গত এক দশকে বাংলাদেশের অর্থনীতি সবচেয়ে চাপেঃ সিপিডি

গত এক দশকের মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতি সবচেয়ে চাপে আছে বলে জানিয়েছে বেসরকারী গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
মঙ্গলবার (১১ জুন) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থা ও বাজেট প্রসঙ্গ’ শীর্ষক গবেষণার ফলাফল প্রকাশ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান সিপিডির বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
তিনি বলেন, “অর্থনীতির যে মূল চালিকাশক্তি সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা, তা দুর্বল হচ্ছে এবং যেকোন সময়ের তুলনায় গত দশ বছরের মধ্যে এটা সবচেয়ে চাপে আছে।”
রাজস্ব আদায়ে দুর্বলতা, ব্যাংকিং খাতের সংকট এবং বৈদেশিক লেনদেনের ওপর চাপকে অর্থনীতির ওপর চাপের অনুষঙ্গ হিসেবে দেখানো হয়েছে সিপিডির এই প্রতিবেদনে।
সিপিডির এই ফেলোর মতে, দেশে রাজস্ব আদায় এই মুহুর্তে সর্বনিম্ন গতিতে আছে; আদায়ের এই প্রক্রিয়ায় যদি পরিবর্তন না আনা হয় তবে মধ্যম আয়ের অর্থনীতির যে স্বপ্ন বাংলাদেশ দেখছে তা বাধাগ্রস্থ হবে। অবকাঠামোর উন্নয়নের যে পদক্ষেপগুলো সরকার নিয়েছে, সেগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির অর্ধেকই অর্থবছরের শেষ তিন মাসে বাস্তবায়িত হয় যা দেশের উন্নয়ন কার্যক্রমের দুর্বলতাগুলোকেই তুলে ধরছে বলে বলা হয়েছে এই প্রতিবেদনে। উন্নয়ন কর্মসূচির কাজের মান নিয়েও প্রশ্ন তোলেন ড. ভট্টাচার্য।
প্রতিবেদনে বলা হয়, “এটা নিশ্চিত যে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য রাজস্ব আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা তা পূরণ হয়নি।”
২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রায় ৮৫ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব ঘাটতি থাকতে পারে বলে ধারণা করছে সিপিডি যার পরিমাণ গত অর্থবছরে ছিল ৭১ হাজার কোটি টাকা।
ড দেবপ্রিয় বলেন, “বৈদেশিক লেনদন এর আগে কখনোও এতোটা চাপের সম্মুখীন হয়নি। রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের প্রবাহ ভালো হলেও বাণিজ্য ঘাটতি ক্রমশই বাড়ছে।”
এর কারণ হিসেবে তিনি দায়ী করেছেন উচ্চ আমদানির পরিমাণকে।
অনুষ্ঠানে ড. দেবপ্রিয় জানান, উচ্চ বাণিজ্য ঘাটতি বৈদেশিক আয়ের রিজার্ভ দ্রুত কমিয়ে ফেলছে। বৈদেশিক আয়ের রিজার্ভ ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে ‘আট মাসের আমদানির’ সমপরিমাণ ছিল যা মার্চে এসে ‘পাঁচ মাসের’ সমপর্যায়ে নেমে আসে।
তিনি বলেন, “২০১৮-১৯ অর্থবছরের জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ১১ দশমিক ৯২ বিলিয়ন ডলার; এই সময়ে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩১ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার।”
ড. দেবপ্রিয় জানান, ডলার বিক্রির মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক টাকার মান স্থির রাখার চেষ্টা করছে যার ফলাফল হিসেবে আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশ তার সক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে।