গণমাধ্যমের ওপর হামলা আমাদের ব্যর্থতা হিসেবে ইতিহাসে লেখা থাকবে: নাহিদ ইসলাম
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির মৃত্যুর জেরে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাকে ব্যর্থতা হিসেবে অভিহিত করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেছেন, 'কারা জড়িত ছিল এটা সরকারকেই চিহ্নিত করে বিচার করতে হবে। আমাদের ব্যর্থতা হিসেবেই গতকালের এই ঘটনা ইতিহাসে লিখিত থাকবে।'
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) রাতে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ক্ষতিগ্রস্ত পত্রিকা দুটির কার্যালয় পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় সদ্য গঠিত 'গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট'-এর শরিক দল আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) ও বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের শীর্ষ নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
পরিদর্শন শেষে ডেইলি স্টার কার্যালয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, 'নির্বাচনী পরিবেশ ভণ্ডুল করার চেষ্টা চলমান আছে। পরিবেশ যেন সুষ্ঠু থাকে এজন্য রাজনৈতিক দল ও সরকারকে সচেষ্ট থাকতে হবে। নির্বাচন ছাড়া বাংলাদেশের অন্য কোনো গন্তব্য নেই।'
ফ্যাসিস্ট আমলে কিছু মিডিয়ার ভূমিকা নিয়ে অভিযোগ থাকলেও তার সমাধান সহিংসতা নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'অনেক মিডিয়া ফ্যাসিস্ট আমলে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। সেসব নিয়ে আমাদের অভিযোগ রয়েছে। তবে আমরা সেটা নিয়মতান্ত্রিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেছি। বাংলাদেশে দিনশেষে ন্যায়বিচার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে, কিন্তু সেটা অবশ্যই নিয়মতান্ত্রিকভাবে।'
জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, অভ্যুত্থানের শক্তিদের মাঠে থাকতে হবে, যেন কেউ কোনো গোষ্ঠীস্বার্থ কায়েম করতে না পারে বা বাংলাদেশের ক্ষতি করতে না পারে।
এবি পার্টির চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, 'সমবেদনা জানানোর ভাষা নেই। এটি দেশকে অকার্যকর ও নির্বাচনকে বানচাল করার একটা ষড়যন্ত্র। আজকের এই ভাঙচুরে সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছে ফ্যাসিস্ট হাসিনা। এসব দেখে সে হাসছে। এখানে প্রশাসনিক ব্যর্থতাও স্পষ্ট।'
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, 'প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে জুলাই আন্দোলনের যে স্মৃতিফলকগুলো ছিল, সেগুলোই আগে লুট হয়েছে। সরকার এখনো কোনো অপারেশন চালিয়ে কাউকে গ্রেপ্তার বা লুটপাটের মাল উদ্ধার করতে পারেনি। তবে এই অবস্থায় আমাদের হতাশ হলে চলবে না, সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।'
বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি হাসনাত কাইয়ূম বলেন, 'জুলাই অভ্যুত্থানের সময় এই পত্রিকা দুটির কমিটমেন্ট ছিল। সরকারের ভেতরে থেকে সরকারের বিরুদ্ধে যারা কাজ করছে, তাদের চিহ্নিত করতে না পারলে আগামী নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে।' তিনি দায়ীদের নিয়মতান্ত্রিক ও আইনি প্রক্রিয়ায় শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান।
