হামাস ৬ বন্দি মুক্তি দিলেও ৬২০ ফিলিস্তিনির মুক্তি আটকে দিল ইসরায়েল

ছয় জিম্মির বিনিময়ে ইসরায়েলি কারাগারগুলোতে থাকা যে ৬২০ ফিলিস্তিনি বন্দির ছাড়া পাওয়ার কথা ছিল তাদের মুক্তি দিতে দেরি হবে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল। খবর বিবিসির।
শনিবার হামাস ছয়জন ইসরায়েলি বন্দিকে ছেড়ে দেওয়ার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে চারজন ছিলেন ৭ অক্টোবরের হামলার সময় অপহৃত।
ইসরায়েল জানিয়েছে, ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাস তাদের শর্ত পূরণ না করা পর্যন্ত ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তির পরিকল্পনা স্থগিত থাকবে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি কেবল তখনই দেওয়া হবে, যখন হামাস নতুন করে বন্দি হস্তান্তরের নিশ্চয়তা দেবে এবং মুক্তির সময় প্রচারমূলক আয়োজন বন্ধ করবে।
প্রথম ধাপে আর মাত্র চারজন মৃত বন্দির লাশ ফেরত দেওয়ার কথা রয়েছে। তবে দ্বিতীয় ধাপে জীবিত বন্দিদের মুক্তির বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত পরিকল্পনা হয়নি।
যুদ্ধবিরতি রক্ষা করতে মধ্যস্থতাকারীরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, তবে পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠেছে। নেতানিয়াহু হামাসকে 'চুক্তিভঙ্গের' অভিযোগ এনে বলেছেন, তারা বন্দিদের 'প্রচারমূলক কাজে' ব্যবহার করছে।
শনিবার মুক্তিপ্রাপ্ত ছয়জনের মধ্যে তাল শোহাম, ওমর শেম তভ, এলিয়া কোহেন ও ওমর ওয়েঙ্কার্টকে ৭ অক্টোবর নোভা সংগীত উৎসব থেকে অপহরণ করা হয়। অন্য দুজন, আভেরা মেনগিস্তু ও হিশাম আল-সাইয়েদ, দীর্ঘদিন ধরে গাজায় বন্দি ছিলেন—মেনগিস্তু ২০১৪ সাল থেকে এবং আল-সাইয়েদ ২০১৫ সাল থেকে।
এদিকে ফিলিস্তিনের বন্দিদের স্বজনরা পশ্চিম তীরের ওফের কারাগারের সামনে তাদের মুক্তির অপেক্ষায় ছিলেন। গাজার খান ইউনিসে এক ৮০ বছর বয়সী নারী বলেন, '৩৩ বছর পর ছেলেকে মুক্ত দেখতে পারব, এটা এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না।'
শনিবার সন্ধ্যায় হামাস ইসরায়েলের সিদ্ধান্তকে 'চুক্তি লঙ্ঘন' বলে অভিযোগ করে। তবে নেতানিয়াহুর বিবৃতির পর হামাস আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মুক্তির অপেক্ষায় থাকা বন্দিদের মধ্যে ৫০ জন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত, ৬০ জন দীর্ঘ মেয়াদে বন্দি এবং ৭ অক্টোবরের পর আটক হওয়া ৪৪৫ জন রয়েছেন।
যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের শেষ পর্যায়ে আরও কিছু বন্দি মুক্তির সম্ভাবনা থাকলেও ইসরায়েলের সিদ্ধান্তের কারণে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। হামাস ৭ অক্টোবরের হামলায় ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যার পর ২৫১ জনকে গাজায় বন্দি করে নিয়ে যায়। এর জবাবে ইসরায়েল গাজায় ব্যাপক সামরিক হামলা চালায়, যেখানে অন্তত ৪৮ হাজার ৩১৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।