মাদুরোর ওপর চাপ বাড়াতে ভেনেজুয়েলায় সিআইএ-এর অভিযানের অনুমোদন দিলেন ট্রাম্প

ভেনেজুয়েলায় গোপন অভিযান পরিচালনার জন্য কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএকে অনুমোদন দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত বুধবার তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করেন। ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো সরকারের ওপর চাপ বাড়ানোর প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে তিনি এ অনুমোদন দিয়েছেন।
নিউ ইয়র্ক টাইমস প্রথমে এই গোপন নির্দেশনার খবর প্রকাশ করে এবং যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের বরাতে তারা জানায়, ট্রাম্প প্রশাসনের ভেনেজুয়েলা নীতি মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। প্রশাসন মাদুরোকে গ্রেপ্তার ও মাদকব্যবসার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করার জন্য তথ্যের বিনিময়ে ৫০ মিলিয়ন ডলারের পুরস্কার ঘোষণা করেছে।
নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, এই নতুন ক্ষমতা সিআইএকে ভেনেজুয়েলায় প্রাণঘাতী অভিযান চালানোর পাশাপাশি ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের অভিযান পরিচালনার অনুমতি দেবে।
কেন তিনি সিআইএকে ভেনেজুয়েলায় কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি দিয়েছেন তা জানতে চাওয়া হলে, ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, 'আমি সত্যিই দুটি কারণে অনুমোদন দিয়েছি। প্রথমটি হলো, তারা তাদের কারাগারগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে খালি করছে। আমাদের সীমান্ত উন্মুক্ত থাকায় সেখান দিয়ে তারা প্রবেশ করেছে এবং দ্বিতীয় কারণ হলো মাদক।'
তবে ট্রাম্প তার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কোনো প্রমাণ দেখাননি।
ট্রাম্প আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্র সমুদ্রপথে মাদক শিপমেন্ট আটকাতে অগ্রগতি অর্জন করেছে এবং এখন তারা স্থলপথে নজরদারি আরও কঠোর করেছে। তিনি বলেন, 'আমরা এখন স্থলপথে নজর দিচ্ছি, কারণ সমুদ্রের ওপর আমাদের নিয়ন্ত্রণ অনেক ভালো।'
তবে রয়টার্স ট্রাম্পের আনুষ্ঠানিক অনুমোদনের বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেনি এবং হোয়াইট হাউস প্রেসিডেন্টের মন্তব্যের বিষয়ে আরও তথ্য দিতে অস্বীকার করেছে।
ঐতিহাসিকভাবে, সিআইএ-এর সম্পৃক্ততায় এই ধরনের অভিযানে ভিন্ন ভিন্নভাবে ব্যাপকভাবে পরিচালিত হয়েছে। কখনও তারা সরাসরি প্যারামিলিটারি কার্যক্রমে যুক্ত হয়েছে, কখনও তথ্য সংগ্রহ ও সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে। এসব ক্ষেত্রে তাদের শারীরিক উপস্থিতি একেবারেই কম বা প্রায় ছিল না বললেই চলে।
সিআইএ-এর লাতিন আমেরিকায় দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। বিশেষ করে স্নায়ু যুদ্ধ চলাকালে এবং ২০শ শতকের শেষদিকে দক্ষিণ আমেরিকার কোকেন পাচারের সাম্রাজ্যকে ধ্বংস করতে সহায়তা করেছে সিআইএ। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, সিআইএ বহু বছর ধরে মেক্সিকোতে গোপন অভিযান চালাচ্ছে দেশের সবচেয়ে খুঁজে পাওয়া মাদক পাচারিদের ধরার জন্য।
ভেনেজুয়েলার সরকার বলেছে যে, ট্রাম্পের মন্তব্য আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। তারা অভিযোগ করেছে, যুক্তরাষ্ট্র দেশটির তেলসম্পদ দখল করতে 'ক্ষমতা পরিবর্তনের' অভিযানকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করছে।
ভেনেজুয়েলার পররাষ্ট্র ইয়ভান গিলের টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'আমাদের স্থায়ী মিশন আগামীকাল জাতিসংঘে এই অভিযোগ তুলে নিরাপত্তা পরিষদ ও মহাসচিবের কাছে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের জবাবদিহিতা দাবি করবে।'