বিশ্বের প্রথম ব্যক্তিগত জিন-সম্পাদনা চিকিৎসায় রোগমুক্তি শিশুর

কাইল ও নিকোল মালডুন দম্পতির নবজাতক সন্তান কেজে জন্মের পর থেকেই মারাত্মক অসুস্থ। চিকিৎসকেরা নানা আশঙ্কার কথা বললেন—মেনিনজাইটিস হতে পারে? না-কি সেপসিস?
তবে খুব দ্রুতই জানা গেল প্রকৃত কারণ। জন্মের মাত্র এক সপ্তাহের মাথায় চিকিৎসকেরা জানান, কেজে একটি বিরল জিনগত রোগে আক্রান্ত। রোগটির নাম সিপিএস১ ডেফিশিয়েন্সি বা কার্বাময়েল ফসফেট সিনথেজ ১-এর ঘাটতি। এই রোগে প্রতি ১৩ লাখ শিশুর মধ্যে মাত্র একজন আক্রান্ত হয়। এমন রোগীরা বেঁচে থাকলেও ভবিষ্যৎ হয় অত্যন্ত কঠিন।
এই রোগের ফলে কেজের মানসিক বিকাশে তীব্র সমস্যা দেখা দিতো। শারীরিক বিকাশ থেমে যেতে পারত। একসময় তার যকৃত বিকল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও ছিল। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, এই রোগে আক্রান্ত অর্ধেক নবজাতকই জন্মের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই মারা যায়।
ফিলাডেলফিয়ার শিশু হাসপাতালের চিকিৎসকেরা একপর্যায়ে মালডুন দম্পতিকে একটি কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ দেন—চিকিৎসা বন্ধ করে কেজকে শান্তিতে বিদায় জানানোর।
নিকোল বলেন, 'আমরা ওকে ভালোবাসতাম। চাইনি ও কষ্ট পাক।'
তবুও, তারা সিদ্ধান্ত নেন—একটি সুযোগ কেজের প্রাপ্য।
ফলাফল?
কেজে শুধু বেঁচেই নেই, সে তৈরি করেছে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাস। এখন ৯ মাস বয়সি কেজে হয়ে উঠেছে বিশ্বের প্রথম শিশু, যার জন্য একেবারে ব্যক্তিগতভাবে তৈরি জিন-সম্পাদনার চিকিৎসা প্রয়োগ করা হয়েছে।
চিকিৎসকদের ভাষায়, কেজের শরীরে এমন এক ইনফিউশন প্রয়োগ করা হয়েছিল, যা শুধু তার নির্দিষ্ট জিনগত ত্রুটি সারানোর জন্য তৈরি করা হয়। এই অভাবনীয় চিকিৎসাপদ্ধতির পেছনের গবেষক দল তাদের কাজ উপস্থাপন করছেন আমেরিকান সোসাইটি অব জিন অ্যান্ড সেল থেরাপির বার্ষিক সম্মেলনে। পাশাপাশি এটি প্রকাশিত হচ্ছে নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে।
তবে এই সাফল্য কেবল কেজকে বাঁচানো নয়—এটি আরও বড় পরিসরে চিকিৎসাবিজ্ঞানে সম্ভাবনার নতুন দরজা খুলে দিয়েছে বলে মনে করেন ড. পিটার মার্কস। তিনি সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফডিএ) জিন থেরাপি বিভাগ থেকে পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগের কারণ—মার্কিন সেক্রেটারি অব হেলথ অ্যান্ড হিউম্যান সার্ভিসেস রবার্ট এফ. কেনেডি জুনিয়রের সঙ্গে মতবিরোধ।
ড. মার্কস বলেন, 'এই ধরনের চিকিৎসার সম্ভাবনা বিশাল, কারণ যুক্তরাষ্ট্রে এমন ৭ হাজারেরও বেশি বিরল জিনগত রোগ রয়েছে, যাতে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ৩ কোটিরও বেশি।'
এসব রোগ এতটাই বিরল যে, কোনো প্রতিষ্ঠান সাধারণত এগুলোর জন্য জিন থেরাপি তৈরি করতে চায় না। কারণ, রোগীর সংখ্যা খুবই কম। আর চিকিৎসা উন্নয়নের প্রক্রিয়া অত্যন্ত ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ।
কিন্তু বহুদিন ধরে সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত গবেষণার ফলাফলের ওপর ভিত্তি করেই কেজের জন্য এই চিকিৎসা তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। ফলে এখন একটি নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে—রোগীর জন্য অপেক্ষাকৃত কম খরচে এবং দ্রুত জিনগত চিকিৎসা তৈরি করা যেতে পারে।
এই অভাবনীয় চিকিৎসাপদ্ধতির মূল ভিত্তি একটি জিন-সম্পাদনার প্রযুক্তি, যেটি তৈরি হয়েছে দীর্ঘদিনের গবেষণায়। ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তি বিভিন্ন কোম্পানির জন্য একটি স্বল্প খরচে, দ্রুত এবং কার্যকর চিকিৎসা তৈরির পথ খুলে দিতে পারে। এতে বছরের পর বছর সময় বা কোটি কোটি টাকা খরচ না করেও একেকজন রোগীর জন্য আলাদাভাবে চিকিৎসা তৈরি করা সম্ভব হবে।
এ ধরনের রোগ, যেমন কেজের রোগ, সাধারণত একটি মাত্র জিনগত ভুলের কারণে হয়—তিন বিলিয়ন ডিএনএ লেটারের মধ্যে কোথাও মাত্র একটি ভুল। এই ভুলটি নিখুঁতভাবে ঠিক করতে হয়, যাকে বলা হয় বেস এডিটিং।
এই লক্ষ্য পূরণে চিকিৎসাটি শরীরে প্রবেশ করানো হয় ফ্যাট-জাতীয় লিপিড অণুর মাধ্যমে। রক্তপ্রবাহে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আগেই লিপিড কণা সেটিকে সুরক্ষিত রাখে এবং পৌঁছে দেয় যকৃতে, যেখানে জিন সম্পাদনার কাজটি হবে।

এই লিপিড কণার ভেতরে থাকে নির্দিষ্ট নির্দেশনা, যা কোষকে এক ধরনের বিশেষ এনজাইম তৈরি করতে উদ্দীপিত করে। সেই এনজাইম গিয়ে জিনের ভুলটি ঠিক করে।
এর সঙ্গে যুক্ত থাকে এক ধরনের আণবিক জিপিএস—সিআরআইএসপিআর। এটি এমনভাবে পরিবর্তিত করা হয় যাতে ধীরে ধীরে ডিএনএর ভেতর দিয়ে গিয়ে নির্ভুলভাবে খুঁজে বের করতে পারে সেই ত্রুটিপূর্ণ ডিএনএ লেটারটি, যেটি পরিবর্তন করতে হবে।
কেজের জন্য ব্যবহৃত এই সিআরআইএসপিআর পদ্ধতিটি পুরোপুরি কেজের শরীরের নির্দিষ্ট জিনগত ভুলের সঙ্গে মিলিয়ে কাস্টমাইজ করা হয়েছিল। তবে একই প্রযুক্তি ব্যবহার করে অন্য অনেক রোগীর শরীরেও থাকা বিভিন্ন জিনগত ত্রুটি সংশোধন করা সম্ভব।
শুধু পরিবর্তন করতে হবে সিআরআইএসপিআরের সেই নির্দেশনাগুলো, যা বলে দেবে ডিএনএর কোন অংশে গিয়ে কাজ করতে হবে। এর ফলে চিকিৎসার খরচও অনেকটা কমে যাবে।
ড. মার্কস বলেন, 'এই চিকিৎসা অন্তত দশগুণ কম খরচে দেওয়া সম্ভব হবে।'
তিনি গবেষণা নিবন্ধটির সঙ্গে একটি সম্পাদকীয়ও লিখেছেন। তাতে তিনি উল্লেখ করেন, 'এই পদ্ধতিটি আমার চোখে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় প্রযুক্তিগুলোর একটি।'
তার মতে, ভবিষ্যতে এটি শুধু বিরল রোগ নয়, বরং সিকল সেল ডিজিজ, সিস্টিক ফাইব্রোসিস, হান্টিংটনস ডিজিজ কিংবা মাসকুলার ডিস্ট্রোফির মতো আরও সাধারণ জিনগত রোগেও ব্যবহার করা সম্ভব হবে।
এই প্রযুক্তি সত্যিকারের অর্থে চিকিৎসা ব্যবস্থাকে পাল্টে দিতে পারে বলেই মনে করেন তিনি।
কেজের জন্য এই বিশেষ জিন-সম্পাদনার যাত্রা শুরু হয়েছিল গত বছরের ৮ আগস্ট সন্ধ্যায়। ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভানিয়ার জিন সম্পাদনার গবেষক ড. কিরণ মুসুনুরু একটি ইমেইল পান।
ইমেইলটি পাঠান ফিলাডেলফিয়ার শিশু হাসপাতালের চিকিৎসক ড. রেবেকা আহরেন্স-নিকলাস। তাতে লেখা ছিল—এক নবজাতকের জিনগত পরীক্ষায় ধরা পড়েছে সে সিপিএস১ ডেফিশিয়েন্সিতে আক্রান্ত। প্রশ্ন ছিল, ড. মুসুনুরু কি তাকে বাঁচাতে পারবেন?
ততদিন পর্যন্ত ড. মুসুনুরু তুলনামূলক কম বিরল জিনগত রোগ নিয়ে কাজ করতেন। কিন্তু কেজের মতো শিশুদের সময় নেই। সাধারণত একটি জিন-সম্পাদনার চিকিৎসা তৈরি করতে এক বছর লেগে যায়। অথচ কেজের হাতে ছয় মাসও হয়তো নেই। যে কোনো সময় তার মস্তিষ্কে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। এমনকি মৃত্যু ঘটতেও পারে।
ড. মুসুনুরু বলেন, 'সেই মুহূর্ত থেকেই মনে হলো ঘড়ির কাঁটা চলছে। এটা আর শুধু গবেষণা নয়—এটা বাস্তব জীবন।'
কেজের শরীর অ্যামোনিয়া নির্গত করতে পারে না। প্রোটিন ভাঙলে স্বাভাবিকভাবেই শরীরে অ্যামোনিয়া তৈরি হয়। কিন্তু কেজের শরীরে এই অ্যামোনিয়া রক্তে জমতে জমতে মস্তিষ্কে পৌঁছে যায়।
চিকিৎসকেরা তাকে এমন এক খাদ্যতালিকায় রাখেন, যেখানে প্রোটিনের পরিমাণ ছিল খুবই কম—শুধু বেড়ে ওঠার জন্য যতটুকু দরকার। পাশাপাশি দেওয়া হয় গ্লিসারল ফেনাইলবিউটিরেট নামের একটি ওষুধ, যা শরীর থেকে অ্যামোনিয়া দূর করতে সাহায্য করে।
তবু ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছিল। সর্দি-জ্বর বা হালকা সংক্রমণও তার শরীরে অ্যামোনিয়ার মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারত, যা মস্তিষ্কে স্থায়ী ক্ষতি বা মৃত্যু ডেকে আনত।
কেজের দিন কাটছিল হাসপাতালে, ২৪ ঘণ্টার নিবিড় পর্যবেক্ষণে। তার জন্য জিন সম্পাদনার একটি নতুন পদ্ধতি তৈরি ও পরীক্ষা চালানো ছিল বড় চ্যালেঞ্জ।
'প্রতিটি পদক্ষেপে ঝুঁকি ছিল, অনেক কিছু করতে হয়েছে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে,' বলেন ড. মুসুনুরু। তিনি তখন যোগাযোগ করেন ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলির গবেষক ফিওদর উরনভের সঙ্গে। উরনভ নিশ্চিত করেন, সম্পাদনার সময় ডিএনএর অন্য কোনো অংশে যেন ভুল বা ক্ষতিকর পরিবর্তন না ঘটে।
ড. উরনভ যুক্ত ছিলেন ড্যানাহার করপোরেশনের সঙ্গে একটি একাডেমিক অংশীদারিত্বে। এই কোম্পানিটি কেজের জন্য প্রয়োজনীয় মানের জিনসম্পাদনার ওষুধ তৈরি করতে পারত। পরে ড্যানাহার তাদের অধীন দুটি জিনপ্রযুক্তি কোম্পানি, দুটি স্বাধীন গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও আরও কয়েকটি সংস্থাকে যুক্ত করে।

'প্রতিটি ধাপে আমরা ধরেই নিয়েছিলাম, কেউ না কেউ বলবে—না, এটা সম্ভব না,' বলেন ড্যানাহারের জেনোমিক মেডিসিনস বিভাগের প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা সাদিক কাসিম। 'তখনই হয়তো সবকিছু থেমে যেত।' কিন্তু তা হয়নি। সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলো শুধু ওষুধ তৈরির কাঁচামালের খরচ নিয়েছে—আর কিছু নয়।
চিকিৎসাটি বাস্তবায়নের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)-ও সহানুভূতিশীল ছিল বলে জানান ড. আহরেন্স-নিকলাস। পুরো প্রক্রিয়ায় বহু গবেষক নিজেদের অন্যান্য কাজ থামিয়ে কেজেকে বাঁচানোর এই মিশনে যোগ দেন।
বার্কলিতে ড. উরনভ বলেন, 'একটি জিনগত রোগের জন্য এত দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্লিনিক-গ্রেড সিআরআইএসপিআর তৈরি করার ঘটনা আগে দেখা যায়নি।'
হার্ভার্ডের ডেভিড লিউ—যার ল্যাবেই কেজের জিনগত ত্রুটি সংশোধনের পদ্ধতি উদ্ভাবিত হয়েছিলেন—বলেন, এই গতি ছিল 'অবিশ্বাস্য'। 'সাধারণত এই ধাপে পৌঁছাতে এক দশক, এমনকি তার চেয়েও বেশি সময় লেগে যায়।'
সব প্রস্তুতি শেষে যখন জিনসম্পাদনার ওষুধ হাতে এলো এবং এফডিএ অনুমোদন দিল, তখন কেজের বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলেন ড. আহরেন্স-নিকলাস। তিনি বলেন, 'আমার জীবনের সবচেয়ে ভীতিকর মুহূর্ত ছিল তখন, যখন রুমে ঢুকে বলি, "আমি জানি না এটা কাজ করবে কি না। তবে আমি আপনাদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, যতটা সম্ভব নিরাপদ রাখার চেষ্টা করব।"'
২৫ ফেব্রুয়ারির সকালে কেজে পেল প্রথম ইনফিউশন। ওষুধের মাত্রা ছিল খুবই কম—কারণ কেউ জানত না তার শরীর কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাবে।
কেজে তখনও সেই একই ঘরে, পরিচিত খাটেই ছিল—যেখানে তার পুরো জীবন কেটেছে। বয়স ছয় মাস, ওজনের হিসাবে সে নবজাতকদের মধ্যে সপ্তম পার্সেন্টাইলে ছিল।
দুই ঘণ্টার ইনফিউশন চলাকালীন পাশে বসে ছিলেন ড. মুসুনুরু। তিনি বলেন, 'আমি তখন একসঙ্গে খুব উত্তেজিত এবং ভীত ছিলাম।' অথচ ছোট্ট কেজে সেসময় ঘুমিয়ে কাটিয়ে দেয়।
মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যেই কেজে স্বাভাবিক শিশুদের মতো প্রোটিন খেতে শুরু করে। তবে তখনও তার রক্ত থেকে অ্যামোনিয়া দূর করার ওষুধের দরকার হচ্ছিল। এর মানে, জিন সম্পাদনা এখনো শরীরের সব কোষে কাজ করেনি।
তাই চিকিৎসকেরা ২২ দিন পর তাকে দ্বিতীয় ডোজ দেন। তখন ওষুধের মাত্রা অর্ধেক করা সম্ভব হয়।
এই সময় কেজে কয়েকবার ভাইরাস সংক্রমণে আক্রান্তও হয়—যা সাধারণভাবে অ্যামোনিয়ার মাত্রা হঠাৎ অনেক বাড়িয়ে দিতে পারত। কিন্তু ড. আহরেন্স-নিকলাস বলেন, 'সে এই ঝুঁকিগুলো একেবারে নির্বিঘ্নে পার হয়ে গেছে।'
দেড় সপ্তাহ আগে কেজে পেল তৃতীয় ডোজ। এখনই বলা যাচ্ছে না, সে পুরোপুরি ওষুধ ছাড়তে পারবে কি না। তবে ওষুধের মাত্রা অনেকটাই কমানো গেছে।
এখন তার শারীরিক অবস্থা এতটাই ভালো যে, তাকে হাসপাতাল থেকে বাসায় নেওয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
সে বয়স অনুযায়ী বিকাশের ধাপগুলো ঠিকভাবে পার করছে। এখন তার ওজন তার বয়সি শিশুদের মধ্যে ৪০তম পার্সেন্টাইলে।
তবে সে লিভার প্রতিস্থাপন থেকে সম্পূর্ণভাবে মুক্তি পাবে কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়।
এই সাফল্যকে ড. উরনভ বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের বায়োমেডিকেল গবেষণায় বিনিয়োগের এক অসাধারণ ফলাফল।' গবেষকেরা বারবার বলেছেন, এই সাফল্যের মূল চালিকাশক্তি ছিল যুক্তরাষ্ট্র সরকারের আর্থিক সহায়তা।
তাদের মতে, এই যাত্রা শুরু হয়েছিল বহু দশক আগে—ব্যাকটেরিয়ার রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা নিয়ে প্রাথমিক গবেষণার মাধ্যমে, যা ছিল ফেডারেল অর্থায়নে। সেখান থেকেই ধীরে ধীরে আবিষ্কৃত হয় সিআরআইএসপিআর প্রযুক্তি।
মানব জিনের ক্রম নির্ধারণে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ কেজের জিনগত ত্রুটি শনাক্ত করতে সাহায্য করেছে। ড. লিউ-এর গবেষণাগার, ড. মুসুনুরুর জিন সম্পাদনার গবেষণা এবং কেজের রোগ নিয়ে গভীর বোঝাপড়ার পেছনেও ছিল সরকারি সহায়তা।
ড. উরনভ বলেন, 'আমি বিশ্বাস করি না, এই ঘটনা যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া আর কোথাও ঘটতে পারত।' এতে অংশ নেওয়া সবাই ছিলেন গর্বিত। তিনি বলেন, 'আমরা সবাই একে অপরকে বলেছি—এটাই আমাদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ।'
অনুবাদ: নাফিসা ইসলাম মেঘা