লোহিত সাগরে মার্কিন নৌবাহিনীকে পরাজিত করার দাবি হুথিদের

লোহিত সাগরে মার্কিন নৌবাহিনীকে পরাজিত করার দাবি করছে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা। হুঁশিয়ারি দিয়ে হুথিরা জানিয়েছে, লোহিত সাগরের পর এখন ভূমধ্যসাগরেও ইসরায়েলগামী জাহাজের ওপর আক্রমণ চালাবে তারা।
হুথি নিয়ন্ত্রিত এসএবিএ নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, তারা ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে জাহাজগুলোকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করার পরিকল্পনা করছে। ইসরায়েলগামী যেকোনো জাহাজ যদি তাদের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের নাগালের মধ্যে থাকে তাহলে তারা সেখানে হামলা চালাবে। তাদের দাবি, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মতো পশ্চিমা নৌবাহিনীও তাদের থামাতে পারবে না।
এসএবিএ আরও বলেছে, 'চতুর্থ ধাপে এসে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী মার্কিন, ব্রিটিশ ও ইউরোপীয় নৌবহরের পাশাপাশি ইহুদিবাদী (ইসরায়েল) নৌবাহিনীর বিরুদ্ধে ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনী কতটা শক্তিশালী তা প্রদর্শন করেছে।'
হুথি সামরিক মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারিয়া শুক্রবার বলেছেন, ইসরায়েল সংশ্লিষ্ট জাহাজের ওপর হামলা ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত সম্প্রসারিত করা হবে। ফিলিস্তিনি রাফায় পরিকল্পিত হামলা চালালে ইসরায়েলের সঙ্গে যোগাযোগকারী সকল কোম্পানির জাহাজের ওপর হামলা চালানো হবে।
নভেম্বর থেকে হুথিরা লোহিত সাগর, বাব আল-মানদাব প্রণালি এবং এডেন উপসাগরে বাণিজ্যিক ও নৌবাহিনীর জাহাজে শত শত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন নিক্ষেপ করেছে। তাদের দাবি, গাজা উপত্যকায় অবরোধের অবসান ঘটাতে ইসরায়েলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হচ্ছে।
হুথি নিয়ন্ত্রিত এলাকায় হামলা চালানোর পর ইয়েমেনের উপকূলবর্তী আন্তর্জাতিক জলসীমায় যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের বাণিজ্যিক ও নৌবাহিনীর জাহাজেও হামলা চালিয়েছে তারা।
শনিবার হুথিদের তথ্যমন্ত্রী দাইফ আল্লাহ আল-শামি দাবি করেন, হামলা প্রতিহত করতে ব্যর্থ হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র লোহিত সাগর থেকে তাদের বিমানবাহী রণতরি ও অন্যান্য নৌবাহিনীর জাহাজ প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছে।
তিনি বলেন, আগামী দিনগুলোতে ভূমধ্যসাগরে ইসরায়েলি জাহাজের বিরুদ্ধে নতুন করে অভিযান শুরু হবে।
লেবাননের আল-মায়াদিন টিভি নিউজ চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আল-শামি আরও বলেন, 'তারা বাজেভাবে ব্যর্থ হয়েছে। ইয়েমেনি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন মার্কিন নৌবাহিনীকে পরাজিত করেছে এবং তাদের সামরিক, ক্রুজার, ডেস্ট্রয়ার এবং বিমানবাহী রণতরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা সামুদ্রিক অঞ্চল থেকে পিছু হটতে শুরু করেছে।'
তবে ইয়েমেন বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা, হুথিদের ভূমধ্যসাগরে ইসরায়েলি জাহাজে আঘাত হানতে সক্ষম এমন সামরিক অস্ত্রের দাবি নাকচ করে দিয়েছেন।
ইয়েমেনের সামরিক বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ আল-কুমাইম রোববার আরব নিউজকে বলেন, জাহাজে হামলা চালাতে হুথিদের অত্যাধুনিক অস্ত্রের প্রয়োজন হবে।
আল-কুমাইমের মতে, হুথিরা তাদের কর্মচারীদের বেতন ও পরিষেবাগুলো ঠিকমতো দিতে না পারায় তাদের নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে জনসাধারণের অসন্তোষ এড়াতে এমন প্রচারণা চালাচ্ছে।
আল-কুমাইম বলেন, হুথিরা ভূমধ্যসাগরে একটি জাহাজে হামলার দায় স্বীকার করতে পারে, যা কিনা ওই অঞ্চলে সক্রিয় ইরান সমর্থিত একটি গোষ্ঠী চালিয়েছে।
আল-কুমাইম জানান, তাত্ত্বিক ও প্রযুক্তিগতভাবে, হুথিদের ভূমধ্যসাগরে হামলার সক্ষমতা অর্জনের প্রযুক্তিগত ও সামরিক সক্ষমতার অভাব রয়েছে।
অনুবাদ: সাকাব নাহিয়ান শ্রাবন