ল্যুভ-তে ইউরোপের বাইরের দর্শনার্থীদের জন্য টিকিটের দাম বাড়ছে ৪৫%
ফ্রান্সের প্যারিসে বিশ্বখ্যাত ল্যুভর মিউজিয়ামে প্রবেশমূল্য প্রায় ৪৫ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের অধিকাংশ পর্যটকদের জন্য এই মূল্যবৃদ্ধি কার্যকর হবে।
গেল বৃহস্পতিবার বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী বছরের শুরু থেকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও চীনের পর্যটকদের ল্যুভরে ঢুকতে ৩২ ইউরো দিতে হবে। জাদুঘরের সংস্কার ও আধুনিকায়ন পরিকল্পনার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহে এই মূল্য সমন্বয় করা হবে।
আগামী ১৪ জানুয়ারি থেকে এই নতুন প্রবেশমূল্য কার্যকর হবে। ইউরোপীয় অর্থনৈতিক অঞ্চলের বাইরের দেশগুলোর দর্শনার্থীদেরও অতিরিক্ত ১০ ইউরো গুনতে হবে। বিশ্বের সর্বাধিক দর্শনার্থীর তালিকায় শীর্ষে থাকা এই জাদুঘর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, স্বীকৃত গাইডের সঙ্গে আসা নন-ইইউ দলের পর্যটকদেরও এখন থেকে ২৮ ইউরো দিতে হবে।
ল্যুভরের আধুনিকায়ন পরিকল্পনাকে সামনে রেখে বছরে অতিরিক্ত ১৫ থেকে ২০ মিলিয়ন ইউরো আয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ফ্রান্সের ল্যুভর জাদুঘর নিয়ে নিরাপত্তা ও অবকাঠামোগত দুর্বলতা দীর্ঘদিন ধরেই সমালোচনার মুখে। গত অক্টোবরে একটি দল মাত্র কয়েক মিনিটে ১০ কোটি ২০ লাখ ডলার মূল্যের গয়না চুরি করে পালিয়ে যাওয়ার পর সেই সমালোচনা আরও তীব্র হয়। ঘটনাটির পর একটি অফিসিয়াল অডিট রিপোর্টে ল্যুভরের দুর্বল নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও জীর্ণ অবকাঠামোর বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছিল।
অতিরিক্ত ভিড় সামলানোও জাদুঘর কর্তৃপক্ষের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। গত বছর ল্যুভরে প্রায় ৯০ লাখ দর্শনার্থী এসেছিলেন, যাদের অধিকাংশই বিদেশি। দর্শনার্থীরা নিয়মিতভাবে গ্যালারিগুলোতে মাত্রাতিরিক্ত ভিড় ও দীর্ঘ লাইনের অভিযোগ করে আসছেন।
এর আগে জানুয়ারিতে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ এবং ল্যুভর কর্তৃপক্ষ জাদুঘরের উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপের ঘোষণা দেন। তখন ২০২৬ সাল থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দর্শনার্থীদের জন্য প্রবেশ ফি বাড়ানোর ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল। তবে সেই সিদ্ধান্ত আরও আগেই কার্যকর হতে যাচ্ছে।
পাশাপাশি, দর্শনার্থীর অতিরিক্ত ভিড় নিয়ন্ত্রণে মাখোঁ জানিয়ে ছিলেন, মোনালিসার চিত্রকর্মটি নতুন একটি জায়গায় সরিয়ে নেওয়া হবে।
ল্যুভর জাদুঘরে প্রতিদিন প্রায় ৩০ হাজার দর্শনার্থী আসেন, যাদের বেশির ভাগই লিওনার্দো দা ভিঞ্চির আঁকা বিখ্যাত মোনালিসা দেখতেই ভিড় করেন। অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে দর্শনার্থীদের রীতিমতো ঠেলাঠেলি করে ঢুকতে হয়। সেখানে গিয়ে ছবিটি দেখা বা ছবি তোলার সুযোগ মিললেও তা অল্প কিছু সময়ের জন্য।
