হাদিকে গুলি করে ফয়সাল, মোটরসাইকেল চালায় আলমগীর
ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদিকে গুলি করা সন্দেহভাজন দুইজনকে শনাক্তের কথা জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। তাদের একজন ফয়সাল করিম মাসুদ, অন্যজন মো. আলমগীর শেখ।
ডিএমপির ভাষ্যমতে, এদের মধ্যে হাদিকে খুব কাছ থেকে গুলি করে ফয়সাল করিম এবং মোটরসাইকেল চালায় আলমগীর শেখ।
আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে এক ব্রিফিংয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) এস এন মো. নজরুল ইসলাম এসব তথ্য জানান। ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এই ব্রিফিং করা হয়।
নজরুল ইসলাম বলেন, হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় ইতোমধ্যে দুইজন সন্দেহভাজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। এদের একজন ফয়সাল করিম মাসুদ, অন্যজন মো. আলমগীর শেখ। সন্দেহভাজন এই দুই ব্যক্তি হেলমেট পরে খুব কাছ থেকে ওসমান হাদিকে গুলি করে। তাদের গ্রেপ্তারে ইতোমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে, এখনো অভিযান চলমান রয়েছে।
গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুর ২টা ২০ মিনিটে বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট রোড দিয়ে ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সায় করে যাওয়ার সময় ডিআর টাওয়ারের সময় শরীফ ওসমান হাদি মাথায় গুলিবিদ্ধ হন। হেলমেটপরা অবস্থায় ওই দুইজন মোটরসাইকেলে করে এসে তাকে গুলি করে। পরে হাদীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁর মাথায় অপারেশন করা হয়। পরে তাঁকে ওইদিন রাতেই রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। হাদির অবস্থা এখনো আশঙ্কাজনক।
হাদির সহযোদ্ধাদের দাবি, তাঁকে গুলি করা ব্যক্তিরা সকাল থেকে তার নির্বাচনী প্রচারণায় ছিল। তারা কয়েকদিন আগেই হাদির কাছে এসে নির্বাচনী প্রচারণায় যুক্ত হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিল। হাদি তাদের সাদরেই গ্রহণ করেন।
এদিকে রোববার সকাল থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুঞ্জন ছড়ায় হাদিকে গুলি করা দুই সন্দেহভাজন অবৈধভাবে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে পাশ্ববর্তী দেশ ভারতের গোহাটিতে চলে গেছেন। তবে এই বিষয়ে নিশ্চিত নয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এই বিষয়ে এস এন মো. নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা ইমিগ্রেশন ডেটাবেজ পরীক্ষা করে এখন পর্যন্ত তাদের পালিয়ে যাওয়ার কোনো তথ্য পাইনি। আমরা ফয়সালের পাসপোর্ট নম্বরটা পেয়েছি। তার সর্বশেষ বিদেশ ভ্রমণের তথ্য অনুযায়ী, জুলাইয়ে থাইল্যান্ড থেকে সে দেশে এসেছে। এরপর ইমিগ্রেশন ডাটাবেইজে তার বিদেশ যাওয়ার কোনো তথ্য নেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসা খবরটি আমরাও দেখেছি। আমরা বিজিবিকে সতর্ক করেছি, সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে তারা যেন পার হয়ে যেতে না পারে।
তিনি বলেন, আমরা তাদের পালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত নই। তারা দেশে আছে কিনা সেই বিষয়েও আমরা নিশ্চিত নই। আমাদের কাছে তথ্য থাকলে আমরা তাদের গ্রেপ্তার করতাম।
এদিকে এই ঘটনায় সন্দেহভাজন দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। তারা হলেন- সিবিয়ন দিও ও সঞ্জয় চিসিম। এছাড়া মোটরসাইকেলের মালিক সন্দেহে মো. আব্দুল হান্নান নামের একজনকে আটক করেছে র্যাব।
এই বিষয়ে এস এন মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ইতোমধ্যে শেরপুরের নলিতাবাড়ি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে লোক পারাপারে জড়িত দুইজনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়েছে। এছাড়া র্যাব মোটরসাইকেলের মালিক সন্দেহে একজনকে আটক করে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে।
