শেখ হাসিনা পালিয়ে যাননি, যেতে বাধ্য হয়েছেন: রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পালিয়ে যাননি, বরং যেতে বাধ্য হয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন স্টেট ডিফেন্স আইনজীবী মো. আমির হোসেন।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক খণ্ডন শেষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আমির হোসেন বলেন, 'আজ অ্যাটর্নি জেনারেল যে বক্তব্য দিয়েছেন, তার প্রেক্ষাপটে আমি দুটো জবাব দিয়েছি। উনি বলতে চাইছেন যে আমার আসামি পালিয়ে গিয়েছেন। আমি সেক্ষেত্রে বলেছি, আমার আসামি পালিয়ে যাননি। উনি এ দেশ থেকেই যেতে চাননি; তা বিভিন্ন পত্রপত্রিকাসহ সব জায়গায় এসেছে। উনি [শেখ হাসিনা] এ কথাও বলেছেন যে, আমাকে প্রয়োজনে এখানে মাটি দেন, হত্যা করেন, তবু আমি যাব না। কিন্তু পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছিল যে ওনাকে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। উনি হেলিকপ্টারে গেছেন, দেশের মানুষ তা দেখেছেন। অতএব পালিয়ে যাওয়া মানে চোরের মতো লুকিয়ে যাওয়া; তবে এই 'পালিয়ে যাওয়া'র বিষয়টি আমি ডিফেন্ড করেছি।'
তিনি আরও বলেন, 'দ্বিতীয় একটি বক্তব্যেরও জবাব দিয়েছি। বলা হয়েছে, আমার আসামিরা প্রজন্মকে শেষ করে দিতে চেয়েছিলেন। অথচ মানবতাবিরোধী অপরাধ হতে হলে একটি সম্প্রদায়, জাতি বা গোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ন করার প্রচেষ্টা থাকতে হয়; যেমনটি হিটলার করেছিলেন ইহুদিদের ক্ষেত্রে। সেখানে জেনোসাইড ও মানবতাবিরোধী অপরাধ দুটোই প্রযোজ্য ছিল। কিন্তু এখানে তা প্রযোজ্য নয়। এটাই আমার মূল বক্তব্য। বাদিপক্ষ যেমন ন্যায়বিচার চান, আমরাও ন্যায়বিচার চাই। তবে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দায়িত্ব ট্রাইব্যুনালের, যা তারা নিশ্চিত করবেন এবং দেশের ও পৃথিবীর মানুষ তা দেখবে বলে আশা করছি।'
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'একটি রাজনৈতিক দলের নেতা বিদেশে ছিলেন, তখন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, প্রয়োজনে আসেন, এসে বিচারের মুখোমুখি হন। শেখ হাসিনা কথাগুলো বললেও উনি [ওই নেতা] আসেননি। আমি বলেছি, যে কারণে উনি আসেননি, একই কারণে শেখ হাসিনাও আসেননি। আমার মনে হয়, সন্দেহাতীতভাবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়নি। তাই তারা সসম্মানে খালাস পাবেন; এটাই আমার প্রত্যাশা।'
জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক খণ্ডনের শেষ দিন ছিল বৃহস্পতিবার। এদিন মামলার বিচারকাজ সম্পন্ন হয়। আগামী ১৩ নভেম্বর এ মামলার রায়ের দিন নির্ধারণ করবেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।