গণমাধ্যম ও ভিন্নমতের ওপর আক্রমণ রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক ভিত্তিতে আঘাত: টিআইবি
ওসমান বিন হাদির হত্যাকান্ডে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। একই সঙ্গে এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে মুক্ত গণমাধ্যম, ভিন্নমত ও বাকস্বাধীনতার ওপর যে ধ্বংসাত্মক আক্রমণ হয়েছে, তার তীব্র নিন্দা জানিয়ে সংস্থাটি বলেছে এটি রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক ভিত্তি, নাগরিক নিরাপত্তা ও জুলাই অভ্যুত্থানের মূল্যবোধের বিরুদ্ধে সরাসরি আঘাত।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এসব কথা বলেন।
টিআইবি তাদের বিবৃতিতে ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তারে সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেছে। ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, 'টার্গেটেড শুটিং-এ জড়িত সকলকে গ্রেপ্তারে সরকারের ব্যর্থতা এবং পার্শ্ববর্তী দেশে পালিয়ে যেতে সহায়তার অভিযোগে সৃষ্ট জনরোষ নিরসনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অদূরদর্শিতা ও অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। এর দায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এড়াতে পারে না।'
কর্তৃত্ববাদী শাসনের পতনের পর বিজয়ের দাবিদারদের একাংশের আচরণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, 'বিজয়ীদের একাংশের আক্রোশপূর্ণ ও প্রতিশোধপ্রবণ আচরণ রাষ্ট্র ও সমাজে নতুন ধরনের দমনমূলক প্রবণতার জন্ম দিচ্ছে। মুক্ত গণমাধ্যম ও ভিন্নমত এর সরাসরি শিকার হচ্ছে।'
তিনি আরও উল্লেখ করেন, প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের মতো শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ, দৈনিক নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীরের ওপর হামলা, সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটে হামলা এবং দীপু চন্দ্র দাসকে আগুনে পুড়িয়ে মারার ঘটনাগুলো বিচ্ছিন্ন নয়; বরং এগুলো মুক্তচিন্তা দমনের পরিকল্পিত উদাহরণ।
ড. ইফতেখারুজ্জামান সতর্ক করে বলেন, 'কর্তৃত্ববাদী শাসনামলে যেভাবে মানবাধিকার পদদলিত হয়েছিল, আজ সেই একই বাস্তবতা নতুন রূপে ফিরে আসছে। জুলাই আন্দোলনের বিজয়ী দাবিদারদের অনেকের হাতেই আজ ভিন্নমতের অধিকার ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে। এতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা ও মূল্যবোধ চরমভাবে হুমকির মুখে পড়েছে।'
তিনি ওসমান হাদির হত্যাকারীদের দ্রুত বিচার, উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যর্থতার জন্য জবাবদিহি এবং মুক্ত গণমাধ্যম ও নাগরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের কাছে কার্যকর পদক্ষেপের দাবি জানান। অন্যথায় বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ গভীর সংকটে পড়বে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
