ফিলিস্তিনের সমর্থনে মার্কিন পৃষ্ঠপোষকতায় দেওয়া পুরস্কার প্রত্যাখ্যান আদিবাসী কবি জাসিন্তা কেরকাট্টার

দ্য ওয়্যার এক প্রতিবেদনে জানায়, ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এবং রুম টু রিড ইন্ডিয়া ট্রাস্টের যৌথ উদ্যোগে দেওয়া ২০২৪ সালের 'রুম টু রিড ইয়ং অথর অ্যাওয়ার্ড'- নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন ভারতের আদিবাসী কবি ও সাংবাদিক জাসিন্তা কেরকাট্টা।
গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের মধ্যে ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে কেরকাট্টা এই পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেন।
শিশুতোষ কবিতা সংকলন 'জিরহুল'-এর জন্য তাকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। আগামী ৭ অক্টোবর ভারতের দিল্লিতে এই পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
কেরকাট্টা দ্য ওয়্যারকে বলেন, 'আমি দেখলাম রুম টু রিড ইন্ডিয়া ট্রাস্টও শিশুদের শিক্ষার জন্য বোয়িং কোম্পানির সঙ্গে সম্পৃক্ত। একই সময়ে অস্ত্রের ব্যবসা ও শিশুদের যত্ন কীভাবে চলতে পারে, যখন একই অস্ত্রের আঘাতে শিশুদের পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে?'
অ্যারোস্পেস কোম্পানি বোয়িং ৭৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পৃক্ত। সরকার অনুমোদিত বাণিজ্যিক চুক্তির অংশ হিসেবে ইসরাইলকে অস্ত্র সরবরাহ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
গত মে মাসে প্রকাশিত এনপিআর নেটওয়ার্কের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২১ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ইসরায়েলে বোমা ও গোলাবারুদ সরবরাহের শীর্ষ স্থানাধিকারী ছিল বোয়িং।
গত বছরের আগস্টে ভারতের সাবেক নারী ও শিশু কল্যাণমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি উত্তর প্রদেশের আমেঠি জেলায় 'সাক্ষরতা কর্মসূচি' নামে একটি উদ্যোগে রুম টু রিড ইন্ডিয়া এবং বোয়িংয়ের অংশীদারিত্বের সূচনা করার কথা ঘোষণা করেছিলেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, গত ২৬ সেপ্টেম্বর ইসরায়েল জানিয়েছে যে এশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলে তাদের চলমান সামরিক বাহিনীকে সহায়তা দিতে তারা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ৮৭০ কোটি ডলারের সহায়তা প্যাকেজ পেয়েছে।
দ্য মূকনায়ক এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, কেরকাট্টা এই পুরস্কার গ্রহণ না করার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে প্রশ্ন করেছেন, 'যখন বড়রা শিশুদের জন্য একটি উন্নত বিশ্ব গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন না, তখন এই পুরস্কারের প্রকৃত মূল্য কী?'
গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে আগ্রাসন চালিয়ে ১২০০ জনকে হত্যা ও ২০০ জনেরও বেশি জিম্মি করার পর গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান শুরু হয়। এরপর থেকে গাজায় নজিরবিহীন বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। এসব হামলায় ১৬ হাজার ৫০০ শিশুসহ ৪১ হাজার ৬১৫ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
গত সেপ্টেম্বরে তেল আবিবও দক্ষিণ লেবাননে বিমান হামলা শুরু করে এবং গতকাল মঙ্গলবার দেশটিতে স্থল অভিযান শুরু করে।
বার্তা সংস্থা এপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লেবাননে ইসরায়েলের আগ্রাসনে গত দুই সপ্তাহে এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
ভাবানুবাদ: তাবাসসুম সুইটি