গাজা যুদ্ধবিরতি,জিম্মি মুক্তির আলোচনায় কাতারে পাঠাচ্ছে প্রতিনিধিদল পাঠাচ্ছে ইসরায়েল

ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতি ও ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি নিয়ে সম্ভাব্য আলোচনার জন্য কাতারে একটি প্রতিনিধিদল পাঠাচ্ছে ইসরায়েল। যদিও দখলদার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে হামাস যে পরিবর্তনের কথা বলেছ—তা ইসরায়েলের জন্য গ্রহণযোগ্য নয়।
এর আগে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র প্রতিরোধ সংগঠন হামাস গত শুক্রবার জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে "ইতিবাচক মনোভাবেই" সাড়া দিয়েছে। কয়েকদিন আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, ইসরায়েল ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তি চূড়ান্ত করতে প্রয়োজনীয় শর্তে সম্মতি দিয়েছে।
কিন্তু, বাস্তবতা আরও জটিল। হামাস-ঘনিষ্ঠ এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তার মতে, এখনো উদ্বেগ রয়েছে মানবিক সহায়তা, রাফাহ সীমান্ত দিয়ে গমনাগমন এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের সুনির্দিষ্ট সময়সূচি নিয়ে।
এবিষয়ে শনিবার রাতে নেতানিয়াহুর কার্যালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, হামাস (সম্ভাব্য চুক্তিতে) যে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছে, তা আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। তবে প্রতিনিধি দল কাতারে যাবে এবং কাতারের প্রস্তাবের ভিত্তিতে আলোচনার মাধ্যমে জিম্মিদের মুক্তির প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে।
এদিকে নেতানিয়াহু আগামীকাল সোমবার ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন। তিনি বারবার বলে আসছেন, অবশ্যই হামাসকে নিরস্ত্র করতে হবে। তবে হামাস এপর্যন্ত নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে আলোচনা করতে রাজি হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, হামাসের কাছে এখনো ২০ জন ইসরায়েলি জিম্মি রয়েছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস দক্ষিণ ইসরায়েলে এক সামরিক অভিযান চালালে প্রায় ১,২০০ ইসরায়েলি নিহত হয়। এসময় ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়, এরপর গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান চলমান সংকটের সূত্রপাত করে।
ইসরায়েল গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি হামলায় এপর্যন্ত ৫৭,০০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। পুরো গাজার জনগণ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, মানবিক সংকট তীব্র হয়েছে এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ উঠেছে। যদিও ইসরায়েল বরাবরের মতো এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
এই অবস্থায়, কাতারে আসন্ন এই আলোচনায় দুই পক্ষের অবস্থান কতটা নরম বা কঠোর থাকে, সেটিই নির্ধারণ করবে যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির ভবিষ্যৎ। একইসঙ্গে নেতানিয়াহু-ট্রাম্প বৈঠকেও পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, বিশ্ব সম্প্রদায়ের নজর থাকবে সেদিকে।