সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ভবদহে নদী খনন শুরু, জলাবদ্ধতা নিরসনে আশার আলো দেখছেন স্থানীয়রা
যশোরের ভবদহ জলাবদ্ধ এলাকায় সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে নদী খনন কাজ শুরু হয়েছে। এবারের বর্ষা মৌসুমে একটি স্লুইসগেটের কপাট খুলে দেওয়ার পাশাপাশি নদী খনন শুরু হওয়ায় উচ্ছ্বসিত এলাকার মানুষ। স্থানীয় ভুক্তভোগীরা আশা করছেন, স্থায়ী জলাবদ্ধতা নিরসনে এই উদ্যোগ সফলতা বয়ে আনবে।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে ১৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে ভবদহ অঞ্চলের পাঁচটি নদীর ৮১ দশমিক ৫ কিলোমিটার খনন প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে দেওয়া বক্তব্যে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ভবদহ জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধানের আশ্বাস দেন।
খননের প্রথম দিনে উপস্থিত থেকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে প্রকল্পের যথাযথ বাস্তবায়ন ও তদারকির আশ্বাস দেন প্রকল্প পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মামুন উর রশিদ।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন যশোরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজাহারুল ইসলাম, পানি উন্নয়ন বোর্ড যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার বিশ্বাস, ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির উপদেষ্টা ইকবাল কবির জাহিদ, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুনসহ অন্যান্যরা।
দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে স্থায়ী জলাবদ্ধতার শিকার যশোরের ভবদহ অঞ্চলের মানুষ। জেলার অভয়নগর, কেশবপুর ও মনিরামপুর উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নের দুই শতাধিক গ্রাম জলাবদ্ধতায় ভুগছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, তাদের পরামর্শ উপেক্ষা করে পূর্ববর্তী সরকার ও পানি উন্নয়ন বোর্ড অকার্যকর প্রকল্প হাতে নিয়েছিল, যা বরং ভোগান্তি আরও বাড়িয়েছে। পলি জমে ভরাট হয়ে গেছে ছয়টি নদী ও শতাধিক খাল।
ভুক্তভোগী এলাকার বাসিন্দারা বহুদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিলেন, স্লুইসগেটগুলোর কপাট খুলে দেওয়া এবং ভরাট হয়ে যাওয়া নদীগুলো সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে খনন করার জন্য। অবশেষে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাদের সেই দাবি পূরণ করল।
তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, নদী খননই ভবদহের জলাবদ্ধতা নিরসনের একমাত্র সমাধান নয়। তারা বলছেন, টেকসই সমাধানের জন্য প্রয়োজন পলি নিয়ন্ত্রণে 'টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্ট' (টিআরএম) পদ্ধতি চালু করা।
