Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Tuesday
June 03, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
TUESDAY, JUNE 03, 2025
কের্চ সেতু, নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইনে হামলা চৌকস নাশকতাকারীদের কাজ

আন্তর্জাতিক

স্টিফেন ব্রিয়েন, শোশানা ব্রিয়েন; এশিয়া টাইমস
15 October, 2022, 10:30 pm
Last modified: 16 October, 2022, 10:44 am

Related News

  • যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক চুক্তি প্রস্তাবে ইরানকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার অনুমতি!
  • যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতারিতদের নিজ দেশে ফেরত না পাঠিয়ে কেন অন্য দেশে পাঠানো হচ্ছে?
  • কলোরাডোয় সমাবেশে বোমা হামলা, আহত ৮
  • রাশিয়ার বিমানঘাঁটিতে হামলার আগে কাঠের ছাউনিতে ড্রোন লুকিয়ে রেখেছিল ইউক্রেন
  • রুশ বিমানঘাঁটিতে ব্যাপক ড্রোন হামলা, ৪০টি যুদ্ধবিমান ধ্বংসের দাবি ইউক্রেনের

কের্চ সেতু, নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইনে হামলা চৌকস নাশকতাকারীদের কাজ

ইউক্রেনের গোপন সব পরিকল্পনার দিকে নজর রাখলেও, আঘাত যে ট্রাকবোমার মাধ্যমে হতে পারে সেই সম্ভাবনা রুশ গোয়েন্দাদের নজর সম্পূর্ণ এড়িয়ে যায়। এটা খুবই সম্ভব যে, গ্রেজোনে প্রকাশিত ব্রিটিশ পরিকল্পনা ছিল, রুশ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের ব্যতিব্যস্ত রাখারই ছলচাতুরি। 
স্টিফেন ব্রিয়েন, শোশানা ব্রিয়েন; এশিয়া টাইমস
15 October, 2022, 10:30 pm
Last modified: 16 October, 2022, 10:44 am
কের্চ সেতুতে ট্রাক বোমা হামলা ছিল অত্যন্ত সফল একটি অপারেশন। ছবি: স্ক্রিনগ্র্যাব/ এশিয়া টাইমস

নর্ড স্ট্রিম ১ ও ২ পাইপলাইনে নাশকতার ঘটনায় চমকে ওঠে ইউরোপ। মহাদেশটির জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর দুই বিশ্বযুদ্ধের পর এটিই সবচেয়ে বড় হামলা। কে এর জন্য দায়ী– সে ধোঁয়াশা না কাটতেই আরেক অন্তর্ঘাত হলো ক্রিমিয়ায়। কের্চ প্রণালীর ওপর দিয়ে ক্রিমিয়া উপদ্বীপকে রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডের সাথে যুক্তকারী সেতুটিকে ট্রাক বোমা বিস্ফোরণে ধ্বংস করা হয়েছে। গোপন আঘাতগুলির ধরন এবং এজন্য প্রয়োজনীয় সক্ষমতা, দক্ষতার বিশ্লেষণ করেছেন স্টিফেন ব্রিয়েন ও শোশানা ব্রিয়েন। এশিয়া টাইমসে শনিবার (১৫ অক্টোবর) প্রকাশিত ওই নিবন্ধের নির্বাচিত সারসংক্ষেপের ভাবানুদিত অংশ টিবিএসের পাঠকের জন্য তুলে ধরা হলো— 

এটি এখন দিবালোকের মতো স্পষ্ট হয়ে উঠছে যে, নর্ড স্ট্রিম ১ ও ২ এবং ক্রিমিয়া-কের্চ সেতু ধ্বংসের কাজগুলি করতে সর্বাধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সহায়তা নেওয়া হয়েছে, যা একমাত্র গোপন বাহিনীর সুপ্রশিক্ষিত ও সর্বোচ্চ দক্ষতার সদস্যদের পক্ষেই করা সম্ভব। এই ব্যক্তিরা সঙ্গোপনে অপারেশন পরিচালনায় বিশেষভাবে দক্ষ বা 'সিক্রেট অপারেটর'।

রাশিয়ার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এফএসবি) প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে জানিয়েছে, কের্চ সেতুর একটি অংশকে ধ্বংসকারী (বোমাবাহী) ট্রাকটিতে ২২টি প্লাস্টিকের ফিল্ম রোলে মুড়িয়ে রাখা প্যালেটের মধ্যে বিস্ফোরক লুকিয়ে রাখা হয়েছিল।

প্যালেট হলো বাক্সের ওজনের ভারবহন করতে পারে এমন প্ল্যাটফর্ম। গুদামে মালামাল স্তূপীকৃত করে রাখা, সমাবেশ ও পরিবহনের সুবিধার জন্য প্যালেটের আছে বহুল ব্যবহার।

এফএসবির তথ্যমতে, এভাবে প্রায় ২২ হাজার ৭৭০ কেজি ওজনের বিস্ফোরক লুকিয়ে বহন করছিল ট্রাকটি।  নিঃসন্দেহে এত বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক লুকানোর ব্যবস্থা করা যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং, এবং একমাত্র বিশেষ বাহিনীর পক্ষেই করা সম্ভব। 

এজন্য ইউক্রেনের বিশেষ বাহিনী– সিক্রেট সার্ভিস অভ ইউক্রেন (এসএসইউ) দায়ী, বলছে রাশিয়া। তবে এত বড় বোমা তৈরিতে কিয়েভের উল্লেখযোগ্য পেশাদারি সহযোগিতার প্রয়োজন। যেমন উল্লেখ করা যেতে পারে, মার্কিন যুদ্ধাস্ত্রের ভাণ্ডারে থাকা সবচেয়ে বড় বাঙ্কার ব্লাস্টার বোমা জিবিইউ-৫৭ এ/বি'র ওজন এর চেয়েও কম বা ১৪ হাজার কেজি। বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞদেরই একথা জানার কথা যে, কের্চ সেতুর একটি অংশ ধ্বংস করতে এর চাইতেও শক্তিশালী বোমা প্রয়োজন হবে। 

গত ১০ অক্টোবর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার সাইট গ্রেজোন জানায়, গত এপ্রিলে কের্চ সেতু উড়িয়ে দেওয়ার একটি পরিকল্পনা করে ব্রিটিশ গুপ্তচর সংস্থা এমআই-৬। পরিকল্পনাটি তারা ইউক্রেনের সাথেও শেয়ার করে।

গ্রেজোনের প্রতিবেদন অনুসারে, ব্রিটিশ পরিকল্পনায় সাগরপথে দরকারি বিস্ফোরক পরিবহনের কৌশল ছিল। খুব সম্ভবত তা করা হতো বিশেষ ডুবোযান বা ডুবুরির মাধ্যমে। বিকল্প হিসেবে ক্রজ মিসাইল ব্যবহারের সুপারিশ করে ব্রিটিশ বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু, শেষোক্ত উপায়ে হামলা করলে– এর দায় এড়ানোর সুযোগও থাকতো না।

পরিকল্পনার বিষয়ে আগে থেকে রাশিয়ানদেরও আঁচ করা কথা। এজন্যই পানির নিচ দিয়ে হামলার সম্ভাবনা ঠেকাতে একটি বিশেষ বাহিনীও সেতু পাহারায় নিয়োজিত করে তারা। এমনকী ক্রুজ মিসাইলের হামলা ঠেকাতে সিরিয়া থেকে ক্রিমিয়ায় স্থানান্তর করে কিছু এস-৩০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।  

গ্রেজোনের এই সংবাদ সঠিক হলে, রাশিয়ানদের সময়মতো পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার ফলেই বাধ্য হয়ে মূল পরিকল্পনায় রদবদল করতে হয়। আর তাই বিকল্প পদ্ধতি নিতে হয়েছে। যদিও এই তত্ত্বের স্বপক্ষে এখনও কোনো প্রমাণ মেলেনি। বিশেষত জানা যায়নি, সত্যিই এ সেতু অচল করে দিতে কতখানি শক্তিশালী বিস্ফোরক দরকার– তা নিরুপণে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র বিশেষজ্ঞদের নিযুক্ত করেছিল কিনা। 

কের্চ সেতুর রেলপথে একটি জ্বালানিবাহী ট্যাংকার ট্রেনে বিস্ফোরণের ফলে আগুন লেগে যায়। ছবি: টুইটার/ স্ক্রিনগ্র্যাব

আরেকদিকে, একথাও সত্য ইউক্রেনের তৈরি ক্রুজ মিসাইলগুলোর– নির্ভুলভাবে আঘাত হানা ও দরকারি ধ্বংস ক্ষমতা– দুই দিক দিয়েই ঘাটতি রয়েছে। সে তুলনায়, কিয়েভকে দেওয়া হিমার্স সিস্টেমের রকেট অনেকটাই নির্ভুল। হিমার্সের রকেটগুলি সেতুটি ধ্বংস করতে না পারলেও সাময়িক অচল করে দিতে পারতো। 

ইউক্রেনকে দেওয়া হিমার্স রকেট অ্যামিউনিশনগুলির ওয়ারহেড বা বিস্ফোরক্মুখের ওজন মাত্র ৯০ কেজি। কের্চ সেতুকে মৃদু আঁচড় কাটতো এ ধরনের দুই,চার বা দশটি রকেটের আঘাত। কিছুদিনের মেরামতি মাধ্যমে যা সহজেই সারিয়ে ফেলতে পারতো রুশ প্রকৌশলীরা। 

আবার, সত্যিই রাশিয়ানরা ব্রিটিশদের এই পরিকল্পনা সম্পর্কে আগে থেকে জেনে থাকলে– তারা ক্রুজ মিসাইল আগেভাগেই শনাক্ত করতে পারতো। এবং সেগুলি ধবংসও করে দিত। 

কের্চ সেতুতে হামলার জন্য দরকারিও ছিল অতি-শক্তিশালী ও সর্বাধুনিক রসায়ন পদ্ধটিতে তৈরি বিস্ফোরক। সেসব কোথা থেকে এলো, কোথায় সেগুলিকে সংযোজন করে বোমায় রূপ দেওয়া হলো, কীভাবে একাজে পুরোপুরি গোপনীয়তা রক্ষা করা হলো– সে সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। এফএসবির বিবৃতিতে শুধু এটুকুই বলা হয়েছে যে, কৃষ্ণসাগর উপকূলীয় ইউক্রেনীয় শহর ওডেসা থেকেই বিস্ফোরকের এই চালান এসেছে। 

ইউক্রেনের গোপন সব পরিকল্পনার দিকে নজর রাখলেও, আঘাত যে ট্রাকবোমার মাধ্যমে হতে পারে সেই সম্ভাবনা রুশ গোয়েন্দাদের নজর সম্পূর্ণ এড়িয়ে যায়। এটা খুবই সম্ভব যে, গ্রেজোনে প্রকাশিত ব্রিটিশ পরিকল্পনা ছিল, রুশ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের ব্যতিব্যস্ত রাখারই ছলচাতুরি। 

যুক্তরাজ্য আগেও এ ধরনের ছলনার মাধ্যমে শত্রুকে বিভ্রান্ত করতে চমৎকারভাবে সফল হয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালের 'অপারেশন মিনসমিট'। এই অভিযান ছিল একজন ব্রিটিশ নাগরিকের মৃতদেহকে সামরিক বাহিনীর অফিসারের পোশাক পরে সাগরে এমনভাবে ভাসিয়ে দেওয়া যাতে সেটির সাথে থাকা 'গুরুত্বপূর্ণ নথি' জার্মানদের হাতে আসে। 

নথিতে ছিল নাৎসি অধিকৃত ফ্রান্সে ভুয়া আক্রমণের পরিকল্পনা। জার্মানরা ভেবে বসে ব্রিটিশ অফিসারটি গোপন নথি নিয়ে সমুদ্রপথে যাবার সময় দুর্ঘটনার শিকার হয়ে মারা গেছেন। (আর হতে পারে, সেটা জার্মান ইউবোট বা সাবমেরিনের টর্পেডো হামলার ফলেই)। আর এই নথিগুলোকে বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য সেখানে গোপন অনেক তথ্যও ফাঁস করে দিয়েছিল ব্রিটিশ সরকার। এমন তথ্য দেওয়া হয়, যা জার্মানদের ছোটখাট লড়াইয়ে সাফল্য দেবে, কিন্তু যুদ্ধজয়ে তার প্রভাব পড়বে না। মূল পরিকল্পনা সম্পর্কে আবার ব্রিটিশ সরকারেরই খুব কম সংখ্যক শীর্ষ কর্মকর্তা জানতেন। 

ব্যাপক সাফল্য পায় এই ছলনা। এর প্রতিটি পর্যায় অত্যন্ত বুদ্ধিদীপ্তভাবে সম্পন্ন করে যুক্তরাজ্য। তাই ধরে নেওয়া যায়, এবারও ঐতিহাসিক সে সাফল্যের পুনরাবৃত্তি করতে পারলেন বর্তমান প্রজন্মের ব্রিটিশ গোয়েন্দারা।

এমআই-৬ এর মতো বিখ্যাত গোয়েন্দা সংস্থার প্রতি সন্দেহ জাগা তাই অস্বাভাবিক নয়। যেহেতু এই ব্রিজ বোমা হামলার সংগঠকরা অত্যন্ত গোপনে রাখতে পেরেছে তাদের আসল পরিকল্পনা।

নিউজউইক-সহ কয়েকটি গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, হামলার কাজে একটি নয় দুটি ট্রেইলার ট্রাক ব্যবহার করা হয়েছে। তবে বিস্ফোরক ছিল কেবল একটিতে। 

ট্রাক দুটি তুরস্ক থেকে আর্মেনিয়া ও জর্জিয়া হয়ে রাশিয়ার সীমান্তে আসে। এটির মধ্যেই বিশেষ মোড়কে মুড়িয়ে রাখা ছিল বিস্ফোরক, যাতে সীমান্ত চৌকির এক্স-রে স্ক্যানে বিস্ফোরকের অস্তিত্ব গোপন থাকে। 

রাশিয়ার সীমান্তে প্রবেশের পরই এই ট্রাকগুলোর ট্রেইলার অন্য রাশিয়ান ট্রাকে যুক্ত করা হয়। বিস্ফোরক বহন করছিল প্রথম ট্রাকটি। কের্চ সেতুর বেশ আগে স্ক্যানার ফাঁকি দিতে প্রথম ট্রাকের ট্রেইলার আবার দ্বিতীয় ট্রাকে যুক্ত করা হয়। 

রাশিয়ান সূত্রগুলির দাবি, ট্রাক দুটি ব্রিজে ওঠার পর এ দুটির তল্লাশি নেয় নিরাপত্তা রক্ষীরা। এতে বোঝা যায়, কের্চ সেতুতে যথেষ্ট অভিজ্ঞ ও দক্ষ নিরাপত্তা কর্মী রাখেনি রাশিয়া। নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনাও অপরিমিত ছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। 

বিশেষজ্ঞরা অনেকেই মনে করছেন, ট্রাকচালক বিস্ফোরক বোঝাই ট্রেইলার সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। ফলে ট্রাকটি মূল সেতুতে আসার পর দূর থেকে রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। স্বাভাবিকভাবেই এত প্রচণ্ড বিস্ফোরণে মুহূর্তেই ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় ওই চালকের দেহ।  

ইউক্রেনীয় গণমাধ্যমের কিছু প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিস্ফোরণ ব্রিজের স্প্যানের ওপর নয় বরং সাগরের দিক থেকে এসেছে। কিন্তু, এই তত্ত্বের স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ তারা দিতে পারেনি। 

নর্ড স্ট্রিম অপারশন

সাগরতলে নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইনে হামলাও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি আর সুদক্ষ অপারেশনের প্রমাণ দেয়। যদিও এটি শুরুতেই ভেস্তে যেতে পারতো।

যেমন ২৬ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় দুপুর ২.০৩ মিনিটে ডেনমার্কের বর্নহল্ম দ্বীপের কাছে প্রথম বিস্ফোরণ শনাক্ত হয়। ঘটনা কী হলো– জানতে সঙ্গেসঙ্গেই সাগরের ওই এলাকায় দুটি এফ-১৬ ফাইটার জেট পাঠায় ডেনিশ এয়ারফোর্স। বিমানদুটি সাগরপৃষ্ঠে গ্যাস লিকেজ শনাক্ত করে। 

প্রথম বিস্ফোরণ ছিল অপেক্ষাকৃত ছোট এবং ভূকম্পন মাপার যন্ত্রেই কেবল তা শনাক্ত করা গেছে। আর মিথেন গ্যাস নিঃসরণের শব্দও শোনা গেছে তারপর। 
 
রাত ৭.০৪ মিনিটে পাইপলাইনের রুটে আরও শক্তিশালী একটি বিস্ফোরণ হয় সুইডেনের এয়ার ডিফেন্স আইডেন্টিফিকেশন জোনের মধ্যে। ভূকম্পন বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বিস্ফোরণ তরঙ্গ ১০০ কেজির বেশি তবে ২০০ কেজির চেয়ে কম ছিল, যা কিনা ২.৩ মাত্রার ভূমিকম্পের সমান। 

এই হামলার সাথে সম্পর্কিত কিছু ঘটনাও জানা দরকার। যেমন ২০১৫ সালের নভেম্বরেই রাশিয়ার গ্যাজপ্রম ব্রনহল্ম দ্বীপের কাছকাছি এলাকায় নর্ড স্ট্রিম-১ পাইপলাইনের কাছে ফেলে যাওয়া একটি ডিভাইস আবিষ্কার করে। 
যন্ত্রটি ছিল জার্মান কোম্পানি অ্যাটলাসের তৈরি 'সি-ফক্স' (ড্রোন) ডুবোযান। এটি ব্যবহারের পর পরিত্যাগযোগ্য। ড্রোনটি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিল একটি ফাইবার অপটিক ক্যাবল দিয়ে। আবিষ্কারের সময় যানটির সাথে তখনও যুক্ত থাকা সেই তারের কিছু অংশ পায় ডুবুরিরা।  

সি-ফক্স ড্রোন। ছবি: ইউএস নেভি

ব্যাটারি চালিত সি-ফক্স ডুবোযান মাইন ধ্বংস করতে ১.৪ কেজি ওজনের শেপড চার্জ বিস্ফোরক বহন করে। ব্যাটারির চার্জ থাকে খুবই কম সময় বা মাত্র ১০০ মিনিট।  ড্রোনটিকে উদ্ধার করে নিস্ক্রিয় করে ডেনিশ কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীতে এটি হারিয়ে গিয়েছিল বলে স্বীকার করে মার্কিন নৌবাহিনী। কিন্তু, পাইপলাইনের কাছে যানটি কী করছিল– কখনই সে ব্যাখ্যা দেয়নি। 

বর্তমানের সাথে অতীতের প্রাসঙ্গিকতা এখানেই যে, সি-ফক্স ছোট আকারের বিস্ফোরক বহন করলেও-সাগরতলে পাইপলাইন ও মাইন ধবংসে সেটি অত্যন্ত সক্ষম। 

তাহলে বেশ কয়েক ঘণ্টা কেটে যাওয়ার পর আরও শক্তিশালী দ্বিতীয় বিস্ফোরণের রহস্য কী? যখন প্রথমে ব্যবহৃত ছোট বিস্ফোরকই পাইপলাইনের ক্ষতি করেছে সেটির চাক্ষুষ প্রমাণ পায় ডেনিশ বিমানবাহিনী। 

খুব সম্ভবত বর্নহল্মের কাছাকাছি প্রথম বিস্ফোরণের ফলাফলে সন্তুষ্ট হতে পারেননি এই অপারেশনের পরিকল্পনাকারীরা। তাই দ্বিতীয়বার আরও বড় পরিসরে চেষ্টা করে। সেক্ষেত্রে সি-ফক্সের মতো একাধিক ডুবোযান (ড্রোন) একসাথে ব্যবহার করা হতে পারে। 

তৃতীয় এবং সবচেয়ে শক্তিশালী বিস্ফোরণটির ব্যাখ্যা হতে পারে, অজান্তেই কোনো পুরোনো মাইনের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ফেলতে পারে ড্রোন। কারণ বাল্টিক সাগরের তলায় প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের এমন অনেক অবিস্ফোরিত মাইন ও গোলাবারুদ আজো রয়ে গেছে।  

ধারণা করা হয়, বাল্টিক সাগরে প্রায় ৮০ হাজার জার্মান ও রাশিয়ান মাইন বেছানো হয়েছে, যেগুলির কোনো ম্যাপ পাওয়া যায়নি। ফলে এগুলি শনাক্ত করাও সম্ভব হয়নি। সাগরতলে প্রাচীন এ মাইনগুলি আজো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। 

নর্ড স্ট্রিম-১ পাইপলাইন তৈরির সময়েই এ ধরনের মাইন এড়াতে যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করা হয়। এসময় অনেক মাইন সাগরতলে পুঁতে ফেলা হয় বা ধ্বংস করা হয়।  
 
উত্তর ইউরোপের দেশগুলি বাল্টিক সাগরকে বিপজ্জনক এসব মাইন থেকে বিপদমুক্ত করার অনেক চেষ্টা চালিয়েছে। কিন্তু, তবুও অজানায় রয়ে যাওয়া মাইনের খুব সামান্য অংশই উদ্ধার করতে পেরেছে তারা। 

ডেনমার্ক এখন দাবি করছে, সাগরতলে বেছানো মাইন নিয়ে বিপত্তির কারণেই ব্রনহল্মের কাছের সমুদ্রে প্রথম বিস্ফোরণের তদন্ত বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। 

আসল ঘটনা যাই হোক– কের্চ সেতুর মতোই নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইন দুটিও যে অতি-উচ্চ মানের সুপ্রশিক্ষিত বাহিনীর কাজ এনিয়ে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই। সাগরতলের এই অপারেশনে পেশাদার ডুবুরি ও সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ডুবোযান ব্যবহার করতে হয়েছে, নাহলে এভাবে পাইপলাইনের ক্ষতি করা সম্ভব ছিল না। 

মার্কিন নৌবাহিনীর বিশেষ বাহিনী নেভি সিলস, যারা সমুদ্রতলে বিস্ফোরণ ঘটাতে ওস্তাদ। এই বাহিনী এক ধরনের রাবারের তৈরি দ্রুতগতির নৌকা ব্যবহার করে, যাকে বলা হয় র‍্যাপিডলি ইনফ্লেটেড বোট বা আরআইবি। এটি ব্রিটিশ, জার্মান, সুইডিশ, ডেনিশ, পোলিশ এবং অন্যান্য ইউরোপীয় নৌবাহিনীও ব্যবহার করে। এই নৌকাগুলি থেকে সহজেই সি-ফক্স বা এ ধরনের অন্যান্য ড্রোন মোতায়েন করা যায়। 

বিস্ফোরক স্থাপনের পর দ্রুতই ওই এলাকা ত্যাগ করে নাশকতাকারীরা। বিস্ফোরণ রিমোট কন্ট্রোল বা টাইম ফিউজ দুইভাবেই ঘটানো হতে পারে। এসব কিছু প্রযুক্তিগতভাবে অগ্রসর একটি প্রতিপক্ষের দিকেই ইঙ্গিত দেয়, যারা একইসাথে সূচারু পরিকল্পনা বাস্তবায়নেও সমান পারদর্শী। 

 

Related Topics

টপ নিউজ / মতামত

ইউক্রেন যুদ্ধ / কের্চ সেতু / নর্ড স্ট্রিম / নাশকতা / রাশিয়া / যুক্তরাষ্ট্র / যুক্তরাজ্য

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বিশেষ প্রণোদনা, পাবেন জুলাই থেকে
  • সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধা বাড়ানোর ঘোষণা অর্থ উপদেষ্টার
  • যেসব পণ্যের দাম কমতে পারে, যেসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে
  • নোবেল পুরস্কারসহ ৯ ধরনের পুরস্কারের আয়ে দিতে হবে না কর
  • ঢাকার পরিবহন ব্যবস্থায় ৪০০ ইলেকট্রিক বাস যুক্ত করার ঘোষণা
  • এখন থেকে বছরে একবারের বেশি ব্যাগেজ রুলসের সুবিধায় স্বর্ণ আনা যাবে না

Related News

  • যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক চুক্তি প্রস্তাবে ইরানকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার অনুমতি!
  • যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতারিতদের নিজ দেশে ফেরত না পাঠিয়ে কেন অন্য দেশে পাঠানো হচ্ছে?
  • কলোরাডোয় সমাবেশে বোমা হামলা, আহত ৮
  • রাশিয়ার বিমানঘাঁটিতে হামলার আগে কাঠের ছাউনিতে ড্রোন লুকিয়ে রেখেছিল ইউক্রেন
  • রুশ বিমানঘাঁটিতে ব্যাপক ড্রোন হামলা, ৪০টি যুদ্ধবিমান ধ্বংসের দাবি ইউক্রেনের

Most Read

1
অর্থনীতি

সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বিশেষ প্রণোদনা, পাবেন জুলাই থেকে

2
অর্থনীতি

সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধা বাড়ানোর ঘোষণা অর্থ উপদেষ্টার

3
অর্থনীতি

যেসব পণ্যের দাম কমতে পারে, যেসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে

4
বাংলাদেশ

নোবেল পুরস্কারসহ ৯ ধরনের পুরস্কারের আয়ে দিতে হবে না কর

5
বাংলাদেশ

ঢাকার পরিবহন ব্যবস্থায় ৪০০ ইলেকট্রিক বাস যুক্ত করার ঘোষণা

6
অর্থনীতি

এখন থেকে বছরে একবারের বেশি ব্যাগেজ রুলসের সুবিধায় স্বর্ণ আনা যাবে না

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net