প্রধান পারমাণবিক স্থাপনা ‘নিশ্চিহ্নের’ দাবি যুক্তরাষ্ট্রের; ‘যুদ্ধ এখন শুরু’ ঘোষণা তেহরানের

মধ্যপ্রাচ্যে আঞ্চলিক দুই প্রতিদ্বন্দ্বী ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সংঘাত দ্বিতীয় সপ্তাহে গড়িয়েছে। ১৩ জুন (শুক্রবার) ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় ইসরায়েলের হামলার পর থেকে শুরু হওয়া এই পাল্টাপাল্টি আক্রমণ তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে পুরো অঞ্চলজুড়ে।
ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ পরিস্থিতি ঘিরে প্রতিমুহূর্তের সর্বশেষ খবর পেতে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সাথে থাকুন
প্রধান পারমাণবিক স্থাপনা 'নিশ্চিহ্নের' দাবি যুক্তরাষ্ট্রের; 'যুদ্ধ এখন শুরু' ঘোষণা তেহরানের
ইরানে পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার পর ইরানের অভিজাত রেভল্যুশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি) ঘোষণা করেছে, 'যুদ্ধ এখনই শুরু'।
ট্রাম্প তার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে ইরানের তিনটি প্রধান পারমাণবিক স্থাপনা- নাতাঞ্জ, ইস্পাহান ও ফর্দোতে হামলার কথা জানায়।
ট্রাম্প পোস্টে লেখেন, 'আমাদের অসাধারণ আমেরিকান যোদ্ধাদের অভিনন্দন।' তিনি আরও লেখেন, এখন 'শান্তির সময়'।
হামলার পর হোয়াইট হাউসে জাতির উদ্দেশে ভাষণে ট্রাম্প বলেন, ইরানের প্রধান পারমাণবিক স্থাপনাগুলো, বিশেষ করে ফর্দো, 'নিশ্চিহ্ন' হয়েছে। তিনি একে 'চমৎকার সামরিক সাফল্য' হিসেবে বর্ণনা করেন।
ট্রাম্প সতর্ক করে বলেন, তেহরানকে এখন 'শান্তি প্রতিষ্ঠা করতেই হবে, নাহলে ভবিষ্যতের আরও ভয়াবহ হামলা হবে।'
ট্রাম্প বলেন, 'এখন হয় শান্তি আসবে, নয়তো ইরানের জন্য এটা হবে এক ভয়ঙ্কর ট্র্যাজেডি। মনে রাখবেন, এখনও বহু লক্ষ্যবস্তু বাকি আছে। যেগুলোয় আঘাত হানা হয়েছে, সেগুলো ছিল সবচেয়ে কঠিন এবং সম্ভবত সবচেয়ে প্রাণঘাতী।'
'যদি দ্রুত শান্তি না আসে, তাহলে আমরা বাকি লক্ষ্যবস্তুগুলোর দিকে নিখুঁত ও দক্ষতার সঙ্গে দ্রুত অগ্রসর হবো', যোগ করেন তিনি।
এদিকে শীর্ষ মার্কিন রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা লিন্ডসে গ্রাহাম বলেছেন, ট্রাম্প 'সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন'।
তিনি বলেন, 'তেহরান সরকার এটা প্রাপ্য ছিল। ভালো করেছেন, প্রেসিডেন্ট।'
তিনি আরও বলেন, 'আমার প্রিয় নাগরিকদের উদ্দেশে বলছি: আমাদের আছে বিশ্বের সেরা বিমান বাহিনী। আমি গর্বিত।'
অন্যদিকে শীর্ষ ডেমোক্র্যাট নেতা হাকিম জেফরিস বলেছেন, ট্রাম্প 'দেশকে ভুল পথে পরিচালিত করেছেন'।
এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, 'ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখবেন। সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। এখন যুদ্ধের ঝুঁকি মারাত্মকভাবে বেড়ে গেছে এবং আমি প্রার্থনা করি যেন ওই অঞ্চলে থাকা আমাদের সেনাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়, যাদের এখন মারাত্মক ঝুঁকির মুখে ফেলে দেওয়া হয়েছে।'
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের ৪০ হাজার থেকে ৫০ হাজার সেনা মধ্যপ্রাচ্যে মোতায়েন রয়েছে।
আইআরজিসি জানিয়েছে, এই হামলা ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলা সংঘাতকে আরও উসকে দিয়েছে, যা এখন কেবল সংঘর্ষ নয়, বরং মধ্যপ্রাচ্যে পুরোপুরি একটি যুদ্ধের রূপ নিয়েছে।
ইউরো নিউজ
ইরানে মার্কিন হামলার পর উপসাগরে 'কোনো তেজস্ক্রিয় প্রভাব' শনাক্ত হয়নি: সৌদি আরব
সৌদি আরবের নিউক্লিয়ার অ্যান্ড রেডিওলজিক্যাল রেগুলেটরি কমিশন আজ রোববার জানিয়েছে, মার্কিন সামরিক বাহিনী ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালানোর পর সৌদি আরব এবং উপসাগরীয় অঞ্চলে 'কোনো তেজস্ক্রিয় প্রভাব শনাক্ত হয়নি'।
এ বিষয়ে এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে কমিশন বলেছে, 'মার্কিন সামরিক বাহিনী ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালানোর পর সৌদি আরব ও আরব উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলোর পরিবেশের উপর কোনো তেজস্ক্রিয় প্রভাব শনাক্ত হয়নি।'
কেইউএনএ নিউজ এজেন্সির বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কুয়েতের ন্যাশনাল গার্ডও বলেছে, 'কুয়েতের আকাশসীমা ও জলসীমায় বিকিরণের মাত্রা স্থিতিশীল এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক।'
উল্লেখ্য গতকাল শনিবার রাতে মার্কিন বাহিনী ইরানের তিনটি প্রধান পারমাণবিক স্থাপনা- নাতাঞ্জ, ইস্পাহান ও ফোরদোতে হামলা চালায়।
আরব নিউজ
যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত নয়: মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট

মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স বলেছেন, 'যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত নয়।' আজ রোববার এনবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।
'আমাদের যুদ্ধ তাদের (ইরান) পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার সঙ্গে। যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাস করে, তারা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি 'ধ্বংস' করেছে।
ভাইস প্রেসিডেন্ট আরও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা এখন ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি 'স্থায়ীভাবে' ধ্বংস করার জন্য কাজ করবে।
পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা 'নতুন নয়', অগ্রগতি অব্যাহত থাকবে: ইরান
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলার পর ইরানের অ্যাটমিক এনার্জি অর্গানাইজেশনের মুখপাত্র বেহরুজ কামালভান্দি বলেছেন, 'বেসামরিক পারমাণবিক খাতের উন্নয়নের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।'
ইরানের বার্তা সংস্থা ওয়াইজেসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, 'আমাদের স্থাপনায় হামলার ঘটনা এটাই প্রথম নয়। আমাদের সক্ষমতা বিবেচনায় পারমাণবিক শিল্প অব্যাহত রাখতে হবে।'
পুতিনের সঙ্গে 'গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শের জন্য' কাল সাক্ষাৎ করবেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেছেন, তিনি আগামীকাল সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
ইস্তাম্বুলে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, 'রাশিয়া ইরানের বন্ধু এবং আমাদের একটি কৌশলগত সম্পর্ক রয়েছে। আমি আগামীকাল রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ করব।'
এফটি
'ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ': ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর তেল আবিব থেকে ফিরে বিবিসির প্রতিবেদন

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরান আজ রোববার স্থানীয় সময় সকালে ইসরায়েলে বিভিন্ন জায়গা লক্ষ্য করে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।
গতকাল রাতে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার পর আজ সকালে এ হামলা চালায় ইরান।
বিবিসির মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিনিধি হুগো বাচেগা তেল আবিব থেকে জানিয়েছেন, 'ভয় হচ্ছে, যদি এ যুদ্ধ চলতে থাকে, তাহলে এ ধরনের আরও হামলা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।'
বিবিসি
'দায়িত্বজ্ঞানহীন সিদ্ধান্ত': ইরানে মার্কিন হামলার প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়া ও স্পেন
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলা আন্তর্জাতিক আইনের 'সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেছে রাশিয়া।
এক বিবৃতিতে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, 'একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের ভূখণ্ডে ক্ষেপণাস্ত্র ও বোমা হামলা চালানোর দায়িত্বজ্ঞানহীন সিদ্ধান্ত, যে যুক্তিই তুলে ধরা হোক না কেন, তা আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘ সনদ ও জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবের স্পষ্ট লঙ্ঘন।'
বিবৃতিতে এ আগ্রাসন বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের আহ্বান জানায় রাশিয়া।
এদিকে স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসে ম্যানুয়েল আলবারেস বুয়েনো বলেছেন, ইরানে মার্কিন হামলার জেরে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা নিয়ে তারা 'খুবই উদ্বিগ্ন'।
আল জাজিরা
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় আরব দেশগুলোর নিন্দা
ওমান পারমাণবিক বিষয়ে মধ্যস্থতার জন্য ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে আলোচনা পরিচালনা করছিল। এরই মধ্যে ইরানের পামাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে দেশটি। তাদের ভাষ্যে, 'যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি বিমান হামলার কারণে যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে, তার জন্য গভীর উদ্বেগ, নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে ওমান।'
যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র সৌদি আরব বলেছে, 'ইরানের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের এ ঘটনার নিন্দা জানাই।' সেইসঙ্গে সব পক্ষকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে দেশটি।
সৌদি সরকার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানায়, 'এই অত্যন্ত স্পর্শকাতর সময়ে কূটনৈতিক সমাধানের দ্বিগুণ প্রচেষ্টা চালাতে হবে।'
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সতর্ক করে বলেছে, 'বর্তমান উত্তেজনা আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে।' এছাড়াও সব পক্ষ এখন সংযম ও বিবেচনা বজায় রাখবে সে বিষয়ে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেছে দেশটি।
মিশর জানিয়েছে, 'এ ধরনের পরিস্থিতি এ অঞ্চলকে আরও বিশৃঙ্খলা ও উত্তেজনার দিকে ঠেলে দিতে পারে।' দেশটি জোর দিয়ে বলেছে, 'এ সংকটের একমাত্র সমাধান হলো রাজনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে কূটনৈতিক পথ খোঁজা, কোনোভাবেই সামরিক পদক্ষেপ নয়।'
এদিকে লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন বলেছেন, 'ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলা সামরিক উত্তেজনা আরও বাড়াতে পারে। এটি একাধিক দেশ ও অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলবে।'
বিবিসি
যুক্তরাষ্ট্রের হামলার তদন্ত চেয়ে আইএইএ'র কাছে চিঠি দিল ইরান
যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক বিমান হামলার তদন্ত দাবি করে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ)-র মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি'র কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন ইরানের আণবিক শক্তি সংস্থার প্রধান মোহাম্মদ ইসলামী।
চিঠিতে ইসলামী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই 'অবৈধ কার্যক্রম' খতিয়ে দেখা উচিত এবং আইএইএ প্রধানের 'নিষ্ক্রিয়তা' বন্ধ করে এই হামলার নিন্দা জানানো উচিত। তিনি সংস্থাটিকে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
রয়টার্স জানায়, চিঠিতে ইরান দাবি করেছে, তারা তাদের 'সার্বভৌম অধিকারের' সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে এবং এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় 'যুক্তিসঙ্গত আইনি পদক্ষেপ' গ্রহণ করবে।
দ্য গার্ডিয়ান
যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর সৌদি আরবের উদ্বেগ, সকল পক্ষকে 'সংযম' দেখানোর আহ্বান
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলার পর গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সৌদি আরব। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, 'ইরানে, বিশেষ করে পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার ঘটনাপ্রবাহ আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে অনুসরণ করছি।'
বিবৃতিতে সৌদি আরব সকল পক্ষকে 'সংযম' দেখাতে আহ্বান জানিয়ে বলেছে, উত্তেজনা হ্রাস এবং পরিস্থিতি যেন আর না বাড়ে, সে জন্য প্রচেষ্টা চালাতে হবে। পাশাপাশি সংঘাত এড়াতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি একটি 'রাজনৈতিক সমাধানে' পৌঁছানোর উদ্যোগ জোরদারের আহ্বান জানিয়েছে দেশটি।
আল জাজিরা
মার্কিন হামলা 'সর্বশক্তি' দিয়ে প্রতিহত করার অঙ্গীকার ইরানের
পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক হামলাকে আন্তর্জাতিক আইনের 'গুরুতর ও নজিরবিহীন লঙ্ঘন' বলে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় বলেছে, এ ধরনের 'আগ্রাসন' প্রতিহত করার অধিকার ইরানের আছে।
আধা-সরকারি সংবাদ সংস্থা তাসনিম প্রকাশিত এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, 'বিশ্বের ভুলে গেলে চলবে না, কূটনৈতিক প্রক্রিয়া চলাকালে যুক্তরাষ্ট্রই ইসরায়েলের আগ্রাসী কর্মকাণ্ডকে দিয়ে কূটনীতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, এবং এখন ইরানের বিরুদ্ধে এক বিপজ্জনক যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে।'
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওয় বলেছে, এখন স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, যুক্তরাষ্ট্র 'কোনো নিয়ম বা নৈতিকতার ধার ধারে না'; এবং 'গণহত্যাকারী ও দখলদার শাসনব্যবস্থার স্বার্থ হাসিলের জন্য কোনো বেআইনি কাজ বা অপরাধ করতেও পিছপা হয় না।'
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, 'যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক আগ্রাসন ও এই দুর্বৃত্ত শাসনব্যবস্থা কর্তৃক সংঘটিত অপরাধের বিরুদ্ধে সর্বশক্তি দিয়ে রুখে দাঁড়ানো এবং ইরানের নিরাপত্তা ও জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করাকে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান নিজের অধিকার বলে মনে করে।'
আল জাজিরা
তেল আবিবে ক্ষতিগ্রস্ত ভবন থেকে ৬ জন উদ্ধার, আহত ১৬
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ইসরায়েলের তেল আবিবে একটি ক্ষতিগ্রস্ত ভবন থেকে ছয়জনকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি পুলিশ। তাদের সবাই সামান্য আহত হয়েছেন।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের জরুরি সেবাদানকারী সংস্থা জানিয়েছে—মোট ১৬ জন আহত হয়েছেন, যাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এর আগে ইসরায়েলি মেডিকেল সংস্থা মাগেন ডেভিড অ্যাডম (এমডিএ) জানিয়েছিল, ভোররাতের হামলায় ১১ জন আহত হয়েছেন।
বিবিসি
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার লক্ষ্য ছিল ইসরায়েলের বেন-গুরিয়ন বিমানবন্দর: ইরানি সংবাদমাধ্যম
ইসরায়েলের বেন-গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, গবেষণা প্রতিষ্ঠান, সমর্থন ঘাঁটি এবং বিভিন্ন স্তরের নিয়ন্ত্রণ ও কমান্ড সেন্টারগুলোকে লক্ষ্য করে ইরানের ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছে ইরানের আধা সরকারি বার্তা সংস্থা তাসনিম।
তাসনিম আরও জানায়, হামলায় দূর পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে।
আল জাজিরা
পশ্চিম ইরানে নতুন হামলার ঘোষণা ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা পশ্চিম ইরানে নতুন করে হামলা শুরু করেছে। এই হামলা 'সামরিক লক্ষ্যবস্তু'তে চালানো হচ্ছে বলে দাবি করেছে তারা।
এর আগে ইসরায়েল জানায়, তারা ইরানের ভেতর থেকে ছোড়া একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে, যেগুলো ইসরায়েলের দিকে ধেয়ে আসছিল।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, তারা ইরানের ভেতরে থাকা ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ যন্ত্রেও হামলা চালিয়েছে। তবে এ নিয়ে এখনো ইরানের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি।
বিবিসি
তেল আবিবসহ ইসরায়েলের ১০টি স্থানে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, আহত অন্তত ১৪
ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের অন্তত ১০টি স্থানে আঘাত হেনেছে বলে জানিয়েছে দেশটির জরুরি সেবাদানকারী সংস্থাগুলো। হামলার লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে তেল আবিব, কারমেল ও হাইফার মতো গুরুত্বপূর্ণ শহরের নাম উঠে এসেছে—যেখানে হামলার সময় কোনো সতর্কতা সাইরেন বাজেনি বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।

হারেৎজ জানিয়েছে, তেল আবিবে কয়েকটি ভবন পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, এই হামলায় অন্তত ১৪ জন আহত হয়েছেন, তবে তা গুরুতর নয়।
উদ্ধারকর্মীরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছেন।
দ্য গার্ডিয়ান
ইরানের হামলায় ইসরায়েলে আহত ১১ জন
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে অন্তত ১১ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দ্য টাইমস অব ইসরায়েল।
ইসরায়েলের জাতীয় জরুরি চিকিৎসা সংস্থা মাগেন ডেভিড অ্যাডম-এর বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, আহতদের মধ্যে একজনের শরীরে গুলির ধাতব টুকরার আঘাত লেগেছে, আর বাকি ১০ জন হালকা আহত হয়েছেন।
আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
আল জাজিরা
'চিরস্থায়ী পরিণতি হবে': মার্কিন হামলায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর হামলা চালিয়ে জাতিসংঘ সনদ ও আন্তর্জাতিক আইনের চরম লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ করেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি।
এক্স (সাবেক টুইটার)-এ দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, 'জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘ সনদ, আন্তর্জাতিক আইন এবং পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি (এনপিটি)-এর গুরুতর লঙ্ঘন করেছে।'

তিনি আরও বলেন, 'আজ সকালের ঘটনা মর্মান্তিক এবং এর চিরস্থায়ী পরিণতি হবে। এই ভয়ঙ্কর, আইনের তোয়াক্কা না করা ও অপরাধমূলক আচরণ প্রতিটি জাতিসংঘ সদস্য রাষ্ট্রের জন্যই উদ্বেগের বিষয়।'
আরাগচি জোর দিয়ে বলেন, 'জাতিসংঘ সনদের আত্মরক্ষামূলক প্রতিক্রিয়ার বিধান অনুযায়ী, ইরান তার সার্বভৌমত্ব, স্বার্থ এবং জনগণ রক্ষায় সব ধরনের বিকল্প উন্মুক্ত রাখছে।'
ডয়েচে ভেলে
ইরান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার কথা জানিয়েছে ইসরায়েল
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা ইরান থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সেনাবাহিনী নাগরিকদের সতর্ক করে জানিয়েছে, কেউ যদি জরুরি সতর্কবার্তা পায়, তাহলে দ্রুত সুরক্ষিত স্থানে আশ্রয় নিতে হবে।
আল জাজিরা
'পূর্ব দিক থেকে ছোড়া' দুটি ড্রোন ভূপাতিত করেছে ইসরায়েল
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা পূর্ব দিক থেকে ছোড়া দুটি ড্রোন প্রতিহত করেছে। ড্রোন দুটি ইসরায়েল-জর্ডান সীমান্তের কাছে আটকানো হয় বলে জানানো হয়েছে।
এই ঘটনাটি ঘটলো এমন এক সময়ে, যখন যুক্তরাষ্ট্রের ইরানে হামলার পর ইরানের সম্ভাব্য পাল্টা আঘাতের আশঙ্কায় ইসরায়েল সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছে।
তবে এই ড্রোনগুলো ইরান থেকেই ছোড়া হয়েছিল কি না, তা এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা হয়নি। ইসরায়েল বলছে, তারা পরিস্থিতি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
আল জাজিরা
ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহানে তেজস্ক্রিয়তা ধরা পড়েনি: ইরানের পরমাণু কর্তৃপক্ষ
যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর ইরানের আণবিক শক্তি সংস্থা (এইওআই) জানিয়েছে, ফোরদো, ইসফাহান ও নাতাঞ্জ পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর আশপাশে কোনো তেজস্ক্রিয়তা বা দূষণ শনাক্ত হয়নি।
সংস্থাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে জানিয়েছে, 'ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহান পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর অবৈধ মার্কিন হামলার পর নিউক্লিয়ার সেফটি সিস্টেম সেন্টারের মাঠপর্যায়ের জরিপ এবং রেডিয়েশন পর্যবেক্ষণ ডেটা বিশ্লেষণে দেখা গেছে—কোনো তেজস্ক্রিয়তা শনাক্ত হয়নি।'
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, 'এই স্থাপনাগুলোর আশপাশের বাসিন্দাদের জন্য কোনো ধরনের ঝুঁকি নেই। নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে।'
আল জাজিরা
যুদ্ধ নয়, শান্তির আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের
ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, 'আজ ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র যে সামরিক শক্তি প্রয়োগ করেছে, তা গভীরভাবে উদ্বেগজনক। এটি এমন এক অঞ্চলে বিপজ্জনক উত্তেজনা বৃদ্ধি, যা আগেই সংঘাতের প্রান্তে রয়েছে—এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার ওপর সরাসরি হুমকি।'
তিনি সতর্ক করে বলেন, 'এই সংঘাত খুব দ্রুত নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে উঠতে পারে—যার ভয়াবহ পরিণতি পড়তে পারে সাধারণ মানুষ, পুরো অঞ্চল ও বিশ্বের ওপর।'
জাতিসংঘ সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানিয়ে গুতেরেস বলেন, 'এই সংকটময় সময়ে বিশৃঙ্খলার চক্র থেকে দূরে থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সামরিকভাবে এই সমস্যার কোনো সমাধান নেই। একমাত্র পথ কূটনীতি, একমাত্র আশা শান্তি।'
জাতিসংঘ সনদ ও আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি প্রতিশ্রুতি পালনের জন্যও তিনি সকল দেশের প্রতি আহ্বান জানান।
গুতেরেসে/এক্স
'গুরুতর ক্ষতি হয়নি ফোরদোতে', দাবি ইরানি সংসদ সদস্যের
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর ফোরদো নিয়ে ভিন্ন বক্তব্য দিলেন ইরানি এক সংসদ সদস্য। ফার্স নিউজ এজেন্সির বরাতে জানা গেছে, ক্বোম অঞ্চল থেকে নির্বাচিত আইনপ্রণেতা মোহাম্মদ মানান রাইসি জানিয়েছেন—ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনায় বড় ধরনের ক্ষতি হয়নি।
তিনি বলেন, 'ক্ষয়ক্ষতির বেশিরভাগই ছিল শুধু স্থলভাগে, যেগুলো পুনঃস্থাপনযোগ্য।'
রাইসির এই বক্তব্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবির সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক। ট্রাম্প এর আগে বলেছিলেন, ইরানের পারমাণবিক সমৃদ্ধিকরণ কেন্দ্রগুলো 'সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস' করে দেওয়া হয়েছে।
এই বিপরীত বক্তব্য ইঙ্গিত দিচ্ছে, ফোরদোতে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা নিয়ে এখনও দ্বিধা ও তথ্যের অমিল রয়েছে। পশ্চিমা পর্যবেক্ষকদের মতে, সম্পূর্ণরূপে ভূগর্ভস্থ এই কেন্দ্র ধ্বংস হয়েছি কিনা, তা যাচাই করা সময়সাপেক্ষ।
রয়টার্স
'ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে ট্রাম্পের নাম': ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা নিয়ে ইসরায়েলে প্রতিক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। এবার মুখ খুলেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিওন সা'র।
এক্স-এ (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, 'এই সাহসী সিদ্ধান্তের জন্য ট্রাম্প ইতিহাসের পাতায় সোনালি অক্ষরে নিজের নাম লিখে দিয়েছেন।'
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই 'ঐতিহাসিক পদক্ষেপের' নেতৃত্ব দিয়েছেন।
বিবিসি
পারমাণবিক স্থাপনায় হামলায় ইরানের আণবিক শক্তি সংস্থার নিন্দা
যুক্তরাষ্ট্রের ইরানি পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে বিমান হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইরানের আণবিক শক্তি সংস্থা (এইওআই)। এক বিবৃতিতে তারা এ হামলাকে 'বন্য আক্রমণ' হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ)-কেও একহাত নেয় এইওআই। সংস্থাটি অভিযোগ করেছে, আইএইএ এই হামলার বিষয়ে 'নির্বিকার এবং এমনকি পরোক্ষভাবে জড়িত' থেকেছে।
এইওআই বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, তারা যেন এই হামলার নিন্দা জানায় এবং ইরানের 'ন্যায়সঙ্গত অবস্থান'কে সমর্থন করে।
সংস্থাটি আরও বলেছে, 'শত্রুদের কুটিল পরিকল্পনা সত্ত্বেও' ইরানি বিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিবিদরা দেশের পারমাণবিক শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকবে।
বিবৃতিতে জানানো হয়, হামলার পরিপ্রেক্ষিতে সংস্থাটি 'প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ' গ্রহণ করবে, যার মধ্যে 'আইনি ব্যবস্থা' গ্রহণও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
এই প্রতিক্রিয়ায় ইরান স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দিয়েছে, হামলার পরও তারা নিজেদের পারমাণবিক কর্মসূচি থেকে সরে আসছে না বরং তা চালিয়ে যেতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
বিবিসি
মার্কিন হামলার সময় টানা পাঁচ ঘণ্টার বৈঠকে নেতানিয়াহু ও শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তারা
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলার সময় টানা পাঁচ ঘণ্টার নিরাপত্তা বৈঠকে ছিলেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তার ঘনিষ্ঠ শীর্ষ কর্মকর্তারা। এই বৈঠক সম্পর্কে অবগত একটি সূত্র সিএনএনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
ইসরায়েলের স্থানীয় সময় রাত ১০টায় বৈঠকটি শুরু হয় এবং চলতে থাকে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত—যা ঘটেছিল স্থানীয় সময় রাত প্রায় ৩টায় সূত্র জানায়, মার্কিন হামলা শেষ হওয়ার পরই বৈঠকটি সমাপ্ত হয়।
এর আগে একাধিক সূত্র জানিয়েছিল, ইসরায়েল এ হামলা পর্যবেক্ষণে নিরাপত্তা ক্যাবিনেটের বৈঠক ডেকেছিল।
বৈঠকে ইরান ইস্যুতে দায়িত্বপ্রাপ্ত শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন, যাদের মধ্যে নেতানিয়াহুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী রন ডারমার, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিওন সাআর, সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ, গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের প্রধান, জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন গাভির এবং অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোটরিচ ছিলেন।
সিএনএন
হামলার পর পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে কোনো তেজস্ক্রিয়তা ধরা পড়েনি: সৌদি পরমাণু নিয়ন্ত্রক সংস্থা
যুক্তরাষ্ট্রের ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলার পর পারস্য উপসাগরীয় আরব রাষ্ট্রগুলোর পরিবেশে কোনো তেজস্ক্রিয়তা শনাক্ত হয়নি বলে জানিয়েছে সৌদি আরবের পরমাণু নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
এক্স (সাবেক টুইটার)-এ দেওয়া এক পোস্টে সৌদি পারমাণবিক ও তেজস্ক্রিয় নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, 'যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালানোর পর সৌদি আরব ও উপসাগরীয় আরব দেশগুলোর পরিবেশে কোনো ধরনের তেজস্ক্রিয় প্রভাব শনাক্ত হয়নি।'
এই বিবৃতির মাধ্যমে অঞ্চলজুড়ে সম্ভাব্য তেজস্ক্রিয় ঝুঁকি নিয়ে যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল, তা প্রশমিত করতে চেয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। এখন পর্যন্ত অন্য উপসাগরীয় দেশগুলো থেকেও তেজস্ক্রিয়তা সংক্রান্ত কোনো সতর্কতা প্রকাশ করা হয়নি।
সিএনএন
জাতির উদ্দেশে ভাষণে যা যা বললেন ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই সংক্ষিপ্ত ভাষণ প্রায় তিন মিনিট স্থায়ী ছিল। ভাষণের উল্লেখযোগ্য অংশ তুলে ধরা হলো:
-
ট্রাম্প এই হামলাকে 'চমৎকার সামরিক সাফল্য' হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং দাবি করেছেন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো 'সম্পূর্ণ ও মোটামুটি ধ্বংস' হয়ে গেছে।
-
তিনি বলেন, 'ইরান এখন শান্তি প্রতিষ্ঠা করবে। যদি না করে, ভবিষ্যতে আরও বড় ও সহজ হামলা করা হবে।'
-
ট্রাম্প আরও জানান, 'অসংখ্য লক্ষ্য বাকি আছে… যদি দ্রুত শান্তি না আসে, আমরা সেগুলো নিখুঁত, দ্রুত ও দক্ষতার সঙ্গে আঘাত করব।'
-
তিনি সতর্ক করেন, 'এভাবে চলতে পারে না।শান্তি না আসলে গত আট দিনে যা ভয়াবহতা দেখেছি তার চেয়ে অনেক বড় ট্র্যাজেডি অপেক্ষা করছে।'
-
ইসরায়েলের প্রসঙ্গ বিশেষভাবে তুলে ধরেন ট্রাম্প, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল 'একসঙ্গে টিম [দল] হিসেবে কাজ করেছে' এবং 'এই ভয়াবহ হুমকি দূর করতে অনেকদূর এগিয়েছে।'
-
ট্রাম্প উল্লেখ করেন, যদিও তিনি বিদেশে সামরিক হস্তক্ষেপ এড়িয়ে চলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তবু এই হামলাকে তিনি তার প্রথম মেয়াদে ইরানি জেনারেল কাসেম সোলেইমানির হত্যার সঙ্গে তুলনা করেছেন।
-
তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনী প্রধান জেনারেল ড্যান কেইন রবিবার স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় সংবাদ সম্মেলন করবেন।
আল জাজিরা
ভাষণে নেতানিয়াহুকে ধন্যবাদ ট্রাম্পের
ইরানে বিমান হামলার পর ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
তিনি বলেন, 'আমি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাই। আমরা এমনভাবে একসঙ্গে টিম [দল] হিসেবে কাজ করেছি, যেমন আগে হয়তো কেউ কখনও করেনি।'

ট্রাম্প আরও বলেন, 'আমরা ইসরায়েলের প্রতি এই ভয়াবহ হুমকি মুছে দেওয়ার পথে অনেকদূর এগিয়েছি। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর অসাধারণ কাজের জন্য আমি তাদেরও ধন্যবাদ জানাই।'
আল জাজিরা
ফোরদো আগেই খালি করে ফেলা হয়েছে, আশপাশের বাসিন্দাদের কোনো 'বিপদ নেই': ইরান
যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলার পর ইরান জানিয়েছে, ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনার আশপাশের জনগণের জন্য কোনো বিপদ বা ঝুঁকি নেই। ক্বোম প্রদেশের সঙ্কট ব্যবস্থাপনা সদর দপ্তর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, 'ক্বোম শহর ও আশপাশের এলাকার জনগণের জন্য কোনো ধরনের হুমকি নেই।'
ইরান সরকার-নিয়ন্ত্রিত সংবাদ সংস্থা আইআরএনএ এই বিবৃতি প্রকাশ করে, যা ট্রাম্পের বক্তব্যের পর এসেছে। ট্রাম্প হামলার পর দাবি করেছিলেন, 'ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।'
তবে এর আগেই ইরানের এক কর্মকর্তা জানান, ফোরদো স্থাপনাটি বহু আগেই খালি করে ফেলা হয়েছিল এবং হামলায় সেখানে কোনো 'অপরিবর্তনীয় ক্ষতি' হয়নি।
ইরানের পক্ষ থেকে দেওয়া এসব বার্তা হামলার পর আতঙ্ক প্রশমনের কৌশল হিসেবেই দেখা হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তবে ফোরদোতে সত্যিকার ক্ষয়ক্ষতি কী পরিমাণ হয়েছে, তা এখনো স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
আল জাজিরা
শান্তি না এলে ইরানের অন্য লক্ষ্যবস্তুতেও হামলা চালাবে যুক্তরাষ্ট্র: জাতির উদ্দেশে ভাষণে ট্রাম্প
ইরানে বিমান হামলার পর রাত ১০টায় জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভাষণে তিনি এই হামলাকে 'একটি চমৎকার সামরিক সাফল্য' হিসেবে বর্ণনা করেন।
ট্রাম্প বলেন, 'আজ রাতে আমি বিশ্বের কাছে জানাতে পারি যে, এই হামলাগুলো অসাধারণ সফল ছিল। এর মূল লক্ষ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক সমৃদ্ধিকরণ সক্ষমতা বন্ধ করা এবং সন্ত্রাসে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া বিশ্বের এক নম্বর রাষ্ট্রের পারমাণবিক হুমকির অবসান ঘটানো।'
তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে থামানোর জন্যই নেওয়া হয়েছে এবং এটি নির্ভুলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলার পর দেশটিকে আরও কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, 'এখন হয় শান্তি আসবে, নয়তো ইরানের জন্য ট্র্যাজেডি [মর্মান্তিক পরিণতি] অপেক্ষা করছে—যা গত আট দিনে যা ঘটেছে, তার চেয়েও অনেক ভয়াবহ।'
ট্রাম্প আরও বলেন, 'মনে রাখবেন, এখনও অনেক লক্ষ্য বাকি আছে। আজ রাতের লক্ষ্যটি ছিল সবচেয়ে কঠিন এবং সম্ভবত সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক। কিন্তু যদি দ্রুত শান্তি না আসে, আমরা সেসব বাকি লক্ষ্যবস্তুতে নিখুঁত গতি ও দক্ষতায় আঘাত হানব।'
এই বক্তব্যে মধ্যপ্রাচ্যে চলমান সংঘাত আরও তীব্র আকার ধারণ করার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট, যদিও তিনি এর আগে শান্তির ডাক দিয়েছিলেন। বিশ্লেষকদের মতে, ইরান যদি এখনো আলোচনায় না ফেরে, তবে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযান আরও বিস্তৃত হতে পারে।
আল জাজিরা
ইরানের ৩ পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, ফোরদো 'ধ্বংস'
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, মার্কিন সামরিক বাহিনী ইরানের প্রধান তিন পারমাণবিক স্থাপনায় 'অত্যন্ত সফল' হামলা চালিয়েছে। তিনি আরও বলেন, তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ফোরদো ধ্বংস হয়ে গেছে।
কয়েকদিন ধরে চিন্তাভাবনার পর ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানে হামলায় যোগ দেওয়ার এই সিদ্ধান্ত নিলেন ট্রাম্প। এর ফলে ইরান-ইসরায়েল সংঘাত নতুন মাত্রা পেল।
ট্রাম্প বলেন জানান, মার্কিন বাহিনী ইরানের তিনটি প্রধান পারমাণবিক স্থাপনা—নাতাঞ্জ, ইসফাহান ও ফোরদোতে হামলা চালিয়েছে। তিনি ফক্স নিউজকে বলেন, ফোরদোতে ছয়টি বাঙ্কার বাস্টার বোমা ফেলা হয়েছে। আর অন্য পারমাণবিক কেন্দ্রগুলোতে নিক্ষেপ করা হয়েছে ৩০টি টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র।
নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, 'সব বিমান নিরাপদে ফিরছে।' 'মহান আমেরিকান যোদ্ধাদের' তিনি অভিনন্দন জানান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন মার্কিন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, এই হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের বি-২ বোমারু বিমান অংশ নিয়েছিল।

ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে লেখেন, 'প্রধান স্থাপনা ফোরদোতে পূর্ণমাত্রার বোমা ফেলা হয়েছে। ফোরদো এখন ধ্বংস।'
তিনি আরও বলেন, 'ইরানকে এখনই এই যুদ্ধ বন্ধ করতে রাজি হতে হবে।'
এর আগে নিউইয়র্ক টাইমসসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানায়, যুক্তরাষ্ট্র প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দিকে অন্তত দুই থেকে চারটি বি-২ স্টেলথ বোমারু বিমান মোতায়েন করেছে। ইরানের পর্বতের নিচে অবস্থিত অত্যন্ত সুরক্ষিত ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংস করতে সক্ষম বোমা বহন করতে পারে এসব বিমান।
বার্তা সংস্থা তাসনিম-এর বরাত দিয়ে একজন ইরানি কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন, 'শত্রুপক্ষের বিমান হামলায়' ফোরদোর একাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রয়টার্স