হাদির হামলাকারীরা সীমান্ত পেরিয়েছে কি না 'নিশ্চিত নয়', পাচারকারী 'ফিলিপের' খোঁজে বিজিবি
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলাকারী সন্দেহভাজন ফয়সাল ও তার সহযোগী সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে চলে গেছে কি না, সে বিষয়ে এখনো শতভাগ নিশ্চিত নয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। তবে সীমান্তে তাদের পালাতে সহায়তা করার অভিযোগে ফিলিপ সেনাল নামের এক সন্দেহভাজন মানবপাচারকারীকে খুঁজছে যৌথ বাহিনী। ফিলিপের বাড়ি থেকে একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে, যা হামলাকারীকে সীমান্ত এলাকায় বহনের কাজে ব্যবহার করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে বিজিবির ময়মনসিংহ সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান এসব তথ্য জানান।
বিজিবি সেক্টর কমান্ডার জানান, শুক্রবার ঢাকায় হামলার ঘটনার পরপরই রাত সাড়ে ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে সীমান্ত এলাকার সব স্পর্শকাতর পয়েন্ট, প্রবেশ ও বহির্গমন পথে বিজিবির টিম বসানো হয়। ময়মনসিংহ ও শেরপুরের সীমান্তবর্তী উপজেলাগুলো থেকে বর্ডারের দিকে যাওয়ার রাস্তায় একাধিক চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়।
তিনি বলেন, 'শুক্রবার সারারাত আমরা বর্ডার পাহারা দিয়ে রেখেছি। নিয়মিত টহলের পাশাপাশি বিওপিগুলো থেকে অতিরিক্ত টহল দল বের করে সীমান্তের গ্যাপগুলো পূরণ করা হয়েছে। শনিবারও সারাদিন এই কার্যক্রম চলেছে এবং ময়মনসিংহ থেকে বাড়তি জনবল এনে নিরাপত্তা আরও কঠোর করা হয়েছে।'
হামলাকারীরা ভারতের পালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে কর্নেল মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, 'আমরা কেউ শতভাগ নিশ্চিত করে বলতে পারছি না যে আক্রমণকারী সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়েছে নাকি পালায়নি। পুলিশও নিশ্চিত নয়, আমরাও নই। আমরা দুটি সম্ভাবনা মাথায় রেখেই কাজ করছি। যদি পালিয়ে থাকে, তবে কে সাহায্য করল? আর না পালালে কোথায় আছে বা কার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে—তা খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।'
'আমরা ফিলিপকে ধরার জন্য আমরা সর্বাত্মক শক্তি আমরা নিয়োগ করেছি। আমরা গোয়েন্দা তৎপরতাও আমরা চালাচ্ছি। কারণ ফিলিপকে ধরা গেলে অনেক কিছুর তথ্য আমরা হয়তোবা বের করতে পারবো, যদি পাচার হয়ে থাকে। আর যদি না হয়ে থাকে, তাহলে ফিলিপের নামটা কেন বারবার আসছে সেটাও আমাদের জন্য জানাটা সহজ হবে', যোগ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, 'গণমাধ্যমে হামলাকারীদের দেশত্যাগের যে খবর আসছে, তা মূলত বিভিন্ন সোর্সের শোনা কথার ভিত্তিতে। এতে তথ্যের ফারাক তৈরি হচ্ছে। আমরা অন-গ্রাউন্ডে কাজ করছি, তাই নিশ্চিত না হয়ে কিছু বলা সম্ভব নয়।
বিজিবি জানায়, হালুয়াঘাট ও নালিতাবাড়ীতে পুলিশ ও বিজিবির যৌথ অভিযান পরিচালিত হয়। ফিলিপের শ্বশুরবাড়িতে অভিযান চালানোর সময় তার স্ত্রী ডেলটা মোবাইল ফোনে তাকে সতর্ক করে দেন, যার ফলে ফিলিপ পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। সেখানে একটি মোটরসাইকেল পাওয়া গেছে। পুলিশ ধারণা করছে—এই মোটরসাইকেলে করেই হামলাকারীকে ওই এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
তবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ফিলিপের স্ত্রী, শ্বশুর-শাশুড়ি এবং লেং মিনজা নামের আরেক পাচারকারীকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ফিলিপ সেনালকে গ্রেপ্তার করা গেলে হামলাকারীদের অবস্থান সম্পর্কে পরিষ্কার তথ্য পাওয়া যাবে বলে আশা করছে বিজিবি।
