ট্রাম্প চান মিশর ও জর্ডান গাজার ফিলিস্তিনিদের আশ্রয় দিক

গাজাকে 'ধ্বংসযজ্ঞের স্থান' উল্লেখ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি চান মিশর ও জর্ডান যেন গাজার ফিলিস্তিনিদের আশ্রয় দেয়। খবর বিবিসির
বিষয়টি নিয়ে এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ট্রাম্প। তিনি জানান, ইতোমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে জর্ডানের বাদশাহ আব্দুল্লাহর সঙ্গে তার ফোনে কথা হয়েছে। তিনি জর্ডানের বাদশাহকে বলেছেন, 'আমি চাই আপনি আরও (ফিলিস্তিনিদের) নিন। কারণ পুরো গাজা উপত্যকার অবস্থাই শোচনীয়।'
আজ রোববার মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির সঙ্গেও এ নিয়ে আলাপের কথা রয়েছে ট্রাম্পের।
এ পদক্ষেপ সাময়িক নাকি দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে জানতে চাইলে ট্রাম্প বলেন, এটি 'সাময়িকও হতে পারে' কিংবা 'দীর্ঘমেয়াদেও হতে পারে'।
হামাস এ ধরনের যেকোনো পদক্ষেপ কখনোই মেনে নেবে না বলে জানিয়েছে। বরং ট্রাম্পের এ চিন্তা-ভাবনা ফিলিস্তিনিদের আরও ক্ষুব্ধ করে তুলতে পারে। কারণ এটি তাদের জন্মভূমি।
হামাসের পলিটিক্যাল ব্যুরোর সদস্য বাসেম নাঈম বিবিসিকে বলেন, 'গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনিরা ১৫ মাস ধরে মৃত্যু ও ধ্বংস সহ্য করেছে…কিন্তু তারা নিজেদের ভূমি ছেড়ে যায়নি। তারা এ ধরনের কোনো প্রস্তাব বা সমাধান কখনোই মেনে নেবে না। এমনকি যদি সেটির পেছনে পুনর্গঠনের মতো মহৎ উদ্দেশ্যও থাকে তবুও।
তিনি যোগ করেন, 'ফিলিস্তিনিরা ইতিপূর্বে যেভাবে তাদের বাস্তুচ্যুতি ও বিকল্প রাষ্ট্রের পরিকল্পনাগুলো ব্যর্থ করে দিয়েছে, একইভাবে এবারও এ ধরনের প্রস্তাব ব্যর্থ করে দেবে।
ইসরায়েলের সাথে ১৫ মাসের যুদ্ধে গাজার ২০ লাখ বাসিন্দার বেশিরভাগই বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। ইসরায়েলের নির্বিচার বোমা হামলায় তাদের ঘরবাড়িসহ বিভিন্ন অবকাঠামো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
জাতিসংঘ এর আগে অনুমান করেছিল যে গাজাজুড়ে ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে। এগুলো পুনর্গঠন করতেও কয়েক দশক সময় লাগতে পারে।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প আরও বলেন, 'আপনি সম্ভবত ১৫ লাখ মানুষের কথা বলছেন। তাদের সরিয়ে নিতে হবে আমাদের। এখানকার প্রায় সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেছে। মানুষ সেখানে মারা যাচ্ছে। তাই আমি কিছু আরব রাষ্ট্রের সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলে ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় ঘরবাড়ি তৈরি করে দিতে চাই, যেখানে তারা শান্তিতে বসবাস করতে পারবে।'
এ বিষয়ে ট্রাম্প বিস্তারিত আর কিছুই উল্লেখ করেননি।
ট্রাম্পের এ বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসের বাসিন্দা আবু ইয়াহিয়া রাশিদ বলেন, 'আমরা তারাই, যারা নিজেদের ভাগ্য ও ইচ্ছে নিজেরাই ঠিক করি। এই ভূমি আমাদের এবং আমাদের পূর্বপুরুষদের। কেবল মৃত্যু ছাড়া আমরা এটি ছেড়ে কোথাও যাবো না।'