Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

নিউমিজম্যাটিস্ট কিংবা নোটাফিলিস্ট: একজন মুদ্রা শিকারীর গল্প 

অর্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান নেটক্রেডিটের সূত্রে জানা যায়, পৃথিবীর সবগুলো দেশের ব্যাংকনোটের প্রায় ৭০ শতাংশই দেশটির রাজা/রানী, সরকারপ্রধান, রাজনীতিবিদ অথবা সামরিক নেতা। এরপরেই রয়েছে কবিদের অবস্থান (৫.১৩%)। বসনিয়া অ্যান্ড হার্জেগোভিনার আইন অনুযায়ী, তাদের দেশের নোটে লেখক বা কবিদের পোর্ট্রেট থাকা বাধ্যতামূলক। এদিকে উজবেকিস্তানের ব্যাংকনোটের অর্ধেকাংশেই তাদের দেশের বিজ্ঞানীদেরকে সম্মান দেওয়া হয়েছে, ভ্যাটিক্যান এবং আইসল্যান্ডের নোটে সবচেয়ে সম্মানিত ধর্মীয় নেতারা।
নিউমিজম্যাটিস্ট কিংবা নোটাফিলিস্ট: একজন মুদ্রা শিকারীর গল্প 

ফিচার

উসামা রাফিদ
19 May, 2023, 05:15 pm
Last modified: 19 May, 2023, 08:49 pm

Related News

  • নতুন নোট ছাড়েনি বাংলাদেশ ব্যাংক, এবার ঈদ সালামির দাম চড়া
  • বিশ্বের শীর্ষ ১০ শক্তিশালী মুদ্রা
  • টাকায় কি আবার বন্যপ্রাণীর ছবি ফিরিয়ে আনা উচিত?
  • শেখ মুজিবের ছবি বাদ দিয়েই নতুন করে করা হতে পারে ব্যাংক নোটের নকশা
  • ১২ দেশের মুদ্রা, ৯ পাসপোর্ট নিয়ে পালাচ্ছিলেন সালমান, আনিসুল: পুলিশ

নিউমিজম্যাটিস্ট কিংবা নোটাফিলিস্ট: একজন মুদ্রা শিকারীর গল্প 

অর্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান নেটক্রেডিটের সূত্রে জানা যায়, পৃথিবীর সবগুলো দেশের ব্যাংকনোটের প্রায় ৭০ শতাংশই দেশটির রাজা/রানী, সরকারপ্রধান, রাজনীতিবিদ অথবা সামরিক নেতা। এরপরেই রয়েছে কবিদের অবস্থান (৫.১৩%)। বসনিয়া অ্যান্ড হার্জেগোভিনার আইন অনুযায়ী, তাদের দেশের নোটে লেখক বা কবিদের পোর্ট্রেট থাকা বাধ্যতামূলক। এদিকে উজবেকিস্তানের ব্যাংকনোটের অর্ধেকাংশেই তাদের দেশের বিজ্ঞানীদেরকে সম্মান দেওয়া হয়েছে, ভ্যাটিক্যান এবং আইসল্যান্ডের নোটে সবচেয়ে সম্মানিত ধর্মীয় নেতারা।
উসামা রাফিদ
19 May, 2023, 05:15 pm
Last modified: 19 May, 2023, 08:49 pm

'সোনা,' তালুর নিচে আবার ঢাকল জিনিসটা কিশোর।
'সোনা!' চেঁচিয়ে উঠল বব।
'চুপ! আস্তে! শুনছে!'
'ঠাট্টা করছ!' বিশ্বাস করতে পারছে না বব।
'ঠাট্টা নয়, সত্যি!'
'কী তাহলে? টাকা? ডলারখানেক হবে?'
'টাকাই, তবে এক ডলার নয়, অনেক। আর নিউমিজম্যাটিস্টরা পেলে তো লুফে নেবে, চাইলে কয়েকশো ডলারও দিয়ে দিতে পারে, যদি তেমন পুরানো হয়।'
'নিউ... নিউ...'
'নিউমিজম্যাটিস্ট।'
'হ্যাঁ, নিউমিজ... তা ওরা আবার কারা?'
'মুদ্রা বেচাকেনা করে যারা, তাদেরকে নিউমিজম্যাটিস্ট বলে।'

বিগলস সিরিজের ১৩ নম্বর বই 'বিগলস ফ্লাইস ওয়েস্ট' থেকে রূপান্তর করে তিন গোয়েন্দার 'জলদস্যুর দ্বীপ' লিখেছিলেন রকিব হাসান। এ গল্পের শুরুতে এভাবেই 'নিউমিজম্যাটিস্ট' শব্দটার সাথে পরিচয় ঘটেছিল অনেকের। তবে কেবল বেচাকেনাই নয়, মুদ্রা সংগ্রাহকদেরও ডাকা হয় একই নামে। অক্সফোর্ড ডিকশনারি অনুযায়ী, ইংরেজি ভাষায় প্রথম শব্দটার ব্যবহার হয়েছিল ১৭৯৯ সালে। তবে শখ বা পেশা হিসেবে নিউমিজম্যাটিকস বা মুদ্রা সংগ্রহের ধারণা আরও পুরনো। বাংলাতেও নিউমিজম্যাটিকসের গালভরা কিছু নাম আছে। মদন মোহন সাহা তার 'মুদ্রা ও মানব সভ্যতা' বইয়ে উল্লেখ করেছেন এমনই কিছু নাম: 'মুদ্রাতত্ত্ব', 'মুদ্রাবিদ্যা', 'মুদ্রাবিজ্ঞান'।

আধুনিক যুগে এসে বিনিময়ের জন্য মুদ্রা বা কয়েনের তুলনায় কাগুজে ব্যাংকনোটই আরও বেশি প্রচলিত হয়ে ওঠে। কারণ? প্রথমত, এর ওজন কম, ফলে সহজে বহনযোগ্য। দ্বিতীয়ত, এটি তৈরি করতে খরচ কম। এবং তৃতীয়ত, একসাথে প্রচুর নোট তৈরি করা যায়। কাগজের তৈরি ব্যাংকনোট প্রচলন হওয়ার পর তাই এটিও সংগ্রহ করা শুরু হয়। নিউমিজম্যাটিকসের একটি শাখা হিসেবে গড়ে ওঠে নোটাফিলি, সংগ্রাহকদেরকে ডাকা হতে থাকে 'নোটাফিলিস্ট' নামে।

নিউমিজম্যাটিস্ট কিংবা নোটাফিলিস্ট, দেশে-বিদেশে মুদ্রা সংগ্রহ করার এই প্রবণতা সময়ের সাথে সাথে আরও বেড়েছে। মুদ্রা বেচাকেনা করেন যারা, তারা তো বটেই, শখের বশবর্তী হয়ে মুদ্রা সংগ্রাহকদের সংখ্যাও কম নয়। তেমনই একজন তৌহিদুল ইসলাম সৌরভ। ২০১৭ সালে মাত্র ১৬ বছর বয়সেই সংগ্রহ করে ফেলেন পৃথিবীর সমস্ত স্বাধীন দেশের মুদ্রা অথবা ব্যাংকনোট। এত অল্প বয়সেই কীভাবে এই বিশাল সংগ্রহ গড়ে তুললেন তিনি? একজন মুদ্রা শিকারী হিসেবে কেমন ছিল তার পথচলা? ঘুরে দেখা যাক তার বিশাল সংগ্রহের দুনিয়া।

অ্যালবাম হাতে সৌরভ; ছবি: ইশতিয়াক আবরার

সংগ্রহের শুরু

সৌরভের জন্ম ও বেড়ে ওঠা রাজধানী ঢাকায়। পড়াশোনা করেছেন মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এবং নটরডেম কলেজে। এরপর তুরস্ক সরকারের ফুল-ফান্ডেড বৃত্তি নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে তুরস্কের সাকারিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক করছেন, যার পরবর্তী সেমিস্টারগুলো পড়বেন ইউরোপে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ইরাসমাস স্কলারশিপ নিয়ে। কেবল মুদ্রা সংগ্রহই নয়, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে বিশেষ আগ্রহী এই সংগ্রাহক বলতে পারেন টার্কিশ, জার্মান, ফ্রেঞ্চ, ডাচ, আজারবাইজানিসহ ৮টিরও বেশি ভাষা।

কথায় বলে, 'Morning Shows the Day।' সৌরভের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম হয়নি, ক্লাস ওয়ানে পড়ার সময়েই প্রথম তার ব্যাংকনোট নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয়। সৌদি আরবে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ২০০৭ সালে ঢাকাতে তার বাসায় এসেছিলেন তার এক দুঃসম্পর্কের আত্মীয়। তার হাতেই প্রথম বিদেশি নোট দেখতে পান তিনি। সৌদি রিয়াল দেখে তার মনে হয়েছিল, 'আমারও যদি এরকম বিদেশি নোট থাকতো!' তার সেই আগ্রহ দেখেই সৌদি এক রিয়ালের নোট উপহার পেয়ে যান তিনি। সেখান থেকেই শুরু।

সংগ্রহের প্রথম সৌদি আরবের ১ রিয়ালের নোট; ছবি: ইশতিয়াক আবরার

'এরপর প্রতিবেশী আরেকজন আমাকে মালয়েশিয়ান রিঙ্গিটের একটা নোট দেন। ২০১০ সালে আমার নানাভাই হজ্ব করে দেশে ফেরেন। সবাই যখন সৌদি থেকে আনা আতর, জায়নামাজ, খেজুর নিয়ে ব্যস্ত, আমি তখন সৌদি রিয়ালের খোঁজে মত্ত। নানার কাছ থেকে ১ আর ৫ রিয়ালের নোট পেয়েছিলাম, এখনো আছে সেগুলো। তখনও আমার বয়স অনেক কম। ব্যাংকনোটের সংগ্রহ গড়ে তুলবো এরকম কোনো ইচ্ছা বা উদ্দেশ্য তখনো আমার মাথায় চাড়া দিয়ে ওঠেনি। তবে শুরুটা হয়েছিল এভাবেই।'

এরপর বেশ কয়েকবছর নোট সংগ্রহের ইচ্ছা সুপ্তাবস্থাতেই ছিল। ২০১২ সালে ফকিরাপুলে বেশ কিছু মানি এক্সচেঞ্জের দোকান চোখে পড়ে সৌরভের। সেখান থেকে ভারতীয়, পাকিস্তানি এবং নেপালি রুপি, ভূটানের গুলট্রাম, কম্বোডিয়ার রিয়েল আর ফিলিপাইনের পেসোর মতো ব্যাংকনোট তার সংগ্রহে যুক্ত হয়।

তবে সংগ্রহের চাকা দ্রুত ঘুরতে শুরু করে ২০১৫ সাল থেকে, ক্লাস নাইনে পড়ার সময়। সে সময় ফেসবুকে থাকা বিভিন্ন মুদ্রা বেচাকেনার গ্রুপ থেকে বেশ কয়েকজন নিউমিজম্যাটিস্ট-নোটাফিলিস্টের সাথে পরিচিত হন তিনি।

১৯০২ সালের অস্ট্রো-হাঙ্গেরিয়ান সাম্রাজ্যের ১০০০ ক্রোনার নোট; ছবি: ইশতিয়াক আবরার

'আর এরপর থেকেই আমার সংগ্রহ বাড়তে থাকে, পৃথিবীর আনাচেকানাচে ছড়িয়ে থাকা বহু দেশের নোট আর কয়েন আমার সংগ্রহে যোগ হতে থাকে। তাদের কাছ থেকে পাওয়া নোট ছাড়াও প্রতি সপ্তাহে শুক্রবার গুলিস্তানের জিপিও-তে মুদ্রা বেচাকেনার নিলাম বসতো। বিভিন্ন  সংগ্রাহক তাদের সংগ্রহ প্রদর্শন করতেন, বিনিময় করতেন। সেখান থেকেও প্রচুর নোট সংগ্রহ করেছি। এভাবে ২০১৭ সালে এসে পৃথিবীর সব দেশের ব্যাংকনোট অথবা কয়েন আমার সংগ্রহে জমা হয়।'

মুদ্রা সংগ্রহের চ্যালেঞ্জ

তবে এই বিশাল সংগ্রহ যে হঠাৎ করে হয়েছে এমন নয়, এজন্য অনেক চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে হয়েছে সৌরভকে। অর্থের এই সাম্রাজ্য গড়ে তুলতে প্রয়োজন ছিল অর্থও, আর সেটিই ছিল সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। সৌরভের ভাষায়, 'তখন আমার কোনো আয় নেই। টিফিনের টাকা, ঈদের সালামি জমিয়ে নোটগুলো কিনতে হতো। কলেজে ওঠার পরে টিউশনি শুরু করলে সংগ্রহ করা কিছুটা সহজ হয়। আর এখন তুরস্কে যাওয়ার পর সংগ্রহ করা আরও বেড়েছে। সেখানকার অনেক সংগ্রাহকের সাথে ভালো পরিচয় হয়েছে। তাদের কাছ থেকে কোনো নোট বা কয়েন কেনার পর তারা অতিরিক্ত আরও কিছু নোট বা কয়েন আমাকে উপহার হিসেবে দিয়েছেন।'

কেবল অর্থই নয়, ব্যাংকনোট আর কয়েন সংগ্রহের আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ হলো বাংলাদেশে সেই মুদ্রার বিরলতা। সাধারণত কোনো দেশের অর্থ তখনই পাওয়া যায়, যখন সে দেশ কেউ ভ্রমণ করে। সৌরভ জানান, 'ভ্রমণকারী আসার সময় সাথে করে সেগুলো নিয়ে আসেন। ফলে এশিয়া, ইউরোপের কারেন্সি পাওয়া কঠিন কিছু নয়। একটু খোঁজখবর করলেই পাওয়া যায়। কিন্তু এমন কিছু দেশ বা অঞ্চল আছে, যেসব দেশ থেকে কয়েন বা নোট পাওয়া খুবই কঠিন। যেমন কমোরোস, মালাউই, বতসোয়ানার মতো আফ্রিকার কিছু দেশ, ভানুয়াতুর মতো প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশ কিংবা ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের দেশগুলো। পকেটে যত টাকাই থাকুক না কেন, এগুলো যদি কারোর কাছে না থাকে, তবে এগুলো পাওয়া খুবই কঠিন। তাছাড়া দুর্লভত্বের কারণে এর দামও বেড়ে যায়।'

বতসোয়ানা, ভানুয়াতু এবং নিকারাগুয়ার নোট; ছবি: ইশতিয়াক আবরার

আবার, তুরস্কের সংগ্রাহকদের কাছে বাংলাদেশ বা এ অঞ্চলের দেশগুলোর মুদ্রা পাওয়া তুলনামূলক কঠিন। তাই তাদের কাছে এই অঞ্চলের মুদ্রার বিনিময়ে তুরস্কে সহজলভ্য অঞ্চলগুলোর মুদ্রা সহজেই বিনিময় করা যায় বলেও জানান সৌরভ।

জাল বা নকল নোট কয়েন সংগ্রাহকদের আরেকটি বড় মাথাব্যথার কারণ। ইন্টারনেটের প্রসার বাড়ার সাথে সাথে নকল নোট-কয়েনের প্রসারও বাড়ছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোতে যে সেট আকারে সংগ্রহ বিক্রি হয়, তার মধ্যে প্রায়ই নকল জিনিস থাকে। ফলে সেগুলো থেকে দূরে থাকার পরামর্শও দেন তিনি।

'বাংলাদেশি বেশ কিছু নকল নোট পেয়েছি আমি, তবে বিদেশিগুলোর ক্ষেত্রে এ ধরনের কিছু ঘটেনি। কেবল একটি নকল মুদ্রা পেয়েছিলাম। কয়েকটা কয়েন আসল কি না তা নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় আরেকজন অভিজ্ঞ সংগ্রাহকের কাছে নিয়ে গিয়েছিলাম সেগুলো। পরে তিনি তার ইকুইপমেন্ট দিয়ে পরীক্ষা করে দেখেন একটি কয়েনের ওপরের ধাতব অংশটি নকল।'

সংরক্ষণ এবং মূল্যায়ন

নিউমিজম্যাটিস্ট এবং নোটাফিলিস্টদেরকে ব্যাংকনোট এবং কয়েন সংগ্রহ করে রাখলেই হয় না, বরং সেগুলোর যথাযথ সংরক্ষণের দিকেও নজর দিতে হয়। অন্যথায়, সেগুলো নষ্ট হতে শুরু করে, যার ফলে একদিকে সেগুলোর আর্থিক মূল্য যেমন কমে যায়, তেমনি সংগ্রহ হিসেবেও এর মূল্য কমে যায়। সংগ্রহ করার জন্য সবচেয়ে সুন্দর ও ভালো মানের জিনিসটিই সবাই সংগ্রহ করতে চায়, ব্যাংকনোট এবং কয়েনের ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম ঘটে না।

গুয়াতেমালার ইউএনসি নোট; ছবি: ইশতিয়াক আবরার

ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংকনোট সোসাইটির মানদণ্ড অনুযায়ী, ব্যাংকনোটের অবস্থা বা কন্ডিশন দেখে নোটগুলোকে বেশ কয়েকটি গ্রেডে ভাগ করা হয়। এরমধ্যে সবচেয়ে ভালো মানের নোট, যেটিতে কোনো ভাঁজ বা কাটাছেড়া নেই, কোনো দাগ নেই, একেবারেই নিখুঁত, সেগুলোকে বলা হয় আনসার্কুলেটেড বা ইউএনসি (UNC) নোট। স্বাভাবিকভাবেই এই নোটগুলোর দাম অন্য গ্রেডের নোটের চেয়ে তুলনামূলকভাবে বেশি হয়। ইউএনসি নোটের পরেই আছে 'অ্যাবাউট আনসার্কুলেটেড (AUNC)' নোট, যেগুলোর গায়ে হয়তো সামান্য অস্পষ্ট দাগ বা মাঝখানে সামান্য ভাঁজ হয়ে আছে। এভাবে মোট ৯টি ক্যাটাগরিতে নোটগুলোকে ভাগ করা হয়।

ইউএনসি এবং এইউএনসি নোটে যেন বাড়তি ভাঁজ বা দাগ না পড়ে, এবং অন্যান্য গ্রেডের নোটগুলোও যেন পরবর্তী গ্রেডে নেমে না যায়, সেজন্য সংগ্রাহকরা বাড়তি সুরক্ষার ব্যবস্থা নেন। এজন্য সবচেয়ে প্রচলিত পদ্ধতি হলো নোট ও কয়েনের জন্য তৈরি বিশেষ ধরনের অ্যালবাম। এই অ্যালবামগুলোও বিভিন্ন কোয়ালিটির হয়ে থাকে। সৌরভ তার কাছে থাকা অ্যালবামগুলো দেখিয়ে বলেন, 'ভারতীয় অ্যালবামগুলো তুলনামূলক সস্তা। সংগ্রহের প্রথম দিকে বাজেটের সমস্যা থাকায় এগুলো দিয়েই কাজ চালিয়ে নিতে হয়েছে। অন্যদিকে পরে কেনা থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর বা ইউরোপের তৈরি অ্যালবামগুলো কিছুটা দামি। এগুলোর ওপরে থাকা অতিরিক্ত প্লাস্টিক ফয়েল এগুলোকে আরও ভালোভাবে সুরক্ষা দেয়।'

ব্যাংকনোট এবং কয়েন সংরক্ষণ করা অ্যালবাম; ছবি: ইশতিয়াক আবরার

কেবল গ্রেডিংই নয়, নোট বা কয়েনের দাম আরও বেশ কিছু কারণে বাড়তে পারে। এটি ব্যাখ্যা করার একটি আদর্শ উদাহরণ হতে পারে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম পাঁচ টাকার নোট। সৌরভ জানান, 'প্রথমত, এই ডিজাইনের নোট মাত্র ১০ মাস ছাপা হয়েছিল। সে হিসেবে বাংলাদেশের সবচেয়ে কম সময় ধরে চলা নোটগুলোর মধ্যে এটি একটি, যেটি একে দুর্লভ করে তুলেছে। দ্বিতীয়ত, এই সিরিজের নোটের অনন্য একটি বিষয় হলো এই নোটের প্রিফিক্স (টাকার নম্বরের আগে বর্ণমালাকে প্রিফিক্স বলা হয়) হলো ভগ্নাংশ: ক/১১। পরবর্তীতে ছাপানো কোনো নোটেই এরকম ভগ্নাংশ আকারে প্রিফিক্স দেখা যায়নি। তৃতীয়ত, এই সিরিজের নোটের নাম্বার ছয় অঙ্কের, কিন্তু বর্তমানে সব নোটেই নাম্বার থাকে সাত অঙ্কের। এসব কারণে এই সিরিজের নোটগুলোকে একটু আলাদাভাবেই মূল্যায়ন করা হয়।'

বাংলাদেশের প্রথম ৫ টাকার নোট; ছবি: ইশতিয়াক আবরার

সংগ্রহের ধরন

নিউমিজম্যাটিস্ট এবং নোটাফিলিস্টদের সবাই যে একই ধরনের সংগ্রহ করেন এমন নয়। কেউ কেউ সব ধরনের নোট বা কয়েন সংগ্রহ করেন, কেউ কেউ আবার নির্দিষ্ট ধরনের নোট সংগ্রহ করেন। সৌরভ জানান যে তার পরিচিত বেশ কয়েকজন সংগ্রাহকের এ ধরনের নির্দিষ্ট নোট বা কয়েন সংগ্রহের ঝোঁক রয়েছে। যেমন: কোনো কোনো সংগ্রাহক কেবল নির্দিষ্ট ডিনোমিনেশনের অর্থ সংগ্রহ করেন। ধরা যাক তিনি ১ ডিনোমিনেশনের কারেন্সির সংগ্রাহক, তাই তিনি ঘুরেফিরে ১ রুপি, ১ ডলার, ১ ইউরো কিংবা ১ ইউয়ানের মধ্যেই ঘুরপাক খাবেন। আবার অনেক সংগ্রাহক আছেন, যারা নির্দিষ্ট কোনো থিমের নোট বা কয়েন সংগ্রহ করেন। যেমন: পাখির ছবি রয়েছে এমন নোট বা কয়েনই অনেকে সংগ্রহে রাখতে চান।

এভাবে বিভিন্ন ক্যাটাগরিভেদে অনেক নিউমিজম্যাটিস্ট-নোটাফিলিস্ট তাদের সংগ্রহকে আরও কেন্দ্রীভূত করেন। যেমন: সৌরভ এখন অটোমান, রাশিয়ান সাম্রাজ্য, জার্মান এবং অস্ট্রো-হাঙ্গেরিয়ান সাম্রাজ্যের মতো আধুনিক সাম্রাজ্যগুলোর ব্যাংকনোট সংগ্রহে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। অনেক সংগ্রাহকই আবার ঐতিহাসিক সময়ের ওপর নজর দেন। যেমন: কেউ কেউ বিংশ শতাব্দী অথবা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পূর্ব নোটকেন্দ্রিক সংগ্রহ গড়ে তোলেন। আবার, নোট তৈরির উপকরণ, যেমন: কাগজ, পলিমার বা প্লাস্টিক-কে কেন্দ্র করেও অনেক সংগ্রাহক তাদের সংগ্রহ সাজান।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধকালীন বার্লিন থেকে ছাপানো ২০ মার্কের নোট; ছবি: ইশতিয়াক আবরার

সংগ্রহের ধরনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো ব্যাংকনোটের সিরিয়াল নম্বর। অনেক সংগ্রাহকই বিশেষ কিছু সিরিয়ালের নাম্বারের নোটকে আরও বিশেষ মনে করেন। এরমধ্যে একটি ধরন হলো রাডার নাম্বার, যেখানে নাম্বারগুলো প্যালিন্ড্রোমিক হয়ে থাকে (যেমন: ০১২২১০ অথবা ৫৪৫৫৪৫)। এছাড়াও সলিড নাম্বার (১১১১১১, ৪৪৪৪৪৪) কিংবা ল্যাডার নাম্বার (১২৩৪৫৬, ৮৭৬৫৪৩) দেখেও সংগ্রহ করে থাকেন অনেকে।

সংগ্রহশালার অন্দরে

'কিছু কিছু দেশের একটি মুদ্রা অথবা একটি ব্যাংকনোটই পাওয়া কঠিন। এরকম ১৫-২০টি দেশ আছে, যাদের কেবল মুদ্রা অথবা ব্যাংকনোট আমার সংগ্রহে আছে। বাকি সবগুলো স্বাধীন দেশের মুদ্রা এবং ব্যাংকনোট, দুটোই রয়েছে আমার কাছে,' জানান সৌরভ।

ব্যাংকনোট এবং কয়েনের অ্যালবামগুলোর পাতা উল্টিয়ে বেশ কিছু বিরল ও আগ্রহোদ্দীপক নোটের সন্ধান পাওয়া গেল। সৌরভের সংগ্রহে থাকা সবচেয়ে পুরনো ব্যাংকনোটের বয়স প্রায় ১২৫ বছর। ১৮৯৮ সালে ছাপানো জার রাশিয়ার ১ রুবলের নোটটি আকারেও বেশ বড়। সংগ্রহে থাকা কয়েনটির বয়স আরও বেশি। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আধা পাইসের কয়েনটি বের হয়েছিল ১৮৬২ সালে। এছাড়াও প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন বার্লিন থেকে ছাপানো দুই মার্কের নোট এবং ১৯০২ সালের অস্ট্রো-হাঙ্গেরিয়ান সাম্রাজ্যের ১০০০ ক্রোনার নোটও সংগ্রহের অন্যতম বিরল দুই নোট।

১৮৯৮ সালের রুশ জার আমলের ১ রুবলের নোট; ছবি: ইশতিয়াক আবরার

বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া, নাম পরিবর্তন হওয়া কিংবা একীভূত হওয়া দেশের নোট সংগ্রহ করাও বেশ একটি চ্যালেঞ্জিং বিষয়, কারণ সে দেশের নামে নতুন করে নোট ছাপানো হয় না। এরকম দেশের তালিকায় রয়েছে যুগোশ্লাভিয়া, জায়ার এবং দক্ষিণ ভিয়েতনাম। তিনটি দেশের ব্যাংকনোটই একসময় সৌরভের কাছে থাকলেও এখন কেবল যুগোশ্লাভিয়ার ৫০০০ দিনারের নোটটিই সংগ্রহে রয়েছে।

এ বিষয়ে সৌরভ জানান, "আগে এ নোটগুলোর ঐতিহাসিক মূল্য বুঝে উঠতে পারিনি। তাই এ নোটগুলোর পরিবর্তে অন্যান্য সংগ্রাহকদের কাছ থেকে অন্য স্বাধীন দেশের নোট এক্সচেঞ্জ করেছিলাম। তবে ঐ নোটগুলো আবারো সংগ্রহ করবো। এখন এ ধরনের নোটগুলোই খুঁজছি।"

স্বাধীন দেশ নয় অথবা বিচ্ছিন্নতাবাদী দাবি করা দেশ, এমন দুয়েকটি ব্যাংকনোট ও কয়েনও আছে সংগ্রহ তালিকায়। ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের ওলন্দাজদের অধীনে থাকা অরুবা কিংবা সোমালিয়া থেকে আলাদা হতে চাওয়া মুসলিম অধ্যুষিত সোমালিল্যান্ড এর অন্তর্ভুক্ত। আগ্রহের বিষয় হলো, সোমালিল্যান্ডের নোটটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত কোনো নোট নয়।

প্রতিটি কয়েন বা ব্যাংকনোটের সাথেই সে দেশের সে সময়ের ইতিহাস জড়িত। তবে কিছু কিছু নোটের ঐতিহাসিক গুরুত্ব সে সময়ের রাজনৈতিক পটভূমির জন্য আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। এরকমই একটি নোট হলো পাকিস্তানের উর্দু ভাষায় লেখা নোটটি। ছয় দফা আন্দোলনের আগে স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তান কর্তৃপক্ষের নোটগুলো ছিল সম্পূর্ণ উর্দুতে। কিন্তু ছয় দফা আন্দোলনের পর নোটে বাংলা ভাষাও যুক্ত করা হয়।

সম্পূর্ণ উর্দু ভাষায় এবং বাংলা ভাষা যোগ করা পাকিস্তান আমলের নোট; ছবি: ইশতিয়াক আবরার

ব্যাংকনোট এবং দেশের পরিচয়

কোনো দেশের ব্যাংকনোট থেকেই সে দেশের পরিচয়, সংস্কৃতি, স্থাপত্যসহ নানা বিষয় সম্পর্কে জানা যায় বলে জানান সৌরভ। 'বাংলাদেশ, ভিয়েতনামের মতো কৃষিপ্রধান দেশগুলোতে সে দেশের কৃষিকে তুলে ধরা হয়েছে। বাংলাদেশের ২০ টাকা আর ভিয়েতনামের ১০০০ ও ৫০০০ ডংয়ের নোটের উল্টো পাশ দেখলেই সহজেই বোঝা যাবে। আবার, সাব-সাহারান আফ্রিকার বেশিরভাগ দেশের নোটেই সে অঞ্চলের পশু-পাখিগুলোকে তুলে ধরা হয়েছে। এ থেকে ঐ অঞ্চলের সমৃদ্ধ প্রাণীজগৎ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।'

'এছাড়াও, যদি ক্যারিবিয়ান এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ রাষ্ট্রগুলোর নোট লক্ষ্য করা হয়, দেখা যাবে যে এ দেশগুলোর প্রায় সবগুলোর নোটই পলিমার দিয়ে তৈরি। ঐ অঞ্চলের আর্দ্র আবহাওয়ার কারণে পলিমার নোটগুলো আরও বেশি টেকসই। আবার, যদি বাংলাদেশের দিকে ফেরা হয়, দেখা যাবে যে প্রায় সবগুলো নোটের পেছনেই মসজিদের ছবি আছে। এ থেকে প্রথম দেখায় যে কেউ অনুমান করতে পারবে বাংলাদেশ একটি মুসলিমপ্রধান দেশ। মসজিদগুলোর ডিজাইন দেখে বাংলাদেশের স্থাপত্য সম্পর্কেও কিছুটা আঁচ করা যায়।'

সৌরভের মতে, নোটের মাধ্যমে সে দেশের তৎকালীন আর্থ-সামাজিক অবস্থাও বোঝা যায়। এর উদাহরণ দিতে গিয়ে তার কাছে থাকা দুটো ইরাকের নোটের উল্লেখ করেন তিনি। 'আমার কাছে ইরাকের দুটো নোট রয়েছে। একটা যুক্তরাষ্ট্রের ইরাক আক্রমণের পূর্বকালীন ২৫ দিনারের নোট, অন্যটি আক্রমণ পরবর্তী ২৫০ দিনারের নোট। অদ্ভুত ব্যাপার হলো, ২৫০ দিনারের নোট ২৫ দিনারের চেয়ে দশগুণ বড় ডিনোমিনেশনের নোট হলেও আকার ছোট। তাছাড়া কাগজের মানও ততটা ভালো নয়। এর কারণ যুদ্ধের পর মুদ্রাস্ফীতি শুরু হলে ইরাককে বাধ্য হয়েই কাগজ বাঁচানোর জন্য আকার এবং মান, দুটোই কমাতে হয়েছে।'

ইরাক যুদ্ধের আগে ও পরে ইরাকের নোট; ছবি: সৌরভ তৌহিদ

দেশের শাসক থেকে শুরু করে রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক কিংবা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদেরকে তুলে ধরার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম ব্যাংকনোট। সৌরভ তার সংগ্রহে থাকা ব্যাংকনোটগুলো থেকে উদাহরণ দিয়ে বলেন, 'দেশের স্বাধীনতার সাথে জড়িয়ে থাকা ব্যক্তিদেরকে সম্মান জানাতে অনেকগুলো দেশই তাদের ব্যাংকনোটগুলোতে তাদের জাতীয় নেতাদের পোর্ট্রেট ব্যবহার করে। যেমন: ভারতের রুপিতে মহাত্মা গান্ধী, ভিয়েতনামের ডংয়ে হো চি মিন, চীনের ইউয়ানে মাও সেতুং, দক্ষিণ আফ্রিকার র‍্যান্ডে নেলসন ম্যান্ডেলা, ভেনিজুয়েলার বলিভারে সাইমন বলিভার কিংবা ঘানার সেডিতে 'দ্য বিগ সিক্স' (দেশটির স্বাধীনতার সাথে জড়িত প্রধান ছয় নেতা)-এর ছবি রয়েছে।'

চে গেভারার ছবিযুক্ত কিউবার ৩ পেসোর নোট; ছবি: ইশতিয়াক আবরার

অর্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান নেটক্রেডিটের সূত্রে জানা যায়, পৃথিবীর সবগুলো দেশের ব্যাংকনোটের প্রায় ৭০ শতাংশই দেশটির রাজা/রানী, সরকারপ্রধান, রাজনীতিবিদ অথবা সামরিক নেতা। এরপরেই রয়েছে কবিদের অবস্থান (৫.১৩%)। এর অন্যতম প্রধান কারণ বসনিয়া অ্যান্ড হার্জেগোভিনার আইন অনুযায়ী, তাদের দেশের নোটে লেখক বা কবিদের পোর্ট্রেট থাকা বাধ্যতামূলক। এদিকে উজবেকিস্তানের ব্যাংকনোটের অর্ধেকাংশেই তাদের দেশের বিজ্ঞানীদেরকে সম্মান দেওয়া হয়েছে, ভ্যাটিক্যান এবং আইসল্যান্ডের নোটে সবচেয়ে সম্মানিত ধর্মীয় নেতারা।

নিউমিজম্যাটিস্টদের ভবিষ্যৎ

পৃথিবীর বেশ কিছু উন্নত দেশে নগদ অর্থের চেয়ে ডিজিটাল কারেন্সিই আরও বেশি প্রচলিত। প্রযুক্তির উন্নয়নের সাথে সাথে ভবিষ্যতে ব্যাংকনোটের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে কিনা তা জানতে চাইলে সৌরভ মাথা নাড়িয়েই বুঝিয়ে দেন এর সম্ভাবনা কম।

'কয়েনের চেয়ে ব্যাংকনোট সহজে বহনযোগ্য হওয়ায় মুদ্রার সে জায়গাটা কাগজের নোট দখল করে নিয়েছে। তবে মানুষ স্পর্শ করতে চায়, অনুভব করতে চায়। জার্মানির মতো বেশ কিছু উন্নত দেশেই নগদ অর্থ বেশি প্রচলিত। তাছাড়া ডিজিটাল কারেন্সির ঝুঁকি রয়েছে বেশ খানিকটা। হ্যাকিং বা অন্যান্য নিরাপত্তাজনিত সমস্যা রয়েছে। অবকাঠামোগত দিক থেকেও পৃথিবীর বহু দেশ পিছিয়ে রয়েছে, যেখানে ডিজিটাল কারেন্সি প্রতিস্থাপন করা বেশ সময়ের ব্যাপার। এসব কারণ হিসাব করলেও আমার মনে হয়, খুব দ্রুত দৃশ্যপট থেকে ব্যাংকনোট হারাবে না।'

ডেনমার্ক, জাপান ও নরওয়ের ফুটো কয়েন; ছবি: ইশতিয়াক আবরার

নিউমিজম্যাটিকসের ভবিষ্যৎ নিয়েও আশাবাদী তিনি। তার মতে, 'ইন্টারনেট আর সামাজিক মাধ্যম সংগ্রাহকদের মধ্যে যোগাযোগ আরও সহজ করে দিয়েছে, জানার পরিধিও আরও বাড়িয়েছে। কোন দেশের মুদ্রা কী, কত ধরনের মুদ্রা হয়, সেগুলো সম্পর্কে খুব সহজেই জানা যায়। অভিজ্ঞদের কাছ থেকেও পরামর্শ নেওয়াও সহজ হয়েছে।'

বয়সে তরুণ হলেও সংগ্রাহক হিসেবে সৌরভের সংগ্রাহক হিসেবে অভিজ্ঞতার ঝুলি বেশ ভারি। প্রায় শূন্য পকেট নিয়ে সংগ্রহ শুরু করার পর পাড়ি দিয়েছেন বহুদূর। একাধিক ভাষায় পারদর্শীতা কিংবা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়টির প্রতি এত আগ্রহ এই মুদ্রা সংগ্রহ থেকেই এসেছে কিনা জানতে চাইলে সৌরভ বলেন, 'এটা আসলে কোনো একটি ঘটনার ফলাফল হিসেবে আরেকটি ঘটেছে এমন নয়। বরং সবগুলো আগ্রহই একটির সাথে আরেকটি সংযুক্ত। বিভিন্ন দেশ নিয়ে আগ্রহ আছে বলেই ভাষা শিখেছি, অন্য সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারবো বলেই মুদ্রা সংগ্রহের প্রতি আগ্রহী হয়েছি, আবার এই সংগ্রহের কারণেই আন্তর্জাতিক সম্পর্ক আর ইতিহাস নিয়ে জানাশোনা বেড়েছে, আগ্রহ বেড়েছে।'

তাহলে নতুন সংগ্রহ শুরু করা সংগ্রাহকদের উদ্দেশ্যে কী পরামর্শ থাকবে? মহানগরের ওসি হারুনের মতো সৌরভের পরামর্শও দুটো: এক, ধৈর্য আর লেগে থাকার মনোভাব এবং দুই, সংগ্রহ করা নোট ঠিকভাবে সংরক্ষণ করার চেষ্টা।

বাংলাদেশে বিরল কমোরোসের নোট; ছবি: ইশতিয়াক আবরার

'নিউমিজম্যাটিস্ট- নোটাফিলিস্টদের জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় গুণ হলো লেগে থাকার মনোভাব। আমার পরিচিত অনেকেই আছেন, যারা ৩০-৩৫টি দেশের নোট সংগ্রহের পরেই হাল ছেড়ে দেন। তারা মনে করেন হঠাৎ করেই সবকিছু হাতের মুঠোয় চলে আসবে। তবে এ মনোভাব নিয়ে সংগ্রাহক হিসেবে খুব বেশিদূর আগানো যাবে না। কমোরোস, মাদাগাস্কারের মতো বেশ কিছু দেশের নোট পেতে আমার বহুদিন অপেক্ষা করতে হয়েছিল। তাই ধৈর্য হারালে চলবে না।'

'আর দ্বিতীয় বিষয় হলো ঠিকভাবে সংরক্ষণ করার বিষয়। দেখা যায় অনেকেই বইয়ের পাতার মধ্যে, ডায়েরির মধ্যে বা টেবিলের নিচে নোটগুলোকে গুঁজে রাখেন। এভাবে রাখলে নোটগুলো নষ্ট হয়ে যায়, আর সেগুলো নষ্ট হতে দেখলে সংগ্রহ করার ইচ্ছাও মরে যায়। তাই সংগ্রহ করার সময় শুরু থেকেই একে সিরিয়াসভাবে নেওয়া জরুরি, যার অন্যতম উপায় একে ঠিকভাবে যথাযথ উপায়ে সংরক্ষণ করা।'  

Related Topics

টপ নিউজ

মুদ্রা / মুদ্রা সংগ্রহ / নিউমিজম্যাটিস্ট / নোটাফিলিস্ট

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • ‘আমি ভাবছিলাম সিঙ্গাপুর যাব, যেতে পারি?’: হাসিনা-তাপসের আরও একটি ‘ফোনালাপ’ ভাইরাল
  • ‘ওভারস্টে’ ঠেকাতে দুই দেশের নাগরিকদের ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রের ১৫ হাজার ডলার জামানতের শর্ত
  • জুলাই ঘোষণাপত্রে তুলে ধরা ইতিহাস এবং আওয়ামী লীগের বর্ণনা অত্যন্ত পক্ষপাতদুষ্ট: ডেভিড বার্গম্যান
  • মাইক্রোচালকের ‘ঘুমে’ স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের ৭ সদস্য হারালেন ওমান প্রবাসী বাহার
  • মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে গ্যাস বেলুন বিস্ফোরণে আহত ১১
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের জুলাই প্রদর্শনীতে দণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধীদের ছবি, শিক্ষার্থীদের আপত্তিতে সরালো প্রশাসন

Related News

  • নতুন নোট ছাড়েনি বাংলাদেশ ব্যাংক, এবার ঈদ সালামির দাম চড়া
  • বিশ্বের শীর্ষ ১০ শক্তিশালী মুদ্রা
  • টাকায় কি আবার বন্যপ্রাণীর ছবি ফিরিয়ে আনা উচিত?
  • শেখ মুজিবের ছবি বাদ দিয়েই নতুন করে করা হতে পারে ব্যাংক নোটের নকশা
  • ১২ দেশের মুদ্রা, ৯ পাসপোর্ট নিয়ে পালাচ্ছিলেন সালমান, আনিসুল: পুলিশ

Most Read

1
বাংলাদেশ

‘আমি ভাবছিলাম সিঙ্গাপুর যাব, যেতে পারি?’: হাসিনা-তাপসের আরও একটি ‘ফোনালাপ’ ভাইরাল

2
আন্তর্জাতিক

‘ওভারস্টে’ ঠেকাতে দুই দেশের নাগরিকদের ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রের ১৫ হাজার ডলার জামানতের শর্ত

3
মতামত

জুলাই ঘোষণাপত্রে তুলে ধরা ইতিহাস এবং আওয়ামী লীগের বর্ণনা অত্যন্ত পক্ষপাতদুষ্ট: ডেভিড বার্গম্যান

4
বাংলাদেশ

মাইক্রোচালকের ‘ঘুমে’ স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের ৭ সদস্য হারালেন ওমান প্রবাসী বাহার

5
বাংলাদেশ

মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে গ্যাস বেলুন বিস্ফোরণে আহত ১১

6
বাংলাদেশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের জুলাই প্রদর্শনীতে দণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধীদের ছবি, শিক্ষার্থীদের আপত্তিতে সরালো প্রশাসন

The Business Standard
Top

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net

Copyright © 2022 THE BUSINESS STANDARD All rights reserved. Technical Partner: RSI Lab