প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টারের অনলাইন চালু, ছাপা হয়েছে পত্রিকাও
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট হামলার ঘটনায় একদিন বন্ধ থাকার পর দেশের শীর্ষস্থানীয় দুই দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার ও প্রথম আলোর অনলাইন ও মুদ্রিত প্রকাশনা আবারও চালু হয়েছে।
আক্রান্ত হওয়ার পর গতকাল ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে দ্য ডেইলি স্টার জানায়, 'শুক্রবার রাতে আমাদের অফিসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর দ্য ডেইলি স্টারের প্রকাশনা সাময়িকভাবে ব্যাহত হয়েছে। এ জন্য আমরা আমাদের পাঠকদের কাছে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি এবং সেবা পুনরুদ্ধারে কাজ করার সময় আপনাদের ধৈর্যের জন্য কৃতজ্ঞ জানাচ্ছি।'
পৃথক এক বিবৃতিতে প্রথম আলো জানায়, 'বিগত রাতে প্রথম আলোর কার্যালয় ব্যাপক হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের শিকার হওয়ায় আমাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। তাই আজ (১৯ ডিসেম্বর) প্রথম আলো ছাপা পত্রিকা প্রকাশ করা যায়নি। অনলাইন পোর্টালও সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে। পাঠকদের কাছে এ জন্য আমরা আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছি। যতটা দ্রুত সম্ভব ক্ষতিগ্রস্ত কারিগরি ব্যবস্থা পুনরুদ্ধার করে প্রথম আলোর অনলাইন ও পত্রিকার প্রকাশ শুরু করা হবে। এ বিষয়ে আমরা পাঠকদের সহযোগিতা প্রার্থনা করছি।'
দৈনিক দুটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিবিসি বাংলাকে জানান, আকস্মিক হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় কর্মীদের দ্রুত নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়। পরিস্থিতির কারণে কার্যালয়ের কার্যক্রম স্থগিত রাখতে হয় এবং এ কারণে গতকাল দুই পত্রিকার কোনোটিরই মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি।
নিউজরুমের অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পর কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে বলে জানান তারা। এ ঘটনায় সারাদেশে সাংবাদিকদের মধ্যে আতঙ্ক ও উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে কয়েকশ ক্ষুব্ধ বিক্ষোভকারী প্রথমে দৈনিক প্রথম আলো, তারপর দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।
পরে ফায়ার ব্রিগেডের গাড়ি এসে আগুন নেভাতে সমর্থ হয়। আগুন লাগার সময় অফিসের ভেতরে অনেকেই আটকা পড়েন বলে জানা যায়।
জানা যায়, আগুন লাগানোয় আতঙ্কিত হয়ে ছাদে চলে যান ভেতরে অবস্থানকারী সংবাদকর্মীরা। ডেইলি স্টারের আহমেদ দিপ্ত ফেসবুকে একটি ভিডিও আপলোড দেন। ক্যাপশনে তিনি লেখেন, 'এমন লেট নাইট ডিউটি যেন কারও জীবনে না আসুক। ছাদে আটকা পড়ছি, মাফ কইরা দিয়েন। ভবনে আগুন দিছে, দেখা নাও হতে পারে।'
আগুনের ধোঁয়ায় ভেতরে থাকা অনেকেই এসময় অসুস্থ হয়ে পড়েন। রাত ১২টা ৩৫ মিনিটে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পোঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা শুরু করে।
এ ঘটনায় কোনো প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি। তবে কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো ভবনে আগুন নেভাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দমকল বাহিনীর দুই সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে দ্য ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে হামলার সময় আটকে পড়া সাংবাদিকদের পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে গেলে একদল বিক্ষোভকারীর হাতে হয়রানি ও ধাক্কার শিকার হন দৈনিক নিউ এজ–এর সম্পাদক নুরুল কবির।
