শরিকদের সঙ্গে মতবিরোধ মেটানোর উদ্যোগ বিএনপির
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসন বণ্টন নিয়ে সৃষ্ট মতবিরোধ দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপি। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শরিকদের সঙ্গে আসন সমঝোতা আগামী ১৮ ডিসেম্বর চূড়ান্ত করা হবে।
আসন চূড়ান্ত করার আগে প্রতিটি শরিক দলের সঙ্গে 'ওয়ান টু ওয়ান' বৈঠকে বসবে বিএনপি। ১৯ বা ২০ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে আসন সমঝোতার ঘোষণা আসতে পারে।
শরিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে মূলত দুটি এজেন্ডা নিয়ে আলোচনা হয়। প্রথমত, যুগপৎ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য ধরে রাখা এবং দ্বিতীয়ত, মিত্রদের সঙ্গে আসন বণ্টন।
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নানা ষড়যন্ত্র চলছে বলে মনে করছে বিএনপি ও শরিক দলগুলো। বিভিন্ন প্রশ্ন ও বিভ্রান্তির কারণে দলগুলোর মধ্যে ঐক্য বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কাও দেখা দিচ্ছে। রাজনীতিতে মেরুকরণ বাড়ছে। এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় উত্তরণ পর্যন্ত ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য ধরে রাখার ওপর জোর দেন তারা।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, "আমরা কারও সঙ্গে জোট করিনি। তবে আমরা কমিটমেন্ট করেছিলাম—যারা যুগপৎ আন্দোলনে থাকবে, আগামী দিনে সরকারে গেলেও তাদের নিয়ে চলব। এখন অনেকে নির্বাচন করতে চাচ্ছেন। কিন্তু এবার ধানের শীষ ছাড়া নির্বাচন করা খুবই কঠিন হবে। তারপরও শরিকদের আমরা কিছু আসন ছাড় দেব।"
জানা গেছে, বৈঠকে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা ৩৫টির বেশি দল ও জোটের শীর্ষ নেতারা অংশ নেন। বিএনপির পক্ষ থেকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, মিত্র দলগুলোর সঙ্গে কোনো বৈরিতা রাখতে চায় না দলটি। যেকোনো মূল্যে ঐক্য ধরে রাখার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সে কারণে ঘোষিত কয়েকটি আসনে মনোনয়ন পুনর্বিবেচনা করা হতে পারে। কিশোরগঞ্জ-৫ এবং নড়াইল-২সহ কিছু আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে। আবার যেসব শরিককে সরাসরি আসনে মূল্যায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না, তাদের সংসদের উচ্চকক্ষে নেওয়ার বিষয়েও চিন্তাভাবনা করছে বিএনপি।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক টিবিএসকে বলেন, "শরিকদের সঙ্গে খোলামেলা পরিবেশে আলোচনা করেছে বিএনপি। আন্দোলন-সংগ্রামে আমাদের অবদানের কথা বলেছি এবং তার মূল্যায়নের দাবি জানিয়েছি। আসন সমঝোতা নিয়ে অনৈক্য ও বিভাজন যাতে আর না বাড়ে, সে বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।" বিএনপির সঙ্গে মিত্রদের যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে, তা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
