ভ্যাটিকানে ট্রাম্পের সাথে আকাশ প্রতিরক্ষা, রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আলোচনা হয়: জেলেনস্কি

গত ২৬ এপ্রিল ভ্যাটিকানে পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার ফাঁকে বৈঠকে বসেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এই বৈঠককে দুর্দান্ত উল্লেখ করে জেলেনস্কি জানান, বৈঠকে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা ও ইউক্রেনের জন্য আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
জেলেনস্কির প্রেসিডেন্ট অফিস থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনায় দুই নেতা ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ অবসানে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতিকে 'প্রথম সঠিক পদক্ষেপ' হিসেবে মূল্যায়ন করেছেন।
তিনি জানান, রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি আলোচনায় উত্থাপন করলে ট্রাম্প 'খুব শক্ত প্রতিক্রিয়া' জানান, যদিও এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি জেলেনস্কি।
এছাড়া গত বুধবার ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে স্বাক্ষর হওয়া খনিজসম্পদ (ক্রিটিক্যাল মিনারেলস) বিষয়ক চুক্তিটিকে 'উভয়পক্ষের জন্য লাভজনক' বলে উল্লেখ করেন জেলেনস্কি। তিনি বলেন, এই চুক্তির মাধ্যমে ইউক্রেনে ভবিষ্যৎ মার্কিন বিনিয়োগ সুরক্ষিত হবে, পাশাপাশি ইউক্রেনের ভূখণ্ড ও জনগণের প্রতিরক্ষা জোরদার হবে।
এই চুক্তির ফলে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের খনিজসম্পদ চুক্তিতে অগ্রাধিকার পাবে এবং দেশটির পুনর্গঠনে মার্কিন বিনিয়োগের পথ খুলবে। ট্রাম্পও এই চুক্তিকে জোরালোভাবে সমর্থন করেছেন।
জেলেনস্কি বলেন, চুক্তির আওতায় গঠিত বিনিয়োগ তহবিল থেকে প্রাথমিকভাবে টাকা ইউক্রেনেই পুনঃবিনিয়োগ হবে এবং তা দেশ ছাড়বে না। ভবিষ্যতে, প্রায় ২০ বছর পর যদি উভয়পক্ষ সন্তুষ্ট থাকে, তাহলে মুনাফা উত্তোলনের বিষয়টি বিবেচনা করা হতে পারে।
এছাড়া, তহবিল ব্যবস্থাপনার জন্য একটি বোর্ড গঠিত হবে, যেখানে ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের সমান সংখ্যক (৩ জন করে) প্রতিনিধি থাকবেন। এই বোর্ড একজন পরিচালক নিয়োগ করবেন।
আকাশ প্রতিরক্ষা চেয়েছে ইউক্রেন
জেলেনস্কি জানান, নিরাপত্তা সহযোগিতার অংশ হিসেবে ইউক্রেনের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তার কথা ট্রাম্পকে জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, 'আমি তাকে বলেছি, আমাদের কী পরিমাণ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দরকার। তিনি বলেছেন, তারা বিষয়টি নিয়ে কাজ করবেন। তবে এসব ব্যবস্থা বিনামূল্যে পাওয়া যাবে না।'
জেলেনস্কির ভাষ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে মার্কিন কংগ্রেস যেসব সামরিক সহায়তা অনুমোদন করেছে, তা ২০২৫ ও ২০২৬ সালে সরবরাহ করা হবে—প্রতি বছর ১৫ বিলিয়ন ডলার করে। তবে তিনি পরিষ্কার করে বলেননি যে, ২০২৫ সালের জন্য নির্ধারিত অনুদানের কোনো অংশ ইতোমধ্যে সরবরাহ করা হয়েছে কি না।
তবে খনিজসম্পদ চুক্তির আলোকে এই তহবিলের ২০২৬ সালের অংশ আগেভাগেই—২০২৫ সালেই—সরবরাহ করা হতে পারে কি না, সেই প্রশ্নও উঠে এসেছে জেলেনস্কির বক্তব্যে। এ ধরনের অগ্রিম বরাদ্দ চুক্তির তহবিলে যুক্তরাষ্ট্রের অবদানের অংশ হিসেবেও গণ্য হতে পারে।