শহীদ বুদ্ধিজীবী ও বিজয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের আহ্বান জামায়াত আমিরের
আগামী ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস এবং ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদা ও গাম্ভীর্যের সঙ্গে পালনের জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ আহ্বান জানান। জামায়াত আমির বলেন, জাতীয় জীবনে এ দুটি দিবসের গুরুত্ব অপরিসীম। এই দিনগুলো ত্যাগ, সংগ্রাম ও গৌরবের প্রতীক।
বিবৃতিতে জামায়াত প্রধান দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য জীবন উৎসর্গকারী শহীদ বুদ্ধিজীবী এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন।
১৪ ও ১৬ ডিসেম্বরকে বাংলাদেশের জাতীয় ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও অর্থবহ দিন হিসেবে উল্লেখ করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, 'এই দিনগুলো ত্যাগ, সংগ্রাম ও গৌরবের চিরন্তন স্মারক।' তিনি গত জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের জন্যও দোয়া করেন এবং তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন।
তিনি বলেন, 'জাতি এমন এক সন্ধিক্ষণে এই দিবসগুলো পালন করছে, যখন ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে দেশ একটি ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে মুক্ত হয়েছে। ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা দুঃশাসন, নিপীড়ন ও গুমের পর মানুষ এখন শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের আকাঙ্ক্ষা করছে।'
ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সতর্ক করে জামায়াত আমির বলেন, 'ফ্যাসিবাদের দেশি ও বিদেশি দোসররা এখনো ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলা এর একটি জ্বলন্ত উদাহরণ।'
দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দৃঢ় অঙ্গীকার নিয়ে আলোচনা সভা, সমাবেশ ও দোয়া মাহফিল আয়োজনের মাধ্যমে দিবস দুটি পালনের আহ্বান জানান তিনি। একইসঙ্গে তিনি দেশবাসীকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানান এবং দেশের সার্বিক শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও বিজয় দিবস উপলক্ষে তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। আগামীকাল (১৪ ডিসেম্বর) শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে ঢাকার কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। পরদিন (১৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আরেকটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) বিজয় দিবসে দলের কেন্দ্রীয় যুব ও ক্রীড়া বিভাগের উদ্যোগে সকাল ৭টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে 'ইয়ুথ ম্যারাথন' আয়োজন করা হবে।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের স্বাধীনতার সক্রিয় বিরোধিতা করেছিল। দলটি পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশের বিচ্ছিন্ন হওয়ার বিপক্ষে ছিল এবং পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে সহযোগিতা করেছিল। এ কারণে তাদের 'স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি' হিসেবে অভিহিত করা হয় এবং তৎকালীন নতুন সরকার তাদের নিষিদ্ধ করেছিল। পরবর্তীতে জিয়াউর রহমানের শাসনামলে দলটি পুনরায় রাজনীতিতে ফিরে আসে।
