথা, টেপাপুতুল এগুলোর প্রতি মানুষের আকর্ষণ বেশি। আমরা এসব ফর্মে স্টপ মোশন অ্যানিমেশনের কাজগুলো নিয়ে আসছি। এখানে এআই শুধু যে ডিজিটাল আর্টিস্টরাই সুবিধা পাচ্ছে, তা নয়; বরং বিভিন্ন পেশার মানুষ যেমন– রিক্সা আর্টিস্ট, নকশিকাঁথার কারিগর সবাই কাজের সুবিধা পাচ্ছে।"

চলছে পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ।

স্টপ মোশন অ্যানিমেশন নিয়ে ভবিষ্যতে স্কুল চালু করার ইচ্ছা আছে ওগোপোগো অ্যানিমেশন স্টুডিওর। তৈরি করতে চায় শর্টফিল্ম এবং খেলনার নতুন ভাণ্ডার।

তবে কথা প্রসঙ্গে বার বার অমিত উল্লেখ করেন ধৈর্য্যের কথা। অমিতের মতে, "ধৈর্য্য এবং ইচ্ছাই আসলে স্টপ মোশন অ্যানিমেশনের মূল রেসিপি। ডিজিটাল অ্যানিমেশনও মজার, তবে সেখানে প্রাণ থাকে না। স্টপ মোশন অ্যানিমেশনে হাতে ধরে কাজ হয়, এজন্য এ ধরনের কাজে প্রাণ খুঁজে পাওয়া যায়।"


ছবি: সুস্মিতা চক্রবর্তী মিশু/টিবিএস 

Related Topics

টপ নিউজ

অ্যানিমেশন / স্টপ মোশন / ফিচার / কার্টুন

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক: নির্বাচন নিয়ে বাদানুবাদে জড়ায় বিএনপি ও এনসিপি
  • সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য সুখবর: ১০–১৫ শতাংশ বিশেষ সুবিধা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি, কার্যকর ১ জুলাই
  • ‘একটি ফুলকে বাঁচাব বলে’ গানের শিল্পী আপেল মাহমুদ প্রমাণ দিলেন তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা
  • ১৮ মাসের প্রস্তুতি, রাশিয়ায় ড্রোন পাচার: যেভাবে রুশ বিমানঘাঁটিতে ইউক্রেনের দুঃসাহসিক হামলা
  • জাতীয় গ্রিডে আসতে চলেছে রূপপুরের বিদ্যুৎ

Related News

  • বাটি ছাঁট থেকে রোনাল্ডো কাট: সেলুনগুলো যেভাবে বদলে যাচ্ছে জেন্টস পারলারে
  • ঈদের সাজগোজ থেকে খাবার; আগের রাতে মায়ের জাদুতেই ঈদ আনন্দ পায় পূর্ণতা
  • ঈদ কার্ড: হারিয়েও ফিরে আসে বারবার
  • বিশ্ব ভ্রমণের বিরল অর্জনের পথে নাজমুন নাহার  
  • দ্য থ্রেড স্টোরি: স্বল্প দামে যেখানে ভাড়া পাবেন লাখ টাকার পোশাক!

Most Read

1
বাংলাদেশ

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক: নির্বাচন নিয়ে বাদানুবাদে জড়ায় বিএনপি ও এনসিপি

2
বাংলাদেশ

সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য সুখবর: ১০–১৫ শতাংশ বিশেষ সুবিধা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি, কার্যকর ১ জুলাই

3
বাংলাদেশ

‘একটি ফুলকে বাঁচাব বলে’ গানের শিল্পী আপেল মাহমুদ প্রমাণ দিলেন তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা

4
আন্তর্জাতিক

১৮ মাসের প্রস্তুতি, রাশিয়ায় ড্রোন পাচার: যেভাবে রুশ বিমানঘাঁটিতে ইউক্রেনের দুঃসাহসিক হামলা

5
বাংলাদেশ

জাতীয় গ্রিডে আসতে চলেছে রূপপুরের বিদ্যুৎ

The Business Standard
Top

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net

Copyright © 2022 THE BUSINESS STANDARD All rights reserved. Technical Partner: RSI Lab