অবশেষে ফিরলেন মহাকাশের ধ্বংসাবশেষে ক্ষতিগ্রস্ত ‘শেনঝু-২০’-এর ৩ মহাকাশচারী
নির্ধারিত সময়ের এক সপ্তাহেরও বেশি সময়ের পর শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) পৃথিবীতে ফিরেছেন চীনের তিন মহাকাশচারী। তাদের ফিরে আসার মহাকাশযান 'শেনঝু-২০' সম্ভবত মহাকাশের ধ্বংসাবশেষের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এই বিলম্ব হয়েছে।
এই নভোচারীরা হলেন- নভোচারী চেন দং, চেন ঝোংরুই ও ওয়াং জি।
চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সিসিটিভি জানিয়েছে, হ্যাচ খোলার পর চিকিৎসক দল জানায় মহাকাশচারীরা শারীরিকভাবে সুস্থ আছেন।
শেনঝু-২০ মহাকাশযানের ক্রুদের গত বুধবার চীনের তিয়ানগং মহাকাশ স্টেশনে তাদের মিশন শেষ করার কথা ছিল।তারা এমনকি পরবর্তী ছয় মাসের মিশনে সদ্য যাওয়া নতুন ক্রুদের কাছে স্টেশনের দায়িত্বও হস্তান্তর করেছিলেন।
রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়ার তথ্যমতে, তাদের মহাকাশযানে 'ক্ষুদ্র মহাকাশ ধ্বংসাবশেষের সন্দেহজনক আঘাতের' কারণে তাদের ফেরার যাত্রা স্থগিত করা হয়।
৯ দিন অপেক্ষার পর তারা অবশেষে শেনঝু-২১ মহাকাশযনে করে পৃথিবীর পথে যাত্রা করেন।
চায়না ম্যানড স্পেস এজেন্সি (সিএমএসএ) জানায়, শেনঝু-২১ মহাকাশযানে নতুন ক্রুরা স্টেশনে গিয়েছিলেন।
সিএমএসএ জানায়, ক্ষতিগ্রস্ত শেনঝু-২০ মহাকাশযানের ফেরার ক্যাপসুলের জানালায় 'হালকা ফাটল' দেখা যায়, যা কোনো মহাকাশীয় ধ্বংসাবশেষের আঘাতেই হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ কারণে এ মহাকাশযানটিতে করে ক্রুদের ফিরিয়ে আনা নিরাপদ ছিল না। ফলে মহাকাশযানটি কক্ষপথেই থেকে যাবে এবং পরীক্ষামূলক কার্যক্রম চালাবে।
অতিরিক্ত এক সপ্তাহ মহাকাশে অবস্থানকালে শেনঝু-২১-এর নতুন সদস্যদের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যান শেনঝু-২০-এর সদস্যরা।
সিনহুয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, তিয়ানগং স্টেশনে একই সময়ে দুটি ক্রুর অবস্থান করার মতো সক্ষমতা রয়েছে।
তিয়ানগং এখন কার্যকর থাকা দুটি মহাকাশ স্টেশনের একটি, অন্যটি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন।
২০২২ সালে স্টেশনটি সম্পন্ন হওয়ার পর থেকে ছয়মাস পরপর মহাকাশযান উৎক্ষেপণ করছে চীন।
চীন সম্প্রতি নয় ঘণ্টার অভিযানে দীর্ঘতম মহাকাশ পদচারণার মার্কিন রেকর্ড ভেঙেছে। আগামী বছরে প্রথম বিদেশি হিসেবে পাকিস্তানের এক মহাকাশচারী তিয়ানগং স্টেশনে যাবেন বলে পরিকল্পনা রয়েছে।
শেনঝু-২১-এ থাকা নতুন ক্রুদের মধ্যে রয়েছেন চীনের সবচেয়ে কমবয়সী মহাকাশচারী উ ফেই। তার বয়স মাত্র ৩২ বছর।
আগামী বছর কোনো এক সময়ে উৎক্ষেপণ হতে যাওয়া শেনঝু-২২-এ একজন মহাকাশচারী থাকবেন, যিনি এক বছরেরও বেশি সময় মহাকাশে অবস্থান করে 'দীর্ঘমেয়াদি আবাসন পরীক্ষা' করবেন বলে সিনহুয়া জানিয়েছে।
মহাকাশ অনুসন্ধানে চীনের অগ্রগতি যুক্তরাষ্ট্রে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। যুক্তরাষ্ট্র এখন আবার মহাকাশচারীদের চাঁদে পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এর আগে, ট্রাম্প প্রশাসন চীনা নাগরিকদের নাসার কর্মসূচিতে অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল।
