শেখ হাসিনা কয়েকদিন আগে সেনাবাহিনীকে উসকে দিয়ে গৃহযুদ্ধ বাধানোর চেষ্টা করেছেন: চিফ প্রসিকিউটর
গণঅভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কয়েকদিন আগে সেনাবাহিনীকে উসকে দিয়ে গৃহযুদ্ধ বাধানোর চেষ্টা করেছেন, কিন্তু সেই উসকানি বিফলে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, 'কয়েকদিন আগে (১৫ সেনা কর্মকর্তাকে হেফাজতে নেওয়ার পর) শেখ হাসিনা বাংলাদেশে একটা গৃহযুদ্ধ লাগানোর চেষ্টা করেছেন। তিনি সেনাবাহিনীকে উসকানি দিয়েছেন যে তোমাদের কিছু কিছু অফিসারের বিচার হচ্ছে, তোমরা এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াও। কিন্তু দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী সেই উসকানিতে পা দেয়নি।'
শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে বিচারকাজের শেষ দিনে বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
এসময় তিনি বলেন, 'মানুষ এই উসকানি বুঝতে পেরেছে, তারাও পা দেয়নি। কারণ শুধুমাত্র যাদের বিরুদ্ধে অপরাধের সুস্পষ্ট প্রমাণ আছে, তাদের বিচারের প্রক্রিয়ায় আনা হয়েছে।'
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, 'সেনাবাহিনী নিজের আইনের শাসনের প্রতি, ল' অব দি ল্যান্ডের প্রতি সুদৃঢ় অঙ্গীকারের কথা বলেছেন। তারা সেটা প্রমাণ করেও দেখিয়েছেন। সুতরাং তাদের এসব উসকানি বিফলে গেছে।'
এছাড়াও জুলাই আন্দোলনে এতগুলো মানুষ হত্যার পরও শেখ হাসিনার আচরণে অনুশোচনা নেই বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
তাজুল ইসলাম বলেন, 'চব্বিশের জুলাই-আগস্টে এতগুলো মানুষ হত্যার পর বাংলাদেশে যে পরিবেশ তৈরি করা হয়েছিল, যেভাবে তিনি এত সংখ্যক মানুষকে আহত বা অঙ্গহানি করেছেন, বাংলাদেশকে বদ্ধভূমিতে পরিণত করেছিলেন, এর জন্য কোনো অনুশোচনা নেই তার (শেখ হাসিনা)। উল্টো তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় নানাভাবে হুমকি দিচ্ছেন যারা মামলা করেছেন, সাক্ষী দিয়েছেন, তাদের হত্যা করার ও বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার।'
তিনি বলেন, 'দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে উসকে দেওয়ার মতো কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আসামিরা প্রমাণ করেছেন যে তাদের সামান্যতম অনুশোচনা নেই। অনুশোচনাহীন এমন হত্যাকারীদের ব্যাপারে আদালতের দৃষ্টিভঙ্গি স্বচ্ছ থাকা উচিত যে তারা কোনো রকমের অনুকম্পা পাওয়ার যোগ্য নন। এটাই আমাদের সর্বশেষ বক্তব্য ছিল।'
তিনি আরও বলেন, 'আমি বলেছি এ অপরাধের বিচার হচ্ছে— নেভার এগেইন। অর্থাৎ, বাংলাদেশে কখনো আর এমন দিন যেন ফিরে না আসে। এভাবে শিশুদের রাজপথে জীবন দিতে না হয়। ভয় ও আতঙ্কের দিন বাংলাদেশে কখনো ফিরে না আসে।'
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, 'আদালত আগামী ১৩ নভেম্বর তারিখ নির্ধারণ করেছেন। ওইদিন ঘোষণা করবেন কবে রায় হবে।'
