সুশীলা কার্কি অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দিনেই মার্চে নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা নেপালের প্রেসিডেন্টের

নেপালের প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পোড়েল সংসদ ভেঙে দিয়েছেন এবং আগামী ৫ মার্চ নতুন নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন। শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা আগেই প্রেসিডেন্ট সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কিকে দেশের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন। এর মাধ্যমে নেপাল প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী পেল।
গত এক সপ্তাহ ধরে 'জেন-জি' নেতৃত্বাধীন দুর্নীতিবিরোধী বিক্ষোভে সহিংসতায় বহু প্রাণহানি ঘটে। ওই আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রী কে. পি. শর্মা অলি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
নেপালের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, প্রেসিডেন্ট 'পহাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভ ভেঙে দিয়েছেন এবং আগামী ২০২৬ সালের ৫ মার্চ, বৃহস্পতিবার নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছেন।'
এদিকে, দুই দিনের টানা আলোচনার পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সুশিলা কার্কিকে নিয়োগ দেওয়া হয়। আলোচনায় অংশ নেন রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পোড়েল, সেনাপ্রধান অশোক রাজ সিগডেল এবং সাম্প্রতিক সহিংস আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া নেতারা। এই আন্দোলনে অন্তত ৫১ জন নিহত এবং ১ হাজার ৩০০ জনের বেশি আহত হন। নেপালের সাম্প্রতিক ইতিহাসে এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ অস্থিরতা।
দেশটির প্রতিবেশী ভারত এ ঘটনাকে স্বাগত জানিয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, 'নেপালের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করায় সম্মানিত সুশিলা কার্কিকে আন্তরিক অভিনন্দন। নেপালের ভাই-বোনদের শান্তি, উন্নতি ও সমৃদ্ধিতে ভারত সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।'
নেপালজুড়ে যে বিক্ষোভ সহিংসতায় রূপ নিয়েছিল, তার সূত্রপাত ঘটে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত থেকে। যদিও পরবর্তীতে সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। অবশেষে মঙ্গলবার অলির পদত্যাগের পর সহিংসতা থেমে আসে।
২০০৮ সালে রাজতন্ত্র বিলোপের পর থেকেই রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে রয়েছে নেপাল। কর্মসংস্থানের অভাবে দেশটির লাখো তরুণ মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ কোরিয়া ও মালয়েশিয়ার মতো দেশে কাজ খুঁজতে পাড়ি জমাচ্ছেন।
চীন ও ভারতের মাঝে অবস্থিত প্রায় তিন কোটি মানুষের দেশটি শুক্রবার ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে শুরু করেছে। দোকানপাট খুলেছে, সড়কে ফিরেছে গাড়ি, আর পুলিশরা সপ্তাহজুড়ে হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র সরিয়ে এখন লাঠি নিয়ে দায়িত্ব পালন করছে।