Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Saturday
May 17, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
SATURDAY, MAY 17, 2025
কত চাই চকলেট? বেগমবাজারেই চকলেটের রঙিন দুনিয়া!

ফিচার

সুস্মিতা চক্রবর্তী মিশু
06 March, 2023, 11:00 am
Last modified: 06 March, 2023, 11:54 am

Related News

  • ফ্রান্সকে হারিয়ে টানা দুবার পেস্ট্রি বিশ্বকাপ জিতলো জাপান
  • ১৭০ বছর পর রাজ পরিবারের খাবার সরবরাহকারীর তালিকা থেকে বাদ পড়লো ক্যাডবেরি চকলেট
  • ডার্ক চকলেট কি ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে পারে?
  • দেশের সর্ববৃহৎ পাইকারি বাজারে দোকানপাট খুললেও কারফিউয়ের মধ্যে বিকিকিনি কম, লেনদেনে ভোগান্তি
  • চকলেটপ্রেমীদের জন্য সুখবর: শুল্ক কমছে, চকলেটের দাম কমবে

কত চাই চকলেট? বেগমবাজারেই চকলেটের রঙিন দুনিয়া!

পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দীন রোড পেরোলেই বেগমবাজার। ইতিহাসে মোড়া বেগমবাজার এলাকাটি প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ বছরের পুরোনো। পুরো এলাকাটিই বলা যায় ব্যবসায়ীদের স্বর্গক্ষেত্র। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস থেকে শুরু করে বিলাসী ভোগ্যবস্তু- কী নেই এখানে! ঢাকায় চকলেটের পাইকারি বাজার হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে বেগমবাজার। সারা দেশের খুচরা দোকানগুলোতে যেসব চকলেট বিক্রি হয়, তা পাইকারি মূল্যে এখান থেকেই কিনে নিয়ে যান বিক্রেতারা।
সুস্মিতা চক্রবর্তী মিশু
06 March, 2023, 11:00 am
Last modified: 06 March, 2023, 11:54 am
ব্যস্ত ক্রেতা-বিক্রেতা; ছবি- সুস্মিতা চক্রবর্তী মিশু

'এ ভাই, এই চকলেটের দাম ২০ টাকা কম রাখেন। আমি তিন বক্স নিবো।',
'না ভাই, দাম কমানো যাবে না। আপনি মোট কয় ধরনের চকলেট নিবেন?'

সকাল সকাল ক্রেতা-বিক্রেতার এমন বচসা মনে করিয়ে দেয় কোনো বাজারের গল্প। এখানে অবশ্য ক্রেতা নেহাত ক্রেতাই নন, তিনি খুচরা বিক্রেতাও বটে। পাইকারি বাজারে এসেছেন পাইকারি মূল্যে চকলেট কিনতে। উদ্দেশ্য একটাই- দুর্মূল্যের বাজারে অপেক্ষাকৃত কম দামে চকলেট কিনে নিয়ে ব্যবসা করবেন। বেলা বাড়ার সাথে সাথে দোকানে দোকানে এমন কোলাহলও পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে।

এ তো ছিল বেগমবাজারের একটি দোকানের গল্প। বেগমবাজারের রোজকার জীবনে এমন ঘটনা সকাল হতে না হতেই শুরু হয়ে যায়। ঢাকায় চকলেটের পাইকারি বাজার হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে বেগমবাজার। সারা দেশের খুচরা দোকানগুলোতে যেসব চকলেট বিক্রি হয়, তা পাইকারি মূল্যে এখান থেকেই কিনে নিয়ে যান বিক্রেতারা। দাম অপেক্ষাকৃত কিছুটা কম হওয়ায় চকলেটের জন্য বেগমবাজারের আলাদা নাম রয়েছে।

পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দীন রোড পেরোলেই বেগমবাজার। ইতিহাসে মোড়া বেগমবাজার এলাকাটি প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ বছরের পুরোনো। পুরো এলাকাটিই বলা যায় ব্যবসায়ীদের স্বর্গক্ষেত্র। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস থেকে শুরু করে বিলাসী ভোগ্যবস্তু- কী নেই এখানে! পাইকারি বাজার হিসেবে পরিচিতি থাকায় সারাদেশের মানুষের আনাগোনায় মুখর থাকে বেগমবাজারের অলিগলি।

ইতিহাসে মোড়া বেগমবাজার

প্রবেশমুখের করতলব খান মসজিদ; ছবি- সুস্মিতা চক্রবর্তী মিশু

বেগমবাজারের প্রবেশমুখে রয়েছে করতলব খান মসজিদ। স্থানীয়দের কাছে মসজিদটি বেগমবাজার জামে মসজিদ হিসেবেও পরিচিত। ঢাকার পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারের রাস্তা ধরে একটু এগিয়ে গেলেই মসজিদটি নজরে পড়বে। ইতিহাসের অংশ হিসেবে পাঁচ গম্বুজের দোতলা মসজিদটি ৩০০ বছরের বেশি সময় ধরে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে।

নবাব মুর্শিদকুলী খান ছিলেন করতলব খান মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা। মুর্শিদকুলী খানের প্রকৃত নাম ছিলো মুহাম্মদ হাদী। সম্রাট আওরঙ্গজেবের কাছ থেকে তিনি ১৭০০ সালে 'করতলব খান' উপাধি পেয়েছিলেন। ১৭০১ সাল থেকে ১৭০৪ সালের মধ্যে মুর্শিদকুলী খান এই মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তার নামানুসারেই পরবর্তী সময়ে মসজিদের নাম হয়েছে করতলব খান মসজিদ।

করতলব খান মসজিদের অন্যতম আকর্ষণ হলো বাওলি। বাওলি হলো- পানি সংরক্ষণের জন্য ধাপকৃত কুয়া। উত্তর ভারত বা দাক্ষিণাত্যের মসজিদগুলোর মধ্যে সাধারণত বাওলির বৈশিষ্ট্য খুঁজে পাওয়া যায়, যা বাংলায় বিরল। স্বতন্ত্র্যতার কারণে ঢাকার চিত্তাকর্ষক স্থাপনাগুলোর মধ্যে করতলব খান মসজিদটি অন্যতম। এই মসজিদটির নিচের অংশে কয়েকটি আয়তাকার ঘর রয়েছে। সেগুলো অবশ্য স্থানীয় দোকানদার ও বাজারের জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

বেগমবাজারের ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায়, বেগমবাজারের নামকরণ তৎকালীন নায়েব-ই-নাজিম সরফরাজ খানের কন্যার নামানুসারে হয়েছে। সরফরাজ খানের কন্যার নাম ছিলো লাডলি বেগম। ধরা হয়, বেগমবাজার মসজিদের কাছে যে মাছবাজার ছিলো, তার নিয়ন্ত্রক ছিলেন লাডলি বেগম। তার নামানুসারেই এলাকার নাম দাঁড়ায় বেগমবাজার। এমনকি করতলব খান মসজিদটিও বেগমবাজার মসজিদ হিসেবে পরিচিত।

দোকানের হর্তাকর্তা মহাজন

ছবি- সুস্মিতা চক্রবর্তী মিশু

বেগমবাজার মসজিদ পেরিয়ে কিছুটা সামনে এগোলেই দেখা যাবে রাস্তার দুপাশে দাঁড়ানো সারি সারি দোকান। দোকানগুলো সমৃদ্ধ নানান স্বাদের চকলেট, বাদাম ও জুস দিয়ে। যেদিকেই চোখ যাবে সেদিকেই নজরে পড়বে ক্যাডবেরি, কিটক্যাট, সাফারি, পার্ক, ডার্ক চকলেটসহ নানান রকমের চকলেটের রাজত্ব।

ঘিঞ্জি পথ ধরে হাঁটতে গিয়ে হয়তো সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের 'কেউ কথা রাখেনি' কবিতার কাঠি লজেন্সের কথাও মনে পড়ে যেতে পারে। একটু ভালোভাবে নজর দিলে দেখবেন, কোনো কোনো দোকানের এক পাশে কৌটাতে কাঠি লজেন্সও সাজানো আছে। কাঠি লজেন্স আদতে স্বাস্থ্যসম্মত কিনা তাতে অবশ্যই প্রশ্ন রয়েছে। কিন্তু দূর থেকে বাহারি রঙের এসব চকলেট চোখে ভীষণ আরাম দেয়।

বেগমবাজারের চকলেটের দোকানগুলো চলে মহাজনের হিসাবে। প্রত্যেক দোকানে মহাজন থাকে, যিনি দোকানের মূল হর্তাকর্তা। তাকে সহযোগিতার জন্য থাকে ৩/৪ জন কর্মচারী।

ছবি- সুস্মিতা চক্রবর্তী মিশু

আয়েশের সহিত ব্যবসায়ীরা এখানে দোকান খোলেন বেলা সাড়ে দশটা নাগাদ। মহাজন আসার আগেই তার সাঙ্গপাঙ্গ কর্মচারীরা দোকান খুলে সাজানো শুরু করে। দোকান খুলতে না খুলতেই এখানে ভীড় জমায় খুচরা ব্যবসায়ীরা। শুরু হয় পণ্যের দাম কমানো নিয়ে বচসা। এই বচসা অবশ্য দীর্ঘক্ষণ স্থায়ী হয়না। দাম ব্যাটে-বলে মিলে গেলেই পণ্য কিনে নিয়ে যায় খুচরা ব্যবসায়ীরা।

প্রায় ২০০টি দোকানে চকলেটের বাহার

বেগমবাজার এলাকার চকলেটের দোকানগুলো ম্যানশন অনুযায়ী সাজানো। ম্যানশনগুলোর নামও খাসা। বহলা ম্যানশন, মক্কা টাওয়ার, সমিতি ভবন, ফয়েজ ম্যানশন প্রভৃতি নামে একেকটি ম্যানশন পরিচিত। প্রতিটি ম্যানশনের অধীনে অনেকগুলো দোকান রয়েছে এখানে।

চকলেট ছাড়াও পাওয়া যায় অনেককিছু; ছবি- সুস্মিতা চক্রবর্তী মিশু

পুরো বাজারে চকলেটের দোকান কতটি আছে তার হিসেব জানার জন্য ঢুঁ মারলাম বেগমবাজার-মৌলভীবাজার বনিক সমিতির অফিসে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বেগমবাজার-মৌলভীবাজার বনিক সমিতির অফিস সচিব মো. বিল্লাল হোসেন। তিনি জানান, 'বেগমবাজার এলাকাতে প্রায় ২০০টির মতো চকলেটের দোকান আছে। এর মধ্যে লোকাল চকলেটের দোকান ১৬০-১৭০টি। আমাদের দেশের বিভিন্ন কোম্পানির চকলেট সেসব দোকানে পাওয়া যায়। ২০-৩০টি দোকানে ভারত ও অন্যান্য দেশ থেকে চকলেট আসে।'

বেগমবাজারে পাইকারি চকলেটের ব্যবসা কত বছর ধরে চলছে তা জানতে চাইলে বিল্লাল হোসেন বলেন, 'চকলেটের ব্যবসা এখানে ১০-১২ বছর ধরে চলছে। ব্যবসা আসলে দিন দিন পরিবর্তিত হচ্ছে। যখন মানুষ যেমন থাকে, ব্যবসাও তেমন থাকে। পাকিস্তান পিরিয়ডে এখানে সিগারেট, তামাকের ব্যবসা ছিল। তখন দোকান ছিলো ২০-২৫টি। এখন দোকানের সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে।'

দেশ-বিদেশের চকলেটে ভরপুর

ছবি- সুস্মিতা চক্রবর্তী মিশু

বেগমবাজারের বিক্রেতারা তাদের ব্যবসা নিয়ে অত্যন্ত সচেষ্ট। ক্রেতা ভিন্ন অন্য কোনো ব্যক্তির সাথে বিক্রি-বাট্টা বিষয়ে আলাপ করতে তাদের অনাগ্রহই বেশি ছিলো। তাই সে যাত্রায় দোকানিদের সাথে আলাপ জমাতে কম বেগ পেতে হয়নি। অনেক দোকান ঘুরে শেষে আলাপ জমলো 'এইচ আর ট্রেডিং' এর হারুন-উর-রশিদের সাথে। আমদানিকৃত চকলেটের ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত তিনি। হারুন-উর-রশিদ বলেন, 'আট বছর ধরে বেগমবাজারে চকলেটের ব্যবসা করছি। চকলেট, জুস, বাদামসহ ফরেন আইটেম আমাদের দোকানে বেশি পাওয়া যায়।'

এইচ আর ট্রেডিং এর কর্ণধার জানান, তাদের এখানে ভারত, দুবাই, ইংল্যান্ড, তুরস্ক, মালয়েশিয়া প্রভৃতি দেশের চকলেট পাওয়া যায়। তবে সরাসরি আমদানি তারা করেন না। আমদানিকারকরা নিয়ে আসেন- যারা বেগমবাজারের পাইকারি বিক্রেতাদের কাছে 'ইম্পোর্টার' হিসেবে পরিচিত, পরবর্তী সময়ে তাদের কাছ থেকে সেগুলো সংগ্রহ করেন ব্যবসায়ীরা। আমদানিকৃত চকলেটের সিংহভাগই সংগ্রহ করা হয় গুলশান থেকে। দেশীয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কোকোলা, অলিম্পিক, প্রাণসহ আরো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চকলেট এখানে পাওয়া যায়।

ভারতের পার্ক, সাফারি, কিটক্যাট, ফাইভ স্টার, ক্যাডবেরি, ডেইরিমিল্ক সিল্ক, বাবলি এই ধরনের চকলেটের আধিক্য বেশি বেগমবাজারে। দুবাই, তুরষ্ক থেকে বিভিন্ন প্যাকেট ও বক্স চকলেট বেশি আসে। তবে দামের দিক থেকে দুবাই ও তুরষ্কের তুলনায় ভারত থেকে আসা চকলেটের দাম কিছুটা কম থাকে।

ছবি- সুস্মিতা চক্রবর্তী মিশু

বাংলাদেশের ট্রান্সকম বেভারেজ স্নিকার্স, বাউন্টি, মার্স প্রভৃতি চকলেটের ডিস্ট্রিবিউটর হিসেবে কাজ করে থাকে। একইভাবে বাংলাদেশে ক্যাডবেরি গোত্রের চকলেট আমদানির কাজ করে আইডিসি। তাদের কাছ থেকেই দেশের বাইরের চকলেট সংগ্রহ করে থাকেন ব্যবসায়ীরা। দেশীয় চকলেটের মধ্যে ললিপপ, সেন্টারফ্রেশ, প্রাণ মিল্ক ক্যান্ডি, পালস, পিনাটবার, ম্যাঙ্গোবার প্রভৃতি চকলেট বেশি পাওয়া যায়। এগুলো কিনতে হলেও এখানে বক্স হিসেবেই কিনতে হয়।  

সারা বাংলাদেশ থেকে খুচরা ব্যবসায়ীরা এখানে চকলেট কিনতে আসেন। সহজে পরিবহন সুবিধা থাকার কারণেই এই জায়গা থেকে খুচরা বিক্রেতারা মালামাল কিনে থাকেন। তবে খুচরা ব্যবসায়ীদের সবসময় সশরীরে উপস্থিত থেকে পণ্য গ্রহণ করার প্রয়োজন পড়ে না। যা যা লাগবে তার তালিকা ফোনে কথা বলে জানিয়ে দিলেই পণ্য পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন বেগমবাজারের পাইকারি ব্যবসায়ীরা।

ছবি- সুস্মিতা চক্রবর্তী মিশু

অনেক সময় মাসে ৪০ থেকে ৫০ লাখ টাকার ব্যবসাও করে থাকেন বেগমবাজারের পাইকারি ব্যবসায়ীরা। তবে উৎসবের সময় চকলেটের বেচাকেনাও অনেক বেড়ে যায়। হারুন-উর-রশিদ বলেন, 'ভ্যালেন্টাইস ডে, ঈদ এসময়টাতে বেচাকেনা একটু বেশি থাকে। তবে আমরা তো পাইকারি ব্যবসা করি, আমাদের ব্যবসা সবসময়ই চলতে থাকে।'  

কেমন দাম চকলেটের?

খুচরা দোকানের তুলনায় অনেকখানি কম দামে বেগমবাজারে চকলেট পাওয়া যায়। খুচরা দোকানে যেসব চকলেটের দাম ২৫০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে থাকে, সেসব চকলেট বেগমবাজারে ১৬০ টাকা থেকে ১৮০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়।

চকলেটের আকার অনুযায়ী দামের ভিন্নতা দেখা যায়। ছোট চকলেটের দাম বড় চকলেটের থেকে কম থাকে। এইচ আর ট্রেডিং এর হারুন-উর-রশিদ জানান, 'এক বক্স স্নিকার্সের দাম ১৫০০ টাকা। ২৪টি চকলেট থাকে এক বক্সে। প্রতি পিসের দাম পড়ে ৬২ টাকা ৫০ পয়সা, সেটি যখন খুচরা বাজারে যায় তখন ৯০ টাকায় বিক্রি হয়। কিটক্যাটের ক্ষেত্রেও এমনই হয়। টু ফিঙ্গার কিটক্যাটের এক বক্সের দাম ৯০০ টাকা এবং বক্সে থাকে ৩০টি চকলেট। আমাদের এখানে এক পিসের দাম পড়ে ৩০ টাকা আর সেটি যখন খুচরা বাজারে যায় দাম ৪০ টাকা হয় তখন।'

ছবি- সুস্মিতা চক্রবর্তী মিশু

বেগমবাজার থেকে চকলেট কিনতে হলে বক্স হিসেব করেই কিনতে হবে। তবে যেসব চকলেটের দাম একটু বেশি হয় যেমন- ক্যাডবেরি ডেইরিমিল্ক সিল্ক, বাবলি বা আমুলের বড় ডার্ক চকলেট- সেগুলো চাইলে সিঙ্গেল পিসেই কেনা যায়।  

দোকানে দোকানে চকলেটের আধিক্য থাকলেও এখানে আমদানিকৃত জুস, হরলিক্স, বাদাম এসবও পাওয়া যায়। সেগুলোর দামও খুচরা বাজারের তুলনায় ৮০ থেকে ১০০ টাকা কমে পাওয়া যায়।

বাজারে দেশী চকলেটের যেসব দোকান রয়েছে সেখানেও দামের ভিন্নতা দেখা যায়। লাফিসা ট্রেডার্সের কর্ণধার নূর মোহাম্মদ বলেন, 'এক বক্স সেন্টারফ্রেশের দাম ৩৭০ টাকা। এক বক্সে ১৮০টি থাকে, সেটা যখন খুচরা বাজারে যায় তখন এক বক্সের দাম পড়ে ৪৫০ টাকা। আবার কোকোলা স্টিক ওয়েফার রোলের দাম এখানে ৬০ টাকা। সেটা খুচরা বাজারে ১২০ টাকায় বিক্রি হয়।'  

খুচরা ও পাইকারি বাজারের দাম কীভাবে নির্ধারিত হয় জানতে চাইলে ব্যবসায়ী হারুন-উর-রশিদ বলেন, 'আমদানিকারকরা আমাদের একটা দাম ধরে দেয়, আমরা সেই অনুযায়ী বিক্রি করি। সেভাবে খুচরা বাজারেও পণ্য বিক্রি হয়।'

কোন দোকানে কতটুকু বিক্রি হয় তার কোনো সুনির্দিষ্ট হিসাব সমিতির কাছে আছে নাকি জানতে চাইলে মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, 'আসলে এসব নির্ধারণের জন্য পরিসংখ্যানের একটা ডিপার্টমেন্ট থাকে। আমাদের এলাকার ব্যবসায়ী যারা তাদের কাছে দেখা যায়- থাইল্যান্ড, বার্মিজ বা ভারতের চকলেটের প্যাকেট আছে আবার লোকাল চকলেটের প্যাকেটও তাদের কাছে পাওয়া যায়। এদের অবস্থান কুটির শিল্পের থেকে একধাপ উপরে। মাল কিনে নিয়ে আসে, এরপর বেচে। ওই হিসাবের খবর এদের কাছে থাকে না।'

ডলার সংকটে ভুক্তভোগী সকলেই

ছবি- সুস্মিতা চক্রবর্তী মিশু

বিশ্বব্যাপী চলতে থাকা ডলার সংকটের ভুক্তভোগী হয়েছেন বেগমবাজারের ব্যবসায়ীরাও। ব্যবসায়ী হারুন-উর-রশিদ বলেন, 'ডলার সংকটের কারণে এলসি বন্ধ হয়ে গেছে। যার কারণে মাল সব মার্কেটে কম ছিলো। এজন্যই দাম বেড়ে গেছে। এর প্রভাব ক্রেতা তথা খুচরা ব্যবসায়ীদের জন্য উপর পড়েছে।'

বলে রাখা ভালো, এলসি হলো লেটার অব ক্রেডিট। অর্থাৎ আমদানিকারক যখন বিদেশ থেকে কোন পণ্য আমদানি করতে যান, তখন তাকে ব্যাংকের মাধ্যমে রপ্তানিকারকের কাছে পণ্যের মূল্য পরিশোধের নিশ্চয়তা দিতে হয়। তখন আমদানিকারকের পক্ষে পণ্যের মূল্য পরিশোধের জন্য ব্যাংক যে পত্র ইস্যু করে থাকে, সেটিই হলো এলসি বা প্রত্যয়ন পত্র।

ফাতেমা স্টোর নামক দোকানের কর্ণধার জানান, 'ডলার সংকটে আমদানি কমে গেছে। তাই আমদানিকারকের কাছে যেসব মাল আছে, তারা ৫০ টাকার জিনিস ৮০ টাকায় বিক্রি করছে। আমাদের পুঁজি বেশি দিতে হচ্ছে, লাভের পরিমাণ অনেক কমে যাচ্ছে। আগে যা বেচতাম তার ৫০% বিক্রি কমে গেছে।'

'ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম অনেক বেড়ে গেছে। এখন বিশ্বব্যাপীই ডলারের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। যার জন্য আমদানি খরচও বেড়ে গেছে। এজন্য যে যেভাবে পারছে, সেভাবেই চলছে,' ডলার সংকটের কথা বলতে গিয়ে জানান অফিস সচিব বিল্লাল হোসেন।

ছবি- সুস্মিতা চক্রবর্তী মিশু

ডলার সংকট ছাড়াও প্রতিযোগিতা বেড়ে যাওয়ায় অনেকরকমের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে এখানকার ব্যবসায়ীদের। হারুন-উর-রশিদ বলেন, 'এখন অনেক লোকজন এসে গেছে মার্কেটে। অনেক মানুষ ট্যাক্স ছাড়া পণ্য নিয়ে আসে। কেউ যদি হাতে করে নিয়ে আসে বা ব্ল্যাকে নিয়ে আসে তখন আমাদেরই ক্ষতি হয়।'

কালোবাজারে আনা চকলেট বেগমবাজারে বিক্রি করা হলে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় নাকি তা বলতে গিয়ে অফিস সচিব বলেন, 'ব্ল্যাক মার্কেটের খবর আমাদের কাছে থাকে না। আমরা তো বর্ডারের কাছে থাকি না। বর্ডারের পাশে যারা থাকে তারা ঐ পার্টির থেকে পণ্য আনে। আমাদের এখানে আমদানিকারক থেকে পণ্য এনে বিক্রি করে।'

করোনা মহামারিতেও ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন বেগমবাজারের ব্যবসায়ীরা। ফাতেমা স্টোরের কর্ণধার জানান, 'করোনার সময়ে অনেক লস দিয়ে চলতে হয়েছে আমাদের। আমার দোকানে সব শৌখিন খাবারের আইটেম। ৯০ শতাংশ মানুষ সেগুলো খাওয়া কমিয়ে দিয়েছে। আমাদের দোকান তখন প্রায় দেড় মাস বন্ধ ছিলো।'

চকলেটের যত উপকারিতা

মানসিক চাপ কমাতে ও স্বস্তি দিতে চকলেটের জুড়ি মেলা ভার। তাছাড়া ডার্ক চকলেটে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। এটি যেমন রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে, তেমনি হৃদযন্ত্র ভালো রাখতে কাজ করে। এছাড়া ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে ও সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মি থেকে রক্ষা করতেও ডার্ক চকলেটের ভূমিকা অপরিসীম।

অস্ট্রেলিয়ান একাডেমি অফ সায়েন্সের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চকলেটের মধ্যে এমনকিছু উপাদান রয়েছে- যেগুলো আমাদের সুখকর এবং তৃপ্তিকর অনুভূতি দিতে পারে। ট্রিপটোফ্যান নামক একটি উপাদান যেটি মূলত এক ধরনের অ্যামিনো অ্যাসিড, এটি মস্তিষ্ককে সেরোটোনিন তৈরি করতে সহায়তা করে।

মূলত দাম কম থাকার কারণেই বেগমবাজারের চকলেটের পাইকারি বাজার খুচরা ব্যবসায়ীদের পছন্দের শীর্ষে। তবে আলোর বিপরীতে যে অন্ধকার থাকে- সে কথাও সবসময় স্মরণে রাখা প্রয়োজন। কালোবাজারিতে আসা অনুনোমোদিত চকলেটও অনেকসময় এখানে পাওয়া যায়। এজন্য বিক্রেতাদের পাশাপাশি সতর্ক থাকতে হয় ক্রেতাদেরও।

 

Related Topics

টপ নিউজ

চকলেট / চকলেট এন্ড পেস্ট্রি / বেগমবাজার / পাইকারি বাজার

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • বিশ্বের দীর্ঘতম ট্রেনযাত্রা, কিন্তু শেষ করতে পারেনি কেউই 
  • উড্ডয়নের সময় খুলে পড়ে গেল বিমানের চাকা, ৭১ যাত্রী নিয়ে ঢাকায় নিরাপদে অবতরণ
  • ট্রাম্প বললেন কেউ পালায়নি, অথচ আলকাট্রাজ থেকে পালানো তিন বন্দির রহস্য এখনও অজানা!
  • ভারতে পারমাণবিক উপাদান ‘চুরির ঘটনায়’ আইএইএ-র তদন্ত চায় পাকিস্তান
  • মধ্যরাতে প্রায় ৭৫০ জনকে বাংলাদেশে পুশইনের চেষ্টা; খবর পেয়ে রুখে দিল বিজিবি-জনতা; রাতভর টহল
  • মধ্যপ্রাচ্যকে ট্রাম্পের অঙ্গীকার: 'কীভাবে জীবনযাপন' করবে এ নিয়ে আর লেকচার না

Related News

  • ফ্রান্সকে হারিয়ে টানা দুবার পেস্ট্রি বিশ্বকাপ জিতলো জাপান
  • ১৭০ বছর পর রাজ পরিবারের খাবার সরবরাহকারীর তালিকা থেকে বাদ পড়লো ক্যাডবেরি চকলেট
  • ডার্ক চকলেট কি ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে পারে?
  • দেশের সর্ববৃহৎ পাইকারি বাজারে দোকানপাট খুললেও কারফিউয়ের মধ্যে বিকিকিনি কম, লেনদেনে ভোগান্তি
  • চকলেটপ্রেমীদের জন্য সুখবর: শুল্ক কমছে, চকলেটের দাম কমবে

Most Read

1
আন্তর্জাতিক

বিশ্বের দীর্ঘতম ট্রেনযাত্রা, কিন্তু শেষ করতে পারেনি কেউই 

2
বাংলাদেশ

উড্ডয়নের সময় খুলে পড়ে গেল বিমানের চাকা, ৭১ যাত্রী নিয়ে ঢাকায় নিরাপদে অবতরণ

3
আন্তর্জাতিক

ট্রাম্প বললেন কেউ পালায়নি, অথচ আলকাট্রাজ থেকে পালানো তিন বন্দির রহস্য এখনও অজানা!

4
আন্তর্জাতিক

ভারতে পারমাণবিক উপাদান ‘চুরির ঘটনায়’ আইএইএ-র তদন্ত চায় পাকিস্তান

5
বাংলাদেশ

মধ্যরাতে প্রায় ৭৫০ জনকে বাংলাদেশে পুশইনের চেষ্টা; খবর পেয়ে রুখে দিল বিজিবি-জনতা; রাতভর টহল

6
আন্তর্জাতিক

মধ্যপ্রাচ্যকে ট্রাম্পের অঙ্গীকার: 'কীভাবে জীবনযাপন' করবে এ নিয়ে আর লেকচার না

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net