কী হবে যদি যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে সমর্থন দেয়া বন্ধ করে দেয়?

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের আগ্রাসনের পুরোটা সময় দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্রের নিরঙ্কুশ সমর্থন পেয়েছেন। তবে এই সমর্থনের ধরণে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যে কিছুটা ভিন্নতা দেখা গেছে।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন গাজায় যে মানবিক সংকট তৈরি হয়েছিল, তা নিয়ে মাঝে মাঝে অস্বস্তি প্রকাশ করলেও, ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন এখনো পর্যন্ত তেমন কোনো দ্বিধা বা আপত্তি দেখায়নি। উল্টো, গত ফেব্রুয়ারিতে ট্রাম্প প্রশাসন গাজার পুরো জনসংখ্যাকে জাতিগতভাবে নির্মূল করারও ইঙ্গিত দিয়েছিল, যা আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। এই অবস্থান গাজায় ইসরায়েলি অভিযানের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের দৃঢ় সমর্থনকে আরও স্পষ্ট করে তোলে।
গাজায় ইসরায়েলের সামরিক আগ্রাসনে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সাহায্য সমর্থন ব্যবহার করেই গাজায় ৬৩ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। শুধু সামরিক সাহায্যই নয়, কূটনৈতিক ক্ষেত্রেও যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের ঢাল হিসেবে কাজ করছে। ক্রমবর্ধমান মৃত্যুর সংখ্যা সত্ত্বেও গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবি আটকাতে দেশটি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বারবার ভেটো প্রয়োগ করেছে।
গণহত্যার অভিযোগে ইসরায়েল যখন আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে অভিযুক্ত, তখনও যুক্তরাষ্ট্র তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। এমনকি, যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইওয়াভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সদস্যদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র।
বহু রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সংস্থা যাকে গণহত্যা হিসেবে আখ্যা দিচ্ছে, তাতে যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য সংশ্লিষ্টতার জন্য মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তারা ইসরায়েলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে।
কিন্তু প্রশ্ন হলো, যদি সত্যিই এমনটা ঘটে? যদি যুক্তরাষ্ট্র আগামীকালই ইসরায়েলের প্রতি সব ধরনের সমর্থন বন্ধ করে দেয়, তাহলে কী হতে পারে? এই প্রশ্ন নিয়ে চারজন বিশেষজ্ঞের মতামত জানতে চাওয়া হয়েছে: প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক হামজে আত্তার, ইসরায়েলি রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ওরি গোল্ডবার্গ, রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিস ইনস্টিটিউট এবং সেন্টার ফর আমেরিকান প্রগ্রেসের সিনিয়র ফেলো এইচ এ হ্যালিয়ার এবং ইসরায়েলি সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড্যানিয়েল লেভি।
যদি যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে দেওয়া সমস্ত সমর্থন রাতারাতি বন্ধ করে দেয়, তাহলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কী ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে? এই প্রশ্ন নিয়ে ইসরায়েলি রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ওরি গোল্ডবার্গ তার মতামত ব্যক্ত করেছেন। তিনি মনে করেন, এমনটা হলে দ্রুতই ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।
ওরি গোল্ডবার্গ বলেন, 'আমার মনে হচ্ছে, পশ্চিমা দেশগুলো, যারা প্রথম দিকে ইসরায়েলকে সমর্থন করেছিল, তারা এখন বিশেষভাবে অসহায় বোধ করছে এবং মনে মনে ইসরায়েলের পতন চাইছে। অনেকের কাছে, এমনকি জার্মানির ক্ষেত্রেও, যুদ্ধোত্তর সময়ে ইসরায়েলের সঙ্গে যে বন্ধন তৈরি হয়েছিল, তা এতটাই দুর্বল হয়ে গেছে যে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন ছাড়া হয়তো তা আর টিকে থাকবে না।'
তিনি আরও বলেন, 'যদি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন আগামীকাল বন্ধ হয়ে যায় তাহলে আমার অনুমান, তারা সবাই অবিলম্বে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবে, যদিও এক্ষেত্রে কেউ প্রথম হতে চাইবে না। আমি জানি না এটি কী রূপ নেবে, তা নিষেধাজ্ঞা হবে নাকি জাতিসংঘের সনদের সপ্তম অধ্যায় [অবিলম্বে হস্তক্ষেপের অনুমতি প্রদানকারী] কার্যকর করা হবে, তবে এটি দ্রুত হবে।'
ইসরায়েলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন প্রত্যাহার হলে আঞ্চলিক প্রেক্ষাপটে কী ঘটতে পারে, বিশেষ করে ইসরায়েল আক্রমণের শিকার হবে বলে যে দাবি করে, তার বাস্তবতা কতটুকু? রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিস ইনস্টিটিউট এবং সেন্টার ফর আমেরিকান প্রগ্রেসের সিনিয়র ফেলো এইচ এ হ্যালিয়ার এই বিষয়ে তার বিশ্লেষণ তুলে ধরেছেন।
হ্যালিয়ারের মতে, 'আমার মনে হয়, আপনি যদি হঠাৎ করে যুক্তরাষ্ট্রকে সমীকরণ থেকে সরিয়ে দেন, তাহলে সেখানে একটি নিষ্পত্তির পথে সবচেয়ে বড় একক বাধাটি সরে যাবে।' তিনি ব্যাখ্যা করেন যে, ইসরায়েলের জন্য সত্যিকার অর্থে এই অঞ্চলে নিজেদেরকে সংহত করার বিষয়টি সবসময়ই দ্বিতীয় বা তৃতীয় স্তরের অগ্রাধিকার। কারণ, 'মার্কিন সমর্থনই তাদের দায়মুক্তভাবে কাজ করার ক্ষমতা জোগায়, যেমনটা আমরা ফিলিস্তিনি, লেবানিজ এবং সিরীয়দের ক্ষেত্রে দেখেছি।'
ইসরায়েল আক্রমণের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে বলে যে ধারণা প্রচলিত আছে, তাকে নাকচ করে দিয়ে একটি উদাহরণ টেনে বলেন, 'সিরিয়ার সেনাবাহিনী বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের কারণে ইসরায়েলে পাল্টা আক্রমণ থেকে বিরত থাকছে না। তারা আক্রমণ থেকে বিরত থাকছে কারণ তারা আরও যুদ্ধে আগ্রহী নয়, তারা জানে যে তাদের ব্যাপক প্রতিরোধের মুখোমুখি হতে হবে; অন্যদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।'
যদি যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে দেওয়া সব ধরনের আর্থিক সমর্থন বন্ধ করে দেয়, তাহলে ইসরায়েলের অর্থনীতিতে এর কী প্রভাব পড়তে পারে? ইসরায়েলি রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ওরি গোল্ডবার্গ এর মতে, ইসরায়েল আর্থিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের উপর অত্যন্ত নির্ভরশীল হলেও, এটি সম্পূর্ণভাবে ধসে পড়বে না।
গোল্ডবার্গ ব্যাখ্যা করেন, ইসরায়েল ক্রমবর্ধমানভাবে উচ্চ-প্রযুক্তির অস্ত্র খাতের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। এই খাতের একটি বিশাল অংশ যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক সহায়তা এবং প্রায় সীমাহীন গবেষণা ও উন্নয়ন (আর এন্ড ডি) সুযোগের মাধ্যমে সমর্থিত।
তবে, ইসরায়েল কেবল প্রত্যক্ষ সাহায্যের জন্যই নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রকে তার পাশে ঋণ গ্যারান্টি এবং অন্যান্য সমর্থন ব্যবস্থার মতো এমন সহযোগী হিসেবে পেয়েও অর্থনৈতিকভাবে উপকৃত হয়।
ওরি গোল্ডবার্গের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন রাতারাতি হারানোর ফলে ইসরায়েলের জন্য পরিস্থিতি কঠিন হবে। তবে এর প্রভাব 'অবিলম্বে দেখা যাবে না, যতক্ষণ না বড় বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোতে ব্যাপক ছাঁটাই এবং সেনাবাহিনীর দুর্বল হয়ে পড়ছে।'
ইসরায়েলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন প্রত্যাহার করা হলে দেশটির অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে এর কী প্রভাব পড়তে পারে? এই প্রশ্নে বিশেষজ্ঞরা ভিন্ন ভিন্ন মত দিয়েছেন। ইসরায়েলি রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ওরি গোল্ডবার্গ এবং সাবেক ইসরায়েলি সরকারি উপদেষ্টা ড্যানিয়েল লেভি তাদের বিশ্লেষণ তুলে ধরেছেন।
ওরি গোল্ডবার্গ মনে করেন, ইসরায়েলের রাজনীতিতে হয়তো ততটা বড় পরিবর্তন আসবে না যতটা ভাবা হচ্ছে। তিনি বলেন, 'ইসরায়েলের বসতি স্থাপনকারী সম্প্রদায় ইতিমধ্যেই নিজেদের বিশ্বাসে অবিচল। যাই ঘটুক না কেন, তারা তাদের ঈশ্বর-প্রদত্ত মিশন হিসেবে যা দেখে, তা চালিয়ে যাবে।'
নেতানিয়াহুর ভবিষ্যৎ নিয়েও গোল্ডবার্গ একই রকম মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, 'নেতানিয়াহু সম্ভবত টিকে থাকবেন। তিনি কোনো জাদুকর নন। তার বলা ও করা বেশিরভাগ বিষয়ই ইসরায়েলি সমাজের একটি বড় অংশের চিন্তাভাবনার প্রতিফলন মাত্র।' তিনি আরও বলেন, নেতানিয়াহু হয়তো পরিস্থিতিকে নতুনভাবে ব্যাখ্যা করবেন। 'তিনি বলতে পারেন যে, আমরা গাজায় আক্রমণ করেছিলাম যাতে আমাদের আর কখনও অন্য কোনো রাষ্ট্রের উপর নির্ভরশীল হতে না হয়, কিন্তু আমার মনে হয় তিনি সম্ভবত টিকে যাবেন।'
অন্যদিকে, ড্যানিয়েল লেভি ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের গভীর প্রভাবের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, 'আমেরিকা সত্যিই ইসরায়েলের ডানপন্থীদের জন্য একধরনের উপহার।'
লেভি ব্যাখ্যা করেন, যদি কোনো ডেমোক্র্যাট ক্ষমতায় থাকেন, তাহলে ইসরায়েলিরা বলতে পারে: 'দেখুন, আমরা তাদের [আমেরিকানদের] কত ভালোভাবে সামলাচ্ছি।' আর যদি ট্রাম্পের মতো কেউ ক্ষমতায় থাকেন, তখন তারা বলতে পারে: 'দেখুন, আমরা নিশ্চয়ই কিছু ঠিক করছি: যুক্তরাষ্ট্র আমাদের সঙ্গে একমত।' এভাবে, উভয় ক্ষেত্রেই তারা বৈধতা অর্জন করে। যুক্তরাষ্ট্র না থাকলে এই বৈধতার ভিত্তি আর থাকে না।
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সমর্থন প্রত্যাহার হলে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীতে কী ঘটবে? প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক হামজে আত্তার এর মতে, এমনটা হলে ইসরায়েলের সামরিক অগ্রাধিকারগুলো আমূল বদলে যাবে এবং দেশটি উল্লেখযোগ্যভাবে আরও অরক্ষিত হয়ে পড়বে।
হামজে আত্তার বলেন, 'যদি যুক্তরাষ্ট্র আগামীকাল অদৃশ্য হয়ে যায়, তাহলে ইসরায়েল সম্ভবত প্রায় এক বছর গাজায় তার যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারবে। তবে, এর অগ্রাধিকারগুলো পাল্টে যাবে কারণ দেশটি উল্লেখযোগ্যভাবে আরও অরক্ষিত হয়ে পড়বে।' তিনি ব্যাখ্যা করেন, ইসরায়েল তখন সচেতন থাকবে যে গাজায় ব্যবহৃত প্রতিটি বুলেট বা বোমা তাদের নিজস্ব প্রতিরক্ষার জন্য একটি কম হয়ে যাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন ছাড়া ইসরায়েলের সামরিক দুর্বলতা আরও কয়েকটি দিক থেকে প্রকট হবে বলে মনে করেন আত্তার। তিনি বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন ছাড়া বাণিজ্যিক স্যাটেলাইটগুলোর ব্লক করা বন্ধ হয়ে যাবে, যার উপর ইসরায়েল তার অঞ্চল লুকানোর জন্য নির্ভর করে। এতে তাদের প্রতিপক্ষরা অবিলম্বে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে নজর রাখতে পারবে।' এছাড়াও, ইসরায়েল আইরন ডোম এবং অ্যারো সিস্টেমের মতো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হারাবে, যা আংশিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। এর ফলে দেশটি আক্রমণের জন্য অনেক বেশি উন্মুক্ত হয়ে পড়বে।
হামজে আত্তার আরও উল্লেখ করেন যে, 'যুক্তরাষ্ট্রের অনুপস্থিতি মানে ইসরায়েলকে নতুন সামরিক সরবরাহকারী খুঁজতে হবে, সম্ভবত ইউরোপের ন্যাটো দেশগুলো থেকে, কারণ বেশিরভাগ সরঞ্জামই সামঞ্জস্যপূর্ণ।' তবে, এটি দ্রুত সম্ভব হবে না। কারণ, রাশিয়া থেকে হুমকির প্রেক্ষিতে ইউরোপের ইতিমধ্যেই অস্ত্রের ঘাটতি রয়েছে।
সর্বোপরি, ইউরোপ যেকোনো অস্ত্রের জন্য ইসরায়েলকে মূল্য চার্জ করবে, যা বর্তমান সামরিক সাহায্য কর্মসূচির অধীনে যুক্তরাষ্ট্র করে না। তাই, 'অন্য কোনো দেশ এগিয়ে এলেও, ইসরায়েল এখনকার মতো বৃহৎ পরিসরে অস্ত্র কেনার সামর্থ্য রাখবে না,' বলে হামজে আত্তার তার বিশ্লেষণ শেষ করেন। এই পরিস্থিতি ইসরায়েলের সামরিক সক্ষমতা এবং আঞ্চলিক ক্ষমতার ভারসাম্যে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে পারে।
ইসরায়েলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন প্রত্যাহার হলে গাজা এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরের পরিস্থিতিতে কী ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে? এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এমনটা হলে ইসরায়েলের যুদ্ধের গতিপথ এবং আঞ্চলিক নীতিতে নাটকীয় পরিবর্তন আসবে।
ইসরায়েলি রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ওরি গোল্ডবার্গ মনে করেন, 'আমার ধারণা, একবার সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কী ঘটছে তা জানতে পারলে, তারা অবিলম্বে যুদ্ধ শেষ করার আহ্বান জানাবে।'
সাবেক ইসরায়েলি সরকারি উপদেষ্টা ড্যানিয়েল লেভি এই মতামতকে সমর্থন করে বলেন, 'আমার মনে হয়, কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং সেনাবাহিনী প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই বুঝতে পারবে যে, তাদের কাছে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার মতো অস্ত্র বা অর্থ নেই।' এরপর, আঞ্চলিক এবং পশ্চিমা উভয় ক্ষেত্রেই অন্যান্য রাষ্ট্রগুলো কী পদক্ষেপ নেয় তার উপর নির্ভর করে, 'যুদ্ধটি রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিকভাবে অস্থিতিশীল হয়ে পড়বে,' যোগ করেন লেভি।
রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিস ইনস্টিটিউট এবং সেন্টার ফর আমেরিকান প্রগ্রেসের সিনিয়র ফেলো এইচ এ হ্যালিয়ার আরও গভীর বিশ্লেষণ দিয়েছেন। তিনি বলেন, 'আমার অনুমান, তারা গাজা এবং পশ্চিম তীরে একটি ধরে রাখার কৌশল অবলম্বন করবে, নিজেদের জন্য সময় কিনবে।'
হ্যালিয়ার উল্লেখ করেন যে, আন্তর্জাতিক জনমতের দিক থেকে ইসরায়েলের সুনাম ইতিমধ্যেই তলানিতে পৌঁছেছে, কিন্তু 'মার্কিন সমর্থন এটিকে প্রকৃত আন্তর্জাতিক জবাবদিহিতা থেকে রক্ষা করেছে।'
তার মতে, 'মূলত, যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া ইসরায়েলকে একটি আন্তর্জাতিক অস্পৃশ্য রাষ্ট্রের মতো গণ্য করা হবে, যেমনটা বর্ণবাদী দক্ষিণ আফ্রিকার ক্ষেত্রে হয়েছিল।' তিনি আরও বলেন যে, বর্ণবাদী নেতৃত্বও শেষ পর্যন্ত পরিবর্তন আনতে বাধ্য হয়েছিল, 'তারা বিশেষ ভালো মানুষ ছিল বলে নয়, বরং তারা এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছিল যেখানে তাদের আর কোনো বিকল্প ছিল না এবং তারা যা কিছু বাঁচাতে পারে, তা বাঁচানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।'