চীনে সামরিক শুদ্ধিকরণ অভিযানের পর নতুন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জেনারেল নিয়োগ
সেনাবাহিনীতে বড় ধরনের শুদ্ধি অভিযানের মাধ্যমে নয়জন জেনারেলকে বহিষ্কারের মাত্র কয়েকদিন পরই চীনের কমিউনিস্ট পার্টি দেশটির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জেনারেল পদে নতুন নিয়োগ দিয়েছে। সামরিক বাহিনীতে দুর্নীতিবিরোধী কর্মকাণ্ডের তদারকিতে অভিজ্ঞ এক কর্মকর্তাকে এই দায়িত্বে আনা হয়েছে।
চার দিনব্যাপী কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক শেষে ঝাং শেংমিনকে সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনের (সিএমসি) দ্বিতীয় ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগের ঘোষণা দেওয়া হয়। এই পদোন্নতির ফলে ঝাং এখন দেশটির শীর্ষ সামরিক সংস্থাটির তৃতীয় সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর ব্যক্তি হলেন। তার উপরে রয়েছেন প্রথম ভাইস চেয়ারম্যান এবং প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, যিনি একাধারে কমিশনের চেয়ারম্যান।
গত সপ্তাহে চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, বহিষ্কৃত নয় জেনারেলের বিরুদ্ধে গুরুতর আর্থিক অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। তবে বিশ্লেষকদের মতে, এটিকে একটি রাজনৈতিক শুদ্ধি অভিযান হিসেবেও দেখা যেতে পারে। কয়েক দশকের মধ্যে সামরিক বাহিনীর ওপর চীনা কমিউনিস্ট পার্টির চালানো সবচেয়ে বড় প্রকাশ্য দমন অভিযানগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম।
সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশন কয়েক মাস ধরেই এমন কঠোর অভিযানের ইঙ্গিত দিয়ে আসছিল। জুলাই মাসে সংস্থাটি সামরিক বাহিনী থেকে 'বিষাক্ত প্রভাব' নির্মূল এবং কর্মকর্তাদের জন্য 'কঠোর নিয়ম' চালুর কথা বলে নতুন নির্দেশিকা জারি করেছিল। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওয়েই ফেংহে এবং লি শাংফুর মতো উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও ছোট পরিসরে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল।
পদোন্নতির পর ৬৭ বছর বয়সী ঝাং শেংমিন সিএমসি-তে আরেকজন জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান ঝাং ইউশিয়ার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন। তিনি পিপলস লিবারেশন আর্মির রকেট ফোর্সের একজন জেনারেল এবং এর আগে কমিশনের দুর্নীতি দমন শাখার ডেপুটি সেক্রেটারি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। মধ্য চীনের শানসি প্রদেশের বাসিন্দা ঝাং ১৯৭৮ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন।
বৃহস্পতিবার শেষ হওয়া চার দিনের বৈঠকে পার্টি একটি নতুন পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাও অনুমোদন করেছে, যা দলটির ভবিষ্যৎ অগ্রাধিকারের রূপরেখা হিসেবে কাজ করবে। পরিকল্পনায় 'বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত আত্মনির্ভরশীলতার' ওপর বিশেষভাবে জোর দেওয়া হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন যদি কম্পিউটার চিপস এবং উন্নত সফটওয়্যারের ওপর বিধিনিষেধ অব্যাহত রাখে, তবে চীনা প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর জন্য এই বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।
ভূ-রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে রপ্তানি আয় কমে যাওয়ার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে দলিলে 'সবুজ রূপান্তরকে ত্বরান্বিত করা,' 'প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার আধুনিকায়ন' এবং অভ্যন্তরীণ ভোগ বাড়ানোর ওপরও গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
