সরকারের গঠিত কমিটি প্রত্যাখ্যান, নতুন করে ৫ দফা ঘোষণা প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের

অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত কমিটি প্রত্যাখ্যান করে নতুন করে পাঁচ দফা দাবি ঘোষণা করেছেন আন্দোলনরত প্রকৌশল শিক্ষার্থীরা। তারা জানিয়েছেন, সরকারের স্বরাষ্ট্র ও শিক্ষা উপদেষ্টা শাহবাগে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কাছে এসে তাদের দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
বুধবার (২৭ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী জুবায়ের আহমেদ পাঁচটি দাবি উত্থাপন করেন।
শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের ওপর পুলিশি হামলার ঘটনায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে ও জবাবদিহি করতে হবে।
একই সঙ্গে শিক্ষার্থীরা সরকারের গঠিত তদন্ত কমিটি প্রত্যাখ্যান করে তাদের পূর্বঘোষিত তিন দফা দাবিকে নির্বাহী আদেশে প্রজ্ঞাপন আকারে জারির দাবি জানান।
শিক্ষার্থী জুবায়ের আহমেদ বলেন, 'সরকারের পক্ষ থেকে গঠিত কমিটিতে আমাদের প্রতিনিধিত্বের অনুপস্থিতি থাকায় আমরা সেটি প্রত্যাখ্যান করলাম।'
এছাড়া, আন্দোলন চলাকালে আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা ব্যয় সরকারের বহন করা, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, বুয়েটের সাবেক শিক্ষার্থী প্রকৌশলী রোকনুজ্জামান রোকনের ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও চাকরি থেকে বহিষ্কার এবং হামলায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা।
শিক্ষার্থীরা স্পষ্ট করে বলেন, তাদের পাঁচ দফা দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন থেকে সরে আসবেন না।
আন্দোলনরত প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের ৫ দাবি
১. স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে শিক্ষার্থীদের ওপর বর্বরোচিত ও ন্যাক্কারজনক হামলার জন্য আন্দোলনকারীদের সামনে এসে ক্ষমা চাইতে হবে এবং জবাবদিহি করতে হবে।
২. প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এর আগে গঠিত কমিটিকে আমরা আমাদের প্রতিনিধিত্বের অনুপযুক্ত মনে করি এবং প্রত্যাখ্যান করি। অতি দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রতিনিধিসহ প্রকৌশল আন্দোলনের স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে নিয়ে কমিটি সংস্কার করে পেশকৃত তিন দফা দাবি দ্রুততম সময়ের মধ্যে মেনে নিয়ে নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে এবং এ মর্মে সংশ্লিষ্ট তিন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, আদিলুর রহমান ও সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানকে আজই এসে এর নিশ্চয়তা দিতে হবে।
৩. হামলায় আহত সব শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ব্যয়ভার সরকারকে বহন করতে হবে এবং এই আন্দোলন চলাকালে সব শিক্ষার্থীর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। পুলিশ দিয়ে এই যৌক্তিক আন্দোলনে আর কোনো হামলা করা যাবে না।
৪. রোকন ভাইয়ের ওপর হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে এবং চাকরি থেকে বহিষ্কার করতে হবে।
৫. শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনে হামলার জন্য ডিসি মাসুদকে বহিষ্কার করতে হবে।
আজ সকাল ১১টার দিকে প্রকৌশলের শিক্ষার্থীদের পূর্বঘোষিত 'লংমার্চ টু ঢাকা' কর্মসূচির অংশ হিসেবে তিন দফা দাবি আদায়ে শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়। দুপুর দেড়টার দিকে তাদের যমুনা অভিমুখে পদযাত্রায় বাধা দেয় পুলিশ। এ সময় পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়, ইট, টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এ সময় বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য ও শিক্ষার্থী আহত হন। এরপর থেকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনের সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।