ফোনে ট্রাম্পের সমালোচনা করে বার্তা পাওয়ায় ফরাসি গবেষককে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে বাধা

সম্প্রতি একজন ফরাসি মহাকাশ গবেষককে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে বাধা দেওয়ার ঘটনায় পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিয়েছে ওয়াশিংটন এবং প্যারিস। ফোনে ট্রাম্প প্রশাসন নিয়ে সমালোচনামূলক বার্তা পাওয়া যাওয়ায় ওই গবেষককে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
ফ্রান্স বৃহস্পতিবার বলেছে, অজ্ঞাতনামা ওই গবেষককে এই মাসের প্রথম দিকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়েছিল, কারণ কর্তৃপক্ষ তার ফোনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্পর্কে কিছু সমালোচনামূলক বার্তা পেয়েছিল। এর পর যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা সেই দাবি অস্বীকার করে বলেন, গবেষক একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইসে 'গোপন তথ্য' ধারণ করছিলেন।
ফ্রান্সের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা মন্ত্রী ফিলিপে ব্যাপটিস্ট বলেছেন, ওই গবেষক ৯ মার্চ হিউস্টনের কাছে একটি সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য যাচ্ছিলেন। তখন যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষ তার ফোনে 'সহকর্মী ও বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনা' খুঁজে পান। সেখানে তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের গবেষণা নীতিমালা সম্পর্কে তার ব্যক্তিগত মতামত প্রকাশ করেছিলেন।
ব্যাপটিস্ট উল্লেখ করেছেন, 'মতামতের স্বাধীনতা, স্বাধীন গবেষণা এবং অ্যাকাডেমিক স্বাধীনতা' মৌলিক মূল্যবোধ এবং সেগুলো রক্ষা করা হবে। তিনি আরও বলেন, 'যে দেশেই হোক না কেন, আমি সব ফরাসি গবেষকদের অধিকার রক্ষা করব যাতে তারা এই মূল্যবোধগুলোর প্রতি আনুগত্য জানাতে পারে, তবে আইন মেনে।'
তবে, যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের মুখপাত্র ট্রিসিয়া ম্যাকলাফলিন এর মতো কর্মকর্তারা ওই ফরাসি গবেষকের অভিবাসন নাকচ করার পেছনে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
ম্যাকলাফলিন বলেন, গবেষক 'লস আলামোস ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির গোপনীয় তথ্য হাতে পেয়েছিলেন, যা একটি গোপনীয়তা চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। তিনি স্বীকার করেছেন যে অনুমতি ছাড়া তা নিয়েছিলেন এবং তা গোপন করার চেষ্টা করেছিলেন।'
যুক্তরাষ্ট্রের কাস্টমস এবং বর্ডার প্রোটেকশন (সিবিপি) সিএনএনকে জানিয়েছে, তারা নির্দিষ্ট কোন বিষয়ে কথা বলতে পারে না, তবে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা প্রতিটি মানুষকে 'প্রতিটি মানুষকে আলাদা আলাদা ভিত্তিতে তদারকি করা হয়।'
সিবিপি-এর সহকারী কমিশনার হিলটন বেকহ্যাম বলেছেন, 'যদি কারো ইলেকট্রনিক ডিভাইসে এমন কিছু পাওয়া যায় যা তদারকির সময় সন্দেহের জন্ম দেয়, তবে তা আরও বিশ্লেষণ করা হতে পারে। এমন সিদ্ধান্তের পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকার দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।'
ট্রাম্প অভিবাসন নিয়ে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করছেন। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার ও বহিষ্কারের প্রক্রিয়া অন্তর্ভুক্ত। এটি অ্যাকাডেমিক সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে এবং স্বাধীন মত প্রকাশের সুরক্ষাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।