একদিন বন্ধ থাকার পর হিথ্রো বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু

যুক্তরাজ্যের হিথ্রো বিমানবন্দরে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে এক দিনের অচলাবস্থার পর ফের ফ্লাইট চালু হয়েছে। তবে ইউরোপের ব্যস্ততম এই বিমানবন্দর শুক্রবার দিনভর বন্ধ থাকায় লক্ষাধিক যাত্রীর যাত্রা পরিকল্পনায় ব্যাঘাত ঘটেছে, এবং এখনও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে অনেককে ।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে একটি বৈদ্যুতিক সাবস্টেশনে অগ্নিকাণ্ডের ফলে হিথ্রোর বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এরপর দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চালানো হয় এবং শুক্রবার রাতে সীমিত পরিসরে ফ্লাইট চলাচল শুরু হয়।
ফ্লাইট ট্র্যাকিং সংস্থা ফ্লাইটরাডার২৪-এর তথ্য অনুযায়ী, এই বিপর্যয়ের ফলে অন্তত ১ হাজার ৩৫১টি ফ্লাইট বাতিল বা বিলম্বিত হয়েছে, যা লক্ষাধিক যাত্রীর যাত্রা পরিকল্পনায় বিশৃঙ্খলা তৈরি করেছে।
হিথ্রো বিমানবন্দরের প্রধান নির্বাহী থমাস ওল্ডবাই বলেন, 'শনিবার সকাল থেকে স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হবে বলে আশা করছি। যাত্রীদের এই দুর্ভোগের জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত।'
এদিকে, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপজুড়ে ফ্লাইট বিভ্রাটের কারণে বহু যাত্রীকে অন্য বিমানবন্দরে যাত্রা করতে হয়েছে বা তাদের পরিকল্পনা বাতিল করতে হয়েছে।
ভুক্তভোগীদের মধ্যে রয়েছেন সারেতে বসবাসকারী এলেন, যিনি শুক্রবার ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের ফ্লাইটে ভেনিস যাওয়ার কথা ছিল। তিনি বলেন, 'আমার ৩০তম জন্মদিন উপলক্ষে কাজিন আমাকে চমক দিতে এই ভ্রমণের আয়োজন করেছিল। কিন্তু ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় আমাদের যেতে হলো না। তবে আমরা পরবর্তী সময়ের জন্য পরিকল্পনা করছি।'
লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টারটেররিজম (সন্ত্রাসবিরোধী) ইউনিট এই অগ্নিকাণ্ডের তদন্ত শুরু করেছে। যদিও কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত কোনো ষড়যন্ত্র বা নাশকতার প্রমাণ মেলেনি। লন্ডন ফায়ার ব্রিগেডও একে সন্দেহজনক মনে করছে না।
বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ততম বিমানবন্দর হিসেবে পরিচিত হিথ্রো প্রতিবছর প্রায় ৮৪ মিলিয়ন যাত্রী পরিবহন করে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বিভ্রাটের প্রভাব কয়েক দিন পর্যন্ত থাকতে পারে, কারণ অনেক ফ্লাইট এখনও নির্ধারিত সময়ের বাইরে রয়েছে এবং ক্রু মেম্বারদের অবস্থানও অস্থির হয়ে পড়েছে।
অ্যাভিয়েশন বিশ্লেষক জিওফ্রে থমাস বলেন, 'এটি শুধুমাত্র একদিনের সমস্যা নয়, বরং আগামী ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত বিশৃঙ্খলা বজায় থাকতে পারে। ইউরোপের বিভিন্ন বিমানবন্দরে ফ্লাইট ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে, যা আরও জটিলতা তৈরি করছে।'
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ও এয়ারলাইনগুলো যাত্রীদের স্বাভাবিক সেবা ফেরাতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত যাত্রীদের অনেকে এখনও অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন।