Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Thursday
August 28, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
THURSDAY, AUGUST 28, 2025
দেশে দেশে নির্বাচনকে প্রভাবিত করে যে ইসরায়েলি গোষ্ঠী

আন্তর্জাতিক

টিবিএস ডেস্ক
20 February, 2023, 06:20 pm
Last modified: 20 February, 2023, 06:20 pm

Related News

  • দুর্বল পাসওয়ার্ড থেকে হ্যাকারদের হামলায় যেভাবে ধ্বংস হয়ে গেল ১৫৮ বছরের কোম্পানি
  • সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫-এর গেজেট প্রকাশ
  • সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের প্রাথমিক খসড়া অনুমোদন
  • ব্যাংকগুলোতে সাইবার হামলার ঝুঁকি বাড়ছে: কেন্দ্রীয় ব্যাংক
  • এক মিনিটেই কিংবা এক ঘণ্টারও কম সময়ে অধিকাংশ পাসওয়ার্ড ক্র্যাক করা সম্ভব: গবেষণা

দেশে দেশে নির্বাচনকে প্রভাবিত করে যে ইসরায়েলি গোষ্ঠী

টিম জর্জের পক্ষ থেকে ক্লায়েন্টদের অত্যাধুনিক সফটওয়্যার প্যাকেজ প্রদানের বিষয়ে জানা যায় যেটি মূলত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রভাব তৈরির কাজে ব্যবহার করা হয়। দলটি টুইটার, লিংকডইন, ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, টেলিগ্রাম, জিমেইল ও ইউটিউবে শত শত ফেইক প্রোফাইল নিয়ন্ত্রণ করে। এমনকি দলটির পক্ষ থেকে অ্যামাজন প্রোফাইল থেকে শুরু করে ক্রেডিট কার্ড ও বিটকয়েনের মতো সুযোগ-সুবিধাও দেওয়া হয়।
টিবিএস ডেস্ক
20 February, 2023, 06:20 pm
Last modified: 20 February, 2023, 06:20 pm

তাল হানান, টিম জর্জের প্রধান। ছবি: গার্ডিয়ান

জাতীয় নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে বৈশ্বিক শক্তিগুলোর প্রতি পরোক্ষভাবে হস্তক্ষেপের অভিযোগ রাজনীতিতে খুবই আলোচিত একটি বিষয়। এবার যেন সেই দাবিরই সত্যতা পাওয়া গেল। সম্প্রতি গণমাধ্যম গার্ডিয়ানের এক অনুসন্ধানে দেখা যায়, ইসরায়েলভিত্তিক একটি গোপন টিম অর্থের বিনিময়ে বিশ্বের বহু দেশের নির্বাচন ও নানা ইস্যুকে প্রভাবিত করে। একইসাথে পরিকল্পনামাফিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নাশকতা ও স্বয়ংক্রিয় বিভ্রান্তিও ছড়িয়ে থাকে গোপন এ গোষ্ঠী। 

রহস্যময় এই টিম মূলত ইসরায়েলের স্পেশাল ফোর্সের সাবেক কর্মকর্তা তাল হানান পরিচালনা করেন। হানান 'জর্জ' ছদ্মনামে প্রায় ২০ বছর ধরে নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার সংক্রান্ত এ কার্যক্রমের সাথে যুক্ত রয়েছেন। বিশ্বজুড়ে হ্যাকিং ও নাশকতা ছড়িয়ে সংগঠনটি প্রায় ৩৩টি প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনকে প্রভাবিত করেছে বলেও দাবি করা হয়েছে।

হানান ও তার দল মূলত 'টিম জর্জ' ছদ্মনামে যথেষ্ট গোপনীয়তার সাথে কাজ করে। তবে সম্প্রতি সাংবাদিকদের একটি আন্তর্জাতিক সংগঠনের মাধ্যমে গোপন এ দলটির কথা জানা যায়। পরবর্তীতে গোপন ফুটেজ ও ডকুমেন্টের মাধ্যমে গার্ডিয়ানের পক্ষ থেকে দলটির কার্যক্রম সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানা যায়।   

গার্ডিয়ানের তদন্ত থেকে জানা যায়, গুজবের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে টিম জর্জ কোনোরূপ প্রমাণ না রেখে নির্বাচনে প্রভাব সৃষ্টি করে থাকে। একইসাথে দলটি কর্পোরেট ক্লায়েন্টদের পক্ষেও জনমত গঠনের উদ্দেশ্যে প্রাইভেট সার্ভিস প্রদান করে থাকে। হানানের দাবি অনুযায়ী, টিমটি আফ্রিকা, দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে কাজ করেছে।   

টিম জর্জের পক্ষ থেকে ক্লায়েন্টদের অত্যাধুনিক সফটওয়্যার প্যাকেজ প্রদানের বিষয়ে জানা যায় যেটি মূলত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রভাব তৈরির কাজে ব্যবহার করা হয়। দলটি টুইটার, লিংকডইন, ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, টেলিগ্রাম, জিমেইল ও ইউটিউবে শত শত ফেইক প্রোফাইল নিয়ন্ত্রণ করে। এমনকি দলটির পক্ষ থেকে অ্যামাজন প্রোফাইল থেকে শুরু করে ক্রেডিট কার্ড ও বিটকয়েনের মতো সুযোগ-সুবিধাও দেওয়া হয়। 

সাংবাদিকদের যে সংগঠনটি 'টিম জর্জ'-এর গোপন কর্মকাণ্ড তদন্ত করেছে সেটি মূলত লা মন্দে, এল প্যারিসের মত মোট ৩০টি গণমাধ্যমের প্রতিবেদকদের সমন্বয়ে তৈরি। ফরবিডেন স্টোরিজ নামের একটি ফরাসি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের সহয়তায় গুজব নিয়ে কাজ করতে গিয়ে গোপনে কাজ করা দলটির এ কার্যক্রম সামনে আসে। 

দলটির কার্যক্রমের প্রমাণ সংগ্রহ করতে তিনজন প্রতিবেদক ক্লায়েন্ট সেজে টিম জর্জের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। গোপনে রেকর্ডকৃত প্রায় ৬ ঘণ্টার সাক্ষাৎকারে হানান এবং তার দলের সদস্যরা নিজেদের কার্যক্রম সম্পর্কে তুলে ধরেন। দলটি প্রতিপক্ষের জিমেইল ও টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে সেসব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নির্দিষ্ট কিছু গণমাধ্যমকে ব্যবহার করে সংবাদ আকারে প্রকাশ করা হয়। একইসাথে গণমাধ্যমের ওই সংবাদগুলো নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর কাছে পৌঁছানোর জন্য বট ম্যানেজমেন্ট সফটওয়ারও ব্যবহার করা হয়।  

প্রতিপক্ষের নির্বাচনী কর্মসূচি ব্যাহত করাই দলটির মূল কৌশল। এমনকি 'টিম জর্জ'-এর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, রাজনীতিবিদদের পরিবারে বিতর্কিত নানা পণ্য সরবরাহ করে পরিকল্পিতভাবে পরিবারের মাঝেও কোন্দল সৃষ্টি করা হয়। টিম জর্জের এ দাবি প্রযুক্তি খাতের বড় বড় প্ল্যাটফর্মের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও একবার প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে। 

টেলিগ্রাম ও জিমেইলের মতো প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো নিজেদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যথেষ্ট শক্তিশালী বলে দাবি করলেও 'টিম জর্জ' প্ল্যাটফর্মগুলোর নিরাপত্তা বেষ্টনী সহজেই ভাঙার দাবি করছে। এছাড়াও বিশ্বব্যাপী গুজব তৈরির যে প্রাইভেট মার্কেটপ্লেস তৈরি হচ্ছে সেটি বিশ্বের গণতন্ত্রকামী সব দেশের জন্য অশনি সংকেত। 

টিম জর্জের কার্যক্রমগুলো প্রকাশিত হওয়ার পর দেশ হিসেবে ইসরায়েলের জন্যও তা অস্বস্তির কারণ হতে পারে। কেননা সম্প্রতি আড়িপাতা কিংবা অন্যর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম একাউন্ট হ্যাকিং করার মত সাইবার অস্ত্র রপ্তানি করায় দেশটি রাজনৈতিকভাবে চাপের মুখে রয়েছে। এসব কার্যক্রম গণতন্ত্র ও মানবধিকারের ক্ষেত্রে সরাসরি নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করে। 

ডেমোমান ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি ইসরায়েলি কোম্পানি ব্যবহার করে হানান গুজব-সংক্রান্ত বেশ কিছু কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। কোম্পানিটি আবার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় নিয়ন্ত্রিত একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নিবন্ধিত, যেটি দেশটির প্রতিরক্ষা সম্পর্কিত রপ্তানির কাজে ব্যবহার করা হয়। এ বিষয়ে গার্ডিয়ানের পক্ষ থেকে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে জানতে চাওয়া হলে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। 

হানান ও তার সহকর্মীরা ক্লায়েন্ট ভেবে গোপনে কাজ করা রিপোর্টারদের সঙ্গে দেখা করে নিজেদের কার্যক্রম ব্যাখ্যা করেন। গোপনে ধারণকৃত এ সভা গত বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বরের মাঝে অনুষ্ঠিত হয়। 

রেডিও ফ্রান্স, দ্য মার্কার ও হারেৎজ-এর তিনজন সাংবাদিক রাজনৈতিকভাবে সংকটাপন্ন অবস্থায় থাকা একটি আফ্রিকান দেশের একটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি সেজে টিম জর্জের শরণাপন্ন হন। প্রতিনিধি দলটি টিম জর্জকে উক্ত দেশটির আসন্ন নির্বাচনকে বিলম্বিত করতে হস্তক্ষেপ করতে বলেন।

প্রথমে ভিডিও কলে এবং পরবর্তীতে তেল আবিব থেকে ২০ কিলোমিটার দূরবর্তী টিম জর্জের বেইজে সরাসরি মিটিং করা হয়। সভায় হান্নান নিজের দলকে 'সরকারি এজেন্সি থেকে গ্রাজুয়েটস' হিসেবে দাবি করে অর্থ, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ক্যাম্পেইন সংক্রান্ত কার্যক্রমে নিজেদের পারদর্শিতা তুলে ধরেন। একইসাথে বিশ্বজুড়ে ৬টি অফিসের মাধ্যমে তারা নিজেদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন বলে উল্লেখ করেন। 

টিম জর্জের পক্ষ থেকে সভায় হানান ছাড়াও দলটির চারজন কর্মী উপস্থিত ছিলেন। এদের মধ্যে অন্যতম তাল হানানের ভাই জোহার হানান, যিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী বলে উল্লেখ করেন। কথোপকথনের প্রথমেই হানান বলেন, 'আমরা বর্তমানে আফ্রিকার একটি দেশের নির্বাচনের সাথে যুক্ত আছি। এছাড়াও আমাদের গ্রিস ও আমিরাতে একটি করে প্রতিনিধি দল রয়েছে। আমরা ৩৩টি প্রেসিডেন্সিয়াল পর্যায়ের নির্বাচন পরিচালনা করেছি যার মধ্যে ২৭ টি সফল হয়েছে।'

পরবর্তীতে হানান জানান, তিনি নিজেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রজেক্টের সাথে যুক্ত ছিলেন। তবে দেশটির রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত নন তিনি। সাক্ষাৎকারে এ টিম জর্জের পক্ষ থেকে নিজেদের কার্যক্রম সম্পর্কে যেসব দাবি করা হয়েছে তার সবগুলোর যথার্থতা নিরূপণ করা যায়নি। এমনও হতে পারে, প্রতিষ্ঠানটি ক্লায়েন্টদের কাছে ফি বৃদ্ধির জন্য নিজেদের কার্যক্রম সম্পর্কে ইতিবাচক কথা বলছিলেন। 

টিম জর্জের পক্ষ থেকে জানানো হয়, নির্বাচন প্রভাবিত করতে দলটি ৬ মিলিয়ন থেকে ১৫ মিলিয়ন ডলার নিয়ে থাকে। আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে নগদ অর্থ ও বিটকয়েন মিলিয়ে ভিন্ন ভিন্ন ফরম্যাটে সেই চার্জ গ্রহণ করা হয়।

তবে গার্ডিয়ানের হাতে আসা ইমেইল থেকে জানা যায়, দলটি আরও কম ফি দাবি করে থাকে। একটি মেইলে দেখা যায়, ২০১৫ সালে বর্তমান ব্রিটিশ কনসালটেন্সি প্রতিষ্ঠান ক্যামব্রিজ অ্যানালাইটিকার হয়ে ল্যাটিন আমেরিকার একটি দেশে আট সপ্তাহের ক্যাম্পেইন পরিচালনার জন্য ১ লাখ ৬০ হাজার ডলার দাবি করে। 

তাল হানান। ছবি: হারেৎজ

২০১৭ সালে ফের কেনিয়ায় ক্যামব্রিজ অ্যানালাইটিকার হয়ে ক্যাম্পেইন পরিচালনার জন্য দলটি ৪ লাখ থেকে ৬ লাখ ডলার দাবি করে। তবে দলটির এ দাবি ক্যামব্রিজ অ্যানালাইটিকার পক্ষ থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে এ ক্যাম্পেইন দুটিতে টিম জর্জ প্রকৃতপক্ষে কাজ করেছিল কি না সে সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। 

তবে ফাঁস হওয়া আরেকটি নথি থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালে দলটি ক্যামব্রিজ অ্যানালাইটিকা ও নাইজেরিয়ান প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনে একত্রে গোপনে কাজ করেছিল। এ সম্পর্কে ক্যামব্রিজ অ্যানালাইটিকার কাছে জানতে চাওয়া হলে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। তবে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী আলেকজান্ডার নিক্স বলেন, 'এ সম্পর্কে আপনারা যা জেনেছেন, তা বিতর্কিত।'

ফাঁস হওয়া নথিতে টিম জর্জের পক্ষ থেকে পাঠানো ইমেইলে একটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তির কথা জানা যায়। এ প্রযুক্তি দিয়ে ব্যবহারকারীরা প্রায় ৫ হাজার বট তৈরি করতে পারে। এই বট ব্যবহার করে প্রায় ১৭টি নির্বাচনে গণহারে মেসেজ ও গুজব তৈরি করা হয়েছে বলে নথিতে দাবি করা হয়। 

এ সম্পর্কে টিম জর্জের পক্ষ থেকে নথিতে বলা হয়, 'এটি আমাদের তৈরি করা একটি নেটওয়ার্ক সিস্টেম যা যেকোনো ভাষায় কাজ করতে সক্ষম। নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে প্রযুক্তিটি ব্যবহার করা যাবে। এমনকি ঠিকঠাক দাম দিয়ে কেউ সফটওয়্যারটি কিনতেও পারবেন।'

২০২২ সালে দেওয়া সাক্ষাৎকার অনুযায়ী, টিম জর্জের বট ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যারটি বর্তমানে আরও উন্নত হয়েছে। এ সম্পর্কে হানান জানান, প্রযুক্তিটি বর্তমানে ৩০ হাজারেরও বেশি অ্যাভাটারের সমন্বয়ে একটি মাল্টি-ন্যাশনাল আর্মি গঠন করেছে। 

সাক্ষাৎকারে সাংবাদিকদের প্রযুক্তিটির আদলে তৈরিকৃত ডজনখানেক অ্যাভাটার দেখিয়ে হানান তাৎক্ষণিক ফেইক প্রোফাইল তৈরির পদ্ধতিগুলো দেখান। টিম জর্জ জাতীয়তা, লিঙ্গ, নাম ও ছবি ব্যবহার করে অনায়াসে এ প্রোফাইলগুলো তৈরি করে।

ফেইক প্রোফাইলের ক্ষেত্রে ছবিগুলো কীভাবে সংগ্রহ করা হয়, সে সম্পর্কে জানতে চাইলে হানান তা জানাতে একটু অস্বস্তি বোধ করেন। গার্ডিয়ানের পক্ষ থেকে তদন্ত করে দেখা যায়, ফেইক প্রোফাইলের ছবিগুলো মূলত প্রকৃত প্রোফাইল থেকেই সংগ্রহ করা হয়। যেমন 'সোফিয়া উইলডে' নামে ব্রিটিশ নাগরিকের যে ফেইক প্রোফাইল বানানো হয়েছে সেটি মূলত রাশিয়ান একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রোফাইল থেকে নেওয়া হয়েছে। এটি মূলত লিডসে বসবাসকৃত এক নাগরিকের। 

ফেসবুকের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান মেটার সঙ্গে যোগাযোগ করে সাংবাদিকরা ওই ফেইক প্রোফাইলগুলো সম্পর্কে তথ্য দিয়েছেন। পরবর্তীতে মেটা নিজেদের প্ল্যাটফর্ম থেকে এইমস-এর সঙ্গে যুক্ত বটগুলো সরিয়ে ফেলে। তবে ঠিক একই ধরনের বটগুলো ফেসবুকে ফিরিয়ে আনার জন্য বিভিন্ন পন্থায় চেষ্টা করা হচ্ছে।  

মেটার এক মুখপাত্র জানান, 'সম্প্রতি বটগুলোকে ফিরিয়ে আনার জন্য ভিন্ন নামে বেশ কয়েকবার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু আমাদের পলিসি ভঙ্গ করায় আমরা সেগুলোকে প্ল্যাটফর্ম থেকে সরিয়ে দিয়েছি। নির্দিষ্ট এ গোষ্ঠী ইন্টারনেটে ফেইক পিটিশন ও মিডিয়ায় ভুল তথ্য পরিবেশন করে থাকে।'

অন্যের টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টে ঢুকে মেসেজ পাঠাতে পারে টিম জর্জ। ছবি: হারেৎজ

শুধু অ্যাভাটারই নয়, বরং প্রতিবেদকদে সঙ্গে সাক্ষাৎকালে হানান তাদের কাছে থাকা 'ব্লগার মেশিন' সম্পর্কেও ধারণা দেন। এটি মূলত একটি স্বয়ংক্রিয় সিস্টেম যা খুব সহজেই ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারে। পরবর্তীতে এই ওয়েবসাইটগুলো ব্যবহার করেই ফেইক প্রোফাইলগুলোর মাধ্যমে ফেইক নিউজ ছড়িয়ে দেয়। পরিকল্পিতভাবে গুজব ছড়ানোর এ তথ্যগুলো সম্পর্কে হানান বলেন, 'আপনি যখন বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করে ফেলবেন, তখন খুব সহজেই প্রভাবিত করতে পারবেন।'

বর্তমানে জনপ্রিয় মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম হিসেবে টেলিগ্রাম বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়। এছাড়াও জিমেইল ব্যবহার করে বহু গুরুত্বপূর্ণ অফিসিয়াল কার্যাবলি সম্পাদন করা হয়। কিন্তু সেই টেলিগ্রাম ও জিমেইলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েই হানান দিয়েছে ভয়ংকর সব তথ্য। 

সাক্ষাৎকারে হানান একটি জিমেইল একাউন্ট হ্যাক করেন যেটি কিনা কেনিয়ার এক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সহযোগীর। দেশটিতে কিছুদিন পরেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্দিষ্ট ইমেইলের ড্রাইভ, ড্রাফট ফোল্ডার ও ইমেইলগুলো দেখাতে দেখাতে হানান বলেন, 'বর্তমানে কেউ যদি ইমেইল ব্যবহার করেন, তবে তিনি শুধু ইমেলই নয়, বরং এর থেকে বাড়তি কিছু ব্যবহার করছেন।'

এরপর হানান এনক্রিপটেড ম্যাসেজিং অ্যাপ হিসেবে খ্যাত টেলিগ্রামের প্রাইভেসি ভেঙে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের অ্যাকাউন্টে প্রবেশের দাবি করেন। তিনি প্রথমে একজন ইন্দোনেশিয়ান এবং পরবর্তীতে দুইজন কেনিয়ান ব্যক্তির টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করে দেখান। কেনিয়ান সে দুইজন ব্যক্তি বর্তমানে দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটোর ঘনিষ্ঠ। 

কেনিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট রুটোর আরেক সহযোগীর টেলিগ্রাম মেসেজ দেখাতে দেখাতে হানান বলেন, 'আমি জানি অনেক দেশের মানুষই মনে করেন যে টেলিগ্রাম খুবই নিরাপদ। তবে আমি আপনাদের দেখাব টেলিগ্রাম আসলেই কতটা নিরাপদ!'

হানান জানান, তার প্রতিষ্ঠান মূলত ম্যাসেজিং আপ ব্যবহার করে এক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে গোপনে মেসেজ করে থাকেন। এতে করে একজনের সাথে আরেকজনের ভুল বোঝাবুঝি ও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে সুযোগ বুঝে সেই মেসেজ ব্যবহারকারী দেখার আগেই মুছে দেওয়া হয়। এর ফলে মেসেজিংয়ের আর কোনো প্রমাণই থাকে না।   

তবে পাঠানো সব মেসেজই যে টিম জর্জ মুছে দিতে পারে, বিষয়টি এমন নয়। কিছু কিছু মেসেজ অনেক সময় মুছে দেওয়া সম্ভব হয় না। টেলিগ্রামের মাধ্যমে গোপনে মেসেজ করার যে দাবি টিম জর্জ করেছে সেটির সত্যতা পেয়েছেন তদন্তের সাথে যুক্ত একজন প্রতিবেদন। ওই প্রতিবেদক একজন ভুক্তভোগীর অনুমতি নিয়ে তার টেলিগ্রাম চেক করে মুছতে না পারা টিম জর্জের মেসেজের অস্তিত্ব পেয়েছেন।  

হ্যাকিংয়ের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে হানান সাংবাদিকদের বলেন, 'গ্লোবাল সিগনালিং টেলিকম সিস্টেমের দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে অনেক সময় এ হ্যাকিংগুলো করা হয়।' অন্যদিকে বহু আগে থেকেই বিশেষজ্ঞদের পক্ষ থেকেও এই গ্লোবাল সিস্টেমটির দুর্বলতা নিয়ে বহু সমালোচনা করা হয়েছে। 

জিমেইল পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান গুগলের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে প্রতিষ্ঠানটি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। অন্যদিকে একই বিষয়ে টেলিগ্রামের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হলে প্রতিষ্ঠানটি বরং গ্লোবাল সিগনালিং টেলিকম সিস্টেমকেই দায়ী করে। টেলিগ্রামের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, 'যেকোনো মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমই হ্যাক হতে পারে যদি ব্যবহারকারীরা ঠিকঠাক নিজেদের অ্যাকাউন্টকে সুরক্ষিত রাখতে দেওয়া নির্দেশনা না মানেন।'

গোপনে সাক্ষাৎকার ছাড়াও পরবর্তীতে হানানের সাথে প্রতিবেদনে স্বার্থে গার্ডিয়ানের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলেও তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি। বরং নিজেকে নির্দোষ দাবি করে হানান জানান, এ বিষয়ে মন্তব্য করার জন্য তাকে নির্দিষ্ট একটি কর্তৃপক্ষের 'অনুমতি' নিতে হবে। অন্যদিকে দলটির প্রধান নির্বাহী হিসেবে দাবি করা জোহার বলেন, 'আমি সারাজীবন আইনসম্মতভাবেই কাজ করে যাচ্ছি।'


  • সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Related Topics

টপ নিউজ

টিম জর্জ / ইসরায়েলি হ্যাকিং গোষ্ঠী / নির্বাচন প্রভাবিত করা / হ্যাকিং / সাইবার নিরাপত্তা

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • আন্দোলনরত প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠকে দুই উপদেষ্টা
  • সরকারের গঠিত কমিটি প্রত্যাখ্যান, নতুন করে ৫ দফা ঘোষণা প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের
  • প্রতিবেশী দেশের ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের অবস্থান দেখে সমস্যা সমাধান করা হবে: ফাওজুল কবির খান
  • মব করে আমাকে ফাঁসানো হয়েছে: আদালতে ডাকসুর ভিপি প্রার্থী জালাল 
  • যে দাবিতে শাহবাগ অবরোধ করেছেন প্রকৌশল শিক্ষার্থীরা
  • এস আলমের লুটপাট যেভাবে একটি শীর্ষ ব্যাংককে সাফল্যের চূড়া থেকে সংকটে নামিয়ে আনল

Related News

  • দুর্বল পাসওয়ার্ড থেকে হ্যাকারদের হামলায় যেভাবে ধ্বংস হয়ে গেল ১৫৮ বছরের কোম্পানি
  • সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫-এর গেজেট প্রকাশ
  • সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের প্রাথমিক খসড়া অনুমোদন
  • ব্যাংকগুলোতে সাইবার হামলার ঝুঁকি বাড়ছে: কেন্দ্রীয় ব্যাংক
  • এক মিনিটেই কিংবা এক ঘণ্টারও কম সময়ে অধিকাংশ পাসওয়ার্ড ক্র্যাক করা সম্ভব: গবেষণা

Most Read

1
বাংলাদেশ

আন্দোলনরত প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠকে দুই উপদেষ্টা

2
বাংলাদেশ

সরকারের গঠিত কমিটি প্রত্যাখ্যান, নতুন করে ৫ দফা ঘোষণা প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের

3
বাংলাদেশ

প্রতিবেশী দেশের ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের অবস্থান দেখে সমস্যা সমাধান করা হবে: ফাওজুল কবির খান

4
বাংলাদেশ

মব করে আমাকে ফাঁসানো হয়েছে: আদালতে ডাকসুর ভিপি প্রার্থী জালাল 

5
বাংলাদেশ

যে দাবিতে শাহবাগ অবরোধ করেছেন প্রকৌশল শিক্ষার্থীরা

6
অর্থনীতি

এস আলমের লুটপাট যেভাবে একটি শীর্ষ ব্যাংককে সাফল্যের চূড়া থেকে সংকটে নামিয়ে আনল

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net