কৃষ্ণসাগরে হামলা বন্ধে সমঝোতা ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বিরোধিতা রাশিয়ার

ওয়াশিংটনের মধ্যস্ততায় কৃষ্ণসাগরে দুই দেশের নৌযানে হামলা বন্ধে এবং একে-অপরের জ্বালানি অবকাঠামোয় হামলা না চালানোর বিষয়ে রাশিয়া ও ইউক্রেন রাজি হয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা দিলেও— যুদ্ধরত দেশদুটি ভিন্ন সুরে কথা বলছে । ফলে কৃষ্ণসাগরে যুদ্ধবিরতির পরিকল্পনা ঘিরে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্র জানায়, মঙ্গলবার ওয়াশিংটনের মধ্যস্থতায় এ দুই বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছায় মস্কো ও কিয়েভ। এই সমঝোতা শেষ পর্যন্ত কার্যকর হলে তা তিন বছরের বেশি সময় ধরে চলা রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের প্রচেষ্টায় বড় অগ্রগতি হবে।
যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়া ও ইউক্রেনের সঙ্গে পৃথক সমঝোতার মাধ্যমে এবিষয়ে তাঁদের রাজি করায় বলে জানানো হয়।
কিন্তু, বুধবার (২৬ মার্চ) মস্কো ও কিয়েভ থাকা আসা বক্তব্য ইঙ্গিত দিচ্ছে, এবিষয়ে তাঁদের মধ্যে কোনো ঐকমত্য হয়নি।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদমির জেলেনস্কি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তাঁদের জানাও হয়েছিল– এই চুক্তি ঘোষণার সঙ্গেসঙ্গেই তা কার্যকর হবে। কিন্তু, রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিন জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক লেনদেন ব্যবস্থা- সুইফটে রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে পুনরায় অন্তর্ভুক্ত করার আগপর্যন্ত কৃষসাগর চুক্তিটি কার্যকর হবে না। কিন্তু, মস্কোর এই দাবির বিরুদ্ধে রয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ব্রাসেলসের বক্তব্য, ইউক্রেন থেকে রাশিয়ার সেনা প্রত্যাহারের আগপর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা যাবে না।
তবে ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত ১৮ মার্চ থেকেই ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোকে নিশানা না করার শর্ত মানছে রাশিয়া। যদিও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ওই তারিখের পরেও অন্তত ৮ বার জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা করা হয়েছে।
এই বাস্তবতায়, কৃষ্ণসাগর চুক্তি নিয়েও এখন ধোঁয়াশা তৈরি হচ্ছে। ফলে ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানের দিকে এগোনোর বা শান্তিপ্রচেষ্টা নিয়েও সন্দেহ তৈরি হয়েছে, যার পুরোধা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির শেষদিকে ইউক্রেনে আগ্রাসন চালায় রাশিয়া। এরফলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ইউরোপের মাটিতে সর্ববৃহৎ যুদ্ধের সূচনা হয়।
ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পরে দ্রুতই ইউক্রেনে যুদ্ধাবসানের জন্য কূটনৈতিক উদ্যোগ নেন। সে প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেই মঙ্গলবার পৃথক দুটি বিবৃতি দিয়ে জ্বালানি অবকাঠামো ও কৃষ্ণসাগরে হামলা বন্ধে দুই চুক্তির রূপরেখা প্রকাশ করে তাঁর প্রশাসন। কিন্তু, কোনোটিতেই এগুলো কার্যকর হওয়ার সময় উল্লেখ করা ছিল না। যার ফলে আরও অস্পষ্টতা তৈরি হয়েছে।