প্রেসিডেন্টের সমালোচনা করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় তিউনিসীয় দিনমজুরের মৃত্যুদণ্ড

ফেসবুকে প্রেসিডেন্টের সমালোচনা করে পোস্ট দেওয়ায় তিউনিসিয়ার এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত। প্রেসিডেন্টকে অপমান এবং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা লঙ্ঘনের অভিযোগে এই রায় দেওয়া হয়।
গেল শুক্রবার দেশটির মানবাধিকার সংস্থার প্রধান এবং ওই ব্যক্তির আইনজীবী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৫৬ বছর বয়সী সাবের শুশান একজন দিনমজুর। গত বছর গ্রেপ্তারের আগে তিনি ফেসবুকে প্রেসিডেন্ট কাইস সাইদের সমালোচনা করে বেশ কিছু পোস্ট দিয়েছিলেন। তার আইনজীবী ওসামা বুতেলজা জানান, শুশান একজন সাধারণ নাগরিক, তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাও খুবই সীমিত।
তিনি আরও জানান, এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে তিউনিসিয়ার বিচার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, তিউনিসিয়ার আদালতগুলোতে মাঝে মাঝে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলেও ১৯৯১ সালের পর থেকে তিন দশকের বেশি সময় ধরে দেশটিতে কোনো মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়নি।
সাবের শুশানের ভাই জামাল শুশান বলেন, 'আমরা এটা বিশ্বাস করতে পারছি না। আমরা একটি দরিদ্র পরিবার। আর এখন এই দারিদ্র্যের সঙ্গে যুক্ত হলো নিপীড়ন ও অবিচার।'
এই রায় ঘোষণার পর তিউনিসিয়ার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা ও প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। মানবাধিকারকর্মী ও সাধারণ নাগরিকেরা এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
অনেকের মতে, প্রেসিডেন্ট সাইদের সমালোচকদের মধ্যে ভয় জাগানোর উদ্দেশ্যেই এই রায় দেওয়া হয়েছে। তারা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, এ ধরনের কঠোর পদক্ষেপ দেশটিতে মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে আরও সংকুচিত করবে এবং রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়াবে।
২০২১ সালে প্রেসিডেন্ট কাইস সাইদ নির্বাচিত সংসদ ভেঙে দিয়ে প্রায় সমস্ত ক্ষমতা নিজের হাতে নেওয়ার পর থেকে তিউনিসিয়ায় মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর খড়্গ নেমে আসে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ হওয়ার বিষয়ে ক্রমাগত উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে।
বিরোধী দলগুলো সাইদের এই পদক্ষেপকে 'ক্যু' বা অভ্যুত্থান হিসেবে দেখে। প্রেসিডেন্ট সাইদ তার বিরোধী নেতাদের 'বিশ্বাসঘাতক' হিসেবে আখ্যায়িত করেন এবং তাদের অধিকাংশই এখন বিভিন্ন অভিযোগে কারাগারে আছেন।