Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

মোহাম্মদ আলী বনাম জর্জ ফোরম্যান: ৫০ বছর পরও কেন ‘রাম্বল ইন দ্য জঙ্গল’ সেরা!

ঠিক অষ্টম রাউন্ডে, আলী বুঝতে পারলেন, সময় এসেছে শেষ আঘাত হানার। তিনি বিদ্যুতের মতো গতি নিয়ে সামনে এগিয়ে এলেন, এক ভয়ঙ্কর বাঁ-ডান কম্বিনেশন ঘুষি মারলেন, এবং ফোরম্যান ছিটকে পড়লেন রিংয়ে। কিনশাসার স্টেডিয়াম যেন উন্মাদনায় ফেটে পড়ল। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই রিংয়ে ঢুকে পড়লেন কোচ, কর্মকর্তা, ভক্তরা—তারপর যোগ দিলেন জায়ারের পুলিশ ও প্যারাট্রুপাররা।
মোহাম্মদ আলী বনাম জর্জ ফোরম্যান: ৫০ বছর পরও কেন ‘রাম্বল ইন দ্য জঙ্গল’ সেরা!

আন্তর্জাতিক

সিএনএন
22 March, 2025, 04:00 pm
Last modified: 22 March, 2025, 04:17 pm

Related News

  • চেসবক্সিং: যে খেলায় শুধু বক্সিং নয়, দাবাতেও হতে হবে তুখোড়
  • বক্সিং চ্যাম্পিয়ন ও উদ্যোক্তা জর্জ ফোরম্যান মারা গেছেন
  • মাইক টাইসন বনাম জ্যাক পল: ম্যাচ শেষে দুই বক্সার কত টাকা পেলেন
  • স্নায়বিক ঝুঁকির শঙ্কা নিয়ে ১৯ বছর পর বক্সিংয়ে ৫৮ বছর বয়সী মাইক টাইসন
  • আন্তর্জাতিক বক্সিং প্রতিযোগিতায় প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে জিন্নাতের ব্রোঞ্জ জয়

মোহাম্মদ আলী বনাম জর্জ ফোরম্যান: ৫০ বছর পরও কেন ‘রাম্বল ইন দ্য জঙ্গল’ সেরা!

ঠিক অষ্টম রাউন্ডে, আলী বুঝতে পারলেন, সময় এসেছে শেষ আঘাত হানার। তিনি বিদ্যুতের মতো গতি নিয়ে সামনে এগিয়ে এলেন, এক ভয়ঙ্কর বাঁ-ডান কম্বিনেশন ঘুষি মারলেন, এবং ফোরম্যান ছিটকে পড়লেন রিংয়ে। কিনশাসার স্টেডিয়াম যেন উন্মাদনায় ফেটে পড়ল। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই রিংয়ে ঢুকে পড়লেন কোচ, কর্মকর্তা, ভক্তরা—তারপর যোগ দিলেন জায়ারের পুলিশ ও প্যারাট্রুপাররা।
সিএনএন
22 March, 2025, 04:00 pm
Last modified: 22 March, 2025, 04:17 pm

৩০ অক্টোবর, ১৯৭৪। ভোর সাড়ে ৪টায় শুরু হলো মোহাম্মদ আলী ও জর্জ ফোরম্যানের মধ্যে বক্সিং ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় লড়াই—'রাম্বল ইন দ্য জঙ্গল'। কিন্তু এই লড়াইয়ের আসল শুরুটা হয়েছিল বহু বছর আগে, রিংয়ের বাইরে।

ম্যাচের সাত সপ্তাহ আগে, যখন এই দুই কিংবদন্তি জায়ারের (বর্তমানে কঙ্গো গণপ্রজাতন্ত্র) মাটিতে পা রাখেন, তখনও এই লড়াই শুরু হয়নি। এমনকি তখনও নয়, যখন কিংবদন্তি প্রোমোটার ডন কিং কয়েক মিলিয়ন ডলারের চুক্তিতে আফ্রিকার প্রথম হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়নশিপ লড়াইয়ের আয়োজন নিশ্চিত করেন। এ লড়াইয়ের মাহাত্ম্য উপলব্ধি করতে হলে আপনাকে ফিরে যেতে হবে এক দশক আগে। 

'রাম্বল ইন দ্য জঙ্গল'-কে শুধু একটি বক্সিং ম্যাচ হিসেবে দেখা যাবে না,' বলেন আলীর জীবনী লেখা তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু থমাস হাউজার। '১৯৭৪ সালের জায়ারে এই লড়াই ছিল ১৯৬০-এর দশকের আদর্শের প্রতীকী স্বীকৃতি।'

১৯৬৪ সালে, এক বিস্ময়কর লড়াইয়ে সোনি লিস্টনকে পরাজিত করে হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন হন ক্যাসিয়াস ক্লে—যিনি পরবর্তীতে পরিচিত হন মোহাম্মদ আলী নামে। ওই সময়টি ছিল এক ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণ। মাত্র তিন মাস আগে জন এফ. কেনেডির হত্যাকাণ্ড ঘটে, এবং একই সময়ে দ্য বিটলস প্রথমবারের মতো আমেরিকার মাটিতে পা রাখে।

হাউজার বলেন, 'এই কয়েক মাসের ঘটনাগুলোই মূলত ৬০-এর দশকের রাজনৈতিক ও সামাজিক উত্থানের ভিত্তি স্থাপন করেছিল'।

লিস্টনকে হারানোর এক মাস পর, ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে ক্যাসিয়াস ক্লে তার নাম পরিবর্তন করে রাখেন মোহাম্মদ আলী। এর ঠিক তিন বছর পর, ১৯৬৭ সালে, আলী যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানান।

'কেন আমাকে ইউনিফর্ম পরে ১০ হাজার মাইল দূরে গিয়ে নিরীহ ভিয়েতনামীদের উপর বোমা ফেলতে বলা হবে, যখন আমার নিজের শহরের কৃষ্ণাঙ্গদের কুকুরের মতো ব্যবহার করা হয় এবং মৌলিক মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়?'—তখন বলেছিলেন আলী।

এরপরই গ্রেপ্তার হন তিনি, তার বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়নশিপের খেতাব কেড়ে নেওয়া হয়, পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করা হয় এবং তার পেশাদার বক্সিং ক্যারিয়ার স্থগিত করা হয়। তিন বছর পর আবার লড়াইয়ে ফেরার অনুমতি পেলেও, তার হারানো খেতাব পুনরুদ্ধারের সুযোগ আসে আরও সাত বছর পর, ১৯৭৪ সালে, জায়ারের মাটিতে।

১৯৭৪ সালে বিশ্বজুড়ে চলমান পরিবর্তন ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটও এই লড়াইকে বিশেষ মাত্রা দিয়েছিল।

'সেই সময়ের মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে দুটি বিশাল ঘটনা ঘটেছিল,' বলেন হাউজার। 'প্রথমত, ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারির কারণে প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন পদত্যাগ করেন। এরপর, মোহাম্মদ আলী জায়ারে ফিরে এসে তার হেভিওয়েট খেতাব পুনরুদ্ধার করেন।'

ভিয়েতনাম যুদ্ধের অবসানকালে যুদ্ধের অন্যতম প্রধান সমর্থক নিক্সনের পতন হয়, আর যুদ্ধে আপোষহীন সমালোচক আলী আবার বক্সিং রিংয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেন।

'এ দুটি ঘটনা যেন প্রমাণ করে, ১৯৬০-এর দশকের জন্য যে লড়াই করা হয়েছিল, তা ব্যর্থ হয়নি,' যোগ করেন হাউজার। 

লড়াইয়ের ভিন্ন রাজনৈতিক রূপ

তবে 'রাম্বল ইন দ্য জঙ্গল'-এর পেছনে আরেকটি রাজনৈতিক ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট কাজ করেছিল। জায়ারের স্বৈরশাসক মোবুতু সেসে সেকো, যিনি ১৯৬৫ সালে এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেন, এই ম্যাচকে তার শাসনের প্রচারণার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন।

আয়োজকরা এই লড়াইকে আফ্রিকান শিকড়ে ফিরে যাওয়ার প্রতীক হিসেবে প্রচার করতে চেয়েছিলেন। এমনকি প্রথমদিকে লড়াইয়ের নাম ঠিক করা হয়েছিল— 'ফ্রম দ্য স্লেভ শিপ টু দ্য চ্যাম্পিয়নশিপ!' (দাস জাহাজ থেকে চ্যাম্পিয়নশিপের মঞ্চে)। তবে হিস্টরি ডট কমের তথ্য অনুযায়ী, মোবুতু বিষয়টি বোধগম্য হতেই সব পোস্টার পুড়িয়ে ফেলার নির্দেশ দেন, কারণ তিনি চাইছিলেন আফ্রিকার শক্তি ও গৌরবের প্রতিচ্ছবি তুলে ধরতে।

মোহাম্মদ আলী যখন জায়ারে পা রাখলেন, তখনই বোঝা যাচ্ছিল যে, এই লড়াই শুধু বক্সিং রিংয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকছে না। জায়ারের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে এক স্থানীয় তাকে বিমানবন্দর থেকে অভ্যর্থনা জানিয়ে বের করে আনলেন, যেন এক নায়ককে স্বাগত জানানো হচ্ছে তার হারানো শিকড়ে। অন্যদিকে, জর্জ ফোরম্যানও পিছিয়ে ছিলেন না—তিনি পশ্চিম আফ্রিকার ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে, আফ্রিকার প্রতি তার সংযোগকে তুলে ধরতে চাইলেন।

তিন দিনব্যাপী এক বিশাল সঙ্গীত উৎসবেরও আয়োজন করা হয়, যেখানে জেমস ব্রাউন, বি বি কিং ও বিল উইদার্সের মতো শিল্পীরা পারফর্ম করেন।

মোহাম্মদ আলী ও জর্জ ফোরম্যানের এই মহারণকে মোবুতু শুধু ক্রীড়া আয়োজন হিসেবে দেখেননি; এটি ছিল তার ক্ষমতা প্রদর্শনের অন্যতম মাধ্যম।

'একটি লড়াই, যেখানে দুই কৃষ্ণাঙ্গ যোদ্ধা, এক কৃষ্ণাঙ্গ দেশে, কৃষ্ণাঙ্গদের আয়োজনে লড়ছে এবং তা বিশ্বজুড়ে সম্প্রচারিত হচ্ছে—এটাই মোবুতুর বিজয়,'—জায়ারের বিভিন্ন স্থানে এমন প্রচারণা চালানো হয়েছিল।

ম্যাচের রাতে স্টেডিয়ামে মোবুতুর বিশাল প্রতিকৃতি টাঙানো হয়, যেখানে আগে তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের বন্দি করে রাখা হতো।

আফ্রিকার হৃদয়ে আলী

আলী রাজনৈতিক কারণে মোবুতুর প্রতি অনুগত না হলেও, আফ্রিকায় লড়াই করার সুযোগ পেয়ে আনন্দিত ছিলেন।

থমাস হাউজার বলেছিলেন, 'এটি শুধু এক ম্যাচ ছিল না, বরং আলীর জন্য এটি ছিল তার পূর্বপুরুষদের ভূমিতে ফিরে আসার মুহূর্ত।'

আলী নিজেও পরে লিখেছিলেন, 'আমি চেয়েছিলাম আমেরিকার কৃষ্ণাঙ্গদের সঙ্গে আফ্রিকার মানুষের একটি সংযোগ গড়ে তুলতে। এই লড়াই ছিল শুধু বক্সিংয়ের নয়, বরং বর্ণবাদ, ভিয়েতনাম যুদ্ধ—সবকিছুর প্রতিচ্ছবি।'

ছবি: কেন রেগান/ডিজনি জেনারেল এন্টারটেইনমেন্ট কনটেন্ট, গেটি ইমেজেস

যদিও ব্যক্তিগতভাবে আলী পরে স্বীকার করেছিলেন যে, তিনি আফ্রিকার প্রতি কিছুটা ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন, তবে জায়ারের মানুষ তাকে নিজেদের নায়ক হিসেবে গ্রহণ করেছিল।

লড়াই যত এগিয়ে আসছিল, ততই রাস্তায় রাস্তায় ধ্বনিত হচ্ছিল এক স্লোগান— 'আলী, বোমায়ে!' (আলী, ওকে মেরে ফেলো!)।

কিনশাসার জনগণ তাদের হৃদয় দিয়ে আলীকে আপন করে নিয়েছিল। তাদের কাছে এটি ছিল শুধু একটি বক্সিং ম্যাচ নয়, এটি ছিল এক প্রতিরোধ, এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত।

বিশ্বব্যাপী প্রায় এক বিলিয়ন মানুষ সরাসরি দেখেছিল এই লড়াই। আর যখন আলী তার ঐতিহাসিক বিজয় ছিনিয়ে আনলেন, তখন সেটি শুধু তার ব্যক্তিগত জয় ছিল না—এটি ছিল পুরো আফ্রিকার জন্য এক সম্মান, এক গৌরবগাঁথা।

'রোপ-এ-ডোপ'—যে কৌশলে বদলে গেল লড়াইয়ের ইতিহাস

এই লড়াই শুধু একটি চ্যাম্পিয়নশিপ বাউট ছিল না, এটি ছিল বক্সিংয়ের ইতিহাসের অন্যতম মহাকাব্যিক অধ্যায়। এ লড়াই ছিল দুই কিংবদন্তির মধ্যে— ফাইট রিং-এর একদিকে ছিলেন দুর্দান্ত ফর্মে থাকা একজন অপ্রতিরোধ্য চ্যাম্পিয়ন, অন্যজন প্রত্যাবর্তনের লড়াইয়ে থাকা এক প্রতীকী যোদ্ধা।

২৫ বছর বয়সী জর্জ ফোরম্যান তখন ছিলেন তার ক্যারিয়ারের সেরা ফর্মে। ৪০টি লড়াইয়ের প্রতিটিতে জয়ী হয়েছেন, যার মধ্যে ৩৭টিই ছিল নকআউট। বলা হতো, হেভিওয়েট বিভাগের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ঘুষির জোর ছিল তার হাতে। 

তার আত্মবিশ্বাস ছিল আকাশছোঁয়া। পরে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, 'আমি ভেবেছিলাম, এটা একরকম দাতব্য লড়াই। শুনেছিলাম, আলী অর্থকষ্টে ভুগছেন, তাই ভেবেছিলাম, ওকে একটা সুযোগ দেই। আমি ৫ মিলিয়ন ডলার পেয়েছি, আর ওকেও সেটাই দিতে রাজি ছিলাম।'

কিনশাসায় স্থানীয়দের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানাচ্ছেন মোহাম্মদ আলীকে, ১৭ সেপ্টেম্বর ১৯৭৪। ছবি: এপি

অন্যদিকে, আলীকে অনেকেই তখন 'শেষ হয়ে যাওয়া' বক্সার ভাবছিলেন। ৩২ বছর বয়সে এসে নিষেধাজ্ঞার কারণে তার ক্যারিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ সময় হারিয়েছেন, ফিরে আসার পর জো ফ্রেজিয়ার ও কেন নর্টনের কাছে হেরেছেন—যাদের ফোরম্যান অনায়াসেই নকআউট করেছিলেন। ফলে বাজির হিসাবেও ফোরম্যান ছিলেন পরিষ্কার ফেভারিট—তিন-এক ব্যবধানে এগিয়ে।

এমনকি আলীর ম্যানেজার জিন কিলরয় পর্যন্ত ভয় পাচ্ছিলেন, আলী হয়তো মারাত্মক আহত হবেন, এমনকি তার জীবনও ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে।

লড়াইয়ের শুরুতেই ফোরম্যান ঝাঁপিয়ে পড়লেন তার দানবীয় ঘুষি নিয়ে, কিন্তু প্রথম রাউন্ড কোনোভাবে টিকিয়ে রাখলেন আলী। এরপর দ্বিতীয় রাউন্ডের ৩০ সেকেন্ডের মাথায়, আলী চমকে দিলেন সবাইকে—তিনি যেন নিজের চিরচেনা 'আলী শাফেল' ভুলে গিয়ে এক নতুন কৌশল নিলেন।

ফোরম্যানের প্রবল আক্রমণের মুখে আলী পিছু হটলেন, গিয়ে দাঁড়ালেন রিংয়ের দড়ির কাছে। শরীর হেলিয়ে রশির ওপর ভর দিয়ে কিছু ঘুষি প্রতিহত করলেন, কিছু সরাসরি নিলেন, আবার সুযোগ পেলেই পাল্টা আঘাত করলেন। এটি ছিল এক অভিনব কৌশল, যা পরে 'রোপ-এ-ডোপ' নামে পরিচিতি পায়।

এভাবে রাউন্ডের পর রাউন্ড গড়িয়ে যেতে থাকল। ফোরম্যান ক্রমশ ক্লান্ত হচ্ছিলেন—তার প্রচণ্ড শক্তিশালী ঘুষিগুলো আলীর ওপর তেমন কোনো প্রভাব ফেলছিল না, বরং ধীরে ধীরে নিজেকেই নিঃশেষ করে দিচ্ছিলেন তিনি।

আর ঠিক অষ্টম রাউন্ডে, আলী বুঝতে পারলেন, সময় এসেছে শেষ আঘাত হানার। তিনি বিদ্যুতের মতো গতি নিয়ে সামনে এগিয়ে এলেন, এক ভয়ঙ্কর বাঁ-ডান কম্বিনেশন ঘুষি মারলেন, এবং ফোরম্যান ছিটকে পড়লেন রিংয়ে।

কিনশাসার স্টেডিয়াম যেন উন্মাদনায় ফেটে পড়ল। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই রিংয়ে ঢুকে পড়লেন কোচ, কর্মকর্তা, ভক্তরা—তারপর যোগ দিলেন জায়ারের পুলিশ ও প্যারাট্রুপাররা।

'যেন জীবন্ত আগুন'

বক্সিং এখনো বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়, কিন্তু মোহাম্মদ আলী ও জর্জ ফোরম্যানের কিংবদন্তি লড়াই 'রাম্বল ইন দ্য জাঙ্গল'-এর মতো আর কোনো লড়াই কি সত্যিই ঘটেছে?

২০১৫ সালে ফ্লয়েড মেওয়েদার ও ম্যানি প্যাকিয়াওয়ের বক্সিং লড়াই রেকর্ড গড়েছিল—৪৪ লাখ পে-পার-ভিউ (পিপিভি) বিক্রি হয়েছিল, আর আয় হয়েছিল ৪২৫ মিলিয়ন ডলার। তবে বিশ্লেষক থমাস হাউজারের মতে, এমনকি সেটিও ১৯৭৪ সালের ওই রাতের তুলনায় কিছুই নয়।

হাউজার বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে তুলনা করতে গিয়ে বলেন, 'সম্প্রতি টাইসন ফিউরি ও অলেকসান্দার উসিক সৌদি আরবে হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য লড়লেন, যা এক অর্থে "এক্সোটিক" আয়োজন। কেউ কেউ হয়তো জায়েরের প্রেসিডেন্ট মোবুটুর শাসনের সঙ্গে সৌদি পরিস্থিতির মিল খুঁজে পেতে পারেন।'

এরপর তিনি যোগ করেন, 'আপনি যদি এখন বাইরে গিয়ে ২০ জনকে জিজ্ঞেস করেন— "কে বর্তমান হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন?" কয়জন উসিকের নাম বলবে? সম্ভবত খুব কম।'

'কিন্তু যদি ১৯৭৪ সালে আলী ফোরম্যানকে হারানোর পর রাস্তায় বেরিয়ে একই প্রশ্ন করতেন? ২০ জনের মধ্যে অন্তত ১৯ জন নির্দ্বিধায় বলত— "মোহাম্মদ আলী।"'

এ কারণেই, পাঁচ দশক পরও 'রাম্বল ইন দ্য জাঙ্গল' নিয়ে আলোচনা হয়। কারণ এটি কেবল একটি খেলার মুহূর্ত ছিল না, বরং ইতিহাসের অংশ হয়ে গেছে।

হাউজারের ভাষায়, '৬০ ও ৭০-এর দশকে আলী ছিলেন যেন জীবন্ত আগুন। আপনি যদি জিজ্ঞেস করেন— "এই লড়াই কি আজ সম্ভব?" আমার উত্তর হবে, না। কারণ মোহাম্মদ আলী-ই সম্ভব নন।'


অনুবাদ: সাকাব নাহিয়ান শ্রাবন

Related Topics

টপ নিউজ

মোহাম্মদ আলী / বক্সিং / জর্জ ফোরম্যান / রাম্বল ইন দ্য জঙ্গল

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • উগান্ডায় বিলাসবহুল বাড়িতে তিন দিনব্যাপী বিবাহ উৎসবের আয়োজন মামদানির
  • ২০২৫ সালে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিরা যে দেশে বাস করছেন
  • ছাত্রলীগ কর্মী থেকে ‘সমন্বয়ক’, রিয়াদের বাড়িতে পাকা ভবন দেখে বিস্মিত এলাকাবাসী
  • বিনিয়োগ ও ভোগব্যয় কমায় জুনে এলসি খোলার পরিমাণ ৫ বছরে সর্বনিম্ন
  • ভোটের সময় মাঠে থাকবে ৬০ হাজার সেনা; দেড় লাখ পুলিশকে দেওয়া হবে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক সংকট নিরসনে ২,৮৪০ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন; হবে ৩১টি ভবন

Related News

  • চেসবক্সিং: যে খেলায় শুধু বক্সিং নয়, দাবাতেও হতে হবে তুখোড়
  • বক্সিং চ্যাম্পিয়ন ও উদ্যোক্তা জর্জ ফোরম্যান মারা গেছেন
  • মাইক টাইসন বনাম জ্যাক পল: ম্যাচ শেষে দুই বক্সার কত টাকা পেলেন
  • স্নায়বিক ঝুঁকির শঙ্কা নিয়ে ১৯ বছর পর বক্সিংয়ে ৫৮ বছর বয়সী মাইক টাইসন
  • আন্তর্জাতিক বক্সিং প্রতিযোগিতায় প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে জিন্নাতের ব্রোঞ্জ জয়

Most Read

1
আন্তর্জাতিক

উগান্ডায় বিলাসবহুল বাড়িতে তিন দিনব্যাপী বিবাহ উৎসবের আয়োজন মামদানির

2
আন্তর্জাতিক

২০২৫ সালে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিরা যে দেশে বাস করছেন

3
বাংলাদেশ

ছাত্রলীগ কর্মী থেকে ‘সমন্বয়ক’, রিয়াদের বাড়িতে পাকা ভবন দেখে বিস্মিত এলাকাবাসী

4
অর্থনীতি

বিনিয়োগ ও ভোগব্যয় কমায় জুনে এলসি খোলার পরিমাণ ৫ বছরে সর্বনিম্ন

5
বাংলাদেশ

ভোটের সময় মাঠে থাকবে ৬০ হাজার সেনা; দেড় লাখ পুলিশকে দেওয়া হবে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ

6
বাংলাদেশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক সংকট নিরসনে ২,৮৪০ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন; হবে ৩১টি ভবন

The Business Standard
Top

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net

Copyright © 2022 THE BUSINESS STANDARD All rights reserved. Technical Partner: RSI Lab