বিরোধীদলীয় নেতা মাচাদো শান্তিতে নোবেল পাওয়ার পর নরওয়েতে দূতাবাস বন্ধ করল ভেনেজুয়েলা

ভেনেজুয়েলার বিরোধীদলীয় নেত্রী মারিয়া করিনা মাচাদোকে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করার কয়েক দিনের মধ্যেই নরওয়ের অসলোতে অবস্থিত দেশটির দূতাবাস আকস্মিকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
নরওয়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দূতাবাস বন্ধের কোনো কারণ ভেনেজুয়েলার পক্ষ থেকে জানানো হয়নি। মাচাদো তার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক জীবনে ভেনেজুয়েলায় বর্তমান মাদুরো সরকারের পতন ঘটানোকেই প্রধান লক্ষ্য হিসেবে নিয়েছেন।
নরওয়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেসিলি রোয়াং বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, 'ভেনেজুয়েলার দূতাবাস আমাদের জানিয়েছে যে তারা তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দিচ্ছে। তবে এর কোনো কারণ ব্যাখ্যা করা হয়নি।' তিনি আরও বলেন, 'এটি দুঃখজনক। বেশ কিছু ইস্যুতে মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও নরওয়ে ভেনেজুয়েলার সঙ্গে সংলাপ চালিয়ে যেতে চায় এবং এই লক্ষ্যে কাজ করে যাবে।'
ভার্ডেনস গ্যাং নামের একটি দৈনিক পত্রিকার তথ্য অনুযায়ী, সোমবার বিকেল থেকেই দূতাবাস থেকে কোনো ফোন ধরা হচ্ছিল না। এএফপি সন্ধ্যায় দেখেছে যে দূতাবাসের ফোন নম্বরগুলোও সংযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল।
অসলোতে মাচাদোকে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করার মাত্র তিন দিন পর এই ঘটনা ঘটল। উল্লেখ্য, মাচাদোকে ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা থেকে বিরত রাখা হয়েছিল। বিরোধী দলের তীব্র প্রতিবাদ সত্ত্বেও সেই নির্বাচনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।

অসলোতে নরওয়েজীয় নোবেল কমিটির চেয়ারম্যান ইয়োরগেন ওয়াতনে ফ্রাইডনেস মাচাদোর প্রশংসা করে বলেন, 'ভেনেজুয়েলার জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় তার অক্লান্ত পরিশ্রম এবং একনায়কতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রে একটি ন্যায়সঙ্গত ও শান্তিপূর্ণ রূপান্তরের জন্য সংগ্রামের স্বীকৃতিস্বরূপ মাচাদোকে সম্মানিত করা হয়েছে।'
তবে মাদুরো সরকার এই পুরস্কারকে ভালোভাবে নেয়নি। রোববার প্রেসিডেন্ট মাদুরো, মাচাদোর পুরস্কারের কথা সরাসরি উল্লেখ না করেই, ৫৮ বছর বয়সী এই পুরস্কারপ্রাপ্তকে 'ডিমোনিক উইচ' বলে আখ্যায়িত করেন। এই শব্দটি প্রায়শই সরকার বিরোধীদের জন্য ব্যবহার করে থাকে।
ভেনেজুয়েলায় একটি অনুষ্ঠানে মাদুরো বলেন, 'আমরা শান্তি চাই এবং আমরা শান্তি পাবো; তবে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের সঙ্গে শান্তি।'
অন্যদিকে, মাচাদো ভেনেজুয়েলার জলসীমার কাছে মার্কিন সামরিক মহড়ার সমর্থন করেন। তিনি তার নোবেল পুরস্কার 'ভেনেজুয়েলার দুর্দশাগ্রস্ত জনগণ' এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি উৎসর্গ করেছেন, যিনি নিজেও এই পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন।
শনিবার ফক্স নিউজে এক অনুষ্ঠানে মাচাদো ট্রাম্পের প্রশংসা করে বলেন, "তিনি (ট্রাম্প) এই পুরস্কারের যোগ্য, কারণ তিনি কেবল কয়েক মাসের মধ্যেই আটটি যুদ্ধের সমাধানে জড়িত ছিলেন না বরং তার কর্মকাণ্ড ভেনেজুয়েলাকে স্বাধীনতার দ্বারপ্রান্তে নিয়ে আসতেও সিদ্ধান্তমূলক ভূমিকা রেখেছে।'