Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Wednesday
August 06, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
WEDNESDAY, AUGUST 06, 2025
পৃথিবীর হারিয়ে যাওয়া মহাদেশ, যা আবিষ্কারে লেগেছে ৩৭৫ বছর

আন্তর্জাতিক

টিবিএস ডেস্ক
30 September, 2023, 11:00 am
Last modified: 30 September, 2023, 11:09 am

Related News

  • তুরস্কে শান্তি আলোচনায় ইউক্রেনের আরও ভূখণ্ড দাবি করেছে রাশিয়া: কিয়েভের সূত্র
  • একুশ মানে মাথা নত না করার দৃঢ় প্রত্যয়: প্রধান উপদেষ্টা
  • যেভাবে সমতল পৃথিবীতে বিশ্বাসীকে বোঝাবেন পৃথিবী আদতে গোলাকার
  • এ সপ্তাহে পৃথিবীতে পড়তে যাচ্ছে ৫০০০ পাউন্ডের স্যাটেলাইট!
  • চাঁদ না থাকলে কী হতো?

পৃথিবীর হারিয়ে যাওয়া মহাদেশ, যা আবিষ্কারে লেগেছে ৩৭৫ বছর

দৃষ্টিসীমার মধ্যেই লুকিয়ে ছিল বিশ্বের অষ্টম মহাদেশের ইঙ্গিত, তবু তা খুঁজে পেতে কেন দীর্ঘ ৩৭৫ বছর লেগেছিল বিজ্ঞানীদের? দীর্ঘকাল ধরে বিশ্বকোষ, অভিধান, মানচিত্র থেকে শুরু করে হালআমলের সার্চ ইঞ্জিনগুলোও গোঁ ধরে ছিল, পৃথিবীতে মহাদেশ মাত্র সাতটি-ই আছে। কিন্তু, ভূতাত্ত্বিকদের দলটি নিশ্চিতভাবে প্রমাণ করে দেখান, এই পুরোটা সময়েই তারা মানুষকে ভুল তথ্য দিয়েছে। আসলে পৃথিবীতে আছে আটটি মহাদেশ– গবেষকদের আবিষ্কৃত ভূখণ্ডটি পৃথিবীর নবীনতম, ক্ষুদ্রতম এবং পরিধিতে সবচেয়ে সরু মহাদেশ হিসেবেও নতুন রেকর্ড গড়ে।
টিবিএস ডেস্ক
30 September, 2023, 11:00 am
Last modified: 30 September, 2023, 11:09 am
ছবি: গেটি ইমেজেস/ ভায়া বিবিসি ফিউচার

১৬৪২ সনে অভিজ্ঞ ডাচ কাপ্তান -এবেল তাসম্যান এক সমুদ্রযাত্রায় বের হন। এই অভিযানের লক্ষ্য ছিল দক্ষিণ গোলার্ধে এক বিশাল মহাদেশ আবিষ্কার; যার অস্তিত্ব আছে বলেই দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতেন তিনি। বিবিসি ফিউচার অবলম্বনে।

সেসময় পৃথিবীর এই অংশ সম্পর্কে বেশিকিছু জানতো না ইউরোপীয়রা, যা তাদের কাছে ছিল রহস্যের চাদরে মোড়া। তবে তাদের ধারণা ছিল, নিশ্চয়ই এখানে বিশাল কোনো ভূখণ্ড আছে, আবিষ্কারের আগেই যার নাম তারা দিয়েছিল টেরা-অস্ট্রালিস। ইউরোপে নতুন এ মহাদেশের ধারণা অবশ্য অনেক প্রাচীন; বলতে গেলে সেই রোমান যুগ থেকেই এটি প্রচলিত ছিল।

কিন্তু, প্রথমবারের মতোন তা প্রমাণ করতে বদ্ধপরিকর হন এবেল তাসম্যান। ইন্দোনেশিয়ায় জাকার্তায় তখন ছিল ডাচ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ঘাঁটি। সেখান থেকেই ১৬৪২ সনের ১৪ সেপ্টেম্বর দুটি ছোট জাহাজ নিয়ে পশ্চিমদিকে যাত্রা শুরু করেন এবেল। পশ্চিমে যেতে যেতে জাহাজ দুটি প্রথমে দক্ষিণে মোড় নেয়, তারপর যেতে থাকে পুবদিকে। এভাবে একসময় বর্তমান নিউজিল্যান্ডের দক্ষিণে এসে পৌঁছায়। এখানে আসার পর স্থানীয় অধিবাসী মাউরিদের সাক্ষাৎ পায় ডাচরা।

কিন্তু, সে অভিজ্ঞতা সুখকর ছিল না। অচিরেই ভিন্ন সংস্কৃতির মানুষদের এ সাক্ষাৎ রূপ নেয় সংঘাতে। ডাচরা তীরের জাহাজ ভেড়ায়, এক জাহাজ থেকে অন্য জাহাজে এসময় বার্তা আদান-প্রদানে ব্যবহার করতো ছোট নৌকা। দ্বিতীয় দিনেই এমন একটি নৌকায় সজোরে গুঁতো দেয় মাউরিদের ক্যানু (গাছের গুঁড়ি দিয়ে তৈরি এক ধরনের নাও)। এতে চার ইউরোপীয় মারা যায়।

পরে মাউরিদের ১১টি ক্যানু লক্ষ্য করে তোপ দাগা হয় জাহাজ থেকে, এতে কতজন মাউরি মারা যায়– ইতিহাসে তার কোনো উল্লেখ নেই।  

অভিযানের সমাপ্তি টানা হয় তখনই। রক্তপাতের ঘটনার স্মরণে এবেল তাসম্যান এই উপসাগরের নাম নাম দেন 'মুর্দানার্স বে' (ইংরেজিতে মার্ডারার্স বে), যার বাংলা অর্থ দাঁড়ায়- খুনিদের উপসাগর। এরপর আর নতুন আবিষ্কৃত এ ভূখণ্ডে পদার্পণ করেননি তিনি, সপ্তাহখানেক পরেই ফিরে যান জাকার্তায়। এবেল বিশ্বাস করতেন, দক্ষিণের বিশাল সেই মহাদেশ তিনি আবিষ্কার করেছেন, কিন্তু আর কখনোই এমুখো হননি।  

প্রসঙ্গত; ততোদিনে অস্ট্রেলিয়া সম্পর্কে ইউরোপবাসী জানতো; কিন্তু, এটাই কিংবদন্তির সে মহাদেশ এমনটা বিশ্বাস করতো না। পরে অবশ্য তাই মনে করে তারা, এবং এরই নাম দেয় 'টেরা অস্ট্রালিস'।

সে যাই হোক, তাদের শেষোক্ত ধারণাটি ভুল ছিল। হারানো এক মহাদেশের ব্যাপারে এবেলই সঠিক ছিলেন। কিন্তু, দুর্ভাগ্য এই– সেটা তিনি নিজেও জানতেন না।

স্থানীয় মাউরি আধিবাসীদের সাথে রক্তক্ষয়ী সংঘাতের পর নিউজিল্যান্ডের উপকূল থেকে চলে যায় এবেল তাসমানের জাহাজ দুটি। ছবি: অ্যালামি/ ভায়া বিবিসি ফিউচার

তারপর কেটে গেছে সুদীর্ঘ পৌনে চার শতক, পৃথিবী দেখেছে বিজ্ঞানের বিস্ময়কর জয়জয়কার। আকাশ, পাতাল, সমুদ্রগর্ভে মানুষের নিরন্তর অভিযান। তবুও লুপ্ত সেই মহাদেশের কিংবদন্তির সমাধান হয়নি বহুকাল। ২০১৭ সালে সেই রহস্যের পর্দা তোলেন একদল ভূতাত্ত্বিক। তাদের 'জিল্যান্ডিয়া' (মাউরি ভাষায় রিউ- এ- মাউই) নামের নতুন মহাদেশ আবিষ্কারের ঘোষণা বিশ্বব্যাপী গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়। প্রায় ৪৯ লাখ বর্গকিলোমিটার আয়তনের বিস্তৃত বিশাল এ ভূখণ্ড মাদাগাস্কারের চেয়েও প্রায় ছয়গুণ বড়।

এদিকে দীর্ঘকাল ধরে বিশ্বকোষ, অভিধান, মানচিত্র থেকে শুরু করে হালআমলের সার্চ ইঞ্জিনগুলোও গোঁ ধরে ছিল, পৃথিবীতে মহাদেশ মাত্র সাতটি-ই আছে। কিন্তু, ভূতাত্ত্বিকদের দলটি নিশ্চিতভাবে প্রমাণ করে দেখান, এই পুরোটা সময়েই তারা মানুষকে ভুল তথ্য দিয়েছে। আসলে পৃথিবীতে আছে আটটি মহাদেশ– গবেষকদের আবিষ্কৃত ভূখণ্ডটি পৃথিবীর নবীনতম, ক্ষুদ্রতম এবং পরিধিতে সবচেয়ে সরু মহাদেশ হিসেবেও নতুন রেকর্ড গড়ে।

পার্থক্য শুধু এটাই যে, এই ভূভাগের ৯৪ শতাংশই জলের তলায় সমাহিত, শুধু নিউজিল্যান্ডের মতো গুটিকয় দ্বীপ সাগরের বুক ফুঁড়ে মাথা উঁচু করে আছে। একেই হয়তো বলে, স্পষ্ট চোখের সামনে থেকেও লুকিয়ে থাকা। অর্থাৎ কিনা দৃষ্টিসীমায় থেকেই নিজ রহস্য বুকে নিয়ে যুগ যুগ ধরে আড়ালে রেখেছিল।   

নিউজিল্যান্ডের ক্রাউন রিসার্চ ইনস্টিটিউট জিএনএস সায়েন্স এর ভূতাত্ত্বিক এন্ডি তুলখ বলেন, 'দৃশ্যমান কোনোকিছুর রহস্য আবিস্কারেও যে অনেক সময় লাগতে পারে, এটা তারই উদাহরণ।'

এন্ডি জিল্যান্ডিয়া আবিষ্কারক দলের একজন সদস্য ছিলেন।  

কিন্তু, অষ্টম মহাদেশের অস্তিত্ব প্রমাণ করেই এ কাহিনি শেষ হয়নি। হবার কথাও নয়, সাগরের ৬,৫৬০ ফুট নিচে থাকায় এ মহাদেশের অধিকাংশ রহস্যই আজো অজানা। সেই অজানাকে জানার চেষ্টাই শুরু হয় এরপর। যেমন কারা সেখানে বাস করতো? কত যুগ আগেই বা এটি জলের তলায় চলে যায়?

কষ্টসাধ্য এক আবিষ্কার

জিল্যান্ডিয়া নিয়ে গবেষণা করা সব সময়েই খুব জটিল ছিল।

এবেল তাসম্যান নিউজিল্যান্ড আবিষ্কারের এক শতাব্দীরও বেশি সময় পরে ১৬৪২ সনে ব্রিটিশ অভিযাত্রী ও মানচিত্র প্রস্তুতকারক জেমস কুক'কে দক্ষিণ গোলার্ধে এক বৈজ্ঞানিক অভিযানে পাঠানো হয়। তার ওপর নির্দেশ ছিল, সূর্য ও পৃথিবীর মধ্যে দিয়ে শুক্র গ্রহের অতিক্রম করাকে পর্যবেক্ষণ করার। সূর্য পৃথিবী থেকে কতটা দূরে, তা হিসাব করে বের করতে এর দরকার ছিল।

স্যাটেলাইট চিত্রে অস্ট্রেলিয়ার পাশে হালকা নীল রঙে সমুদ্র নিমজ্জিত জিল্যান্ডিয়ার আয়তনকে দেখানো হয়েছে। ছবি: জিএনএস সায়েন্স/ ভায়া বিবিসি

কিন্তু, তাকে মুখবন্ধ একটি খামও দেওয়া হয়েছিল। প্রাথমিক দায়িত্বটি সম্পন্ন হলেই, কেবল সেটি খুলে দেখার নির্দেশ ছিল তার ওপর। এই নির্দেশনামায় কুককে দক্ষিণের এক বিশাল মহাদেশ আবিষ্কারের অতি-গোপনীয় মিশন দেওয়া হয়। কুক তাই-ই করেছিলেন, আর সোজা পৌঁছেছিলেন নিউজিল্যান্ডে। কিন্তু, তিনি জানতেন না, যে মহাদেশের সন্ধান করছেন, স্রেফ তার ওপর দিয়েই তার জাহাজ নিউজিল্যান্ডে পৌঁছেছিল।

জিল্যান্ডিয়ার অস্তিত্ব নির্দেশ করে প্রথম এমনকিছু প্রমাণ জড়ো করেছিলেন স্কটিশ প্রকৃতিবিদ স্যার জেমস হেক্টর। ১৮৯৫ সালে তিনি নিউজিল্যান্ডের দক্ষিণ উপকূলে থাকা বেশকিছু দ্বীপ জরিপের অভিযানে যোগ দেন । এসব দ্বীপের ভূতাত্ত্বিক গঠন অধ্যয়নের পর তিনি এ উপসংহারে পৌঁছান যে, 'বর্তমানে সাগরে ডুবে থাকা দক্ষিণ থেকে পূর্ব পর্যন্ত বিস্তৃত এক মহাদেশীয় অঞ্চলের পাহাড়শ্রেণির চূড়া হলো নিউজিজিল্যান্ড ও আশেপাশের দ্বীপগুলো।'

অনেক আগেই এমন ধারণা পাওয়া সত্ত্বেও, জিল্যান্ডিয়ার অস্তিত্ব সম্পর্কে তথ্যউপাত্ত অপ্রতুল রয়ে যায় দীর্ঘকাল।  এমনকী ১৯৬০ এর দশকের আগপর্যন্ত গবেষণার চেষ্টা গুরুত্বও পায়নি।  

জিল্যান্ডিয়া আবিষ্কারক টিমের নেতৃত্ব দেওয়া ভূতাত্ত্বিক নিক মর্টিমার বলেন, 'এক্ষেত্রে গবেষণা হয়েছে খুবই ধীরে ধীরে।'

১৯৬০ এর দশকে মহাদেশের সংজ্ঞা নির্ধারণের বিষয়ে একমত হন ভূতাত্ত্বিকরা। সার্বিকভাবে এই সংজ্ঞায় বলা হয়, মহাদেশ হল পৃথিবীর একটি কাঠামো, যা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে একটি নির্দিষ্ট উচ্চতায় উঠে আসে। মহাদেশীয় ভূত্বক (ক্রাস্ট) নানান ধরনের শিলা দ্বারা গঠিত, যা বেশ পুরু থাকে। মহাদেশ হতে হলে সেই ভূখণ্ডকে যথেষ্ট বড়ও হতে হবে।

মর্টিমার বলেন, 'ছোট এক টুকরো ভূখণ্ডকে মহাদেশ বলা যাবে না।' এই সংজ্ঞার ভিত্তিতে বিজ্ঞানীরা কাজের একটি দিকনির্দেশনা পান। তারা বুঝতে পারলেন, এই সূত্র মেনে যথেষ্ট প্রমাণ জোগাড় করতে পারলেই অষ্টম মহাদেশ যে আসলেই আছে তা প্রমাণ করা যাবে।

অবশ্য তারপর ফের এই মিশন গতি হারায়, কারণ একটি মহাদেশ আবিষ্কার সত্যিই বেশ কঠিন, এবং ব্যয়বহুল। তাছাড়া, তেমন তাগিদও ছিল না বলে উল্লেখ করেন মর্টিমার। এরপর ১৯৯৫ সালে আমেরিকান ভূপদার্থবিদ ব্রুস লুয়েনডিক এই অঞ্চলকে আবারো একটি মহাদেশ হিসেবে বর্ণনা করেন, এবং এর নাম জিল্যান্ডিয়া দেওয়ার সুপারিশ করেন। সেদিন থেকে আবিষ্কারের চেষ্টা নবউদ্যম ফিরে পায় বলে জানান ভূতাত্ত্বিক এন্ডি তুলখ।

অতিকায় মহাদেশ গন্ডোয়ানা যখন বিভাজিত হয়, তখন এর অংশগুলো বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে সরে যায়। গন্ডোয়ানার প্রাচীন অনেক উদ্ভিদের প্রজাতি আজো অস্ট্রেলিয়ার ডোরিগো বনে টিকে আছে। ছবি: গেটি ইমেজেস/ ভায়া বিবিসি

প্রায় একইসময়ে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমা সম্পর্কিত আইন, 'ইউনাইটেড নেশনস কনভেনশন অন দ্য ল অব দ্য সী' কার্যকর হয়। এই আইনের ফলেই নিউজিল্যান্ড সরকার এবার নড়েচড়ে বসে। জিল্যান্ডিয়া আবিষ্কারের ব্যাপক তাগিদ অনুভব করেন ওয়েলিংটনের কর্তারা। গবেষণায় টাকা ঢালতে, দরকারি বৈজ্ঞানিক উপকরণ দিতেও এবার যেন তাদের উৎসাহ দেখা যায়।

কারণ আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমা সম্পর্কিত আইনে বলা হয়েছে, একটি দেশ তার মহাদেশীয় মহীসোপন পর্যন্ত সমুদ্রসীমা ও এরমধ্যে থাকা সব ধরনের সম্পদ নিজের বলে দাবি করতে – তাদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ছাড়িয়ে, উপকূল থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইল (৩৭০ কি.মি.) পর্যন্ত সমুদ্রসীমা বিস্তৃত করতে পারবে।

নিউজিল্যান্ড যদি প্রমাণ করতে পারে, দেশটির আরও বৃহৎ এক মহাদেশের অংশ– তাহলে সমুদ্রসীমা ছয়গুণ বাড়াতে পারবে। এতে বহুগুণে বাড়বে দেশটির রাজস্ব আয়ের উপায়। এই সম্ভাবনা উপলদ্ধি করে, সমুদ্রজরিপে হঠাৎ করেই হু হু করে আসতে থাকে তহবিল। সেই সুযোগ নিয়ে বিজ্ঞানীরা ধীরে ধীরে জিল্যান্ডিয়ার অস্তিত্ব সম্পর্কে প্রমাণ জড়ো করতে থাকেন। সমুদ্রতল থেকে সংগ্রহ করা প্রতিটি পাথরের নমুনা জিল্যান্ডিয়ার স্বপক্ষেই সাক্ষ্য দিয়েছে।  

কিন্তু, আরও অকাট্য প্রমাণের দরকার ছিল। যা দিয়েছে স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া তথ্য। স্যাটেলাইটের দেওয়া তথ্যের সাহায্যে সমুদ্রতলের ভূত্বকের বিভিন্ন অংশের মধ্যাকর্ষণ শক্তির তারতম্য শনাক্ত করতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। এই প্রযুক্তির সাহায্যে সমুদ্রের ভূত্বক থেকে জিল্যান্ডিয়ার অপেক্ষাকৃত পুরু ভূত্বককে আলাদাভাবে চেনা  গেছে। এভাবে তৈরি সমুদ্রতলের মানচিত্রে উঁচুনিচু ভূপ্রকৃতির প্রায় অস্ট্রেলিয়ার সমান জিল্যান্ডিয়াকে স্পষ্টভাবেই দেখাতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা।     

নিউজিল্যান্ডই হলো জিল্যান্ডিয়ার সর্বোচ্চ ভূখণ্ড। ছবি: অ্যালামি/ ভায়া বিবিসি

মর্টিমার বলেন, 'আমরা যখন এই মহাদেশের অস্তিত্ব সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে জানাই, তখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় জলমগ্ন ভূখন্ড সম্পর্কেও মানুষ জানতে পারে। বিষয়টি দারুণ মজার। ভেবে দেখুন, দুনিয়ার সব মহাদেশেই অনেক অনেক দেশ আছে, কিন্তু জিল্যান্ডিয়ায় মাত্র তিনটি রাষ্ট্রের উপস্থিতি আছে।'  

এরমধ্যে নিউজিল্যান্ড স্বাধীন রাষ্ট্র। অন্যদিকে ফরাসী উপনিবেশ হিসেবে রয়েছে নিউ কালেদোনিয়া দ্বীপ এবং অস্ট্রেলিয়ার দুটি দ্বীপ– লর্ড হোয়ে আইল্যান্ড এবং বলস পিরামিড।

রহস্যময় বিস্তার

জিল্যান্ডিয়া ছিল প্রাচীন অতিকায় মহাদেশ গন্ডোয়ানার অংশ। আজ থেকে প্রায় ৫৫ কোটি বছর আগে দক্ষিণ গোলার্ধের সকল ভূমি একত্র হয়ে গড়ে ওঠে গন্ডোয়ানা। পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকা ও পূর্ব অস্ট্রেলিয়ার মতো কিছু ভূখণ্ডের সাথে জিল্যান্ডিয়া ছিল গন্ডোয়ানার পুবদিকের অংশে।

তুলখ জানান, 'আজ থেকে প্রায় ১০ কোটি বছর আগে অজ্ঞাত জিল্যান্ডিয়া গন্ডোয়ানা থেকে পৃথক হতে শুরু করে। এই প্রক্রিয়াটি সম্পর্কে আমরা আজো পুরোপুরি জানতে পারিনি।'   

মহাদেশীয় ভূত্বক সাধারণত ৪০ কিলোমিটার গভীর হয়– যা সামুদ্রিক ভূত্বকের চেয়ে অনেক পুরু। সামুদ্রিক ভূত্বক সাধারণত ১০ কিলোমিটার পর্যন্ত গভীর হয়। কিন্তু, গন্ডোয়ানা থেকে পৃথক হওয়ার সময় জিল্যান্ডিয়া এতটাই দূরে সরে গিয়েছিল যে, এর ভূত্বকের পুরুত্ব ক্ষয় হতে হতে মাত্র ২০ কিলোমিটারে নেমে আসে। ফলে অতিসরু এই মহাদেশ পানির তলায় ডুবে যায়।   

সরু ভূত্বক নিয়ে জলমগ্ন থাকলেও– এই মহাদেশে পাওয়া নানান রকম শিলা পরীক্ষা করেই বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হয়েছেন এটি সমুদ্রের অংশ নয়, বরং মহাদেশ। কারণ গ্রানাইট, স্কিস্ট ও চুনাপাথর দিয়ে গঠিত হয় মহাদেশীর ভূত্বকের শিলাস্তর। অন্যদিকে, সামুদ্রিক ভূত্বকে ব্যাসল্ট শিলাই থাকে বেশি।

তারপরও এখনও অজানা রয়েছে অনেক কিছু। যেমন বিশ্বের অষ্টম এ মহাদেশের উৎপত্তি ভূতাত্ত্বিকদের যেমন বিস্মিত করে, তেমনি এর টিকে থাকাও কম অভিভূত করে না তাদের। এত সরু ভূত্বক থাকার পরেও কেন এটি খণ্ড খণ্ড হয়ে আরও ছোট ছোট মহাদেশ তৈরি করেনি– সেটা ভেবেও অবাক হন তারা।

আরেকটি বড় রহস্য ঠিক কখন জিল্যান্ডিয়া সমুদ্রে ডুবে গেল– সে সময় জানার ক্ষেত্রে। তাছাড়া, আদৌ এটি পুরোপুরি শুকনো ডাঙ্গার ভূখণ্ড ছিল কিনা তা নিয়েও আছে মতভেদ। বর্তমানে প্রশান্ত ও অস্ট্রেলীয় টেকটনিক প্লেটের সিমানায় গড়ে ওঠা পর্বতশ্রেণির খাঁজ বা চূড়া বিভিন্ন দ্বীপ হিসেবে গড়ে উঠেছে। তুলখ জানান, ভূতাত্ত্বিকদের একদল মনে করেন, জিল্যান্ডিয়ায় এমন কিছু দ্বীপ ছিল, আর বাকিটা ছিল নিচু, জলমগ্ন অংশ। আরেকদল মনে করেন, একসময় পুরোটাই ছিল শুকনো ডাঙ্গা।    

এর ফলে প্রশ্ন উঠেছে কারা ছিল জিল্যান্ডিয়ার বাসিন্দা। এটি যার অংশ ছিল, সেই গন্ডোয়ানা ছিল প্রায় ১০ কোটি বর্গকিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত, সেখানে ছিল বিভিন্ন প্রজাতির অসংখ্য উদ্ভিদ ও প্রাণির সমাগম। প্রথম স্থলচর চারপেয়ে প্রাণীর আবির্ভাব হয়েছিল গন্ডোয়ানায়। আরও পরবর্তীকালে টাইটানোসরসের মতো সর্ববৃহৎ স্থলচর জীবও বিচরণ করেছে। ভূতাত্ত্বিকরা আশাবাদী, হয়তো জিল্যান্ডিয়ার ডুবে থাকা শিলাস্তরে প্রাগৈতিহাসিক জীবাশ্ম পাওয়াও যেতে পারে।

 

 

Related Topics

টপ নিউজ

অষ্টম মহাদেশ / জিল্যান্ডিয়া / ভূতাত্ত্বিক আবিষ্কার / পৃথিবী / ভূখণ্ড / মহাদেশ

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • ‘আমি ভাবছিলাম সিঙ্গাপুর যাব, যেতে পারি?’: হাসিনা-তাপসের আরও একটি ‘ফোনালাপ’ ভাইরাল
  • আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য নতুন গাড়ি কেনার উদ্যোগ, বাসা খোঁজা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী-মন্ত্রীদের জন্য
  • মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে গ্যাস বেলুন বিস্ফোরণে আহত ১১
  • মাহফুজ আলম হয়তো ঘণ্টাখানেক পর পোস্টটি ডিলিট করবেন: সালাহউদ্দিন
  • ৫ আগস্ট সকালেও দিল্লি আঁচ করতে পারেনি ভারতে আশ্রয় নেবেন শেখ হাসিনা
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের জুলাই প্রদর্শনীতে দণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধীদের ছবি, শিক্ষার্থীদের আপত্তিতে সরালো প্রশাসন

Related News

  • তুরস্কে শান্তি আলোচনায় ইউক্রেনের আরও ভূখণ্ড দাবি করেছে রাশিয়া: কিয়েভের সূত্র
  • একুশ মানে মাথা নত না করার দৃঢ় প্রত্যয়: প্রধান উপদেষ্টা
  • যেভাবে সমতল পৃথিবীতে বিশ্বাসীকে বোঝাবেন পৃথিবী আদতে গোলাকার
  • এ সপ্তাহে পৃথিবীতে পড়তে যাচ্ছে ৫০০০ পাউন্ডের স্যাটেলাইট!
  • চাঁদ না থাকলে কী হতো?

Most Read

1
বাংলাদেশ

‘আমি ভাবছিলাম সিঙ্গাপুর যাব, যেতে পারি?’: হাসিনা-তাপসের আরও একটি ‘ফোনালাপ’ ভাইরাল

2
বাংলাদেশ

আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য নতুন গাড়ি কেনার উদ্যোগ, বাসা খোঁজা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী-মন্ত্রীদের জন্য

3
বাংলাদেশ

মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে গ্যাস বেলুন বিস্ফোরণে আহত ১১

4
বাংলাদেশ

মাহফুজ আলম হয়তো ঘণ্টাখানেক পর পোস্টটি ডিলিট করবেন: সালাহউদ্দিন

5
বাংলাদেশ

৫ আগস্ট সকালেও দিল্লি আঁচ করতে পারেনি ভারতে আশ্রয় নেবেন শেখ হাসিনা

6
বাংলাদেশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের জুলাই প্রদর্শনীতে দণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধীদের ছবি, শিক্ষার্থীদের আপত্তিতে সরালো প্রশাসন

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net