Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Friday
May 09, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
FRIDAY, MAY 09, 2025
দরিয়া-ই-নূর: দেশের সবচেয়ে অমূল্য হীরার কিংবদন্তি, ‘খোয়া যাওয়া’, ভুল ইতিহাস ও স্কটিশ ‘রেপ্লিকা’ রহস্য

ফিচার

তামারা ইয়াসমীন তমা
27 January, 2023, 12:20 pm
Last modified: 27 January, 2023, 12:26 pm

Related News

  • বিশ্বের প্রথম হীরার ব্যাটারি, হাজার বছর চার্জ থাকার দাবি!
  • হীরার স্বপ্ন: ভাগ্য বদলের আশায় প্রজন্মের পর প্রজন্ম যারা ভারতের রত্নের শহরে খনন করে যাচ্ছেন
  • বতসোয়ানার খনিতে পাওয়া গেল বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম হীরা
  • ভারতে ঋণগ্রস্ত শ্রমিক পেলেন ৯৫ হাজার ডলার দামের হীরা
  • প্রতিদিন ২৫০ কোটি টাকার সোনা ও হীরা অবৈধভাবে বাংলাদেশে ঢুকছে: বাজুস

দরিয়া-ই-নূর: দেশের সবচেয়ে অমূল্য হীরার কিংবদন্তি, ‘খোয়া যাওয়া’, ভুল ইতিহাস ও স্কটিশ ‘রেপ্লিকা’ রহস্য

বছর ছয়েক আগে সোনালী ব্যাংকের ভল্ট থেকে দেশের সবচেয়ে মূল্যবান হীরার 'গায়েব' হওয়ার সংবাদ সাড়া ফেলে। বিখ্যাত কোহিনুরের নিকট-আত্মীয়া বাংলাদেশের এই দরিয়া-ই-নূরের মতো ২৬ ক্যারেটের হীরা সারাবিশ্বেই দুর্লভ। দরিয়া-ই-নূরের ইতিহাসও সমৃদ্ধ; পাঞ্জাবের রাজাদের বাজুবন্ধে শোভা পাওয়া হীরাটি ব্রিটিশদের কাছে আদর পায়নি। ঢাকার নবাবদের হাত ঘুরে শেষ পর্যন্ত এর ঠাঁই হয় সোনালী ব্যাংকের ভল্টে। কিন্তু দরিয়া-ই-নূরের ইতিহাস কি এতটাই সরল?
তামারা ইয়াসমীন তমা
27 January, 2023, 12:20 pm
Last modified: 27 January, 2023, 12:26 pm
ভারতীয় এক শিল্পীর হাতে আঁকা দরিয়া-ই-নূর। ছবি: দ্য ইলাস্ট্রেটেড লন্ডন নিউজ আর্কাইভ

ছয়-সাত বছর আগের কথা। বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রচারিত হতেই সাড়া ফেলে এক সংবাদ। দেশের সবচেয়ে মূল্যবান হীরা নাকি দীর্ঘদিন ধরে ভল্ট থেকে গায়েব। নড়েচড়ে বসেন সরকারের হর্তাকর্তারা। বৈঠক ডাকে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটি। হীরা আসলেই আছে নাকি উধাও, তা খতিয়ে দেখতে জোর দেওয়া হয়। কিন্তু হীরা হেফাজতের দায়িত্বে থাকা সোনালী ব্যাংক কিংবা ভূমি সংস্কার বোর্ডের সমসাময়িক কর্মকর্তারাও কখনো এই জিনিস সচক্ষে দেখেননি। তাছাড়া হীরা বাদেও সেখানে আছে আরও শ'খানেক রত্নালঙ্কার। সেনাশাসনের পর আনুষ্ঠানিকভাবে গত তিন দশক ধরে খোলা হয়না এ ভল্ট। এখন এতদিন বাদে কোনো উনিশ-বিশ হলে সেই দায়-ই-বা কে নেবে? ব্যস আর কী! তাই শেষ পর্যন্ত হীরার পুরোনো মালিক নবাব পরিবার আর নয়া দাবিদার জাদুঘর কর্তৃপক্ষের অনুনয়-আপত্তি সত্ত্বেও ফের নিঃশব্দে সোনালী ব্যাংকের অন্ধকার ভল্টেই সমাহিত হয় হীরা রহস্য।

বলছিলাম বাংলাদেশের অমূল্য রাষ্ট্রীয় রত্ন দরিয়া-ই-নূরের কথা। দরিয়ার মতো ২৬ ক্যারেটের এমন হীরা সারাবিশ্বেই দুর্লভ। তার ওপর এর আছে ঐতিহাসিক মূল্য। খোদ কোহিনুরের নিকট-আত্মীয়া ইনি। লাহোর থেকে পাঞ্জাবের শেষ বালক রাজা দিলীপ সিংয়ের সঙ্গে একরকম প্রতারণা করেই হীরা দুটো পাঠানো হয়েছিল রানি ভিক্টোরিয়ার কাছে। বড় হীরেটাই রানির মনে বেশি ধরেছিল। তাই কোহিনুর লন্ডনে থেকে গেলেও ঐতিহাসিক গ্রেট এক্সিবিশন শেষে দরিয়া-ই-নূরকে ফের ভারতে পাঠানো হয়। তাতে অবশ্য দরিয়ার মঙ্গলই হয়েছে। হীরের কাটিং নিয়ে ব্রিটিশরা ছিল বড্ড খুঁতখুঁতে। কোহিনুরকে মনমতো নতুন কাটিং দিতে গিয়ে এর ওজন প্রায় অর্ধেকে নামিয়ে আনে ব্রিটিশরা। অন্যদিকে ভারতে ফেরত পাঠানো হলে ১৮৫২ সালে এক নিলামে ৭৫ হাজার টাকায় দরিয়া-ই-নূর কিনে নেন নবাব পরিবারের খাজা আলিমুল্লাহ।

১৮৪১ সালের ছবিতে দরিয়া-ই-নূর (রাজা শের সিংয়ের বাম হাতে)। ছবি: সংগৃহীত

এর পরের কাহিনী করুণ। কথিত আছে অপয়াখ্যাত কোহিনুর বেশ কয়েকটি সাম্রাজ্য ধ্বংস করে শেষকালে পাঞ্জাবের মহারাজা রণজিৎ সিংয়ের জন্যও কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল। রণজিৎ সিং কোহিনুর ও দরিয়া-ই-নূর পরতেন বাজুবন্ধ হিসেবে। দুটো বাজুবন্ধেই মিনা করা সোনার ওপর বসানো ছিল হীরক খণ্ড। নবাবদের হাতে আসার পর দরিয়াকে কখনো বাজুবন্ধ, আবার কখনো পাগড়ির সঙ্গে পরা হতো। যাই হোক, সেই অপয়ার ছোঁয়াই পাঞ্জাব থেকে বাংলার নবাবদের ঘরে এসেছিল কিনা কে জানে — ১৯০৮ সালে ঋণগ্রস্ত নবাব সলিমুল্লাহ বন্ধক রেখে শেষকালে দরিয়া-ই-নূর, স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তিসহ গোটা নবাব এস্টেটটাই খোয়ান। সেই থেকে ভারতের ইম্পেরিয়াল ব্যাংক থেকে শুরু করে স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তান ঘুরে শেষে দরিয়া-ই-নূরের ঠাঁই হয় বাংলাদেশের সোনালী ব্যাংকে।

তবে রহস্যটা যে শুধু সোনালী ব্যাংক ঘিরে তা কিন্তু নয়। শুরু থেকেই দরিয়া-ই-নূর নিয়ে খুব বেশি গবেষণা হয়নি। আর সেজন্যই হীরার ইতিহাস নিয়েও নেই স্বচ্ছতা। এবার তাই পুরোনো সব নথি ঘেঁটে নতুন করে দরিয়া-ই-নূরের ইতিহাস অনুসন্ধান করেছে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড। সেইসঙ্গে পাওয়া গেছে দরিয়ার বাজুবন্ধেরই এক হুবহু 'রেপ্লিকা'! জেনে নেওয়া যাক বাংলাদেশের সবচেয়ে মূল্যবান হীরার জানা-অজানা ইতিহাস।

কোহিনুরের মূল বাজুবন্ধে মুক্তা ও চুনি। পেছনে মিনাকারী কাজ ও সিল্কের তাগা। হীরার জায়গায় বসানো হয়েছে ক্রিস্টাল। ছবি: দ্য রয়্যাল ট্রাস্ট কালেকশন

চার-চারটি দরিয়া-ই-নূর! কোনটি আসল!

বাংলার দরিয়া-ই-নূরকে অসূর্যম্পশ্যা বললে ভুল হবে না। আজ পর্যন্ত কোনো ক্যামেরার আলোর ঝলকানিতে এর সৌন্দর্য ধারণ করা যায়নি (কিংবা কখনো গোপনে তোলা হলেও প্রকাশিত হয়নি!)। আর কেউ ছবি তুলবেই বা কীভাবে? জায়গা বদলালেও শতবর্ষ ধরেই এই হীরা ব্যাংকের গোপন কুঠুরিতে পড়ে আছে। শেষবার যখন ১৯৮৫ সালে ভল্ট খুলে যাচাই করা হয় তখনও বোধ করি কেউ ছবি তোলা নিয়ে মাথা ঘামায়নি। যারা দেখেছেন তারা সম্ভবত ঢাকার নবাব পরিবারের দুর্লভ সব অলঙ্কার নিয়ে জেমিওলজিস্ট (রত্নবিশেষজ্ঞ) জন সিনকেনকাসের সংকলনের ছবিটাই দেখে থাকবেন। আহসান মঞ্জিলেও দেখা মিলবে হলদেটে কাগজে হাতে আঁকা ছবিটি।

দরিয়া নিয়ে অনুসন্ধানে নামতেই ব্রিটিশ আমলে আঁকা দরিয়ার আরও দুটি দুর্লভ ছবি হাতে আসে। ছবির সঙ্গে হীরার ইতিহাস আরেকটু বিস্তারিত বর্ণনা করা দরকার। দরিয়া-ই-নূরের কোনো ছবি সহজে না পাওয়ার অন্যতম কারণ হলো নাম নিয়ে বিড়ম্বনা।

বিশ্বের অন্যতম মূল্যবান দুটো হীরার নাম কোহিনুর ও দরিয়া-ই-নূর। এই নামডাক-যশখ্যাতি কয়েকশ বছরের। তখনকার দিনে রাজা-বাদশাহরা শুধু রাজ্য নিয়ে নয়, হীরা-জহরতসহ অস্থাবর সম্পত্তির মালিকানা নিয়েও প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামতেন। কার কাছে বিশ্বের কোন দামী হীরা আছে, তা দিয়ে যাচাই হতো শাসকদের প্রতিপত্তি। ঠিক এ কারণেই ১৮ ও ১৯ শতাব্দীতে বেশ কয়েকটি কোহিনুর ও দরিয়া-ই-নূর আবির্ভূত হয়। বিশেষ করে মুসলিম শাসকেরা নিজেদের কাছে থাকা সবচেয়ে সেরা হীরাগুলোর নাম এ দুটো হীরার নামে নকল করে রাখতে শুরু করেন। অনেক সময় নামগুলো কিছুটা ঘুরিয়ে বা কাছাকাছি কোনো নাম রাখা হতো। এতে বিক্রির সময়ও হীরার দাম বহুগুণে বেড়ে যেত। কিন্তু সমস্যা হলো একই নাম হওয়ায় হীরাগুলোর ইতিহাস নিয়েও ঘটে বিকৃতি।

গ্রেট এক্সিবিশনে কোহিনুরকে বাজুবন্ধ থেকে আলাদা করে উপস্থাপন। ছবি: সংগৃহীত

সবচেয়ে বড় দরিয়া-ই-নূরটি হলো ১৮২ ক্যারেটের টেবিল আকৃতির গোলাপী হীরা। মোগলদের কাছ থেকে কোহিনুরের সঙ্গে ১৭৩৯ সালে এই হীরা দখল করেন নাদির শাহ। পরবর্তীকালে হীরাটি পারস্যের রাজমুকুটে জায়গা করে নেয়। বর্তমানে তা সেন্ট্রাল ব্যাংক অব ইরানে সংরক্ষিত রয়েছে।

কোহিনূর পরবর্তীকালে হাত ঘুরে পাঞ্জাবের মহারাজা রণজিৎ সিং-এর কাছে আসে। বিশ্বের অন্যতম দামী হীরা দরিয়ার কথা তার অজানা ছিল না। আর খুব সম্ভবত তাই নিজের কাছে থাকা বড় টেবিল আকৃতির ২৬ ক্যারেটের হীরাটির নামও তিনিই দরিয়া-ই-নূর রাখেন। বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান দুটো হীরা তার সংগ্রহে রয়েছে, এমন খ্যাতি অর্জনই ছিল এই নামকরণের উদ্দেশ্য। কিন্তু তার আগে হীরাটি কোথায় ছিল?

নাদির শাহ ভারত লুট করার সময় কোহিনুর ও ইরানের দরিয়া-ই-নূর ছাড়াও নূর-উল-আইন, শাহ হীরার মতো দামী মোগল হীরাগুলো লুট করেছিলেন। তবে বাংলার দরিয়া-ই-নূরও যে কখনো নাদির শাহের কাছে ছিল এমন প্রমাণ অন্তত হ্যামিল্টন অ্যান্ড কোম্পানির বর্ণনায় মিলে না। ব্রিটিশ ভারতে ইংরেজদের বিশ্বস্ত স্বর্ণকার ও জহুরীর দোকান ছিল হ্যামিল্টন। ভারত স্বাধীন হওয়ার আগ পর্যন্ত (নবাবদের হাতছাড়া হওয়ার পর) দরিয়া হ্যামিল্টন অ্যান্ড কোম্পানির তত্ত্বাবধানেই ছিল। ১৯১২ সালের জানুয়ারিতে কলকাতায় এলে রাজা জর্জ ও রানি মেরির সামনে প্রতিষ্ঠানটি দরিয়া-ই-নূর উপস্থাপন করে। রাজা জর্জ জানিয়েছিলেন, তিনি এই হীরার কথা আগে থেকেই জানতেন। কোহিনুরের সঙ্গে এটি পাঠানো হলেও রানি ভিক্টোরিয়ার পছন্দ না হওয়ায় হীরাটি ভারতে ফেরত পাঠানো হয়। তবে অ্যান্টিক মূল্য থাকায় দরিয়া-ই-নূর জাদুঘরে প্রদর্শিত হওয়ার মতো বলেও মন্তব্য করেছিলেন রাজা জর্জ।

গ্রেট এক্সিবিশনে প্রদর্শিত ভারতীয় রত্নসামগ্রী ও দরিয়া-ই-নূর। কাচ ও রেলিংয়ের নিরাপত্তা বেষ্টনীর ফাঁক দিয়ে অলংকার দেখছেন দর্শনার্থীরা। ছবি: দ্য ক্রিস্টাল প্যালেস অ্যান্ড ইটস কনটেন্টস

হ্যামিল্টন অ্যান্ড কোম্পানি সেসময় দরিয়া-ই-নূরের যে ইতিহাস তুলে ধরে সেখানে নাদির শাহের কোনো উল্লেখ মিলে না। তাদের বর্ণনা অনুসারে, দরিয়া-ই-নূর মিনা করা সোনার ওপর বসানো প্রথম শ্রেণির অত্যন্ত বিশুদ্ধ একটি টেবিল কাটের হীরা। এর তাগায় দশটি মুক্তাও (জন লগিনের মতে ১১টি) যুক্ত রয়েছে।

হ্যামিল্টনের ইতিহাস অনুযায়ী, ২৬ ক্যারেটের হীরাটি দীর্ঘদিন মারাঠা রাজাদের কাছে ছিল। হায়দ্রাবাদের তৎকালীন মন্ত্রী নবাব সিরাজ-উল-মুলকের পরিবার কোন এককালে এক লাখ ৩০ হাজার রুপিতে হীরাটি কিনে নেয়। পরবর্তীসময়ে তা পাঞ্জাবের মহারাজা রণজিৎ সিংয়ের কাছে পৌঁছে। রণজিৎ সিংয়ের পর ব্রিটিশদের প্রভাবে দ্রুত পাঞ্জাবের শাসন ব্যবস্থার পট পরিবর্তন ঘটে। তার দুই পুত্র নাও নেহাল সিং, শের সিংয়ের হাত ঘুরে অবশেষে তা ব্রিটিশদের হাতে আসে। রণজিৎ সিংয়ের কনিষ্ঠ পুত্র ও সর্বশেষ রাজা দিলীপ সিং তখন ডাক্তার লগিনের তত্ত্বাবধানে। অপ্রাপ্তবয়স্ক দিলীপ সিংয়ের পক্ষ থেকে ডালহৌসি ভেটস্বরূপ কোহিনুর ও দরিয়া-ই-নূর রানি ভিক্টোরিয়াকে দিলেও তিনি দরিয়া কোম্পানির কাছেই ফিরিয়ে দেন। পরবর্তীকালে গ্রেট এক্সিবিশনে রানির তরফ থেকে কোহিনুর ও ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির তরফ থেকে দরিয়া-ই-নূর প্রদর্শিত হয়।

প্রদর্শনী শেষে ভারতে ফেরত পাঠানো হলে, ভারত সরকারের নির্দেশে ১৮৫২ সালের নভেম্বরে হ্যামিল্টন অ্যান্ড কোম্পানি নিলামের আয়োজন করে, যেখান থেকে ঢাকার জমিদার নবাব আলীমুল্লাহ হীরাটি কিনে নেন। এরপর থেকে ঢাকার নবাব পরিবারের কাছেই ছিল দরিয়া-ই-নূর।

এবার জানা যাক আরও দুটি দরিয়া-ই-নূরের কথা। এই হীরাগুলোর আসল নাম কী, সেটা অমীমাংসিত থাকলেও দরিয়া নামে যে এগুলো বিক্রির চেষ্টা হয়েছিল তা নিশ্চিত। ১৯২২ সালের মে মাসে আফগানিস্তানের প্রিন্সেস ফাতিমা নিউইয়র্কে দারা-গাই-নূর নামে একটি হীরা নিলামে বিক্রি করতে নিয়ে আসেন। হীরাটিকে তিনি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম হীরা বলে দাবী করেছিলেন।

জেমিওলজিস্ট জন সিনকেনকাসের সংকলনে নবাব পরিবারের দরিয়া-ই-নূর। ছবি: জুয়েলারি কালেকশন অব ঢাকা নবাব ফ্যামিলি/বাংলাদেশ অন রেকর্ড

ওদিকে ১৭৬৩ সালে আমস্টারডামে টেবিল আকৃতির আরেকটি হীরাকে দেবিয়ারী- নূরী বলে দাবী করা হয়। এই হীরাও নাদির শাহের কাছে ছিল বলে উল্লেখ করা হয়। দ্য মান্থলি ডাচ মার্কুরি ম্যাগাজিনে এর একটি ছবি ছাপা হয়। তবে এই হীরার আসল নাম সম্ভবত শাহ জাহান হীরা। টেবিল আকৃতির হীরা বিশ্বে খুব বেশি একটা নেই। হীরার বাজারও এত ছোট যে শাহ জাহান হীরার খোঁজ পেতে সময় লাগেনি। শাহ জাহান হীরাও ১৭৩৯ সালে দিল্লি থেকে লুট করেন নাদির শাহ। সম্ভবত সেখান থেকেই তা আমস্টারডামে বিক্রির চেষ্টায় একে দরিয়া-নূর হিসেবে হাজির করা হয়।

দরিয়া-ই-নূরের সবচেয়ে পুরোনো ছবি ও বর্ণনা

দরিয়া-ই-নূরের সবচেয়ে পুরোনো ছবি উঠে এসেছে ১৮৪১ সালে আঁকা হাঙ্গেরিয়ান পেইন্টার আগস্ট শেফটের ছবিতে। ১৮৪১ থেকে ১৮৪৩ সালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য সিংহাসনে বসেন রণজিৎ সিংয়ের ছেলে শের সিং। সেসময় এক বছর লাহোর থাকাকালে শিখ সাম্রাজ্যের বেশকিছু ছবি আঁকেন শেফট। তার আঁকা রাজা শের সিংয়ের ছবিতে রাজার ডান হাতে কোহিনুর ও বাম হাতে দরিয়া-ই-নূরের বাজুবন্ধ দেখা যায়। এ দুটি হীরা ছাড়াও ছবিটিতে রাজার গলায় আছে বিখ্যাত তৈমুরের রুবির নেকলেস।

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি লাহোর দরবারের তোশাখানা জব্দ করার পরই তিন মাস ধরে এর প্রতিটি সামগ্রীর তালিকা ও সম্ভাব্য মূল্য নির্ধারণ করেন সেনাবাহিনীর স্কটিশ সার্জন ড. জন লগিন। লগিন পরবর্তীকালে রণজিৎ সিংয়ের ছোট ছেলে রাজা দিলীপ সিংয়ের অভিভাবক হিসেবেও নিযুক্ত হন। লগিনের করা লাহোর দরবারের তোশাখানার তালিকায় কোহিনুর ও দরিয়া-ই-নূরের বর্ণনা মিলে।

দেবিয়ারী-নূরী (বামে) ও শাহ জাহান ডায়মন্ড (ডানে)। ছবি: সংগৃহীত

তৎকালীন হিসেব অনুযায়ী, জন লগিন দরিয়া-ই-নূরের মূল্য ধরেন ৬৩ হাজার রুপি বা ছয় হাজার পাউন্ড। এর ওজন লেখা হয় ১০.৮ তোলা। লগিন কোহিনূর ও দরিয়া-ই-নূর দুটো বাজুবন্ধের সঙ্গেই অতিরিক্ত ১১টি মুক্তা, ১১টি চুনি থাকার কথা উল্লেখ করেন। বাজুবন্ধের তাগার দু'প্রান্তে থাকত এই মুক্তা ও চুনি। দরিয়ার সঙ্গে অতিরিক্ত আরও ১১টি হীরা যুক্ত থাকার কথাও লিখেন লগিন। পরবর্তীকালে কোহিনূরের ছবিতে এই মুক্তা ও চুনিগুলো দেখা গেলেও, দরিয়ার বাজুবন্ধে এই অতিরিক্ত মুক্তা, হীরা ও চুনির দেখা মিলে না।

জন লগিন তালিকাসহ লর্ড ডালহৌসির কাছে তোশাখানার সামগ্রী হস্তান্তর করেন। সেখান থেকেই লাহোর দরবারের রত্ন ডালহৌসি কালেকশন নামেও পরিচিতি পায়। ১৮৫১ সালে লন্ডনে আয়োজিত হয় ঐতিহাসিক দ্য গ্রেট এক্সিবিশন। ব্রিটিশরা এই প্রদর্শনীতে নিজেদের কলোনি ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উল্লেখযোগ্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যবহনকারী সামগ্রী ও নতুন সব প্রযুক্তি তুলে ধরে। ভারতের বিভিন্ন রত্নসামগ্রীর মধ্যে প্রদর্শিত হয়, হোপের নীল হীরা, কোহিনুর ও আমাদের দরিয়া-ই-নূর। দ্য ইলাস্ট্রেশন লন্ডন নিউজ পত্রিকায় ১৭ মে বিশেষ এক নিবন্ধে এই রত্নগুলোর বিস্তারিত বিবরণ ছাপা হয়।

এসব বিবরণে ২৬ ক্যারেটের হীরাটিকে 'সো কল্ড' বা 'তথাকথিত' দরিয়া-ই-নূর উল্লেখ করা হয়। অর্থাৎ, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ১৮২ ক্যারেটের দরিয়ার অন্যত্র থাকার বিষয়ে অবগত ছিল। নিবন্ধটিতে কোহিনূর ও দরিয়া-ই-নূরের কাটিং নিয়ে কঠিন সমালোচনা করা হয়। আগত দর্শকরা নাকি এই দুই হীরার কাটিং নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন না। প্রাচ্যে হীরার নান্দনিক কাটিং-এর চেয়ে এর আকার বেশি গুরুত্ব পায় বলেও মন্তব্য করা হয়।

দ্য ইলাস্ট্রেটেড লন্ডন নিউজে কোহিনূর ও দরিয়া-ই-নূর। ছবি: দ্য ইলাস্ট্রেটেড লন্ডন নিউজ

চ্যাপ্টা হীরা কেন যেন ব্রিটিশরা পছন্দই করে না। ১৮৮৭ সালে কলকাতার বালিগঞ্জের নওয়াব বাড়িতে দরিয়া-ই-নূর দেখেন তৎকালীন ভাইসরয় লর্ড ডাফরিন ও লেডি ডাফরিন। আওয়ার ভাইসরিগ্যাল লাইফ ইন ইন্ডিয়া বইটিতে লেডি ডাফরিন লিখেন, 'চ্যাপ্টা হীরা হওয়ায় দরিয়া-ই-নূর আমাদের চোখে খুব একটা আকর্ষণীয় লাগেনি'।

১৯৫১ সালের ৩১ মে ভারতীয় এক শিল্পীর হাতে আঁকা দরিয়া-ই-নূরের ছবি প্রকাশ করে দ্য ইলাস্ট্রেশন লন্ডন নিউজ। দরিয়া-ই-নূর যখন ব্রিটিশদের হাতে আসে তখন এটি দেখতে কেমন ছিল সেই ছবিই এখানে তুলে ধরা হয়। প্রদর্শনীর বিভিন্ন সামগ্রীর ছবির স্কেচ দিয়ে পরের বছর প্রকাশিত হয় ক্রিস্টাল প্যালেস অ্যান্ড ইটস কনটেন্ট। ৫০০ ছবি সংকলিত বইটিতেও দরিয়া-ই-নূরের ছবি ও বর্ণনা মিলে।

দ্য ক্রিস্টাল প্যালেস অ্যান্ড ইটস কনটেন্টস বইয়ে দরিয়া-ই-নূর ও গ্রেট এক্সিবিশন। ছবি: সংগৃহীত

এ বইটিতে দরিয়া-ই-নূরকে 'বিখ্যাত লাহোর ডায়মন্ড' বলে উল্লেখ করা হয়। এর বর্ণনায় বলা হয়, 'একটি বাজুবন্ধের ঠিক মাঝখানে আরও ১০টি বড় হীরার মধ্যমণি দরিয়া-ই-নূর। হীরাটির কাটিং খুব ভালো নয়, বসানোর ধরনও জুতসই না। তবে আকার ও বিশুদ্ধতার দিক দিকে এই হীরা মহামূল্যবান।'

স্কটল্যান্ডের মিউজিয়মে এ কোন বাজুবন্ধ!

দ্য গ্রেট এক্সিবিশনের আগেই কোহিনুরকে এর বাজুবন্ধের পুরোনো সেটিং থেকে খুলে নেওয়া হয়। তবে জয়পুরী মিনাকারী সোনার সেই বাজুবন্ধটি এখনও ব্রিটেনের রয়্যাল কালেকশনে সংরক্ষিত রয়েছে। হীরার জায়গায় বসানো হয়েছে পুরোনো কোহিনূরের কাটিং মাফিক ক্রিস্টাল কোয়ার্টজ। কোহিনূরের দুপাশের দুটি হীরা সরিয়েও ক্রিস্টাল পাথর বসানো হয়েছে।

ন্যাশনাল আর্কাইভস অব ইন্ডিয়া'র ডকুমেন্ট। ছবি: সংগৃহীত

মজার বিষয় হলো, আমাদের জানামতে, এখন পর্যন্ত দরিয়া-ই-নূরকে বাজুবন্ধ থেকে আলাদা করার কোনো ঘটনা না শোনা গেলেও হুবহু দরিয়া-ই-নূরের মতোই ক্রিস্টাল সেটিংয়ের একটি বাজুবন্ধ স্কটল্যান্ডের মিউজিয়মে প্রদর্শিত হয়ে আসছে। হতে পারে এটি দরিয়া-ই-নূরেরই কোনো রেপ্লিকা। তবে কোহিনুরের পুরোনো সেটিং ও দরিয়া-ই-নূরের বর্ণনার মতোই এর বাজুবন্ধটির পেছনেও সোনার মধ্যে লাল, সবুজ ও গাঢ় নীল রঙের জয়পুরী মিনা খোদাই করা রয়েছে। হীরার জায়গা ক্রিস্টাল কোয়ার্টজ বসানো হলেও বেজটি খাঁটি রূপার। কোহিনুরের বাজুবন্ধের মতো এর তাগাও মেরুন রঙের সিল্ক সুতার। ২০১৪ সালে রাজা দিলীপ সিংয়ের গয়নার এক প্রদর্শনীতেও বাজুবন্ধটি উপস্থাপিত হয়।

এই বাজুবন্ধটিও লাহোরের রাষ্ট্রীয় তোশাখানা থেকেই আগত ও সিং পরিবারের রত্ন। তবে মিউজিয়মের তথ্যানুসারে, এই বাজুবন্ধটি এসেছে ১৭তম বেঙ্গল ক্যাভালরির স্কোয়াড্রন কমান্ডার মেজর জেনারেল লিন্ডসে কার্নেগির সংগ্রহশালা থেকে। ১৯১১ সালে কার্নেগির ইচ্ছানুসারে তার মৃত্যুর পর স্কটল্যান্ডের ন্যাশনাল মিউজিয়ামে এই বাজুবন্ধসহ তার সংগ্রহশালার সবকিছু দান করা হয়। কার্নেগির সংগ্রহে এই বাজুবন্ধটি ছাড়াও লাহোরের আরও কিছু রত্নালঙ্কার ছিল যেগুলো তিনি ১৮৯৮ সালে মহারাজা দিলীপ সিংয়ের বড় ছেলে প্রিন্স ভিক্টর সিংয়ের কাছ থেকে কিনেছিলেন বলে জানা যায়। সে যা-ই হোক, এমনটা হতেই পারে যে সিং পরিবারের কাছে একই রকমের দুটো বাজুবন্ধ ছিল।

বাজুবন্ধে রুপার ওপর দরিয়া-ই-নূরের আকৃতির ক্রিস্টাল ও উল্টোপিঠে সোনার ওপর জয়পুরী মিনাকারী নকশা। ছবি: সংগৃহীত

তবে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হলো, ১৯১১ সালে, মানে যে বছর স্কটল্যান্ডের মিউজিয়মে বাজুবন্ধটি এসেছিল, সে বছরই দরিয়া-ই-নূরকে দ্বিতীয়বারের মতো ইংল্যান্ডে পাঠানো হয়। খাজা সলিমুল্লাহ ঋণ পরিশোধ করার জন্য দরিয়া-ই-নূর বিক্রি করতে চেয়েছিলেন। সেই উদ্দেশ্যেই হ্যামিল্টন অ্যান্ড কোম্পানি ১৯১১ সালে হীরাটি আবারও ইংল্যান্ডে নিয়ে আসে।

১৯১২ সালে রাজা জর্জ ও রানি মেরি ভারত সফরে এলে লেফট্যানেন্ট করনেল ডানলপ স্মিথ ভারত সরকারের পররাষ্ট্র বিভাগের অ্যাডিশনাল সেক্রেটারি জে. বি. উডের কাছে দরিয়া-ই-নূরসহ লাহোরের রত্নগুলোর অবস্থা সম্পর্কে জানতে  চান। ১৯১২ সালের ৭ জানুয়ারি ফিরতি চিঠিতে উড লেখেন, নবাবের দেনা চুকাতে মেসার্স হ্যামিল্টন দরিয়া-ই-নূরকে আবারও ইংল্যান্ডে নিয়ে গেছে। দরিয়া-ই-নূর যদি ফেরত এসে থাকে তাহলে রাজা জর্জ ও রানি মেরিকে তা দেখানোর ব্যবস্থা করা হবে। তবে হীরাটিকে বিশেষজ্ঞরা ১৫০০ পাউন্ডের বেশি হবে না বলে ঘোষণা করেছে বলে ডানলপকে জানান উড। পরবর্তীতে হীরা ফেরত আসার কথা জানিয়ে হ্যামিল্টন অ্যান্ড কোম্পানিই রাজা জর্জ ও রানি মেরির কাছে হীরাটি উপস্থাপনের ব্যবস্থা করে। ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত হ্যামিল্টনের তত্ত্বাবধানেই ব্যাংকে জমা থাকে দরিয়া-ই-নূর।

স্কটল্যান্ডের মিউজিয়াম আয়োজিত এক প্রদর্শনীতে রাজা দিলীপ সিংয়ের কাল্পনিক ছবি। রাজার বামহাতে কোহিনুর ও দরিয়া-ই-নূর। ছবি: এনএমএস/ইউকে

বর্তমানে দরিয়া-ই-নূর সোনালী ব্যাংকের ভল্টে আছে কি নেই, তা নিয়ে নানা গুজব থাকলেও সোনালী ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান, দরিয়া-ই-নূর ব্যাংকের ভল্টেই রয়েছে।

জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালনকালে দরিয়া-ই-নূরকে প্রদর্শনীর জন্য জাদুঘরে নিয়ে আসার চেষ্টা করেন ফয়জুল লতিফ চৌধুরী। তিনি বলেন, 'দরিয়া-ই-নূর সোনালী ব্যাংকের ভল্টেই আছে। বিভিন্ন সময় হীরাটি যখন এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে স্থানান্তর করা হয়, তখন কোনো ঝামেলা না হয়ে থাকলে ভল্ট থেকে এর গায়েব হওয়ার সম্ভাবনা নেই। আমি জাতীয় জাদুঘরের দায়িত্ব পালনকালে হীরাটি নিয়ে আসার অনেক চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু হীরা ছাড়াও অন্যান্য রত্নালঙ্কারের বিষয়টিও জড়িত ছিল। এগুলোর সার্বিক নিরাপত্তা নিয়ে ভীতির কারণেই ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে শেষ পর্যন্ত অনুমতি মেলেনি।'

তথ্যসূত্র:

  • The illustrated London news. v.18 1851 Jan-Jun
  • The Crystal Palace, and its contents (1851)
  • Baggage & Belonging Catalogue 2020, National Museums Scotland
  • The Koh-i-nûr armlet c. 1830, Royal Collection Trust
  • Daryā-ye Nur: History and Myth of a Crown Jewel of Iran, Anna Malecka
  • History of Kohinoor, Darya-i-Noor and Taimur's Rub, 1985
  • De Maandelykse Nederlandische Mercurius, Volumes 16-19
  • 'Casualty of War: A Portrait of Maharaja Duleep Singh' - A Summary, 2013
  • Meet Daria-i-Noor, the Koh-i-Noor's little-known sibling, Shyam Bhatia
  • Maharaja Sher Singh Wearing the Koh-I-Noor Diamond c1841-42, UK Punjab Heritage Association
  • The Jewellery Of The Last Sikh Emperor: Maharaja Duleep Singh
  • Our Viceregal Life in India: Selections from My Journal, 1884-1888
  • Jewellery collection of Dhaka Nawab Family, Bangladesh on Record
  • ঢাকা নবাব এস্টেট কোর্ট অব ওয়ার্ডসের ইনডেনচারের বিবরণ, ভূমি সংস্কার বোর্ড

পরিশিষ্ট: এ অংশটি কোনো ইতিহাস নয়, সম্পূর্ণ কাল্পনিক। যারা রহস্য গল্প ভালোবাসেন, তারা পড়তে পারেন। যদি ধরে নেওয়া হয় স্কটল্যান্ডের মিউজিয়ামের বাজুবন্ধটিতে একসময় সত্যিই কোনো হীরা ছিল, তাহলে সেই হীরা এখন কোথায়? ধরা যাক সেখানেও ২৬ ক্যারেটের কোনো হীরা ছিল। তবে এরকম হীরা সাধারণত সচরাচর দেখা যায় না। ২০ ক্যারেটের ওপরের হীরা একরকম দুর্লভ। তাছাড়া বিশ্বে হীরার বাজারও খুব ছোট। রোজ রোজ এত বড় হীরার খবরও শোনা যায় না। সেকারণেই ২০ ক্যারেটের ওপরের হীরাগুলোর খোঁজ শুরু করি। এরপর যেটা পাই সেটা আমার থ্রিলারপ্রেমী মনের জন্য যথেষ্ট আনন্দের খোরাক নিয়েই আসে। ২০১৭ সালে লন্ডনে নিলামকারী প্রতিষ্ঠান সথেবির কাছে ২৬ ক্যারেটের একটি হীরার আংটি নিয়ে উপস্থিত হন এক নারী। ৮০'র দশকে নাকি লন্ডনের এক জাংক সেলে মাত্র ১০ পাউন্ড দিয়ে আংটিটি কিনেছিলেন তিনি। নাম-পরিচয় গোপন রাখা ওই নারী এরপর দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে আংটিটি পরেছেন। একদিন এক জুয়েলার তাকে জানায় তার হাতের আংটির পাথরটি কোনো সাধারণ পাথর নয়। যা-ই হোক, হীরাটি পরীক্ষা করে বিশেষজ্ঞরা জানান, এটি ১৯ শতকের ভারতীয় কোনো রাজ পরিবারের ব্যবহৃত হীরা। অন্তত ১০০ বছর আগে হীরাটি কাটা হয়েছে। কুশন কাটের এই হীরা অনেকটা টেবিল কাটের মতোই চ্যাপ্টা। পরের বছর ২০১৮ সালে হীরাটির দাম ধরা হয় ৩.৩ মিলিয়ন ডলার। হীরার বাজারে এর নতুন নাম হয় ফরচুনা ডায়মন্ড। যে কারও ভাগ্য বদলে দিতে পারে এই হীরা, এমন বিশ্বাস থেকেই নামকরণ। ফরচুনা এই হীরার সঙ্গে দরিয়া-ই-নূরের কোনো সম্পর্ক না থাকার সম্ভাবনাই বেশি। কিন্তু যারা রহস্য, গুপ্তধন বা থ্রিলার গল্প ভালোবাসেন তারা এই নির্দোষ প্লট আর যোগসূত্র শুনে যে আনন্দ পাবেন তাতে কোনো সন্দেহ নেই!

Related Topics

টপ নিউজ

দরিয়া-ই-নূর / হীরা / কোহিনূর হীরা / দুলিপ সিং / রানি ভিক্টোরিয়া

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • বাংলাদেশের ২০ মিগ-২৯ ইঞ্জিনের মধ্যে সচল মাত্র ৬টি—৩৮০ কোটি টাকার মেরামত চুক্তির উদ্যোগ
  • ২০৪৫ সালের মধ্যে ২০০ বিলিয়ন ডলার দান করব, বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র শিশুদের ‘হত্যা’ করছেন মাস্ক: গেটস
  • রাতভর উত্তেজনা শেষে ভোরে গ্রেপ্তারের পর হত্যা মামলায় কারাগারে আইভী
  • আবদুল হামিদের দেশত্যাগ: দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে এক পুলিশ কর্মকর্তা প্রত্যাহার, ২ জন সাময়িক বরখাস্ত
  • নয়াদিল্লিতে সৌদি ও ইরানি মন্ত্রী; পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে পূর্বে যেসব তৃতীয় পক্ষ মধ্যস্থতা করেছে
  • ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার মধ্যেই মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্টের

Related News

  • বিশ্বের প্রথম হীরার ব্যাটারি, হাজার বছর চার্জ থাকার দাবি!
  • হীরার স্বপ্ন: ভাগ্য বদলের আশায় প্রজন্মের পর প্রজন্ম যারা ভারতের রত্নের শহরে খনন করে যাচ্ছেন
  • বতসোয়ানার খনিতে পাওয়া গেল বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম হীরা
  • ভারতে ঋণগ্রস্ত শ্রমিক পেলেন ৯৫ হাজার ডলার দামের হীরা
  • প্রতিদিন ২৫০ কোটি টাকার সোনা ও হীরা অবৈধভাবে বাংলাদেশে ঢুকছে: বাজুস

Most Read

1
বাংলাদেশ

বাংলাদেশের ২০ মিগ-২৯ ইঞ্জিনের মধ্যে সচল মাত্র ৬টি—৩৮০ কোটি টাকার মেরামত চুক্তির উদ্যোগ

2
আন্তর্জাতিক

২০৪৫ সালের মধ্যে ২০০ বিলিয়ন ডলার দান করব, বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র শিশুদের ‘হত্যা’ করছেন মাস্ক: গেটস

3
বাংলাদেশ

রাতভর উত্তেজনা শেষে ভোরে গ্রেপ্তারের পর হত্যা মামলায় কারাগারে আইভী

4
বাংলাদেশ

আবদুল হামিদের দেশত্যাগ: দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে এক পুলিশ কর্মকর্তা প্রত্যাহার, ২ জন সাময়িক বরখাস্ত

5
আন্তর্জাতিক

নয়াদিল্লিতে সৌদি ও ইরানি মন্ত্রী; পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে পূর্বে যেসব তৃতীয় পক্ষ মধ্যস্থতা করেছে

6
আন্তর্জাতিক

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার মধ্যেই মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্টের

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net