চ্যাটজিপিটি দিয়ে জাহাঙ্গীরনগরের ডি ইউনিটে ২৪২তম, এ ইউনিটে ফের নকল করতে গিয়ে আটক শিক্ষার্থী
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০২৫–২০২৬ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা 'চ্যাটজিপিটি' ব্যবহার করে উত্তর বের করার সময় এক শিক্ষার্থীকে হাতেনাতে আটক করা হয়েছে। জালিয়াতির দায়ে ওই শিক্ষার্থীকে সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের 'এ' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার দ্বিতীয় শিফট চলাকালে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের ১০২ নম্বর কক্ষ থেকে তাকে আটক করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি সূত্রে জানা গেছে, আটক শিক্ষার্থীর নাম মো. মাহমুদুল্লাহ হাসান। তিনি নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার আকাশকুড়ি গ্রামের বাসিন্দা। মাহমুদুল্লাহ পরীক্ষার হলে গোপনে মোবাইল ফোন নিয়ে প্রবেশ করেন। পরীক্ষা চলাকালে তিনি চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করে ওএমআর শিট পূরণ করছিলেন। বিষয়টি দায়িত্বরত কক্ষ পরিদর্শকের নজরে এলে তিনি দ্রুত প্রক্টরিয়াল বডিকে অবহিত করেন। পরে তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রক্টর অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে ওই শিক্ষার্থী স্বীকার করেছেন, এর আগে গত ২৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত 'ডি' ইউনিটের (জীববিজ্ঞান অনুষদ) ভর্তি পরীক্ষাতেও তিনি একই কৌশলে জালিয়াতি করেছিলেন। সেদিন রসায়ন বিভাগের ৪০১ নম্বর কক্ষে প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে চ্যাটজিপিটির মাধ্যমে উত্তর বের করে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন তিনি। গত ২৫ ডিসেম্বর প্রকাশিত ফলে দেখা যায়, তিনি 'ডি' ইউনিটে মেধাতালিকায় ২৪২তম স্থান অর্জন করেছেন।
জালিয়াতির বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় ওই শিক্ষার্থীর ভর্তি পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংশ্লিষ্ট অনুষদ। এ বিষয়ে জীববিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার বলেন, 'আমরা বিষয়টি অবগত হয়েছি। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর ফলাফল বাতিল করা হবে।'
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম রাশিদুল আলম শাস্তিমূলক ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করে বলেন, 'তার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ভর্তি পরীক্ষা বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। পাশাপাশি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত তাকে সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেছেন।'
বর্তমানে ওই শিক্ষার্থীকে সাজা ভোগের জন্য কারাগারে পাঠানো হয়েছে এবং জালিয়াতি ঠেকাতে ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্রগুলোতে নিরাপত্তা ও নজরদারি আরও জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
