হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজনদের ভারতে পালিয়ে যাওয়ার গুঞ্জন, পুলিশ বলছে ‘নিশ্চিত নই’
ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় অভিযুক্ত দুই সন্দেহভাজন অবৈধভাবে ভারতে পালিয়ে গেছেন—এমন গুঞ্জন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে এ বিষয়ে নিশ্চিত নয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, হাদির ওপর হামলাকারী ফয়সাল করিম মাসুদ ও মো. আলমগীর শেখ ভারতের সিকিমের গোহাটিতে পালিয়ে গেছেন।
বিকেলে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) এস এন মো. নজরুল ইসলামকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, 'আমরা ইমিগ্রেশন ডাটাবেইজ পরীক্ষা করে এখন পর্যন্ত তাদের পালিয়ে যাওয়ার কোনো তথ্য পাইনি। আমরা ফয়সালের পাসপোর্ট নাম্বারটা পেয়েছি। তার সর্বশেষ বিদেশে ট্রাভেলের তথ্য অনুযায়ী, জুলাইয়ে থাইল্যান্ড থেকে দেশে এসেছেন। এরপর ইমিগ্রেশন ডাটাবেইজে তার বিদেশ যাওয়ার কোনো তথ্য নেই।'
তিনি আরও বলেন, 'সন্দেহভাজন ব্যক্তিরা যাতে সীমান্ত পাড়ি দিতে না পারেন, সেজন্য তাদের পাসপোর্ট সংগ্রহ করে ব্লক করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে সহযোগিতার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ৫০ লাখ টাকা পুরষ্কার ঘোষণা করা হয়েছে।'
হাদির ওপর হামলাকারীরা ভারতের গোহাটিতে পালিয়ে গেছেন বলে ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে তথ্য ছড়ানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমরাও বিষয়টি দেখেছি। আমরা বিজিবিকে সতর্ক করেছি সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে তারা যেন পার হয়ে যেতে না পারেন। আমরা তাদের পালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত নই। তারা দেশে আছেন কি না সেই বিষয়েও আমরা নিশ্চিত নই। আমাদের কাছে তথ্য থাকলে আমরা তাদের গ্রেপ্তার করতাম।'
এদিকে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আরও দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। তারা হলেন—সিবিয়ন দিও ও সঞ্জয় চিসিম। এরা দুজন সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে লোক পারাপারে জড়িত। এছাড়া হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক সন্দেহে মো. আব্দুল হান্নান নামের একজনকে আটক করেছে র্যাব।
এস এন মো. নজরুল ইসলাম আরও বলেন, 'চাঞ্চল্যকর এই ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে আমরা আন্তরিকভাবে কাজ করছি। এই ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি আমরা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় ইতোমধ্যে দুইজন সন্দেহভাজনকে শনাক্ত করা হয়েছে৷ এদের একজন ফয়সাল করিম মাসুদ, অন্যজন মো. আলমগীর শেখ। সন্দেহভাজন এই দুই ব্যক্তি হেলমেট পরে খুব কাছ থেকে ওসমান হাদিকে গুলি করে। তাদের গ্রেপ্তারে ইতোমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে, এখনো অভিযান চলমান রয়েছে।'
কী কারণে হাদিকে হত্যাচেষ্টা করা হয়েছে—জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'হাদি ইনকিলাব মঞ্চের সংগঠক। তার প্রতিপক্ষ তাকে হত্যার চেষ্টা করেছে।'
এ ঘটনায় মামলা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমরা হাদির পরিবারকে দিয়ে মামলাটি করানোর জন্য দুইদিন ধরে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। কিন্তু তারা হাসপাতালে থাকায় মামলা করতে আসতে পারেননি। এই ঘটনায় একটি জিডি ইতোমধ্যে করা হয়েছে। আমরা চেষ্টা করব আজকে এজাহার লিখে হাসপাতাল থেকে তাদের স্বাক্ষর নিয়ে আসতে। যদি তারা না করেন, তাহলে পুলিশ বাদী হয়ে আজকেই মামলাটি করবে।'
