শ্রমিক সংকট মেটাতে রাশিয়ায় যেতে পারে ১০ লাখ ভারতীয়

রাশিয়ায় দক্ষ শ্রমিকের তীব্র ঘাটতি মোকাবিলায় ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ দুই মিলিয়ন পর্যন্ত ভারতীয় নাগরিক অভিবাসন করতে পারেন, এমন তথ্য জানিয়েছেন উরাল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ইউসিসিআই) প্রেসিডেন্ট আন্দ্রে বেসেদিন।
ইউরেশিয়ান নিউজ এজেন্সিকে (ইএএন) দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, এ বছরের শুরুর দিকে এক বৈঠকে ভারতীয় কর্মকর্তারা তাকে এই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি আরও জানান, আসন্ন অভিবাসন ব্যবস্থাপনার জন্য ইয়েকাতেরিনবার্গ শহরে নতুন একটি ভারতীয় কনস্যুলেট খোলা হবে।
তিনি বলেন, 'যতটুকু আমার ভারতীয় সহকর্মীদের কাছ থেকে শুনেছি, এ বছরের শেষ নাগাদ এক মিলিয়ন পর্যন্ত ভারতীয় বিশেষজ্ঞ রাশিয়ায়, এর মধ্যে স্বের্দলোভস্ক অঞ্চলেও, আসবেন।'
বেসেদিন বলেছেন, আমদানি বিকল্পীকরণ নিয়ে রাষ্ট্রের নীতি এবং ইউক্রেনে চলমান সামরিক অভিযান — এই দুই কারণেই রাশিয়ার শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে উৎপাদন বাড়ানোর চাপে পড়তে হচ্ছে।
তবে তিনি উল্লেখ করেন, এ অঞ্চলে যথেষ্ট যোগ্য কর্মী নেই। তার কথায়, 'শ্রমশক্তির একটা অংশ বিশেষ সামরিক অভিযানে পাঠানো হয়েছে, আর তরুণরা কারখানায় যেতে চাইছে না।' বেসেদিনের মতে, ভারতীয় অভিবাসীরা মূলত ধাতুশিল্প এবং যান্ত্রিক প্রকৌশল খাতে কাজ করবেন।
তিনি আরও জানান, শ্রম সহায়তা নিয়ে শ্রীলঙ্কা এবং উত্তর কোরিয়ার সঙ্গেও আলোচনা চলছে। বেসেদিন স্বীকার করেছেন, এই দেশগুলোর অভিবাসীদের সঙ্গে কাজ করার তেমন অভিজ্ঞতা রাশিয়ার নেই, তবে তিনি এই উদ্যোগকে 'আন্তর্জাতিক শ্রম সহযোগিতার নতুন মাত্রা' হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
রাশিয়ার শ্রম মন্ত্রণালয় ২০৩০ সালের মধ্যে ৩.১ মিলিয়ন কর্মী ঘাটতির পূর্বাভাস দিয়েছে। ২০২৪ সালে, ভিসা প্রয়োজন এমন দেশগুলোর নাগরিকদের মধ্যে মাত্র ৪৭ হাজার জন যোগ্য অভিবাসী কোম্পানিগুলো নিয়োগ দিয়েছে।
মার্চ ২০২৪ সালে ক্রোকাস সিটি হলে সন্ত্রাসী হামলার পর রাশিয়া কঠোরভাবে অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। অভ্যন্তরীণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ওই বছর ১ লাখ ১৯ হাজারেরও বেশি বিদেশি নাগরিক দেশ থেকে বহিষ্কৃত হয়েছে। এপ্রিল ২০২৫ সালে অভিবাসন বিধি কার্যকর করতে এবং লঙ্ঘন কমাতে একটি নতুন ফেডারেল সংস্থা গঠিত হয়েছে।
কঠোর নিয়ন্ত্রণ থাকলেও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেন, শ্রম অভিবাসীদের সংখ্যা কমানো রাশিয়ার স্বার্থের বিপরীত হবে। তিনি উল্লেখ করেছেন যে দেশটি কর্মী সংকটে ভুগছে এবং অভিবাসন সীমিত করলে উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা 'কম বাস্তবসম্মত' হয়ে পড়তে পারে। তবে একই সঙ্গে তিনি জোর দিয়েছেন যে অভিবাসীদের আইন মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে।