পুতিনের গাড়িতেই ৪৫ মিনিটের ‘অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ’ আলোচনা সারলেন মোদি
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা ও শুল্ক হুমকির মুখেও রাশিয়ার সঙ্গে উষ্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেই চলছে ভারত। সম্প্রতি চীনের তিয়ানজিনে অনুষ্ঠিত সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা (এসসিও) সম্মেলনের ফাঁকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একটি 'অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ' আলোচনা সেরেছেন।
পুতিনের ব্যক্তিগত গাড়ির ভেতরেই এই দুই নেতা একান্তে প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে কথা বলেন। বৈঠকের পর মোদি পুতিনের সঙ্গে গাড়িতে কাটানো মুহূর্তের ছবি পোস্ট করে তার প্রশংসা করেছেন।
পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এই বিষয়ে বলেন, 'তারা গাড়িতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছিলেন, এবং একারণেই তারা সেখানেই তাদের আলোচনা চালিয়ে যান।'
এর আগে, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের আতিথেয়তায় এসসিও শীর্ষ সম্মেলনে মোদি ও পুতিনকে একে অপরের হাত ধরে থাকতেও দেখা যায়। এই সম্মেলনকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং বৈশ্বিক অঙ্গনে যুক্তরাষ্ট্রের একাধিপত্যের প্রতি একটি সম্মিলিত চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।
এদিকে রাশিয়া থেকে তেল ও অস্ত্র কেনার কারণে ভারতের ওপর চাপ বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বসিয়েছেন। এর মধ্যে রাশিয়ার সঙ্গে লেনদেনে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ জরিমানাও রাখা হয়েছে।ধারণা করা হয়, ভারতের সাথে এই লেনদেন রাশিয়ার ইউক্রেন যুদ্ধে খরচের তহবিলে যোগ হচ্ছে।
ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অংশীদার হওয়া সত্ত্বেও, রাশিয়া থেকে নিজেদের কেনাবেচা বন্ধ করার কোনো ইঙ্গিত দিচ্ছে না ভারত। এই পরিস্থিতিতে চীনের তিয়ানজিনে পুতিনের সঙ্গে মোদির উষ্ণ সম্পর্ক এবং সৌহার্দ্যকে ট্রাম্পের এই হুমকির জবাবে ভারতের দৃঢ় অবস্থান হিসেবে দেখা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি অবধি যুক্তরাষ্ট্রই ছিল ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। এখন এই শুল্কারোপের ফলে দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্কে নতুন টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে।
অন্যদিকে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে শান্তি আলোচনায় বসতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বেঁধে দেওয়া সময়সীমার মুখে ছিলেন। তবে রাশিয়া এরই মধ্যে জানিয়ে দিয়েছে, এই মুহূর্তে এমন কোনো বৈঠকের পরিকল্পনা তাদের নেই।
তিয়ানজিন সম্মেলনে দেওয়া ভাষণে পুতিন ইউক্রেন সংকট সমাধানে তাদের সমর্থন এবং প্রচেষ্টার জন্য চীন ও ভারতের নেতাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং ইউক্রেন ইস্যুতে দুই দেশের কূটনৈতিক ভূমিকার প্রশংসা করেন।
