হিথ্রো বিমানবন্দরে বিদ্যুৎ বিপর্যয়: মাঝপথ থেকে ঢাকায় ফিরল বিমানের ফ্লাইট

বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণে লন্ডনের হিথ্রো এয়ারপোর্ট বন্ধ থাকায় শুক্রবার বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট বিজি-২০১ শুক্রবার মাঝপথে ঢাকায় ফিরে এসেছে।
বিমানের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক জানান, বিমানটি ঢাকা থেকে জুরিখ হয়ে হিথ্রো বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা দেয়। স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৪২ মিনিটে এই ফ্লাইটটি ঢাকা থেকে উড্ডয়ন করে এবং স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৬ মিনিটে জুরিখে সংক্ষিপ্ত যাত্রাবিরতি করে। স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে ফের ঢাকা ফিরে আসে।
তিনি বলেন, বোয়িং ৭৮৭-৯ (বি৭৮৯) নামের বিমানটি স্থানীয় সময় ১০টা ৪৬ মিনিটে জুরিখ থেকে যাত্রা শুরু করে। কিন্তু হিথ্রো এয়ারপোর্টে অপ্রত্যাশিত বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণে লন্ডন পৌঁছানোর আগেই ফিরে আসতে বাধ্য হয়।
ফ্লাইটটিতে পাইলট এবং ক্রুসহ ২৬৭ জন যাত্রী ছিলেন।
বিমান বাংলাদেশ প্রতি সপ্তাহে ঢাকা-হিথ্রো-ঢাকা রুটে চারটি ফ্লাইট পরিচালনা করে।
প্রসঙ্গত, বিমানবন্দরের কাছের একটি বৈদ্যুতিক সাবস্টেশনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের কারণে শুক্রবার (২১ মার্চ) যুক্তরাজ্যের হিথ্রো বিমানবন্দর পুরোপুরি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। এর ফলে বিশ্বজুড়ে ফ্লাইটের সময়সূচি বিঘ্নিত হয়েছে।
লন্ডন ফায়ার ব্রিগেড জানিয়েছে, আগুন নেভাতে প্রায় ৭০ জন দমকলকর্মী কাজ করছেন। এতে ইউরোপের সবচেয়ে ব্যস্ত এবং বিশ্বের পঞ্চম ব্যস্ত বিমানবন্দর হিথ্রো বিমানবন্দরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
ফায়ার ব্রিগেড জানিয়েছে, আগুনের কারণ এখনও জানা যায়নি।
হিথ্রো বিমানবন্দর তাদের এক পোস্টে জানিয়েছে, 'আমাদের যাত্রী ও সহকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য হিথ্রো ২১ মার্চ রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত বন্ধ থাকবে' এবং যাত্রীদের বিমানবন্দরে আসতে নিষেধ করা হয়েছে।
ফ্লাইট ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ফ্লাইটরাডার২৪-এর তথ্য অনুযায়ী, হিথ্রোতে আসা অন্তত ১২০টি ফ্লাইট অন্য বিমানবন্দরে ফেরত পাঠানো হয়েছে। আর ১ হাজার ৩৫১টি ফ্লাইট শুক্রবার হিথ্রো থেকে ওঠা এবং নামার কথা ছিল।
ফ্লাইটরাডার২৪-এর মুখপাত্র ইয়ন পেটচেনিক বলেছেন, "হিথ্রো বিশ্বের একটি প্রধান কেন্দ্রবিন্দু। এটি বিশ্বজুড়ে এয়ারলাইনসগুলোর কার্যক্রম বিঘ্নিত করবে।"
ভ্রমণ বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এই অগ্নিকাণ্ডের কারণে হিথ্রোর বাইরেও সংকট দেখে দিবে।
হিথ্রো এবং লন্ডনের অন্যান্য প্রধান বিমানবন্দরগুলো গত কয়েক বছরে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের শিকার হয়েছে। সর্বশেষ ২০২৩ সালে একটি স্বয়ংক্রিয় গেট ব্যর্থতা এবং একটি এয়ার ট্র্যাফিক সিস্টেম বিপর্যয়ের কারণে এমন বিপর্যয় ঘটেছিল।
এদিকে, লন্ডনের কিছু বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছিল।
ফায়ার ব্রিগেড জানিয়েছে, দমকলকর্মীরা ২৯ জনকে আশেপাশের ভবন থেকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়েছেন এবং সতর্কতার জন্য ২০০ মিটার দূরত্বে একটি কর্ডন তৈরি করা হয়েছে। সেখানে প্রায় ১৫০ জনকে নিরাপদ স্থানে সড়িয়ে নেওয়া হয়েছে।