মৃত ফ্লাইট এটেন্ডেন্টের কাগজপত্র চাওয়ার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করল তাইওয়ানের ইভা এয়ারলাইন

তাইওয়ানের এয়ারলাইন ইভা এয়ার কয়েক দিন আগে মৃত্যুবরণ করা এক কর্মীর কাছ থেকে কাগজপত্র চাওয়ার ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছে। এ ঘটনায় ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। খবর বিবিসি'র।
৩৪ বছর বয়সী ইভা এয়ার ফ্লাইট অ্যাটেন্ড্যান্ট সান এ মাসের শুরুতে একটি ফ্লাইটের সময় অসুস্থ বোধ করলে মারা যান। তার মৃত্যুর কয়েক দিন পর ইভা এয়ার তাকে একটি বার্তা পাঠায়, হাসপাতালে থাকার সময় তিনি ছুটির আবেদন করেছিলেন কি-না তার প্রমাণ পাঠানোর জন্য।
অনলাইনে অনেকেই এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখান। অভিযোগ উঠেছে, তার ওপর অতিরিক্ত কাজ চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাকে চিকিৎসা সাহায্য থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল কি-না বা ছুটি নিতে বাধা দেওয়া হয়েছিল কি-না তা তদন্ত করছে তাইওয়ানের কর্তৃপক্ষ এবং ইভা এয়ার।
বিবিসিকে দেওয়া এক বিবৃতিতে ইভা এয়ার জানায়, হাসপাতালে থাকাকালীন সময়ে তারা তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিল এবং সান-এর মৃত্যুতে তারা গভীরভাবে শোকাহত। এয়ারলাইনটি বলেছে, 'আমাদের কর্মী ও যাত্রীর স্বাস্থ্যের নিরাপত্তা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।' তারা এই ঘটনা নিয়ে 'সতর্ক ও সম্পূর্ণ পর্যালোচনা' চালাচ্ছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, সান ২৪ সেপ্টেম্বর মিলান থেকে তাইওয়ান-এর তায়োয়ান সিটির ইভা এয়ার বেসে ফেরার সময় অসুস্থ বোধ করেছিলেন। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং ৮ অক্টোবর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার সহকর্মী পরিচয় দিয়ে কয়েকজন অভিযোগ করেছেন, অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও তাকে কাজ চালিয়ে যেতে বলা হয়েছিল।
চায়না মেডিকেল ইউনিভার্সিটি হাসপাতাল, যেখানে তিনি মারা যান, এখনও মৃত্যুর সঠিক কারণ প্রকাশ করেনি।
পূর্ববর্তী ছয় মাসের ফ্লাইট রেকর্ড অনুযায়ী, সান মাসে গড়ে ৭৫ ঘণ্টা উড়েছেন, যা নির্ধারিত সীমার মধ্যেই রয়েছে বলে জানিয়েছে তাইওয়ানের সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (সিএনএ)। তিনি এয়ারলাইনে ২০১৬ সালে যোগদান করেছিলেন।
সান-এর পরিবার জানিয়েছে, মৃত্যুর কয়েক দিন পরে তার ফোনে ইভা এয়ার থেকে একটি বার্তা আসে ছুটির প্রমাণ পাঠানোর জন্য। পরিবার জবাবে সান-এর মৃত্যুসনদ পাঠায়।
ইভা এয়ারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলেছেন, বার্তাটি 'এক অভ্যন্তরীণ কর্মীর ভুল।' তারা পরিবারের কাছে ব্যক্তিগতভাবে ক্ষমা চেয়েছেন।
ইভা এয়ারের সভাপতি সান জিয়া-মিং বলেছেন, 'সান-এর চলে যাওয়া আমাদের হৃদয়ে চিরকালের জন্য বেদনা। তিনি বলেন, 'আমরা সর্বোচ্চ দায়িত্বশীল মনোভাব নিয়ে মৃত্যুর তদন্ত চালাব।'
সিএনএ জানিয়েছে, ২০১৩ সাল থেকে ইভা এয়ারের সাতবার জরিমানা হয়েছে। মূলত কর্মীদের অতিরিক্ত কাজ করানোর দায়ে।