রুশ হামলা প্রতিহত করতে গিয়ে ইউক্রেনের এফ-১৬ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত, নিহত পাইলট

রাশিয়ার ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা প্রতিহত করার সময়—ইউক্রেনের একটি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়েছে, এবং বিমানটির পাইলট নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ইউক্রেনের বিমান বাহিনী।
ইউক্রেনীয় বিমান বাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শনিবার গভীর রাতে সাতটি শত্রু লক্ষ্যবস্তু ভূপাতিত করার পর বিমানটি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং উচ্চতা হারিয়ে পড়ে যায়।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, গতরাতে শত্রুপক্ষের ব্যাপক বিমান হামলা প্রতিহত করার সময়, প্রথম শ্রেণির পাইলট লেফটেন্যান্ট কর্নেল ম্যাক্সিম উস্তিমেঙ্কো এফ-১৬ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
অন্য একটি বিবৃতিতে ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানায়, শনিবার রাতে রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে মোট ৫৩৭টি ক্ষেপণাস্ত্র, শাহেদ ড্রোন, ক্রুজ ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে, যার মধ্যে ইউক্রেন ৪৭৫টি ভূপাতিত করতে সক্ষম হয়েছে।
কিয়েভ ইন্ডিপেনডেন্ট পত্রিকার তথ্য অনুযায়ী, ইউক্রেনের দক্ষিণের মিকোলাইভ, দক্ষিণ-পূর্বের জাপোরিঝিয়া এবং পশ্চিমের লাভিভসহ বহু অঞ্চলে বিস্ফোরণ ও হামলার শব্দ শোনা গেছে।
চেরকাসি অঞ্চলের গভর্নর ইহোর তাবুরেতস জানান, রুশ হামলায় অন্তত ছয়জন আহত হয়েছেন এবং বেসামরিক স্থাপনায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এতে তিনটি বহুতল ভবন এবং একটি কলেজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও জানান তিনি।
দক্ষিণ ইউক্রেনের মিকোলাইভ এবং মধ্যাঞ্চলীয় দনিপ্রোপেত্রোভস্ক অঞ্চলের শিল্প স্থাপনাগুলোর ওপরও হামলা চালানো হয়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ প্রকাশিত ছবিতে বহুতল আবাসিক ভবনের দেয়াল পুড়ে যাওয়া এবং জানালা ভেঙে পড়ার দৃশ্য দেখা গেছে। এসময় আটকে পড়া মানুষদের সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন উদ্ধারকর্মীরা।
রাশিয়ার পাল্টা দাবি
এদিকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সীমান্তবর্তী কুরস্ক ও রোস্তভ অঞ্চল এবং অধিকৃত ক্রিমিয়ায় তিনটি ইউক্রেনীয় ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে।
এই সর্বশেষ সহিংসতার মধ্যেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন শুক্রবার জানিয়েছেন, তিনি সামরিক ব্যয় কমানোর পরিকল্পনা করছেন এবং ইউক্রেনের সঙ্গে নতুন শান্তি আলোচনায় বসতে চান।
গত কয়েক মাসে মস্কো এবং কিয়েভ দুই দফায় তুরস্কের ইস্তাম্বুলে শান্তি আলোচনায় বসেছে, তবে এখন পর্যন্ত কোনো অগ্রগতি হয়নি। তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা এই যুদ্ধের অবসানে দৃশ্যমান কোনো সমাধান দেখা যাচ্ছে না।
তবে যুদ্ধবন্দি বিনিময়ের ক্ষেত্রে দুই পক্ষের মধ্যে কিছুটা সহযোগিতার নজির পাওয়া গেছে।